নিজের চোখে ইতিহাস সৃষ্টি হতে দেখলাম(যদিও কানের উপর দিয়ে প্রচুর প্রেশার গেলো) খুব বেশী দূরে না – আজকে থেকে ৫ মাস পরই ফেসবুক ভরে যাবে খালেদা জিয়ার “হ্যা অবশ্যই” পর্যন্ত অডিও ক্লিপে।
গ্রুপে গ্রুপে ঘৃণা ছড়ানো হবে ।
৫ বছর পর বলা হবে – খালেদা জিয়া রাজাকার বাহিনীর প্রধান ছিলেন ১৯৭১ এ।
আরো ৫ বছর বাচ্চাদের ইতিহাস বই-এ ছাপা হবে – খালেদা জিয়ার নির্দেশে ইয়াহিয়া,( শেখ সাহেবের প্রিয়)
ভূট্টো আর টিক্কা খান মিলে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছিলো।
আজকে ফেসবুকে ঘুরে হতাশ । বিভিন্ন আওয়ামী মিডিয়া আর আওয়ামী ব্লগের বক্তব্য দেখলাম । যেখানে খালেদা হাসিনার বক্তব্যের খন্ডিত অংশের স্ক্রিপ্ট তুলে ধরা হয়েছে । সেখানে শেখ হাসিনার বিতর্কিত বক্তব্য গুলোকে হাইলাইট করা হয়েছে (প্রসংগত বলে রাখা ভালো আমি ১৫ই আগষ্টে কেক কাটাকে চূড়ান্ত নোংরামী মনে করি জন্মদিন ফেইক হোক আর আসল হোক, শেখ হাসিনা আর আওয়ামী সাংসদের নোংরা কথাবার্তার মতো )
এরপর দেখলাম – ছাত্রলীগের তরফ থেকে ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরী করা গেছে – যেখানে বক্তব্য আছে “হ্যা অবশ্যই” পর্যন্ত ।
তারপর দেখলাম – খালেদা জিয়াকে নোংরা থেকে নোংরাতম গালাগালি করা হচ্ছে ।
এইজন বিখ্যাত সাংবাদিক সেলেব্রেটিকে দেখলাম – মতিকন্ঠের এইচ টি ইমামের পোষ্টকে লিড নিউজ হিসাবে শেয়ার দিতে ।
সবাই ২১শে আগষ্ট নিয়ে ব্যস্ত । সবাই আশা করে বসেছিলো খালেদা জিয়া বলবেন “হ্যা আমিই আপনার উপর গ্রেনেড হামলা করিয়েছিলাম । আমার শাসনকালে আপনি মারা গেলে আমাকে মানুষ আরো অনেক ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।”
জন্মদিন আর ২১ শে আগষ্ট ইস্যুতে সুশীলরা ত্যানা প্যাচাইতাসে । গালিবাজরা গালি দিচ্ছে।
কেউ ঘুণাক্ষরেও বলছে না – সংলাপের আয়োজন আর দাওয়াতের আয়োজনের এসব টপিক কিভাবে সহায়তা করবে ? আদৌ আওয়ামী লীগের সংলাপের প্রতি কোন সদিচ্ছা যে নাই তা এইরকম প্রশ্ন তোলা দেখেই বোঝা যায় ।
কোন আওয়ামী লীগারকে স্বীকার করতে দেখলাম না – এইচ টি ইমামের বিপদজনক মিথ্যা বক্তব্য ।
শিক্ষিত আওয়ামী লীগাররা খুব গর্ব কর শিক্ষিত , প্রগতীশীল বলে। কিন্তু একজন উপদেষ্টা কিভাবে পুরোদেশের সামনে এইরকম নোংরা মিথ্যাচার করতে পারে সেটা নিয়ে তাদের কোন প্রশ্ন নেই । যেমন তাদের কোন প্রশ্ন নেই ছাত্রলীগের সন্ত্রাস নিয়ে , হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট নিয়ে , গুমখুন আর অরাজকতা আর স্বজনপ্রিয়তার রাজনীতি নিয়ে ।
