আল কায়েদা হুমকি ও ক্ষমতা সমীকরণের মধুচন্দ্রিমা..

by Watchdog BD

পাঠকদের মনে থাকতে পারে বিএনপির শেষ টার্মের শেষ দিকের কিছু ঘটনা। হঠাৎ করে ভারতীয় মিডিয়া ইনিয়ে বিনিয়ে প্রচার করতে শুরু করে আল কায়েদার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মিশরীয় ডাক্তার আইমেন আল জাওহিরি নাকি বাংলাদেশে। এবং বাংলাদেশি সরকার তাকে সব ধরণের সহযোগীতা দিয়ে লুকিয়ে রাখছে। একই সময় যুক্তরাষ্ট্র সফরের আসেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী জনাবা শেখ হাসিনা। তিনি পরিষ্কার ভাষায় মার্কিনিদের জানিয়ে দেন এখনই ব্যবস্থা না নিলে বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে পরবর্তী আফগানিস্থান। ভাষাগত দুর্গন্ধে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন এই মহিলার দাবির প্রেক্ষাপটে তাৎক্ষণিক মার্কিন কোন সৈন্য বাংলাদেশে হয়ত পা রাখেনি অথবা পাকিস্তানের মত ড্রোন হামলা চালিয়ে নির্বিচারে নারী,পুরুষ ও শিশু হত্যা করেনি। তবে সতর্ক বার্তাকে হেলাফেলা করেও উড়িয়ে দেয়নি মার্কিন কতৃপক্ষ। গ্রিনকার্ডধারী গোটা বাংলাদেশি সমাজকে তাৎক্ষণিকভাবে ইমিগ্রেশনে রিপোর্ট করে তাদের চলাচলের রোডম্যাপ অবহিত করতে ডিক্রি জারি করে দেশটার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়। অনেকের মত ব্যাক্তিগতভাবে আমিও বিশ্বাস করি খালেদা অধ্যায়ের করুণ পরিণতি, আহমদ গংদের উত্থান এবং শেখ ডাইনেস্টির ক্ষমতারোহনের অন্যতম ইনগ্রেডিয়েন্ট হিসাবে কাজ করেছিল ভারতীয় মিডিয়ার এ অপপ্রচার এবং পাশাপাশি নেত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফর। অন্তত উদ্দিন গংদের প্রতি মার্কিন তথা পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন এ বিশ্বাসকে আরও জোরালো করে। পাঠকদের আরও মনে থাকার কথা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে শেখ হাসিনার মন্তব্য, … ‘এ আমাদের আন্দোলনের ফসল’ এবং ‘ক্ষমতায় গেলে তাদের সব কাজের বৈধতা দেব’।

jawahiri-ed

দেশীয় রাজনীতিতে ফ্যাক্টর হিসাবে আবারও হাজির হয়েছেন আল জাওহিরি। মার্কিনিদের সন্ত্রাসী তালিকায় এই ব্যাক্তির নাম সবার উপরে। এবং তারা যে কোন মূল্যে আল কায়েদার কমান্ডার-ইন-চীফকে নির্মূল করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশের ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ উন্নত বিশ্বের কোন দেশই সন্তুষ্ট নয়। প্রায় প্রতিদিনই মার্কিন প্রভাবশালী পত্রিকাগুলো এ নিয়ে লেখালেখি করছে। পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটিতে শুনানী হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে নেত্রীর চামচারা যতই লম্ফঝম্ফ করুন না কেন অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পশ্চিমা বিশ্বের সহযোগীতা বাধ্যতামূলক। পদ্মা সেতুর অর্থায়নে সরকার বৈদেশিক মুদ্রার রেকর্ড পরিমান রিজার্ভে হাত দিতে যাচ্ছে। অনিশ্চিত মানব সম্পদ রফতানি এবং তৈরী পোষাক শিল্পের উপর পশ্চিমাদের উপর্যুপরি হুমকির প্রেক্ষাপটে রিজার্ভের উপর হাত দেয়া কতটা বিপদজনক তা মাল মুহিত সহ অর্থনীতিবিদদের জানা থাকার কথা। এ অনিশ্চিত অবস্থা হতে উত্তরণে অতীতের মত আবারও আইমেন আল জাওহিরি ফ্যাক্টরকে সামনে আনা হয়েছে।

সরকারের বহুমুখী আক্রমণে জামাত সহ বাংলাদেশের সবকটা বিরোধী দল এখন বিধ্বস্ত। হামলা মামলার পাশাপাশি গুম ও বন্দুকযুদ্ধ নাটকের শিকার হয়ে দলের নেতারা হাটে মাঠে ঘাটে প্রাণ হারাচ্ছে। এমন এক প্রেক্ষাপটে হেফাজত-জামাতের পক্ষে আল কায়েদার সমর্থন কার হাত শক্তিশালী করবে তা সহজেই অনুমান করা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা বিশ্বের দৃষ্টি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক  নির্বাচন হতে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্যই আল কায়েদা হুমকির সূত্রপাত।

এখন বাকি থাকবে বাংলাদেশের জনবহুল কোন অংশে আল কায়েদার নামে বোমা মেরে বেশ কিছু মানুষ হত্যা করা। ৫ই জানুয়ারীর ভোট ডাকাতির ধারাবাহিকতা ও ক্ষমতা নামক সমীকরণের অংশ হিসাবে আইমেন আল জাওহিরির উপস্থিতি পশ্চিমা দুনিয়ায় কাজ করলেও খোদ বাংলাদেশে তা কাজ করবেনা। কারণ দেশের ১৫ কোটি মানুষের প্রায় সবাই জানে শেখ হাসিনা হয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় পর্যন্ত শেখ ডায়নাস্টি টিকিয়ে রাখতে এ মুহূর্তে এর কোন বিকল্প নেই।

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s