By শাফকাত রাব্বী অনীকঃ আজকের ভারতীয় মিডিয়া পড়লে মনে হবে যে কোন কারণ ছাড়াই আমেরিকানরা ভারতীয় নারী কূটনীতিকদের ধরে উলঙ্গ করে ছেড়ে দিচ্ছে নিউ ইয়র্ক শহরে। আর একারণেই প্রতিবাদে ফেটে পরেছে ভারতীয় মিডিয়া। দেশপ্রেমের উন্মাদনায় ঝাপিয়ে পরেছে নব্য ডলারের স্বাদ পাওয়া ভারতীয় মিডলক্লাস। আর পাশে দাড়িয়ে তালি বাজাচ্ছে খোলা আকাশে বড় কাজ সাড়া দলিত-ক্লাস। এই ঘটনাকে বাংলাদেশের অনেকে ভারতীয়দের দেশপ্রেমের অনন্য উদাহরণ ভেবে রোমান্টিকতায় ভুগছেন।
মূল ঘটনা কি হয়েছিল বলছি। ভারতের ৩৯ বছরের মহিলা ডেপুটি কনসাল জেনেরাল দেবযানী খোবরাগাডেকে নিউ ইয়র্কের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে। ভদ্রমহিলা ভারত থেকে কাজের মহিলা এনেছিলেন ভিসার মাধ্যমে। ভিসার এপ্লিকেশনে উল্লেখ করেছিলেন ঘন্টায় ৯ ডলার ৭৫ সেন্ট বেতন দিবেন। নিউ ইয়র্কে বৈধ ভাবে কাউকে ৭ ডলার ৫০ সেন্ট এর নিচে বেতন দেয়া যায় না। ঘটনাক্রমে আমেরিকানরা জেনে গিয়েছিল যে কাজের মহিলাকে ঘন্টায় মাত্র ৩ ডলার বেতন দিচ্ছেন দেবযানী। ব্যাস, নিউ ইয়র্ক পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিল দেবযানীকে।
আমেরিকান থানা হেফাজতে ঢুকানোর আগে উলঙ্গ করে শরীর চেক করা হয়। শরীরের কোন বিশেষ গহবরে টাকা-পয়সা, ছোট্ট চাকু, বিষ, ড্রাগস ইত্যাদি লুকানো আছে কিনা তা দেখার জন্যেই মনে হয় এমন স্ট্রিপ সার্চ করা হয়। একে বেশ ডিটেইল চেক-আপ বলা যেতে পারে। দেবযানী ভদ্রমহিলাকেও ঠিক এভাবেই চেক-আপ করা হয়েছিল বলে ধারণা করা যায়। ভদ্রমহিলাকে যে থানা হাজতে রাখা হয়েছিল সেখানে রুমমেট হিসেবে উনি পেয়েছিলেন ড্রাগস ও পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত আরো কিছু ভদ্র মহিলাকে। নিউ ইয়র্কের প্রেক্ষাপটে এটাও কোন অস্বাভাবিক ঘটনা না।
দেবযানী বিষয়ক উপরোক্ত খবর ভারতীয়দের জানানোর সময় ভারতের মিডিয়া বেশ চালাকি করেছে। কি কারণে ভদ্রমহিলাকে হাজতে নেয়া হয়েছিল তা আড়াল করে, কেন তাকে উলঙ্গ করে চেক করা হয়েছে এবং কেন পতিতার সাথে একই হাজতে রাখা হয়েছে তা নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে। উলঙ্গপনা ও পতিতাবৃত্তি — এই দুটো বিষয় ভারতীয়দের বেশ টাচ করে।
তবে একটা বিষয়ে আমি ভারতীয়দের সাথে একমত। এই পুরো ঘটনায় দেবযানীকে আমেরিকানরা ডিপ্লোম্যাট হিসেবে একটু খাতির করলেই পারতো । তার অপরাধ যাই হোক না কেন। বিশেষ কোন একটা কারণে আমেরিকানরা তাকে ডিপ্লম্যাটের সুযোগ-সুবিধা দেন নাই। এটা ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির জন্যে একটা চাঞ্চল্যকর এবং আশংকাজনক বিষয়। কেন এমনটা হলো তা এখনই নিশ্চিত হয়ে বলা যাবে না।
ইদানিংকালে বেশ কিছু বিষয়ে ভারতের সাথে আমেরিকানদের ডিপ্লোম্যাটিক সম্পর্ক শীতল হয়ে উঠছিল। ভারতের জন্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইস্যু আছে। সর্বাধিক গুরুত্বের দিক থেকে চিন্তা করলে, চীন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মায়ানমার বিষয়ক ইস্যু তে আমেরিকার সাথে ভারতীয়রা দরকষা কষি করে। এর মধ্যে কোন কোন ইস্যুতে ভারত বর্তমানে আমেরিকা ও আন্তর্জাতিক কমিউনিটির বেপরোয়া বিরোধিতা শুরু করেছে।
