by Emrul Mahmud
কথা হচ্ছিল এক সুশীল ভাবাপন্ন লোকের সাথে যিনি নিজেকে ম্যাংগো পিপল বলে দাবী করেন(আদতে ঘাপটি মারা আওয়ামীলীগ )। উনি মহা বিরক্ত হয়ে বলছিলেন যত কষ্ট আমাদের ম্যাংগো পিপলের, খালেদা জিয়া দেশটারে শেষ কইরা ফেলছে।
আমি বললাম ভাই ক্রাইসিস তৈরি করল হাসিনা আর আপনে দোষ দিচ্ছেন খালেদাকে, ব্যাপার কি?
খালেদারে দোষ দিবনা তো হাসিনারে দিব, হাসিনাকি অবরোধ দিছে?
আমি বললাম, অবরোধ সৃষ্টির কারণটা কে তৈরি করেছে?
উনার উত্তর খালেদা। হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হইয়াও তারে ফোন দিছিল সমযতার জন্য কিন্তু খালেদা তার জবাবে সাড়া দেয়নি। সে ওই সময় সমযতায় আসলেই তো ল্যাঠা চুকে যেত।
আমি বললাম, ভাই চমৎকার আপনার ব্যাখ্যা! ক্রিকেট খেলা তো দেখছেন? খেলায় আম্পায়ার যে থাকে সে কিন্তু কোন দলের প্লেয়ার না। সে তৃতীয় আরেকজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি। মনে করেন বাংলাদেশ আর ভারত ক্রিকেট খেলা হবে; এখন ভারত খেলার নিয়ম পরিবর্তন করে বলল খেলার আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন ভারতের অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধনি। বাংলাদেশ বলল না আমরা নিরপেক্ষ আম্পায়ার চাই। ভারত বলল আচ্ছা তোমাদের থার্ড আম্পায়ার পদটা দেয়া হবে। বাংলাদেশ বলল না আমরা নিরপেক্ষ আম্পায়ার চাই। নিরপেক্ষ আম্পায়ার না হলে আমরা খেলব না। ভারত বলল ঠিক আছে দাদা খেইল না। আমরা ওয়াকওভার পাইয়া এমনেই জিতে যাব। এখন আপনি যদি বলেন ভারত এত শক্তিদর হয়েও বাংলাদেশকে থার্ড আম্পায়ার পদটা দিতে চাইছে আর বাংলাদেশ সেটা নিল না। কত বড় স্পর্ধা! খেলা কেন্দ্রিক যে সংকট তৈরি হোল তার জন্য বাংলাদেশই দায়ী তাহলে আপনার মানসিক সুস্থতা নিয়ে যে কেউই প্রশ্ন তুলবে। নিয়ম পরিবর্তন করে সংকট তৈরি করল ভারত আর আপনি দুষছেন বাংলাদেশকে। বাংলাদেশতো বলে নি যে খেলার আম্পায়ার মুশফিকুর রহিম কে দিতে হবে। বাংলাদেশের দাবি হোল নিরপেক্ষ আম্পায়ার এর অধীনে খেলা অনুষ্ঠিত হতে হবে, নয়তো এ খেলা হবেনা।
এবার আসি খালেদা-হাসিনার ফোনালাপ প্রসঙ্গে। আপনারা খুব সুকৌশলেই বলেন খালেদা, হাসিনার ফোনের সময় যদি আলোচনায় আসতেন তাহলে এত সংকট হতো না। অথচ খালেদা জিয়া ফোনে স্পষ্টই বলেছিলেন – “আপনি কি র্নিদলীয় সরকার নিয়ে আলাপ করার জন্য আমাকে ডেকেছেন ? যদি এটি নিয়ে ডাকেন তাহলে আমি আসব। র্নিদলীয় সরকারের দাবি আমার একার না। এটা দেশের সব মানুষের দাবি। এখনো যদি নীতিগতভাবে র্নিদলীয় সরকারের দাবি মেনে নেন, তাহলে হরতালসহ সব কর্মসূচি বন্ধ করার দায়িত্ব আমি নেবো। সমাধান হয়ে গেলে তো আর কোন কর্মসূচির দরকার হবে না। এখানে চিন্তার কিছু নেই। আপনি দাবি মেনে নিন। দেশের মানুষকে শান্তি দিন। এই দেশটা আপনারও না, আমারও না, ১৬ কোটি মানুষের। তাদের শান্তির কথা, স্বার্থের কথা চিন্তা করেন। আমি তো সেসময়ে আপনার দাবি মেনে ছিলাম। আমি তো এখন আমার দলের সরকার চাই না। আমার নিজের সরকারও চাই না। চাই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্দলীয় লোকদের সরকার। সেটা মানতে আপনার আপত্তি কেন বুঝতে পারছি না”।
ফোনালাপ যে আওয়ামীলীগের কৌশলই ছিল তা তারা ফোনালাপ প্রকাশের মাধ্যমেই বুজিয়ে দিয়েছে। পরবর্তী গোঁয়ার্তুমিগুলো সকলেরই জানা। মন্ত্রীদের পদত্যাগের নাটক, সর্বদলীয় সরকারের নামে মহাজোটীয় সরকার গঠন নাটক। আওয়ামীলীগের কৌশলই হচ্ছে যে কোন উপায়ে বিএনপিকে নির্বাচনের বাহিরে রাখা। আপনি যে আওয়ামীলীগকে উদার বলছেন; তারা দেখতে পাচ্ছে প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে আসছে না তারপরও তারা নির্বাচন করবেই বলে গোঁ ধরে আছে, এর থেকে নির্লজ্জ গোঁয়ার্তুমি আর কি হতে পারে। এরশাদ বলল সে নির্বাচনে যাবেনা, তারপরও আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ বলেছেন “এরশাদ সাময়িক মনবঞ্চনা থেকে এই ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি আবার নির্বাচনে ফিরে আসবেন” এরশাদ যখন বলল তাকে জোর করা হলে সে আত্মহত্যা করবে, তখন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ বলেছেন “নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে যা যা করার সবই করা হবে”/ তারমানে এরশাদকে জোর করে হলেও নির্বাচনে আনা হবে অথবা বহু মানুষ মেরে হলেও তারা ক্ষমতায় থাকবে।
উনারা খুবই বুদ্ধিমান! উনারা ভাবছেন সাধারন মানুষ উনাদের এই ছ্যাঁচড়ামো বুজতেছেনা। দূর! আমি যে কি বলছি? উনারা তো মানুষের মতের তোয়াক্কা করছেন না। উনারা মানুষের মতের তোয়াক্কা করলে, সংবিধান থেকে গণভোটের প্রথা তুলে দিতেন না। উনারা জনগণের ভোটে নয় বন্দুকের নলের উপর ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছেন। উনাদের নিকট গণতন্ত্র হল গভর্নমেন্ট অফ দ্যা ভারত, বাই দ্যা পুলিশ, ফর দ্যা আওয়ামীলীগ।
আমার মাথায় আসছে না, আওয়ামীলীগের এতো গোঁয়ার্তুমির পরও কিছু মানুষ তাদের অযুক্তিক দাবির যুক্তিকতা খুঁজে পান কেন? এরা কি ম্যাংগো পিপল নাকি আওয়ামীলীগ?
Reblogged this on Emrul Mahmud.