by Shafquat Rabbee Anik
দেশে-বিদেশে ক্রমেই একা হয়ে যাওয়া আওয়ামি-শাহাবাগিদের শেষ সম্বল এখন ভারত। তাদের ধারণা ভারতের মতো বিচক্ষন একটি দেশ, সকল প্রকার কমনসেন্স হারিয়ে, নিজের জিও-পলিটিকাল সিকিউরিটি বিপন্ন করে আওয়ামি-শাহাবাগিদেরকে সুপার ম্যানের মতো এযাত্রায় বাঁচিয়ে দেবে। স্বাধীনতার চেতনা বিক্রি করে খাওয়া এই আওয়ামি-শাহাবাগিরা কেন একটি বিদেশী রাস্ট্রের কাছে নিজেদের সর্বস্য বিক্রি করে দিয়ে বুভুক্ষের মতো তাকিয়ে আছে এটা নিয়ে একাডেমিক স্টাডি করা প্রয়োজন।
অনেক দুঃখ নিয়ে বলতে হচ্ছে, দেশ এখন সার্বভৌম কেবল নামকাওয়াস্তে। আমেরিকা, ভারত, আর চীনের হাতেই খেলার চাবি কাঠি।
আমেরিকানদের মতিগতি ফাইনাল বুঝা যাবে নিশা দেসাই বিশাল নামে ভারতীয় বংশদ্ভুত আমেরিকান উপ-পররাস্ট্র মন্ত্রির বাংলাদেশ সফরকালে। উনি নভেম্বর এর ১৬ তারিখে তিন দিনের সফরে বাংলাদেশ আসবেন। এটুক বলতে পারি, আমেরিকায় জন্ম নেয়া এই ভদ্র মহিলার বাবা-মা ভারতীয় বলে খুব বেশি চিন্তিত কিংবা আশান্নিত কোনটাই হবার প্রয়োজন নেই। আমেরিকান সিস্টেমে একক ব্যাক্তির সিদ্ধান্তে কোন কাজ হবে না।
মাত্র এক সপ্তাহ আগে আমেরিকা থেকে ডিপ্লমেটিক বার্তা গেছে ইন্ডিয়াতে। সেখানে বলা ছিল আমেরিকা বাংলাদেশ প্রশ্নে কোন নিরদিস্ট রাজনৈতিক দলে “ইনভেস্টেড” না। তারা শুধু মাত্র একটা সুস্থ “প্রসেসে” ইনভেস্টেড। আমেরিকান ডিপ্লমেসির এই ভাষার ট্রান্সলেশন হলো, আওয়ামি-শাহাবাগিদের বিক্রি করা চেতনা কিংবা জঙ্গিবাদের মলম আমেরিকায় এখন পর্যন্ত ভালো ভাবে বেচা বিক্রি হয় নাই। একারণে, সুস্থ প্রসেসে (অর্থাৎ ইলেকশনে) যে কেউ পাওয়ারে আসলেই আমেরিকানরা খুশি।
ভারতীয়রা খুব নগ্ন ভাবে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে এতদিন। কিন্তু এই নগ্ন সমর্থনটিকে আজীবনের পাওনা হিসেবে ধরে নিয়ে আওয়ামীরা অপচয় করেছে। এটা ভাবার কোনই কারণ নেই যে ভারতীয়রা আওয়ামী লীগের ব্যারথ রাষ্ট্র পরিচালনায় খুব খুশি। আমার ধারণা, ভারতীয়রা আওয়ামী লীগের উপর যথেষ্টই বিরক্ত। তবে তারা নিতান্তই বাংলাদেশের ভালো চেয়ে বিরক্ত কিনা তা বলতে পারবো না। তারা খুব সম্ভবত বিরক্ত তাদের নিজেদের সাজান বাগান বেকুব মালির কারণে নষ্ট হয়ে গেছে– এই কারণে।
ভারতে এখন কংগ্রেস সরকারের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। আগামি ইলেকশনে কংগ্রেসের জিতার সম্ভাবনা খুব বেশি না। ভারত ও বাংলাদেশে একই সময়ে ইলেকশন হবার কথা। একারণে ভারতের কংগ্রেস চাইছে না আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে ভরাডুবিতে পড়ুক। কারণ কংগ্রেস-আওয়ামি প্রেমের গল্প বাংলাদেশ ও ভারতে এক যোগে প্রচারিত। আওয়ামী লীগের ভরাডুবি একারণেই ভারতীয় নির্বাচনে কংগ্রেসকে বেকায়দায় ফেলবে। কিন্তু তার মানে এও না যে ভারতীয় প্রফেসনাল আমলারা সারা জীবন কংগ্রেস ও আওয়ামী লিগের ব্যারথতার বোঝা বহন করবেন। একারণে ধারণা করা যেতে পারে, যেকোন সময় কংগ্রেস ও আওয়ামী লীগ বিমুখ হয়ে যাবে ভারতীয় আমলাযন্ত্র। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় আমলারা, যেকোন একটা তরিকা বেড় করে তাদের বাগান রক্ষা করতে সচেষ্ট হবেন অচিরেই। প্রথম আলো , ডেইলি স্টারের মতো ভারতীয় পত্রিকার জরিপ ও সাম্প্রতিক লেখালিখির মতিগতি এ ধারনাই দেয়। এই পুরো ঘটনায় বিএনপির লাভ হবে কিনা জানি না, তবে এটা নিশ্চিত, আওয়ামী-শাহাবাগিদের লাভ হবে না এযাত্রায়।
ইদানিং একটা শঙ্কা খুবই প্রচলিত। অনেকেই বলছেন ভারতের চাপে আমেরিকা মাথা নোয়াবে। এই শঙ্কা আমি মানতে রাজী না। আমার জীবনে আমি অসংখ্য ইন্ডিয়ান দেখেছি আর আমেরিকান দেখেছি। আমার জীবনে আমি কোনদিন কোন ইন্ডিয়ানকে আমেরিকান তো দুরের কথা, সাদা চামড়ার কোন মানুষকেই ডমিনেট করতে দেখিনি। এরোগেন্স এর খেলায় ভারতীয়রা এখনও নতুন। আরও কিছু দিন সময় লাগবে তাদের এরোগেন্ট হতে। একারণে, বিদেশি-বিদেশির মারামারিতে, আমেরিকা ও পশ্চিমা শক্তি যা চাইবে, তাই হবে। এটাই ফাইনাল কথা।
আপাতত এটুকুই। ইনশা আল্লাহ আগামি কিছু দিনের মধ্যে সব কিছু আরও ক্লিয়ার হয়ে যাবে। তবে এটুক নিশ্চিত, আওয়ামী-শাহাবাগিদের হারতে হবেই। ইট ইজ নট এ কয়েশ্চেন অফ ইফ, ইট ইজ নাও এ কয়েশ্চেন অফ হয়েন।
নভেম্বর ১৫, ২০১৩