পাহাড়ের নিচের বসবাসকারী বুদ্ধিমান ব্যক্তির হাতে ধরা পাখি জীবিত না মৃত সেই প্রশ্নের উত্তরের মতোই শেখ হাসিনার হাতেই রয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে আরো রক্ত ঝরবে নাকি রক্ত ঝরা বন্ধ হবে সেই প্রশ্নের উত্তর।
এক জ্ঞানী ও পাখির গল্পটা কজন জানেন? হাত তুলুন। যারা জানেন তারা গল্পটা বাদ দিয়ে বাকিটুকু পড়ুন। অন্যরা আমার সঙ্গে থাকুন।
গল্প
গল্পটা হলো এমন। এক পাহাড়ের গোড়ায় এক দুষ্ট প্রকৃতির বুদ্ধিমান লোক বাস করতেন। লোকজন তার কাছে বুদ্ধি পরামর্শ নিতে আসত। তাকে শ্রদ্ধা সম্মান করত। টাকা পয়সা, সোনা দানা উপহার দিত। এভাবেই দিন কাটছিল। একসময় তিনি লক্ষ্য করলেন, তার ওখানে লোকজনের আসা কমে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, লোকজন তারই ঘরের পাশ দিয়ে পাহাড়ে উঠে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন, পাহাড়ের উপরে নতুন এক জ্ঞানী ব্যক্তির আগমন ঘটেছে। সবাই সেখানেই যায়। লোকজন বলাবলি করে পাহাড়ের উপরের লোকটির জ্ঞান নাকি তার চেয়ে বেশি। পাহাড়ের গোড়ায় বাস করা লোকটির একথা শুনে হিংসে হলো। মনে মনে ঠিক করল যেভাবেই হোক পাহাড়ের উপরের লোকটাকে শায়েস্তা করতে হবে। এবং প্রমাণ করতে হবে যে, পাহাড়ের উপরের লোকটা জ্ঞানী তো নয়ই বরং একটা আস্ত বোকা। তাকে অপদস্থ করতে হবে। যেভাবেই হোক লোকজনকে আবার তার কাছে ফিরিয়ে আনতে হবে।
আমরা জানি, দুষ্ট লোকের বুদ্ধির অভাব হয় না। তারও অভাব হলো না। তিনি কারো সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই একটি বুদ্ধি বের করলেন। বুদ্ধিমতো একদিন রওয়ানা হলেন পাহাড়ের উপরে থাকা জ্ঞানী ব্যক্তির কাছে। সাক্ষী হিসেবে সঙ্গে লোকজন নিয়ে নিলেন। পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে তিনি জ্ঞানী ব্যক্তির সামনে গেলেন। তার দুই হাত পেছনে রাখা। মুখে মুচকি হাসি। লোকটি জ্ঞানী ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা বললেন, শুনুন আমার হাতে একটা পাখি আছে। বলুন তো, পাখিটা জীবিত নাকি মৃত? কথাটা বলে বেশ ভাব নিয়ে সঙ্গে আসা লোকদের দিকে তাকালেন। মনে মনে ভাবছেন, ব্যাটা এইবার বুঝবি মজা। সবাই তাকিয়ে আছে জ্ঞানী ব্যক্তির মুখের দিকে। জ্ঞানী ব্যক্তির ভক্তরা মনে মনে প্রার্থনা করছেন জ্ঞানী ব্যক্তি যেন সঠিক উত্তর দিতে পারেন। তবে কেউই বুঝতে পারছেন না উত্তর কি হবে? টান টান উত্তেজনা। জ্ঞানী ব্যক্তিও চুপ।
একসময় পাহাড়ের উপরের সেই জ্ঞানী ব্যক্তি শীতল গলায় বললেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর আপনার হাতে।’
উত্তর শুনে পাহাড়ের নিচ থেকে আসা লোকটির মুখ শুকিয়ে গেলো। আত্মঅংহকারী লোকটি মুখে কিছুই স্বীকার করলেন না। ধীরে ধীরে নিচে নেমে এলেন।
গল্পটা এখানেই শেষ। তবে গল্পটির একটি পাদটীকা আছে।
পাদটীকা: দুষ্ট লোকটি বুদ্ধি করেছিলেন পাহাড়ের উপরের জ্ঞানী ব্যক্তিটি যদি বলেন যে, তার হাতের পাখিটি মৃত। তাহলে সেটি ছেড়ে দিয়ে বলবে-এই আপনার জ্ঞান? আর যদি বলে যে, জীবিত। তাহলে পাখিটিকে গলা টিপে মেরে সামনে এনে বলবে- পাখি তো মৃত। এই আপনার জ্ঞান? এবং তার সঙ্গে যাওয়া লোকজন তখন দিকে দিকে এটা প্রচার করবে যে, পাহাড়ের উপরের জ্ঞানী ব্যক্তিটি আসলে একটা বোকা। আসল জ্ঞানী পাহাড়ের নিচে বাস করেন। ফলে, কষ্ট করে পাহাড়ের উপরে যাওয়ার দরকার নেই। সবাই যেন নিচের জ্ঞানী ব্যক্তির কাছেই যান।
গল্পের ব্যাখ্যাও শেষ।
এবার রাজনীতিতে চলুন