প্রকৃতপক্ষে একজন শিক্ষিত মানুষ যখন অপরাধ করে সে অশিক্ষিত মানুষের চেয়ে আরো ১০০ বেশী ভয়ংকর অপরাধ করতে পারে এবং করে ।
—–
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে আন্দোলনে সময়ে – জামাতীদের কিছু অদ্ভুত অজুহাত দেখা গেছে।
রাজাকাররা ইয়াং ছিলো , দেশের বাইরে ছিলো , ভাষাসৈনিক ছিলো, নাম বিভ্রাট ঘটেছে , চেহারা মিলে না , সাক্ষী বানানো ইত্যাদি ইত্যাদি।
জামাতীদের সেই অজুহাত গুলোর সাথে আজকে ডিরেক্ট ব্রেইনওয়াশড আওয়ামীদের মিল পেলাম ।
তাদেরকে হাজার বার ফোনালাপ শোনালেও তারা খালেদা জিয়ার কোন কথাই কানে তুলবে না – তুল্লেও যতোটুকু তুললে তাকে গালি দিতে সুবিধা হবে ঠিক ততোটুকু তুলবে।
—–
বস্তুত এই ঘৃণা চর্চার উৎস কী ? এর আগেও বহুবার বলা হয়েছে আওয়ামী লীগ একটা ধর্ম।
এই ধর্মের মানুষ অন্ধভাবে নিজেদের নবী এবং তার বংশধরকে মানে। এখানে শিক্ষিত অশিক্ষিতের কোন ভেদাভেদ নাই । তারা নিজেদের কোন সমালোচনা পছন্দ করে না । তারা নিজেদের ভিক্টিম হিসাবে দেখতে পছন্দ করে । তারা নিজেদের ধর্মের সমালোচনা পছন্দ করে না। বিভিন্ন ধর্ম যেমন বিজ্ঞানের মাঝে ধর্ম খোজে , তেমনি তারাও যেকোন ইস্যুতে নিজেদের ধর্ম খুজে বের করে। তারা ভালো সময়েও মিছিল করে – তারা খারাপ সময়েও মিছিল করে । আওয়ামী লীগ কোন খারাপ কাজ করেছে অতীতে বা এখন করছে এটাই ধরনের যেকোন কথা তারা শুনা মাত্র কান বন্ধ করে ফেলে।
তাদের কলবে নৌকার সীল অনন্ত জীবনের জন্য বসিয়ে দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগাররা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না – তারা বিশ্বাস করে শুধু আওয়ামী লীগ দেশের ক্ষমতা থাকতে পারবে আর কোন দল না।
তারা বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে – এবং আওয়ামী চিরকাল বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডের জমিদারী দেশের মানুষের রক্তের বিনিময়ে খরিদ করেছে।
—–
শেষ করি একটা মজার অবজার্ভেশন দিয়ে — ধরে নেন — খালেদা জিয়া বলে কেউ নাই । পিএইচডিধারী একজন মানুষ , প্রচন্ড ব্যক্তিত্ববান- প্রজ্ঞাবান নেতা , সাহসী এ্যাডমিনিষ্ট্রেটর , সহমর্মী মানুষ , দক্ষ কূটনৈতিক, বৈশ্বিক ভাবে পরিচিত একজন ব্যক্তিত্ব এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের ছাড়াই দলের জোট গঠন করেন। মোট কথা বাংলাদেশের নেতা হবার জন্য সবচে যোগ্য একজন ব্যক্তি ।
আপনার কি মনে হয় — আওয়ামী লীগাররা সেই লোকটিকে নিজেদের পার্টির নেতা বানাতো বা তাকে মানতো ? নিদেন পক্ষে বিরোধী দলের নেতা হিসাবেও তাকে নূন্যতম সম্মান দিতো ?