ভারতের রাজনীতিতে এখনো আমেরিকা বিরোধী মনোভাব ভোটের সংখ্যা বাড়ায়। সামনে ভারতে নির্বাচন। ঐতিহাসিক ভাবে আমেরিকা-বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেস এখন ক্ষমতায়। তাদের রাজনৈতিক অবস্থা আমাদের শেখ হাসিনার চাইতে একটু ভালো। তবে খুব বেশি ভালো না। অর্থাৎ কংগ্রেসের আবার ভোটে জিতার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। একারণে যে কোন উছিলায় এন্টি-আমেরিকান মনোভাব দেখিয়ে ভোট বাড়ানোর চেষ্ঠা করে থাকতে পারে নোংরা-রাজনীতির জন্যে বিখ্যাত কংগ্রেস পার্টী। আর কংগ্রেস যদি আমেরিকার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে, তাহলে হিন্দু-মৌলবাদী বিজেপি নিজেদের আমেরিকা-পন্থী মনোভাব ঢাকতে কংগ্রেসকেই ফলো করবে, এটাই স্বাভাবিক।
ভারতীয়রা অতি উৎসাহী হয়ে বেশ কিছু এন্টি-আমেরিকান কান্ড ঘটিয়েছে। তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্ব সম্পূর্ণ কয়েকজন আমেরিকান কংগ্রেসম্যান এই মুহূর্তে ভারত সফরে আছেন। ভারতের শীর্ষ নেতা-নেত্রিরা এদের সাথে দেখা করেননি। ভবিষ্যতের সম্ভাব্য দুই প্রধান মন্ত্রী রাহুল গান্ধী এবং নরেন্দ্র মোদী উভয়েই একই কাজ করেছেন। এই প্রতিবাদটা যদিও বেশ ভদ্র প্রতিবাদ। ভারতীয়রা এখানে থামলেই ভালো করতো। কিন্তু তা না করে, ভারতীয়রা আরও কিছু বাড়াবাড়ি প্রতিবাদ করেছে। আমেরিকানদের কাজের লোকের বেতনের রিসিট তলব করেছে, মদ ও বিলাসী পন্য আমদানির ক্ষমতা বিলোপ করেছে, আইডী কার্ড কেড়ে নিয়েছে, আমেরিকান স্কুলের টিচারদের বেতন ও ট্যাক্স নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করেছে। এগুলোকে আপাতত দৃষ্টিতে খুব বাহবা দেবার মতো প্রতিবাদ মনে হলেও, ভারতের অর্থনীতির আমেরিকা নির্ভরতা বিচার করলে এগুলো আসলে নির্বোধের প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছু না। ভারত সব চাইতে বাড়াবাড়ি করেছে আমেরিকান এম্বাসির নিরাপত্তা ব্যাবস্থা শিথিল করে দিয়ে। এটা মারাত্মক রকমের একটা বেয়ারা আচরন। বিদেশী অতিথির নিরাপত্তা প্রত্যাহার খুবই নিচু শ্রেণীর মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।
এতো হম্বি তম্বি করার সময় ভারত হয়তো ভুলে যাচ্ছে যে তারা কিন্তু চীন না। ভারতের হাজার হাজার আইটি কর্মী তীর্থের কাকের মতো আমেরিকায় কাজের প্রত্যাশায় এখনও বসে থাকে। ভারতের কয়েকটা প্রদেশের দু’বেলার খাদ্য জোটে আমেরিকানদের সাথে টেলিফোনে কথা বলে। আমেরিকান বিলাসী প্রেমিকা কিংবা স্ত্রীরা তাদের প্রিয় পুরুষের বীর্য শিশিতে করে ভারতে পাঠিয়ে দেন। তারপরে ভারতীয় মহিলারা সেই বীর্য তাদের শরীরে ভরে ১০ মাস ১০ দিনের ডেলিভারি সারভিস দেন। এর নাম ম্যাটারনিটি আউট সরসিং। ভারতের অনেক হিট সিনেমার শুটিং আমেরিকায় করার জন্যে বাইজীর বহর নিয়ে ভারতীয়রা আমেরিকায় যায়।