এবার দেশের রাজনীতির অচলাবস্থার দিকে চোখ ফেরানো যাক। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে একটিমাত্র ইস্যু নিয়ে দেশে এক ধরনের রাজনৈতিক অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ইস্যুটি হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা।
২০১১ সালের ৩০ জুন সংসদে দুই তৃতীয়াংশ আসনের জোরে আওয়ামী লীগ পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিল।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থার সেই শুরু। সেসময়ে দেশের প্রতিটি সচেতন মানুষ আওয়ামী লীগের এই পদক্ষেপের বিরোধীতা করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। এখনো আছেন।
বিএনপি তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেছিল, আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল, সেই দলই আরেকটি কালো অধ্যায় রচনা করল।
দেশের জনগণ মনে করে যে, আওয়ামী লীগ যদি এই ধরনের গোয়ার্তুমি না করত তাহলে আজকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে সহিংসতা দেখা যাচ্ছে তার কিছুই হতো না।
আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্কট
বিএনপি কেন আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যেতে চায় না। তার কারণ খুব সোজা। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যেকারণে বিএনপির অধীনে নির্বাচনে যেতে চায়নি সেই কারণেই আওয়ামী লীগ বিএনপির অধীনে নির্বাচনে যেতে চায় না।
ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রধান দুই দল বিএনপি আওয়ামী লীগ পরস্পর পরস্পরকে বিশ্বাস করে না। আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্কটই বাংলাদেশের সহিংস রাজনীতির মুখ্য কারণ। এই কথাটি দেশের ১৬ কোটি মানুষের মতোই শেখ হাসিনাও জানেন।
শেখ হাসিনা খালেদাকে বিশ্বাস করেন না
শেখ হাসিনা কিন্তু খালেদা জিয়াকে বিশ্বাস করেন না। সেদিন তারা দু’জন যে টেলিফোন আলাপ করেছেন সেখানেও বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়েছে। খালেদা জিয়া যখন বললেন যে তার বাড়ির লাল টেলিফোন নষ্ট। ফোন বাজেনি। তখন স্বাভাবিক হতে পারত শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার কথা বিশ্বাস করে নিতেন। এবং এজন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করতেন। এটাই সভ্য দুনিয়ার রীতি। একজন দায়িত্বশীল মানুষ অন্য একজন দায়িত্বশীল মানুষকে বিশ্বাস করবে। কিন্তু শেখ হাসিনা তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে খালেদা জিয়াকে জেরা করতে লাগলেন। গোয়েন্দাদের মতো একই প্রশ্ন নানানভাবে করে একদিকে প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন, খালেদা জিয়া মিথ্যাবাদী এবং অন্যদিকে খালেদাকে উত্তেজিত করার চেষ্টাও থাকল। একটা চালু কথা আছে, রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। বলা হয় প্রতিপক্ষকে হারাতে হলে তাহলে তাকে রাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। শেখ হাসিনা সেই কৌশল ধরে আগাতে লাগলেন। কেন সেই কৌশল নিয়েছিলেন সেটা পরবর্তীতে বোঝা গিয়েছে যখন তথ্যমন্ত্রীর প্রয়াসে পত্র-পত্রিকায় দুই নেতার টেলিফোন সংলাপ প্রকাশ পেল।
পাঠকের সুবিধার্থে নিচে আলাপের রেড টেলিফোন সংক্রান্ত আলাপের অংশটুকু কট্টর আওয়ামী লীগ সমর্থক দৈনিক জনকণ্ঠ থেকে তুলে ধরছি (বিভিন্ন পত্রিকায় দুই নেতার আলাপের বর্ণনা ভিন্ন ভিন্ন, যা হওয়া বাঞ্চনীয় নয়। তবে এটি ভিন্ন প্রসঙ্গ হওয়ায় এখানে বিস্তারিত করব না):
