by Ammena Tarannum
গত রাতে আমার বাসার সামনের মাঠে কনসার্ট হয়ে গেলো।কি বৃত্তান্ত?রেড ক্রিসেন্টের কোন একটি ক্যাম্প চলছিলো সেই মাঠে সপ্তাহ খানেক ধরে।সেখানে সারাদিন মাইক পূজা চলতোই।মাঠের পাশে মসজিদ,সেদিকে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ ছিলনা।নামাজ-আযানে তাঁরা ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন কিনা-সে নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা দেখা যায়নি।তা এগুলো তাঁদের কাছে ব্যাপার না…সুশীল সমাজ বলে কথা!বলি,সুশীল সমাজ তো সমাজ নিয়ে এবং তার মানুষ নিয়ে চিন্তিত হবার কথা বলে বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন!কিন্তু এই সুশীলরা সেরকম কিছু তাদের কাজে-কর্মে প্রমাণ করতে পারলেননা।দিন-রাত মাইকে সুকণ্ঠ-কুকণ্ঠ মিলিয়ে গান-কবিতা শুনিয়ে এলাকাবাসীর কান ঝালাপালা করেছেন গেলো কিছুদিন।কাল রাতে তা চরম আকার ধারন করলো কনসার্ট এবং ফ্যাশন শোর মাধ্যমে…মধ্যরাত পর্যন্ত কানের বারোটা বাজিয়ে তবে তাঁরা চুপ করেছেন।
শব্দ দূষণ…এ আমার যেন নিত্য সঙ্গী!যে যা ভয় পায়,তাকে তা-ই তাড়া করে ফেরে,আমি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।যেসব জায়গায় এই অধম ছোটবেলা থেকে শুরু করে আজ অবধি বাস করে আসছি সে জায়গাগুলোর উপর এই দূষণটির কারনে আমি ত্যক্ত-বিরক্ত।জিজ্ঞেস করুন,কিভাবে?বলছি।
ছোটবেলা ছিলাম ছোট জায়গায়,মফস্বল শহরে।শীতকাল আসলেই বাড়ি থেকে একটু দূরে ধানের জমি খালি থাকতো,সেখানে রাতের বেলা দশদিগন্তকে শোনানোর ব্যবস্হা করে ওয়াজ শুরু হতো।শীত ছাড়াও হতো,যেকোনো দিন বিকাল বেলায় ঘোষণা দেয়া হতো”আজ রাতে আমাদের মাঝে উপস্হিত হবেন উপমহাদেশের নয়নমনি,জগদ্বিখ্যাত,বিশিষ্ট ওলামা অমুক…”
ব্যস,রাতের ঘুম শেষ সুমধুর সুরেলা কন্ঠের ঝংকারে।সবচে’ খারাপ যা তা হলো,আপনি যে জেগে থেকে উনাদের বিতরণকৃত জ্ঞান আহরণ করে ধন্য হবেন..নৈব নৈব চ!কারন কিছু দূর থেকেই বক্তব্য আর কিছু বোঝা যায়না,খালি দূর্বোধ্য কান ফাটানো গগনবিদারী চিৎকার ছাড়া কিছুই আপনি বুঝবেন না।তাহলে কি দাঁড়ালো?আমার না হলো ঘুম,না হলো কোন ধর্মীয় উপকার।কেন এই শাস্তি তাহলে মেনে নিতে হচ্ছে?আর ধর্ম কি বলে এই ব্যাপারে?ইসলাম তো অন্যের ঘুম নষ্ট করে কুর’আন জোরে পড়তেও নিষেধ করে!
“Sometimes, it is Makruh (reprehensible) to recite the Qur’an as when one recites it in a loud voice disturbing other reciters or worshipers, or annoying those who are sleeping.
ইসলাম আরো বলে,Narrated Anas bin Malik (رضي الله عنه): The Prophet (صلى الله عليه وسلم) said, “Facilitate things to people (concerning religious matters), and do not make it hard for them and give them good tidings and do not make them run away (from Islam).”
