খোমেনী ইহসান:
‘তোমরা যারা বিএনপি করো’ শিরোনামে ব্রাদার মনোয়ার রুবেল অনলাইন দৈনিক ‘বাংলানিউজ২৪ ডটকম’ এ একখান প্রচারণাপত্র লিখেছেন। মনোয়ার তার এই লেখায় অনেকখানি চক্রান্ত বিদ্যা চর্চা করেছেন। যা এই কারণেই হাস্যকর হয়েছে যে, বিএনপির লোকেরা তার কোনো কথাই গ্রহণ করবে না। মনোয়ার একবুক বিএনপি বিদ্বেষকে গোপন করে বিএনপি দরদী সাজলেও দলটির নেতাকর্মীদের আবেগানুভূতির প্রতি সামান্যতম সংহতিও দৃশ্যমান করতে পারেননি। বরং তিনি বিএনপির লোকেদের সাথে জামায়াতে ইসলামীর লোকদের রাজনৈতিক ফারাক সূচিত করতে গিয়ে অসম্মান ও বিদ্বেষই জারি রেখেছেন।
খেয়াল করে দেখি মনোয়ার কী করছেন। তিনি লিখেছেন, ‘তোমরা বিএনপি/ছাত্রদল করো তারা হয়তো একটি জিনিস নিশ্চয়ই জানো, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের একটি দল। শহীদ জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা। জিয়াউর রহমানের বীরত্বগাথা যুদ্ধের কাহিনী স্কুলগুলোতে পড়ানো হয়।’ মনোয়ার চালাকি করে সম্মান দেখানোর নামে জিয়াউর রহমানের প্রতি তাদের বিদ্বেষকে ঠিকই জারি রেখেছেন। কারণ যারা জিয়া বিদ্বেষী তারা তাকে শুধু মুক্তিযোদ্ধা মনে করে। বিদ্বেষের মধ্যে একটু উদারতা দেখাতে গিয়ে তারা কষ্ট করে স্বীকার করে যে জিয়া মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। কিন্তু জিয়া শুধুই মুক্তিযোদ্ধা বা সেক্টর কমাণ্ডার নন। জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক। তার ঘোষণার মাধ্যমেই মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরু করলে আওয়ামী লীগের নেতারা পালিয়ে যান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানী হানাদারদের তত্ত্বাবধানে গ্রেফতার বরণ করেন। অপারেশন সার্চ লাইটের তাণ্ডবে তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন প্রাণ্তে অগুণতি বাংলাদেশির লাশ ছড়িয়েছিটিয়ে পড়েছিল। বিপুল শোক, স্বজন হারানোর আহাজারি আর রাজনৈতিক নেতৃত্বের অনুপস্থিতি ও দিক নির্দেশনাহীনতায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় মুক্তিকামী জনতা। এ অবস্থায় বাংলাদেশের আপামর জনগণকে ইতিহাসের উত্থানপর্বে উন্নীত করতে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে এলেন মেজর জিয়া। প্রথমে তিনি নিজের নামেই ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনই যার প্রধান লক্ষ্য, তিনি কূটরাজনৈতিক বিবাদকে দানা বাধতে দিতে পারেন না। তাই পরের ঘোষণায় তিনি স্বাধীনতার সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও অন্তর্ভূক্ত করে নিলেন। তার নামে নতুন করে ঘোষণা দিলেন। যার ফলাফল হলো জিয়ার প্রথম ঘোষণায় উজ্জীবিত জনগণ আত্মপ্রত্যয় ও দৃঢ়তার জমিনে আরো বেশি সিনা টানটান করে দাড়িয়ে গেলো। ইতিহাসের দুর্দান্ত সময়ে জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যে মহান কর্তব্য পালন করেছেন, যে সেনাপতিসুলভ প্রজ্ঞা দেখিয়েছেন এবং স্বাধীনতাকামী জনগণকে শোক-বেদনা-হতাশা উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধে শামিল হতে উদ্বুদ্ব করেছেন তার প্রতি বাংলাদেশের গণমানুষের বিপুল সমর্থন, সংহতি ও শ্রদ্ধা রয়েছে। জনগণের এই শ্রদ্ধাকে বিএনপি/ছাত্রদলের সব নেতাকর্মীই অন্তরে ধারণ করেন।
