কেমব্রিজ, ২৬ অক্টোবার ২০১৩
ঢাকা স্টেডিয়ামের উডেন ফ্লোর ইনডোরে ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে এই মানুষের সাথে এত বার দেখা হওয়ার পরও কেউ আমাকে কখনও বলেনি ইনি কে। কথাবার্তায় বুঝতাম যে প্রাক্তন স্পোর্টসম্যান, নারায়ণগঞ্জ থেকে আসেন, স্পোর্টিং ক্যারিয়ার শেষে অ্যামেরিকায় গিয়ে বহু বছর ছিলেন, আর এখন সেই ভূমিকা রাখেন যাকে পত্রপত্রিকায় বলা হয় “ক্রীড়া সংগঠক”।
ইনডোরে ছেলের বয়সী আমাদের সাথে গল্প করেছেন, মজার মজার গল্প শুনিয়েছেন, চা বিস্কিট সমুচা সিঙ্গারা খাইয়েছেন, কিন্তু ব্লাইন্ড স্পটের মতই ওনার ফুটবলার ক্যারিয়ারের পার্টটা ওনার কথায়ও বাদ পড়ে গেছে, অন্যরাও কখনও বলেনি। আর রাজনীতি করেন আওয়ামী লীগ করেন সেগুলো তো প্রসঙ্গেই আসেনি। ধরেই নিয়েছিলাম যে ব্যাডমিন্টন সার্কেলে যেহেতু পরিচয় তাহলে নিশ্চয়ই এক্স ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার। কিন্তু বললে আমি ঠিকই চিনতাম, কারণ ফুটবলে যে জাহিদ হোসেন এমিলির আগেও একজন এমিলি ছিলেন, সেটা আমি কার কাছে যেন শুনেছিলাম।
তো সেই মজার মানুষের এই কান্না আর হাহাকার খুব যন্ত্রণা দিচ্ছে। কিছু জিনিষ থাকে যেগুলো মানুষ একবার দেখলে বা এক্সপেরিয়েন্স করলে আর দ্বিতীয়বার দেখতে বা ভাবতে চায় না। স্মৃতিতে যার ইমপ্রেশান মানে হাসি আর মজার কথা, তাকে এভাবে কাঁদতে দেখলে কেমন লাগতে পারে?
একটু আগে নায়েল ভাইয়ের কাছ থেকে জানলাম সম্রাট এমিলির স্ত্রী বাকপ্রতিবন্ধী। একজন বাকপ্রতিবন্ধী মানুষের কাছে তার জীবনের সবচেয়ে বড় অবলম্বন মানুষটির হাসি কান্না অনুভূতি অভিব্যাক্তি কেমন তা সম্ভবত আমরা ধারণা করতে পারি। আল্লাহ যাকে দেখার শক্তি দেননি, তার সবচেয়ে কাছের মানুষই হয়ে উঠে তার চোখ; যাকে বলার শক্তি দেননি তার কাছের মানুষ হয়ে উঠে তার মুখ। সেই ভদ্রমহিলার কাছে এমিলির এই হাহাকার, এই অসহায় কান্না কেমন লাগছে আমরা কি আন্দাজ করতে পারি? কয়েকবার মাত্র দেখা হয়ে দু’চারটা কথা বলে যদি আমি এই ভিডিও দ্বিতীয়বার দেখতে অপারগ হই, তাহলে সেই বাকপ্রতিবন্ধী ভদ্রমহিলার অনুভূতি এখন কী?