প্রেক্ষিত হিজাবঃ এ কেস স্টাডি ফর দ্য গ্রোথ অব লিবারেল ফ্যনাটিসিজম

1

by Jahid Islam

বাংলাদেশের একটা শ্রেণী নিজেরদেরকে লিবারেল দাবি করে। বাস্তবে এরা ফ্যানাটিক। শুধু ফ্যানাটিক বললে কম বলা হবে। ফ্যনাটিসিজমের ১০ এর স্কেলে এদের স্কোর ৯.৯। এমাজান জঙ্গলের ‘মানুষ আকৃতির’ যেসব প্রাণী অন্য মানুষের মাংস খায় কেবল তারাই এ স্কেলে এদের চেয়ে উপরে আছে।

গড আছে নাকি নাই এটা কিন্তু নতুন কোন বিতর্ক না। এ বিতর্কের ইতিহাস অনেক পুরোনো। যারা এ তর্ক করেন আমার কাছে তাদেরকে খারাপ লাগে না। তাদের অনেকেই নিজেদের যুক্তি এবং আন্ডারস্ট্যান্ডিং ব্যবহার করে কনভিন্সড হতে চান। এতে দোষের কিছু নাই। বাস্তবে এটাই আদর্শ পদ্ধতি হওয়া উচিত। যারা গডে বিশ্বাস করেন না কিন্তু রেশনালি চিন্তা করার চেষ্টা করেন এবং সে থেকে তাদের এ কনভিকশন আমি তাদেরকে রেসপেক্টও করি। এদের বেশিরভাগই নিজে গড বিশ্বাস করেন না, কিন্ত অন্যের বিশ্বাস এবং আচরণকে শ্রদ্ধা করেন। ‘গড’ বিশ্বাস করেন এমন কারও সাথে আলোচনা বা তর্ক হলে তারা নিজেদের যুক্তি দিয়ে তাদের বিশ্বাসের পেছনে কারণকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেন। সমাজের ভিন্ন মতের মানুষের সাথে কোএগজিসটেন্স এ বিশ্বাস করেন। এরা আসলেই লিবারেলিজমে (প্লুরালিজম) বিশ্বাস করেন।

7bbae7bd7f30fc7e74a47780ac8bce0d

আমি যে ফ্যনাটিকদের কথা বলছি তারা অন্যের জীবন থেকে ‘গড ডিলিউশন’ দূর করতে গিয়ে নিজেরাই একটা ধর্মের জন্ম দিয়েছেন। যে ধর্মের প্রধান ডকট্রিন হল সবার জীবন থেকে গডের ধারনা দূর করা এবং সেটা যে কোন মূল্যে। প্রয়োজন হলে জোর করে। বলাই বাহুল্য, আমাদের দেশে তাদের প্রধান টার্গেট হল ইসলাম। বাস্তবে সমাজে যারা বিভিন্ন ধর্মে ধার্মিক হিসেবে পরিচিত এ শ্রেণী এর চেয়েও অনেক ডেডিকেটেডলি তাদের এ “গডলেস ডিলিউশন” ধর্ম পালন করেন। তারা হিজাব পরা বা পরানোকে খুব একটা পজিটিভলি দেখেন না। মনে করেন যে, হিজাব পরলে নারীদের ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হয়। এখানে আন্ডারলায়িং এসাম্পশান হল একটা বিরাট অংশকে জোর করে হিজাব পরানো হয়। যারা স্বেচ্ছায় হিজাব পরে তারাও আসলে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর লোক এবং হিজাব পরাই তাদের ইন্টেল্যাকচুয়াল ইনফেরিওরিটির প্রমাণ। তারা কেউ কেউ প্রচার করে বেড়ান যে, আরবের ১৪০০ বছর আগের গরম ‘লু হাওয়া’ থেকে বাঁচার জন্য মহিলারা হিজাব পরত। তাদের এ এসাম্পশান এবং আর্গুমেন্ট ঐতিহাসিক এবং তত্ত্বগত দিক থেকে ভুল। ইতিহাস এবং ধর্ম বিষয়ে সামান্য জ্ঞান থাকলেই এ যুক্তির অসাড়তা বোঝা যায়।

