চেতনার বড়ি by Emrul Mahmud

Capacity আর achievement যে এক জিনিস না, তাও আবার বুজাইতে হয় চেতনাজীবীদের। দূর মিয়া, আপনাগো এই এক সমস্যা সবকিছুতেই বাম হাত না ডুকাইলে আপনাদের হয়না; বি পজিটিভ। অন্যের অর্জনকে সাধুবাদ জানাইতে শেখেন। হ ভাই লাইনে আইছেন। আমরা তো সাধুবাদ জানাতে চাই; কিন্তু ভণ্ডামি করার দরকারটা কি? আমাদের তো প্রশ্ন ওই ভণ্ডামিতে। আপনি হাফ সেঞ্চুরি করছেন ভালো কথা, বাহবা আপনার প্রাপ্যই। খেলা যেহেতু শেষ হয়নি, ওভার ও আছে; দেখেশুনে খেলতে পারলে সেঞ্চুরিও করা যাবে। হাফ সেঞ্চুরি করছেন দর্শক হাততালি দিবে; এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি হাফ সেঞ্চুরি করে যদি সেঞ্চুরি উদযাপনের ভঙ্গি করেন; তখন দর্শকরা তো ভড়কাবেই। হাফ সেঞ্চুরি কইরা যদি কোন ব্যাটসম্যান হেলমেট খুলে দুইহাতে ব্যাট আর হেলমেট উপরে উঠান আর দর্শকদের উদ্দেশ্যে ব্যাট নাচাতে নাচাতে পুরো মাঠ প্রদক্ষিণ করেন; তখন দর্শক হিসেবে আপনি কি হতভম্ব হবেননা। হতভম্ব হওয়াটাই তো স্বাভাবিক। না আপনি যেহেতু চেতনার ট্যাবলেট খেয়েছেন তাই হতভম্ব না হওয়ার ভান করছেন। অস্বাভাবিকতাই আপনার কাছে স্বাভাবিকতা। যিনি স্বাভাবিকভাবেই হতভম্ব হয়েছেন, তাকে নিয়েও আপনার তেনা প্যাঁচানো – তিনি কেন হতভম্ব হয়েছেন? চেতনার ট্যাবলেট খেয়ে এতই বিবেক হারিয়েছেন যে, প্রতিনিয়ত সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ আপনার দৃষ্টিগত হয়না। যারা কথায় কথায় সংবিধানের দোহাই দেয়, তারাই সুস্পষ্ট সংবিধান লঙ্গন করলেও আপনারা যুক্তি খুঁজে পান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, চেতনা পরিপন্থি কাজ করলেও আপনাদের দৃষ্টিগোচর হয়না। মজার ব্যাপার হোল অধিকাংশ চেতনাজীবী চেতনাটা কি তাই জানেনা। একবার এক চেতনাজীবীকে জিজ্ঞেস করলাম, সবসময় যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলস, সেই চেতনাটা কি? সে আমাকে সদউত্তর দিতে পারেনি। আমি তাকে বললাম আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত’ ভাবে কায়েম করবার জন্য। ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করণার্থে’ সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র কায়েম এটাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ১৯৭১ সালের ১০ ই এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন করা হয়েছিল। ঘোষণা করা হয়েছিল ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’/সেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে, ‘সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র’ রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হচ্ছে ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করণার্থে’/পাকিস্তান আমাদের ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার থেকে বঞ্চিত করেছিল বলেই আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা লাভ করেছিলাম। তুই আমাকে বল, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বুলি আওড়ান তারাই চেতনা পরিপন্থী কাজে বেশি লিপ্ত। সমাজের একটি অংশকে সামাজিক সুবিচার থেকে কি বঞ্চিত রাখা হচ্ছে না? সে আমাকে জবাব দিল, স্বাধীনতার পর থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত আওয়ামীলীগই একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লালন করছে এবং বাস্তবায়ন করেছে। আমি আর কথা বাড়ালাম না, শুধু বললাম গরু-ছাগলের দল যেমন জানে না তাদের যারা হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারা তাদের চারণক্ষেত্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, না কসাইখানার দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তারা কেবল চোখ বন্ধ করে যারা হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাদের ইশারায় চলতেই থাকে। তোদের অবস্থা গরু-ছাগলের মতই, চেতনার বড়ি খেয়ে তোরা বুজতেই পারছিসনা চেতনা পরিপন্থি কাজ কি?

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s