by Sazzad Rahman
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার একমাত্র সোল এজেন্ট বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। রাজনীতির মাঠের প্রাচীনতম ও দর্শকনন্দিত এই খেলোয়াড় এখন এতটাই জনবিছিন্ন হয়ে পড়েছে যে তাদের আহবানে দেশের সাধারণ ভোটারদের একশতাংশও আজকে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে আসেনি। গণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদ, ভারতের আধিপত্যবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতার বিরুদ্ধে এক নীরব বিপ্লব দেখলো আজকে বাংলাদেশ। সম্ভবত আমার এই কথার সাথে তারাই দ্বিমত পোষণ করবেন যারা বিটিভি, চ্যানেল আই, একাত্তর ইত্যাদি “নিরপেক্ষ” মিডিয়া ও রাকিবউদ্দিন গংদের “নিরপেক্ষ” কমিশনের একান্ত গুণমুগ্ধ বংশবদ। একপক্ষীয়ভাবে নগ্ন সমর্থন দিয়ে ভারত আওয়ামীলীগের মত একটি ঐতিহ্যবাহী দলকে একেবারে খাদের কিনারায় নিয়ে এসেছে।
ভারত নাকি সুপার পাওয়ার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু সুপার পাওয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখা একটি দলের ডিপ্লোমেসি এতটা অপরিপক্ক কিভাবে হয় তা আমার বুঝে আসেনা। ভারতেরই পত্র-পত্রিকারই ভাষ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের মানুষের ভারতবিরোধী সেন্টিমেন্টে এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে। দীর্ঘদিনের সাংষ্কৃতিক আগ্রাসন চালিয়ে তারা দেশের মানুষের মাঝে যতটা আসন গেঁড়ে নিয়েছিল তার অনেকটাই তারা খুইয়েছে গণবিরোধী একটি দলকে অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ভারতবিরোধী সেন্টিমেন্ট এখন এতটাই প্রবল যে সম্ভবত সরাসরি সামরিক আগ্রাসন চালানো ছাড়া বাংলাদেশকে পুরোপুরিভাবে ভারতের নিয়ন্ত্রনে আনা কতটা সম্ভব তা প্রশ্নসাপেক্ষ। ভারত অনেক বড় সামরিক শক্তি সেটা যেমন বাস্তব তেমনি এটাও বাস্তব তাদের চেয়েও শতগুণ বড় সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্রকেও ইরাক-আফগানিস্তানে সামরিক আগ্রাসনের বোঝা বইতে গিয়ে প্রায় দেউলিয়া হতে হয়েছিল। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রই হাবুড়ুবু খায় সেখানে ভারত কি সরাসরি সামরিক আগ্রাসন চালানোর মত দুঃসাহস দেখাবে? মনে রাখতে হবে ভারতের পঞ্চাশ শতাংশের বেশি মানুষ এখনোও খোলা আকাশের নিচে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়।
ভারতের সামনে দ্বিতীয় পথ যেটি খোলা থাকে তা হলো আওয়ামীলীগকে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় রাখা। কিন্তু আওয়ামীলীগ ভারতের হাতের পুতুল হতে গিয়ে যেভাবে পশ্চিমাদের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে তাতে পশ্চিমারা যদি একবার অর্থনৈতিক অবরোধ দেয় তাহলে ভারতের পক্ষে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের বোঝা বহন করা কতটা সম্ভব তা ভাববার বিষয়। তার উপর ইসলাম বিদ্বেষী অবস্থান নেওয়ার কারণে মুসলিম বিশ্বের সাথেও আওয়ামীলীগের সম্পর্ক শীতল। আর বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জীবনামান ভারতের সাধারণ মানুষের জীবনমানের চেয়ে কোন অংশেই কম না, বরং অনেক ক্ষেত্রেই তা অনেক উন্নত।