কাজেই জিয়াকে যখন শুধুই মুক্তিযোদ্ধা সম্বোধনে বিএনপি/ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপদেশ খয়রাত করা হয় তখন তারা দেখতে পান উপদেষ্টাবন্ধুর মুখোশধারী লোকটি আসলে জিয়া বিদ্বেষী। কারণ এই দেশে যারা জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক স্বীকার করেন না তারা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি কী মনোভাব পোষণ করে তা আর অজানা নয়। এই বিদ্বেষীদের অনেকেই তো সংসদে, সংবাদ সম্মেলনে, জনসভায় শহীদ জিয়াকেজ স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে অস্বীকার করেছেন। বলে বেড়িয়েছেন জিয়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। শহীদ জিয়া নাকি আইএসআইয়ের এজেন্ট হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার অভিনয় করেছেন। তারা জিয়ার মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা নিয়ে এই মিথ্যাচারই করছেন না। তারা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের ভূমিকার জন্যও জিয়াকে অপবাদ দেন। তারা বলেন জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যার জন্য দায়ী। জিয়া সেই সময় সেনাবাহিনীর উপপ্রধান ছিলেন। ৫ আগস্ট ভোরে বঙ্গবন্ধু নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবন রক্ষার জন্য সাহায্য চেয়ে তাকে ফোন করেননি। বঙ্গবন্ধু ফোন করেছিলেন সেনাপ্রধান শফিউল্লাহকে।তিনি মুখের উপর বঙ্গবন্ধুর জীবন বাচাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তাকে পালিয়ে যেতে বলেন। সেই শফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ক্যুদেতাদের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। বিদেশে রাষ্ট্রদূতের চাকরি নিয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন। কিন্তু শফিউল্লাহ আওয়ামী লীগের কাছে উপেক্ষিত থাকেননি।তিনি দলটির টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
জিয়া বিদ্বেষীরা অভিযোগ করেন তিনি রাজাকার-আলবদরদের রাজনীতিতে পুনর্বহাল করেছেন। কিন্তু তারা বলেন না যে জিয়া একাজটি করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর নীতির ধারাবাহিকতার ভিত্তিতে। তার এই কথা ধামাচাপা দিতে গিয়েই আড়াল করে যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার-দালালদের ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে। বঙ্গবন্ধু সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার না করে পাকিস্তানের সাথে সমঝোতার চুক্তি করেছিলো। মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ভুট্টোর সাথে স্বয়ং বঙ্গবন্ধু গলাগলি ও কোলাকুলি করেছেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বিনা বিচারে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল কারবন্দি হাজার হাজার রাজাকার-দালালদেরকে। তারা শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়ার নজিরকে সামনে এনে শহীদ জিয়া বিরোধী যে প্রচারণা চালান তার মধ্যে কোন উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয় তাও তো কারো অজানা নয়। বহুদলীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম, সংবাদপত্র, বিচার বিভাগ ও বাক স্বাধীনতা হরণের মাধ্যমে জাতীয় জীবনে নৈরাজ্য ও হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরির ফলে বাংলাদেশে জাতীয় সংহতি বিনষ্ট হয়েছিল। দেশ নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল আমাদের জন্মভূমি। এ প্রেক্ষাপটে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মহান সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে শহীদ জিয়ার কাঁধে দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার দায়িত্বভার অর্পিত হয়েছিল। জাতীয় সংহতির পথ উন্মোচিত করতে তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্র-বিচার বিভাগ-বাক স্বাধীনতা কায়েম করেছিলেন। তিনি বাকশালে বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ ও সিপিবিসহ সব রাজনৈতিক দলকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন। জিয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও দেশে ফেরত এনে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছেন।
