শিষ্ঠাচার, সংলাপ আর সংগ্রাম

আবেগ, আকাঙ্খা, হতাশা এই সবই যেমন মানব অনুভূতি, ঠিক তেমনিভাবে প্রতিবাদও সহজাত প্রবৃত্তি। নরম স্বরে, ভদ্র সুরে মিথ্যা অভিযোগ তুললেই তা সত্য হয়ে যায় না, আর মিথ্যার প্রতিবাদে উত্তেজিত হলেই প্রতিবাদ গ্রহণযোগ্যতা হারায় না।

আপনি একটি রাজনৈতিক দলকে সরকারের সমস্ত অঙ্গসংস্থা দিয়ে পাঁচ বছর নিয়মতান্ত্রিকভাবে অবরুদ্ধ করে রাখবেন, দলটির নেতা কর্মীদের করের পয়সায় কেনা বুলেট দিয়ে হত্যা করবেন, গ্রেপ্তার,হয়রানি, গুম, নির্যাতন করবেন, ‘রক্ষক’ পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে স্বাধীনভাবে বিচরণের নুন্যতম অধিকারকে ক্ষুন্ন করবেন, দলটিকে ‘সন্ত্রাসী’ ট্যাগ দিয়ে তার রাজনৈতিক কার্যালয়কে একটি পুলিশের ফাড়িতে পরিনত করবেন, সংলাপের ডাক দিয়ে সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন – আর তারপর ‘শিষ্ঠাচারের’ নাম করে সাজানো বুলির ফাদে ফেলতে চাইবেন। এই শিষ্ঠাচারের থেকে ঔধত্ত অনেক উত্তম, আর সেই ঔধত্ত যদি হয় যুক্তিসঙ্গত, তাহলে তা অনুকরণীয়।

বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে যদি আমরা শিক্ষা নেই, তাহলে দেখি সংলাপের নামে কালক্ষেপন নতুন কিছু না। ইয়াহিয়া খান সংলাপের ডাক দিয়ে, সংলাপে বসেই গণহত্যার আয়োজন সম্পন্ন করেন। বর্তমান সরকারও একদিকে আলোচনার কথা বলে অন্য দিকে রাস্তায় সশস্র বি জি বি মোতায়েন করেছে আর  নাগরিকদের উপর গুলিবর্ষণের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু সব স্বৈরচারই একটা বিষয়ে ভুল করে – তারা ধরেই নেয় জনগণ তাদের আজ্ঞাবহ। তারা ভুলে যায়, জনগনই সকল ক্ষমতার উত্স। যত তারাতারি শাসক্গষ্টির এই উপলব্ধি হবে, তত তারাতারি সকলের মঙ্গল।

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s