আপনি কি খেয়াল করেছেন যতবারই বাসের আগুনে মানুষ পুড়ে ততবারই জনবিছিন্ন আওয়ামীলিগ যেনো নয়াজীবন পায়? দেশের ৯০% মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করে একদলীয় নির্বাচন করার সিদ্ধ্বান্ত থেকে সরে না আসার জন্য যখন দেশের আপামর জনগণ শেখহাসিনার বেহায়াপনায় বিরক্ত, ঠিক সে সময় কিছু দিন পর পর বাসে আগুন ধরিয়ে সাধারণ মানুষ পুড়িয়ে কার রাজনৈতিক লাভ হয় বলেনতো ? বিএনপি তো সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার আদায়ের লড়াই করছে, তারা কেনো মানুষ পুড়িয়ে মারবে? একটু ভেবে দেখেন যখনি বাস ভর্তি সাধারণ মানুষ পুড়িয়ে মারা হয় তখনই আওয়ামীলীগের দালালরা নড়ে চড়ে বসে। পোড়া মানুষগুলো যেন তাদের নতুন জীবনীশক্তি দান করে। পোড়া দেহ গুলোর ছবিগুলো ফেসবুকে একের পর এক পোস্ট করে আওয়ামিলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠন প্রচার শুরু করে এই বলে যে ‘দেখেন বিএনপির নেত্রীতাধীন ১৮ দল কত খারাপ। এরা মানুষ পুড়িয়ে মারে।’ দালাল মিডিয়াগুলাও কোনো প্রমান ছাড়া একই সুরে তাল মিলায়। এর পরে চলে মামলা এবং ধরপাকড়। গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির নেতাদের। এই প্যাটার্নটা এখন খুবই স্পস্ট। এখন বলাই যায় আওয়ামিলীগ তিনটি কারণে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা হতে পারে । ১ নম্বর কারণ হচ্ছে বিরোধী দলের আন্দোলনের বিরুদ্ধে জনমত তৈরী করা। কারণ এই সরকারের আমলে সীমাহীন দুর্নীতি, অত্যাচার ও লাশের সারি দেখতে দেখতে মানুষ এখন আওয়ামীলীগের উপর বিরক্ত। আওয়ামীলীগের জনসমর্থন শুন্যের কোঠায়। মানুষ পুড়িয়ে মেরে মানুষের পোড়া লাশের গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে বিএনপির উপর দোষ চাপিয়ে আওয়ামিলীগ তার হারানো জনসমর্থন আদায়ের অসুস্থ খেলায় মেতে উঠেছে। ২ নম্বর কারণ হচ্ছে অহেতুক সাধারণ মানুষদের পুড়িয়ে তাদের মেরে ফেলে আওয়ামীলিগ চায় বিরোধীদলের আন্দোলন দমন করতে। এজন্যই তারা কোনো রকম তদন্ত ছাড়া বাসে মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনায় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ৩ নম্বর কারণ হচ্ছে এরকম হৃদয়বিদারক ও নির্মম হত্যাকান্ড ঘটিয়ে আওয়ামীলীগ চায় বিরোধীদলের তত্তাবধায়ক সরকারের যে নায্য দাবী তা থেকে মানুষের মনোযোগ সরিয়ে ফেলতে। কথাগুলোর যৌক্তিকতা একটু ভেবে দেখবেন। পোড়া মানুষের গন্ধে হতবিহব্বল আপনি আমি হতেই পারি, তাদের কষ্টে আমাদের দু-চোখ জলে ভিজে যেতেই পারে , গলা ফাটিয়ে অসহায়ত্তের কান্নায় আমরা ভেঙ্গে পরতেই পারি। কিন্তু আমাদের যৌক্তিক বিচার বুদ্ধি রাখাটা এই সময় সবচেয়ে জরুরী। কারণ এখন একটি পক্ষ যেকোনো মূল্যে ক্ষমতার গদি আকড়ে পড়ে থাকতে চাচ্ছে। মনে রাখবেন কথাটা হচ্ছে —–যে কোনো মূল্যে। তা আপনের আমার পোড়া দেহের মূল্যে হলেও।
স্বৈরাচারি শাসকের বিরুদ্ধে লড়ঽ জনগণ ৯১ থেকে করে আসছে ৷ কিনতু জীবন, মৃত্যু, মা, বাবা, ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী, স্বামী, প্রিয়, প্রিয়তমা, বন্ধুর আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা বেকুব জনগণ কি পেলাম ? নির্বাচিত স্বৈরাতন্ত্র ! কেউ আমাদের দিনবদলের ‘সনদ’ দেয়, আবার কেউ ‘রূপকল্প’ -এর মায়াবী ফানুস দেখায় ৷ আসলে এটা বিএনপি র একার লড়াই ৷ ক্ষমতায় গিয়ে যখন অতি আরামে মাখন রুটি খাবে, আমরা বেকুব জনগণ তখন আনেক কষ্টে হয়ত ডালভাত খাব ৷ বিএনপি যখন ক্ষমতায় গিয়ে কোটি টাকার টেক্সফ্রি গড়িতে এসি চালিয়ে ঘুরবে, আমরা বেকুব জনগণ তখন বাসের হাতল ধরে বান্দরের মত ঝুলব আর পাছায় গুত খাব ৷ আর তখনকার বিরোধীদল আমাদেরকে বাসের ভিতর পুড়িয়ে মারবে ক্ষমতা দখলের খেলায় (উল্ট বলবে সরকারি দলের কাজ বিরোধীদলকে অপ্রিয় করার জন্য) ৷ মাখন রুটি যখন খাবে তখন একটু জেলের ভাত ও খেয়ে দেখুক, তাহলে মাখন রুটির আসল মজা পাবে ৷ আমরা বেকুব জনগণ এখন পুড়ে মরছি তখনো মরব ৷ অনেক হয়েছে, আমাদের আর স্বৈরাচার শাসকের বিরুদ্ধে লড়তে ডেকোনা বন্ধু ৷