আজকে আমাদের ইতিহাসে ৭১ এর পরে সবচেয়ে ঘৃণিত হত্যাকান্ডের বিচারের রায় দেয়া হবে। বলাবাহুল্য, ৭১ এবং পিলখানা হত্যাকান্ডের বিচার বর্তমান সরকারের আমলে শুরু হলেও উভয় বিচার প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ। উভয় বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। পিলখানা হত্যাকান্ডে ভারতের যোগসাজশে সরকারদলীয় কিছু নেতার ষড়যন্ত্রে সংঘটিত হয় এ রকম জোর গুজব থাকা সত্ত্বেও তদন্তে সরকারদলীয় কথিত অভিযুক্তদেরকে তদন্ত কমিটির সামনে হাজির করতে দেয়া হয়নি। এর মাধ্যমে সরকারের জড়িত থাকার গুজবটা আরো বেশী বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। এই হত্যাকান্ডের পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সেনা অফিসারদের যে বৈঠক হয় সেখানেও অফিসাররা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গীমায় অফিসারদের যৌক্তিক প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বিষয়গুলোকে এড়িয়ে যান।
কেন?
সম্প্রতি প্রকাশ পাওয়া একটা ভিডিও ক্লীপে জনৈক বিদ্রোহীকে দেখা যায় উত্তেজিতভাবে বক্তৃতা দিতে। সে তার বক্তব্য শেষ করে জয় বাঙলা শ্লোগান দিয়ে। উইকিলিকসেও ‘র’ এর তত্ত্বাবধানে সরকারদলীয় লোকদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই হত্যাকান্ডের সম্পর্কে বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
তারপরেও ৭১ এর মানবতা বিরোধী হত্যাকান্ডের বিচারের মতো সরকারদলীয় জড়িতদের বাদ রেখে হত্যাকান্ডের বিচার করা হচ্ছে। এই বিচার যদি দ্রুত কার্যকর করা হয় তবে জাতি কোনদিনই জানতে পারবে না মূল পরিকল্পনাকারীদের কথা এবং তাদের উদ্দেশ্যের কথা। যেমন করে মিল্কী হত্যাকারীকে ক্রসফায়ারে দিয়ে দলীয় মূল হত্যা পরিকল্পনাকারীদের রেহাই দেয়া হয়েছে।
এই মামলায় বিএনপিদলীয় নেতা পিন্টুও আসামী। সালাহউদ্দিন কাদেরের রায় নিয়ে দলের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া না দেখানোটা ছিল বুদ্ধিমানের কাজ। তবে আজকে বিচারের রায়ে যদি পিন্টুকে অভিযুক্ত দেখান হয় তবে বিএনপিকে চুপ থাকলে চলবে না। তারা যদি পিন্টুর জড়িত থাকার বিষয়টি সত্য মনে করেন তবে তাকে অচিরেই বহিস্কার করতে হবে। নচেৎ এই পক্ষপাতমূলক বিচারের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান উচিত। এবং সেটা অবশ্যই যথেষ্ট তথ্য প্রমাণসহ বিশ্বাষযোগ্যভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
আমাদের জাতীয় বীরদের হত্যাকারীরা যে দলেরই হোক, তাদেরকে ক্ষমা নেই। এই হত্যাকান্ডের গুরুত্ব ৭১ এর বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এই উভয় হত্যাকান্ডই ঘটান হয় জাতি হিসেবে আমাদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেবার জন্য।
সহমত!