রেকর্ড-বিজয়-পরাজয়

মোহছেন উল আলম

কারো কাছে গুগলে বাংলাদেশকে চিনে ফেলছে বিয়াল্লিশ বছর পর, এইটা বড় আশ্চর্যজনক ঘটনা!(গুগল ডোডল বেশীরভাগ দিন দেখি, ব্যক্তিগত অজ্ঞতার কারনে বেশীরভাগকে চিনি না। একটা স্বাধীন রাষ্ট্রকে সম্মানিত করতে পেরে যেখানে কোম্পানীর কৃতজ্ঞ হওয়ার করতে পারে, সেখানে জাতিগত অজ্ঞতার কারনে পুরো রাষ্ট্র নিজেরে জাতে উঠছে মনে করে, সমস্যা নাই!) বাইশ-তেইশহাজার মানুষ পতাকা সাজাইছে তাই বিশ্ব-রেকর্ড হইল, কত্ত খুশি প্রানে!

এইসব রেকর্ড দেখে খুশি হইতে আমি দোষের কিছু দেখি না! কারন, যেই রাষ্ট্রের প্রায় সব নাগরিক খুনের দায়ে দায়ী, অর্থাত খুনী, এবং খুনের দায় মাথায় নিয়ে আজন্ম জেলখানাতে বসবাস করে, তাদের একটু খুশি-হাসি-তামাশাকে ভালো চোখে দেখার নিয়ম আছে; কয়েদীর মানবাধিকার তো আর অস্বীকার করা যায় না!

যাদের মনে দ্বন্দ্ব আছে নিজের কয়েদ-দশার ব্যাপারে, তাদের প্রতি ক্ষমাপ্রার্থী।
যারা কয়েদে-দশা নিয়ে সচেতন, লেট’স চিয়ার্স!

কথা হল যখন আমি-আপনি হাসতেছি ঠিক সেই মুহূর্তে কোনো একটা ঘর থেকে কেউ একজন নাই হয়ে গেল। কোনো এক ঘরের কোনো একজন মানুষ আর ফিরে এল না, লাশ হয়েও না। অথবা, কোনো এক নদীর তীরে কোনো একটি লাশ ভেসে উঠল, কারন লাশ খাওয়ার মত পাঙ্গাস-মাগুর-কুমির আমাদের আর নাই। অথবা, সাভারের সেই গ্রাম যেখানে মানুষের হাড় টোকাইয়ের বস্তায় ঢুকে গরুর হাড় হিসেবে, সেখানে কালকে সকালে আরেকটি টোকাই হেসে উঠবে গরুর হাড়ের প্রাচুর্যে।
আমি-আপনি-আমরা  এইসব ভালো করেই জানি, তারচেয়েও ভালো করে জানি কিভাবে জানা জিনিস ভুলে যেতে হয়। জানা-অজানা জিনিসে দুঃখ পেতেই হবে এমন কোনো শর্তে আবদ্ধ হয়ে আমরা নাগরিকত্ব পাই নাই। আমার দুঃখ সবার, তার দুঃখ তার; আমরা ভালো করেই জানি। সুতরাং দুঃখিত হওয়ার কোনো দরকার নাই।

একদিন, কোনো একদিন, একজন স্কুলশিক্ষক আজিজকে হত্যার দায়ে যদি কোনো একটি রাষ্ট্র-ব্যবস্থা ভাঙ্গার প্রয়োজন হয় সেইদিন আপনাদের চেতনা ফুলে উঠবে, ফুলে-ফেপে উঠুক।

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s