[Sahih Bukhari, Volume 1, The Book of Knowledge, No. 69]
তো আমরা মুসলিমরা যদি এভাবে চিল চিৎকার করে মানুষের রাতের ঘুম হারাম করতে থাকি,তবে মানুষ ধর্মের কাছে আসবে না দূরে যাবে?একজন অমুসলিম যদি ঠিক ওয়াজের মাঠের পাশে বাস করেন,তার কি প্রতিক্রিয়া হবে??
দুটি ঘটনা উল্লেখ করছিঃ
১/আয়েশা (রাঃ) একজন মুসলিম বক্তাকে বলেছিলেন,Restrict your voice to your audience and address them only as far as they are attentive to your speech. When they turn their faces from you, stop.
২/আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ “An orator used to deliver his sermons before the door of Ai’sha (R.A). She complained to ‘Umar (R.A) saying, “This man has caused me discomfort and has left me in a position that I cannot hear anything (except the voice of the orator).” ‘Umar (R.A) sent a message to the orator asking him to refrain from speaking so loudly before the door of the mother of the Muslims. But the orator repeated his practice once again. When ‘Umar (R.A) was informed about it, he himself went to him and subjected him to punishment.”
http://bookmyla.com/deeni%20books/Contemporary%20Fatawa/Salah_Namaz/misuseloudspeaker.htm
http://www.sunniforum.com/forum/archive/index.php/t-51758.html
এই ঘটনা গুলো কি আমাদের হুজুরদের আর আলেমদের অজানা?তাঁরা কি কখনো সত্যিকারের ইসলামিক রীতিনীতি নিয়ে মাথা ঘামান?
যাই হোক,আমার ঘটনায় ফেরত যাই;এরপর এলাম সিলেট শহরে।সেখানেও দরগাহ-র মাঠে গগনবিদারী সুরেলা ওয়াজ হতো।আবার ঘুম হারাম!এরপর উত্তরা,ঢাকা..এখানেও একই না হলেও বিরক্তি উদ্রেক করার মতো যথেষ্ট ওয়াজ দূষণ বিদ্যমান।ওয়াজ ছাড়াও ভোরে ফজরের নামাজের আগে মসজিদে যেদিন ইচ্ছা হয় সেদিন জিকির,সূরা পাঠ কিংবা হামদ-নাত শুরু হয়ে যায় আমাদের দেশে…কি বলে একে?হ্যাঁ,out of the blue!এতে কারো কি লাভ হচ্ছে? না,ক্ষতি হচ্ছেঃ
১/কেউ যদি ফজরের নামাজের আগে তাহাজ্জুদ পড়েন,এতে তাঁর নামাজের ব্যাঘাত ঘটে। বিশেষ করে তাঁর বাসা/বাড়ি যদি মসজিদের কাছে হয়,তাহলে তো বলাই বাহুল্য।রমজান মাসে এরকম সমস্যা প্রতিদিন ঘটে।
২/ যিনি অমুসলিম,তাঁর দুঃখের তো আর সীমাসংখ্যা থাকেনা।তিনি ভোরের ঘুম হারাম হওয়ার পর মুসলিমদের চৌদ্দ পুরুষদের মনে মনে নিষ্ফল গালমন্দ না করে আর কি করতে পারবেন?ইসলামের প্রতি তাকে বীতশ্রদ্ধ করার এই অধিকার মসজিদের হুজুরদের কে দিলো?
উত্তরায় বিশ্ব ইজতেমার সময় আরেক ব্যাপার হয়।প্রায় সকল রোড-এ মাইক লাগিয়ে ইজতেমার ওয়াজ এবং দোয়া শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়।আজব!এর দরকারটা কোথায়?যিনি প্রয়োজন মনে করবেন,তিনি ইজতেমায় গিয়ে এসব শুনে আসবেন।তার উপর একটি লাইনও স্পষ্ট বোঝার উপায় পর্যন্ত নেই।শুধুই উচ্চ হাউকাউ-এ আপনার জান জেরবার!
