খোমেনী এহসান/অতিথি লেখক :
ভোট ছাড়াই বিজয়ী হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। হাস্যকর লাগছে অনেকের কাছে। ইতিহাসের নজির খুঁজে না পাওয়ার চমকে যাচ্ছেন।কিন্তু কিছুই হাস্যকর নয়। পথই আজ পথিককে টেনে নিচ্ছে শুয়রের খোয়ারের দিকে। তবে যারা আজো অন্ধ তাদের কাছে আইনী উছিলা আর চেতনা সংক্রান্তির অযুহাত আছে।
সবাইকে বলি বিপদে আপনারা নাই। বিপদ শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের। তিনি ফ্যাসিবাদ নামক এমন এক পথে হাটছেন যে গন্তব্য নির্দিষ্ট হয়ে গেছে। সময় এখন আর বাকি নাই। ফিরতে চাইলেও আর পারবেন না। তার থেকেও অনেক বেশি দেশপ্রেমিক ছিলেন মীর কাশিম। বেচারি ইংরেজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে গিয়ে নিহত হলেন, তবুও ফিরতে পারলেন না। ফেরাতে পারলেন না দেশের স্বাধীনতা। শেখ হাসিনা তার দেশপ্রেমের তুলনায় অনেক পেছনের মানুষ। কাজেই তিনি আর পারবেন না।
যেহেতু শেখ হাসিনার পথ ফ্যাসিবাদ কায়েম করা সেহেতু ভোট ছাড়া এমপি বানানোর মতো হাস্যকর কাজ করেই থেমে থাকবেন না। এক সময় তিনি বলতে বাধ্য হবেন যে দেশটা শুধুই তার ও তার দলের। কাজেই তিনি অন্যদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করবেন। এটা নির্মূল ও পালাতে বাধ্য করার মাধ্যমেই তিনি করবেন। এক সময় তিনি নিজেকে আমৃত্যু প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করবেন। বলবেন তার মৃত্যুর পর বংশানুক্রমিকভাবে তার সন্তান-নাতিন-পুতিনরা প্রধানমন্ত্রী হবেন।
ফ্যাসিবাদ সম্পর্কে যতদূর জেনেছি তাতে এটা পষ্ট ভিন্নমত দমনে নিয়ন্ত্রণ আরো পাকাপোক্ত হবে। সক্ষম লোকেরা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থী হতে বিদেশে চলে যাবে। অক্ষম ও বীর লোকেরা জেলে পঁচবে বা গুম হবে।জামায়াতে ইসলামীকে সন্ত্রাসবাদী দল আখ্যা দিয়ে অবশ্যই নিষিদ্ধ করা হবে। এ দলটির সাথে জড়িত বা এ দলটির ভাবাদর্শ সমর্থন করে এই অভিযোগে একে একে দখল করা হবে সব ব্যাংক-বীমা-ব্যবসায়-শিক্ষা-চিকিৎসা-পরিবহন-রিয়েলস্টেট সহ সব প্রতিষ্ঠান। এ দলটি নিজের বিপদকে কাটিয়ে ওঠার মতো কোনো কাজ করতে জানে না। তাই যত বিপদ আসবে ততোবেশি তাকে সন্ত্রাসবাদের তকমা ধারণ করতে হবে।
বিএনপিকে নিজের মতো গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগ চেষ্টা করবে। যতখানি পারবে, ততখানি ছাড়। না পারার ব্যাপারগুলানে মুগুর পেটা। ধারণা করা যায় বিএনপি নিষিদ্ধ হবে না। তবে খালেদা জিয়াকে মওলানা ভাসানীর মতো পরিণতি বরণ করতে বাধ্য করা হবে। খালেদা জিয়া ঠিকই শেখ হাসিনাকে ছাপিয়ে রাজনীতির প্রধান চরিত্র হয়ে থাকবেন, কিন্তু তার দল বিএনপির অবস্থা ভাসানী ন্যাপের মতো।যতদিন যাবে ফ্যাসিবাদের সব ধরনের অভিযান পরিচালনা করতে বাধ্য হবেন শেখ হাসিনা। তিনি থামতে চাইলেও পারবেননা। পথ তাকে অনেক অনেক দূর হাটতে বাধ্য করবে। একটা পর্যায়ে এই পথের সীমাহীনতার কারণে তিনি ক্লান্ত হবেন এবং অক্ষমতার কারণে ক্ষান্ত হবেন। সেই দিন নিকট ভবিষ্যত নয় নিশ্চয়। অনেক অনেক বছর হয়তো।
যদিও সেনাবাহিনী নিয়ে অনেকেই সাত আসমানব্যাপী আশাবাদী। কিন্তু যা কিছু পরিস্থিতি শেখ হাসিনা তৈরি করে যাবেন তাতে করে এদেশের ইসলামপন্থীরা স্বশস্ত্র আল কায়েদা না হলেও একই ধরনের দমনাভিযান মোকাবেলা করতে হবে। কারণ সোজা। এদেশে ককটেল বিস্ফোরণকে টুইন টাওয়ারে হামলা, সহিংসতাকে জঙ্গীবাদ ও ইসলামপন্থীদের পাদকে পারমানবিক বোম বিস্ফারণ হিসেবে আখ্যা দেওয়ার মতো দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্য গণমাধ্যমের কোনো অভাব নাই।আর উর্বর মস্তিস্কগুলান নিত্যনতুন জঙ্গী সংগঠন আবিষ্কার ও তার সাথে জামায়াত-শিবিরের সম্পৃক্ততার গল্পগুলান সরবরাহ করতেই থাকবে।কাজেই গণমাধ্যমে চাপে হলেও সেনাবাহিনীকে দমনাভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ আধুনিক বিশেষ সেনাশাসনে মিডিয়ার সহযোগিতা অপরিহার্য। আর অপরিহার্যতার মধ্যে বিনিময়ের সম্পর্ক থাকাই স্বাভাবিক। রাম লীলাকে চায়, লীলা কী চায়?
আর আমরা এটা বলতে পারি না যে, জামায়াত-শিবিরের দুর্দশাকে পুঁজি করে এখানে সক্রিয় জঙ্গী সংগঠন বা বিদেশী এজেন্সির পকেটগুলান সন্ত্রাসবাদী তৎপরতার নজির কায়েম করতে চেষ্টা করবে কি না। পরিস্থিতি যা তাতে এমনটি হয়। যাতে আবার রাষ্ট্রযন্ত্রের কোনো হাত নাও থাকতে পারে। তখন বাধ্য হয়ে রাষ্ট্রকে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে হয়। ব্যবস্থা বেশির সময়েই কিন্তু ঠিক ঠিক তদন্ত দিয়ে নির্ধারিত হয় না। বেশির ভাগ সময়েই কিন্তু তারা জঙ্গীদের বা এজেন্সির শর্তই পূরণ করে দেয়।তারানকো কিন্তু তার ক্ষয়িষ্ণু প্রতিষ্ঠানটির লোকেদের জন্য নতুন চাকরির ক্ষেত্রটা যাচাই করতে এসেছিলেন। শান্তিরক্ষী মিশনে কিন্তু বাংলাদেশের সেনাবাহিনীও চাকরি করে। কাজেই দেশে বসেই রেমিট্যান্স কামাই হচ্ছে দেখে এ নিয়ে খুশিতে গদগদ হতে লোকের অভাব হবেনা। এনজিও গুলানও তো অনেক প্রজেক্ট পাচ্ছে। টিভিগুলানকে সিসারা দেশে সিসিটিভি বসানোর ফান্ড, হেলিকপ্টার, গাড়িঘোড়া দেয়া হবে। মন্দ কি?