শেখ হাসিনা: লাল ফোন সবসময় ঠিক থাকে।
খালেদা জিয়া: ঠিক নাই তো। আপনারা লোক পাঠান। আপনি এখনি লোক পাঠান। লোক পাঠিয়ে দেখে যান।
শেখ হাসিনা: আপনি তো ভালো জানেন। দুইবার পিএম ছিলেন। আপনি তো জানেন লাল ফোন সবসময় ভালো থাকে।
খালেদা জিয়া: ভালো থাকে তো। আমারটাতো ভালো নেই।
শেখ হাসিনা: ভালো আছে। আমি যখন ফোন করেছিলাম তখন রিং বেজেছে।
খালেদা জিয়া: কোন রিং বাজেনি। আমি সেদিনও চেক করেছি। আপনারা যদি সত্য না বলেন তাহলে তো চলবে না। লাল ফোন ঠিক আছে এটা আমি বিশ্বাস করতে রাজী নই।
শেখ হাসিনা: সত্য কথা না বলার আমার কিছু নেই। আমি লাল ফোনে বারবার ফোন করেছি।
খালেদা জিয়া: দীর্ঘদিন ধরে আমার লাল ফোন ডেড। এখন কী ডেড ফোন জেগে উঠবে? আপনার ফোন এতো পাওয়ারফুল যে ডেড ফোন জেগে উঠবে?
শেখ হাসিনা: ঠিক আছে। যেকোন কারণে হোক আপনি ধরতে পারেননি। যাই হোক …
খালেদা জিয়া: না আমি ধরতে পারি নাই। আমি এখানে বসা। এর মধ্যেই ঘুরি। ছোট্ট জায়গা। ছোট্ট জায়গার মধ্যে ফোন বাজলে আমি না ধরার কোন কারণ থাকতে পারে না। কোন ডেড ফোন বাজতে পারে না, বুঝছেন। এটাই হলো সত্য কথা।
(পাঠক লক্ষ্য করুন, এতোটা কথা হয়ে যাওয়ার পরও শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।)
শেখ হাসিনা: দেখেন ডেড ছিল না ডেড করে রাখা হয়েছে।
অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতাতেই বিষয়টি থেমে যায়নি। সন্দেহ ও উস্কানিমূলক কথাতে গিয়ে ঠেকেছে। এই হলো গিয়ে একজনের প্রতি অন্যজনের আস্থা ও বিশ্বাসের অবস্থা। শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে কোনমতেই বিশ্বাস করতে পারেননি। খালেদার প্রতি তার এই অবিশ্বাস নতুন কিছু নয়।
তত্ত্বাবধায়ক আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের যৌথ আন্দোলনের ফসল
ঐতিহাসিক সত্য হলো ১৯৯৪ সালের ২৭ জুন আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করেছিল৷ সেসময়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে অসাংবিধানিক বলেছিল। তখন আওয়ামী লীগ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে আন্দোলন করে। এক পর্যায়ে নিজামী ও শেখ হাসিনার যুগপৎ আন্দোলনে চাকুরির নিয়ম ভঙ্গ করে সরকারি কর্মচারীরা যোগ দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে বিএনপি তত্ত্বাবধায়কের দাবী মেনে নিয়েছিল। শুধু তাই নয়, শেখ হাসিনার প্রস্তাবিত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়েছিল।শেখ হাসিনা যখন যেটা চেয়েছেন সেটা হয়েছে
১৯৯৬ সালের পর ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ লগি বৈঠা নিয়ে মানুষ পিটিয়ে মারার পর বিএনপি বাধ্য হয়েছিল শেখ হাসিনার দাবী মেনে নিতে। ফখরুদ্দিনের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে খালেদা না গেলেও শেখ হাসিনা গিয়েছিলেন এবং মিডিয়ার সামনে বলেছিলেন যে, এই সরকার তাদের আন্দোলনের ফসল। তবে এবার শেখ হাসিনার হিসেবে একটু ভুল হয়ে যাওয়ায় তত্ত্বাবধায়কের পেছনে পেছনে সেনা শাসনও চলে আসে। তারা শত শত রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনাও গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হন খালেদা জিয়াও। বহুল আলোচিত মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু খালেদা জিয়ার অনমনীয়তার কারণে এক পর্যায়ে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। আলোচনায় চলে আসে মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা।
নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা। অভাবনীয় সংখ্যক সিট পায় আওয়ামী লীগ। অবস্থা এমনই যে, মহাজোট না করলেও আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে পারত। দুই-তৃতীয়াংশ সিট পাওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার তাদের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতি গুরুত্ব কম দিয়ে অন্য এজেন্ডা বাস্তবায়নে লেগে পড়েন।
আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের মিত্র শক্তি জামায়াতে ইসলামকে প্রথমে শায়েস্তা করা ও এর মাধ্যমে বিএনপিকে চাপে রাখার ব্যবস্থা নেয়। কারণ আওয়ামী লীগ মনে করে যে, ১৯৯৬ সালের মতো জামায়াতে ইসলামী যদি তাদের সঙ্গে ২০০১ সালেও থাকতো তাহলে বিএনপি কোনমতেই ২০০১ সালে নির্বাচনে জিততে পারত না। এরপর শেখ হাসিনা তার দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে তার ও জামায়াতের যৌথ আন্দোলনের ফসল তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বাতিল করে দেয়।
তারও আগে বিএনপি-র গুটিকয়েক সদস্যকে বিভিন্নভাবে নাজেহাল করে সংসদ বর্জন করতে উৎসাহিত করে। তত্ত্বাবধায়ক বাতিল হওয়ায় বিএনপি-র সংসদে না যাওয়ার বিষয়টি আরো ভালোভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
এভাবেই শেখ হাসিনার হিসেব কষা রাজনৈতিক গেমে বিএনপি আওয়ামী লীগের কাছে একের পর এক ধরাশায়ী হতে থাকে। তাতে অটোমেটিক্যালি শক্তিশালী হতে থাকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে কি নেই সেনিয়ে শেখ হাসিনা মোটেই চিন্তিত নন। টেলিফোন সংলাপে তিনি বলেছেন, ‘ভোট দেয়ার লোকের অভাব নেই।’ টেলিফোন সংলাপে শেখ হাসিনা আরো বলেছেন, ‘আমার পার্টি স্ট্রং’।
বিএনপির হরতালে আওয়ামী লীগ যেভাবে রাজপথ দখল করে রাখে তাতে এই দেশের সকল মানুষ বিশ্বাস করে যে, আওয়ামী লীগ আসলেই স্ট্রং দল। যারা রাজপথ দখলে রাখতে পারে তাদের যে ভোট আছে সেকথা তো বলাই বাহুল্য। এখন শেখ হাসিনা বিএনপির দাবী মতো তত্ত্বাবধায়ক মেনে নিয়ে নির্বাচন দিয়ে দেখাতে পারেন বিএনপি ভুল। তার কথাই ঠিক- আওয়ামী লীগকে ‘ভোট দেয়ার লোকের আমার অভাব নেই।’
জনগণের বাঁচা মরা শেখ হাসিনার হাতে
দুই দলের প্রতি যে অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতা তারই প্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়কের দাবীতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের আন্দোলন। এই আন্দোলনে যতো রক্তপাত হয়েছে তার গোড়ার কারণ শেখ হাসিনা কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা। তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের ক্ষমতা যেমন তার হাতে ছিল। তেমনি ফিরিয়ে আনার ক্ষমতাও তার হাতেই আছে। সেই পাহাড়ের নিচের বসবাসকারী বুদ্ধিমান ব্যক্তির হাতে ধরা পাখি জীবিত না মৃত সেই প্রশ্নের উত্তরের মতোই শেখ হাসিনার হাতেই রয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে আরো রক্ত ঝরবে নাকি রক্ত ঝরা বন্ধ হবে সেই প্রশ্নের উত্তর। অর্থাৎ দেশের মানুষের বাঁচা মরা এখন তার হাতে।
শেষ কথা
এই দেশের ১৬ কোটি জনগণ শান্তি চায়। তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে তাদের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের অধিকারী নেতা শেখ হাসিনা এমন কিছু করবেন না যার ফলে তাদেরই প্রাণ যাবে এবং তারা আর ভোট দিতে পারবেন না।
আমার গল্প ফুরালো। নটে গাছটি মুড়ালো।