এতো গেলো ধর্মীয় দিকের কথা।আমাদের সুশীল সমাজের সমস্যাও এখানে প্রকট যার উদাহরণ লেখার শুরুতেই দিয়েছিলাম।তারাও খোলা জায়গা যেখানে পান সেখানে নানা অনুষ্ঠান আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।12-12-12উদযাপন,নিউ ইয়ার(বাংলা, ইংলিশ, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান যাই হোক)উদযাপন,শহীদ দিবস,বিজয় দিবস,৭ই মার্চ,বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস,জিয়ার মৃত্যু দিবস…দিবসের কোন শেষ তাদের নাই।এবং সেগুলোতে তাদের মাইক চর্চার বাড়াবাড়ির কোন শেষও নাই।
ও হ্যাঁ,এই এলাকায় আবার গোঁদের উপর বিষফোঁড়ার মতো মাঝেমাঝে হিন্দুদের ভজন আর গান বাজনাও শুরু হয়ে যায়রাতব্যাপী..দীর্ঘশ্বাস!অভাগা যেদিকে চায়,সাগর শুকায়ে যায়(আমার বেলায় চায় না,যায় হবে শব্দটা)…
বলি,এদের সবাইকে সবিনয়ে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করে,নিজেরা কিছু উদযাপন করতে চাইলে,ধর্মীয়,অধর্মীয় যাবতীয় ওয়াজ-মাহফিল,জ্ঞান অর্জন,শ্রদ্ধা নিবেদন,স্মৃতিচারণ-যে কোন রকমের অনুষ্ঠান করতে চাইলে সেটা কি নিজেদের মাঝেই সীমাবদ্ধ রাখা যায়না?কেন এমন ভাবা জরুরী যে আমরা যা করছি তাতে অন্যরাও সামিল আছে?অন্যরাও আমাদের আনন্দে অথবা দুঃখে সমান ভাগ পেতে চায়?কেন ভাবা জরুরী যে আমরা যখন জ্ঞান আহরণ করছি তখন অন্যরাও তা-ই করতে চায়?আমরা যখন গান গাইছি তখন অন্যরা সেটা শোনার জন্যে উদগ্রীব?আমাদের আগ্রহ কেন অন্যের অসুবিধার কারণ হবে?কেন একটি হল ঘরে ওয়াজ/কনসার্ট হবেনা?কেন সেখানে এমন সাউন্ড সিস্টেম হবেনা যা হলের বাইরে পৌঁছে অন্যদের বিরক্ত করবেনা?এই প্রশ্নগুলো শব্দ দূষণকারীদের কাছে রইলো,সাথে দেশের শব্দদূষণ আইনের(আছে কী এদেশে এমন কোন আইন?!)কাছেও রইলো।রক্ষা করুন সাধারণ মানুষদেরকে মাইক পূজার বাড়াবাড়ি আবেগ আর উৎসাহ থেকে!দোহাই আপনাদের!
Nice read. Salute your courage of speaking out, even though the issue is a controversial one. don’t lose your heart if you are lambasted from left right and center; for u have spoken the truth.
There are some editing issues, I guess. Mods need to look into it.
On the point of public nuisance, it is really sad that our Ulamas/ Preachers are on the same page as the “shushil”s. Our religion is a living religion, which has got precise norms and standard for respecting Human Being as a whole, respecting your neighbor, loving the neighbor, loving for your brother/ sister the very thing you love for yourself (and vice versa) and so on and so forth.
Our approach to the religious values needs change. we approach the Prophetic Biography to increase Eeman and to shed tears; no harm here. But is that all Seerah has to offer? What about internalizing the teachings of the Prophet and implementing them in your personal life? I really doubt the impact these waayez are having.
I leave the shushils out; they are too holy to be discussed! Am not as brave as you are.
Personally, i would have loved a bit more academic tone in your writing as the issue is a serious one.
Keep it going!
I will edit, modu won’t..Thank you for your well thought up comment and warm appreciation. Will try to be more academic next time inshaAllah.