জিয়া বিদ্বেষীরা অভিযোগ করেন জিয়া জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলছি স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকার যে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল তার প্রমাণ দেখান। তিনি ভারতের সাথে কলা ২৫ সালা গোলামীর চুক্তি মোতাবেক সংবিধানে জোর করে ধর্মনিরপেক্ষতা ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। এর ফলে জামায়াত রাজনীতি করার সুযোগ হারিয়েছিল কিন্তু তিনি তো কখনোই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেননি। সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতি বাঙ্গালীর জাতীয়তাবাদকে সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। অথচ বাংলাদেশে আরো কমপক্ষে ৫০টি জাতি সত্ত্বা রয়েছে। তারপরেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাংবিধানিকভাবে সাম্প্রদায়িকতা কায়েম করা হলে। অথচ বাঙ্গালীদের মতো বাংলাদেশে মুসলমানরাও সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাদের ধর্মকে উপেক্ষা করে ধর্মনিরপেক্ষতা কায়েম হতে পারে না। সত্যিকারের সেক্যুলার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে চাইলে এটা সম্ভব নয়। এ কারণে জিয়া ইসলামপন্থী দলগুলোকেও জাতীয় ঐক্যের মধ্যে আসতে দিয়েছেন। এটা তার অপরাধ ছিল না, বরং তার সুদূরপ্রসারী ঐক্য চিন্তার সৌন্দর্য্য। জাতীয় ঐক্য ও সংহতির মতো মহান লক্ষ্যের জন্য জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে রাজনীতি করতে দেয়ায় বিএনপি ও জিয়া বিদ্বেষীরা অপরাজনীতি করে বেড়ায়। অথচ তারা তো একবারও বলেনা যে শুধু বিএনপি বিরোধী আন্দোলন করতে ও ক্ষমতায় যেতে আওয়ামী লীগ কিভাবে জামায়াতের সাথে এক টেবিলে বসে রাজনীতি করে।কিভাবে যুগপৎ কর্মসূচি পালন করে? কিভাবে অধ্যাপক গোলাম আযমের কাছে আওয়ামী লীগ দলীয় রাষ্ট্রপতি প্রার্থী দোয়া আনতে যায়? আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করা যদি দোষের না হয় তবে জিয়ার সিদ্ধান্ত কেন মহাননুভবতা হিসেবে স্বীকৃত হবে না?
মনোয়ার রুবেল তার লেখার সমালোচনার কারণে বিএনপি ও ছাত্রদলের লোকদের বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরের সাথে সুর মেলানোর অভিযোগ করেছেন। তার এ অভিযোগ অপবাদই নয় শুধু বিএনপি ও জিয়া পরিবার বিরোধী চক্রান্তেরই অংশ। কারণ আমরা দেখেছি গত ৫টি বছর বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাতে গিয়ে প্রায় সময়েই জিয়া বিদ্বেষীরা বলেছে বিএনপি ও জামায়াত একই রাজনৈতিক আদর্শের অনুসারী। তারা স্বাধীনতার ঘোষক ও দেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার দলকে বলে বেড়ায় পাকিস্তানপন্থী দল। এসব অপবাদ তো শুধু অপবাদ ছিল না। এই অপবাদ ছিলো বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ইশতেহারের অংশ। তাইতো আমরা দেখি তারা খালেদা জিয়াকে তার বাড়ি থেকে নিষ্ঠুরভাবে ঈদের আগে উচ্ছেদ করেছে। অথচ রাষ্ট্রের কাছ থেকে বরাদ্দ পেয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ ঢাকায় বাড়ি করেছেন। তার বাড়ি কিন্তু বহাল আছে। সরকার মুজাহিদ পরিবারকে ওই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ দূরে থাক, এ জন্য একটি শব্দও খরচ করেননি জিয়া বিদ্বেষীরা। আমরা দেখেছি বিদ্বেষীরা কিভাবে দিনের পর দিন খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও কোকোকে অপবাদ দিয়েছে। তারেকের বিরুদ্ধে তারা আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে এফবিআইয়ের লোকদের সাক্ষী হিসেবে উড়িয়ে এনে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন তিনি দুর্নীতিবাজ। কিন্তু আদালতের রায়ে প্রমাণিত হয়েছে তারেক নির্দোষ। আদালতের এই ঘোষণার পর কিন্তু তারা একবারও ‘সরি’ বলেনি।
আজকে বিএনপি ও জামায়াতের সুর এক হয়ে গেছে বলে তারা অভিমান করছেন। ছাত্রদলের ছেলেরা শিবিরের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে কথা বলছে বলে গোস্বা করছেন। কিন্তু বিএনপি সব সময় জানিয়েছে তাদের আদর্শ বাংলাদেশী জাতীয়তবাদ। তারা জামায়াতের সাথে আদর্শিক ঐক্য নয়, ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের জোট করেছে। যার প্রমাণ আমরা বিএনপির কথা ও কাজে দেখেছি। কিন্তু যারা আজ বিএনপি দরদী তারা কি বিএনপি ও জামায়াতের সাথে কোনো ফারাক করেছে? তাহলে জামায়াত-শিবিরকে হত্যা-গুমের মতো করে তারা বিএনপি বা ছাত্রদল নেতাকর্মীদের হত্যা-গুম করে? বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল মনে করার নমুনা কি ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, ছাত্রদল নেতা আশিককে গুম করা? মাঝরাতে মই বেয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে অনুপ্রবেশ করে রিজভী আহমেদকে তুলে নিয়ে যাওয়া? ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, এমকে আনোয়ার, ব্যরিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, আসম হান্নান শাহকে গ্রেফতার করে কারাবন্দি করে রাখা? ছাত্রদল ও শিবিরের সাথে পার্থক্য করার মানে কি ছাত্রদল সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল ও হাবিবুর রশীদ হাবিবকে গ্রেফতার করে কারাবন্দি করে রাখা। গত এক মাসে ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছেন। আমরা দেখিনি কেউ ছাত্রদলকে শিবিরের থেকে আলাদা ছাত্রসংগঠন মনে করে তাদের পক্ষে দুটি শব্দ উচ্চারণ করেছেন।
সত্যি কথা কি, আওয়ামী লীগ বিনা ইশতেহারে, প্রতীকে, ভোটে যখন ১৫৪টি আসনে নিজেকে বিজয়ী করে ফেলে তখন কূটনীতিকরা হতভম্ব হয়ে যান। তারা সেই সরকারের আমন্ত্রণে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে হাস্যকর সরকারের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করা থেকে বিরত থাকেন। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি/ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এর কূটনৈতিক মূল্য বুঝেন। তাই যারা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষে থাকার কথা বলে ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থার পক্ষে নির্লজ্জভাবে অবস্থান নেয় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে বিএনপি/ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তাদের প্রতিবাদী বক্তব্যকে অনুধাবন করে ফ্যাসিবাদকে সমর্থনের জন্য যখন কেউ দুঃখিত-লজ্জিত না হয়ে যখন বিএনপি/ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের জামায়াত/শিবির করার জন্য অভিযুক্ত করা হয় তখন সব কিছু পষ্ট হয়ে যায়। বিএনপি ও জিয়া পরিবার বিদ্বেষীরা আজ আস্তিনে খঞ্জর লুকিয়ে ভালো সাজতে এসেছে! কিন্তু তাদের কথা শুনে বিএনপি/ছাত্রদল নিঃস্ব হয়ে পড়লে যে খঞ্জর নিয়ে ঝাপিয়ে পড়বে না তার কোনো বিশ্বাসযোগ্য নজির নাই।