আমেরিকা নির্ভরতার উপরের উদাহরনের আলোকে বলা যায়, ভারতীয়দেড় মাত্রাতিরিক্ত রিয়াকশোন দেখানোর ফলাফল হবে খুবই সিম্পল। চিরাচরিত ভারতীয় কায়দায়, ভারতের কোন শিংকে আমেরিকা এসে আমেরিকান কারো কাছে মাফ চেয়ে যেতে হবে খুব শিঘ্রই। এটাই হলো বাস্তবতা। একারণে খামাখা এতোটা হম্বি তম্বি না করলেই পারতো ভারত।
পরিমিতিবোধ জিনিসটি ভারতীয়দের শুধু টাকাকড়ি বিষয়ক কিপ্টামিতেই সীমাবদ্ধ। বোঝা যাচ্ছে ভারতীয় সিনেমার মতোই ভারতীয় ডিপ্লমেসিতেও পরিমিতি বোধের অভাব প্রকোট। প্রতিহিংসাপরায়নতাও ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের মতো তাদের ডিপ্লোম্যাসিতে ঢুকে পড়েছে। বাংলাদেশিরা এই বিষয় গুলো বেশ ভালোই জানেন। এখন আমেরিকানরাও জানলো। ঘটনার টাইমিং এবং প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব ফেললেও অবাক হবো না।
আমিও বুঝি নাই এই মহিলা যদি তার কাজের লোক কে কম বেতন দেয় তার জন্য কি অন্য কোন ব্যবস্থা নেয়া যেত না? তারে ধরে নিয়ে ন্যাংটা করে তার “…… ” হাতানোর মানে কি? আসল কাহিনী হয়ত আরো লম্বা যা মিডিয়ায় এখনো আসে নাই।
হাউডি রেন্ডিয়া……………।
হোয়াজ্জাপ………….।
মনে পড়ে সেই জানুয়ারি। মনে পড়ে বাংলাদেশী বালিকা ফেলানির কথা??
তোমরা তো অমানুষ পাষণ্ড, মনে না থাকারই কথা।
আমরা কিন্তু ভুলি নাই।
সেই ভোরের আলোয় কোনো পাখি ডানা মেলার আগেই হাওয়ায় মিলিয়েছিলো একটি প্রাণ।
অসহায় বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানির দেহটা গুলিতে গুলিতে ঝাঁঝলা করেছিলো তোমাদের সীমান্ত পাষণ্ড নরপিশাচ বি.এস.এফ এর কুলাঙ্গাররা।
কিন্তু তখন আমরা কেবল অশ্রুজলে ভেসেছি, ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে প্রতিবাদ করেছি, তোমরা তখনো ছিলে নীরব। কিন্তু আজ সময় পাল্টেছে।…
বুঝলা মিয়া তোমাদেরও দিন আসছে। নাইলে আমেরিকাতে যখন তোমাদের নারী কূটনীতিবিদ দেবযানী খোবরাগাড়ের স্ট্রিপ সার্চ হয় নাকি ?
তখন আমরা হয়তো তোমাদের মতো হায়েনার অট্টহাঁসি দিতেপারি নাই।
আমরা জানি দেবযানী একজন নারী।
কিন্তু আবার নতুন করে দীর্ঘশ্বাস ফেলি।
হায়!! ফেলানির অতৃপ্ত আত্মার অভিশাপে এভাবে দগ্ধ হলো আরেকটি নারীর জীবন।
কিন্তু তোমরা এবার নড়ে চড়ে বসেছো তলব করেছো মার্কিন কূটনীতিকদের।
কেনো বাপু ? কেনো করছো এমন ?
এবার প্রশ্ন রেখে যাই ফেলানি হত্যাকাণ্ডের পর ভারতীয় দূতাবাসের কাউকে তলব দূরে থাক প্রশ্নটি মাত্র করেছিলো আমাদের তৎকালীন সরকার। না করেনি ?
কিন্তু কেনো ? এই রকম হাজারো কেনোর কোনো উত্তর নেই।
তবে এই পোস্টে কিছু উত্তর পাবেন..।
আরো কিছু তথ্য..
http://www.prothom-alo.com/international/article/103000/%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7%E0%A7%87_%E0%A6%9C%E0%A6%A8_%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B0_%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%83%E0%A6%96_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B6
It’s very needed for them.