যেহেতু তারা মনে করেন যে অনেককেই জোর করে হিজাব পরানো হয় বা তারা নিজেরা কেবল হিজাব না পরার কারণেই হিজাব ব্যবহারকারীদের চেয়ে ইন্টেল্যাকচুয়ালি সুপিরিয়র, অতএব তাদের অধিকার আছে জোর করে সবার মাথা থেকে হিজাব খুলার।
জোর করে হিজাব পরানোর ঘটনা যে অল্প কিছু ঘটতে পারে সেটা মানছি। এ শ্রেণী কিন্তু তাদেরকে bullying করে না। তাদের ফিল্ড অফ ইন্টারেস্ট হল স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষিত শ্রেণীর মেয়েরা যাদের প্রায় সবাই স্বেচ্ছায়,কনশাসলি হিজাব পরে এবং এটাকে ধর্মীয় অনুশাসন মনে করে। জোর করে কাউকে হিজাব পরানো যদি ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হয়, জোর করে হিজাব খোলানো বা bullying যে সেটারই মিরর ইমেজ এ বাস্তবতা তাদের স্থূল মস্তিষ্কে প্রবেশ করে না। আরও মজার ব্যপার হল, এদের কেউ কেউ টিভি টকশোতে এসে ইসলামকে এ দেশে মাইনরিটির ধর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করে। অথচ এ দেশের বেশির ভাগ লোক যে মুসলিম এ ফ্যাক্ট ক্লাস ৪ এর একটা বাচ্চাও জানে। দেখলে মনে হয় যেন কোন একটা ধর্ম মাইনরিটির ধর্ম হলে সে ধর্মের উপর মেজরিটির রিলিজিয়াস ডকট্রিন চাপিয়ে দেয়া বিশেষ পুণ্যের কাজ। মাইনরিটি হিসেবে মনে করার এ কাজটা যদি আসলেই তারা তাদের কনভিকশন থেকে করে থাকেন সে ক্ষেত্রে অবশ্য এদেরকে মানসিক রোগী হিসেবে ট্রিট করতে হবে।

এদের আরেকটি প্রধান ট্রেড মার্ক হল কিছু দিন পর পর তারা ‘বাঙ্গালী না মুসলমান’ এ অর্থহীন বিতর্ক উসকে দেয়। ভাবটা এমন যে কেবল তাদের কাছেই এর একটি অবজেক্টিভ উত্তর আছে। এ মিনিংলেস বিতর্ক চাঙ্গা করাকেই তারা নিজেদের বুদ্ধিবৃত্তির সবচেয়ে বড় উৎকর্ষতা মনে করে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে এটা অবশ্য জীবিকা। সে ক্ষেত্রে এটা বোধগম্য। প্রকৃতপক্ষে, অল্প কিছু Schizophrenia আক্রান্ত লোক যারা মাথায় বড় লাল টিপ দেয়া, স্লিভলেস ব্লাউজ পড়া এবং শুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারাকেই বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষতার অন্যতম প্যারামিটার হিসেবে মনে করেন এবং আসমানি গ্রন্থের বয়ানের মত বিশ্বাস সহকারে ’৭১ টিভি’ দেখেন তারা ছাড়া এ শ্রেণীর কার্যকলাপ অন্যদের কাছে মনে হয় অর্থহীন ফ্যনাটিসিজম। এ শ্রেণীর সুডো লিবারেলদের প্রগলভতা অল্প সময়ের সাময়িক উন্মাদনার জন্ম দেয় মাত্র। আদতে এরা লিবারেল আদর্শ প্রতিষ্ঠা ত দূরের কথা, লিবারেলিজম সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে।

যে কোন আদর্শের অনুসারিদের মনের খায়েশ থাকতেই পারে যে তাদের অনুসৃত আদর্শ বিজয়ী হবে। সে ক্ষেত্রে নিজেদের আদর্শ প্রচারের জন্য তাদের প্রথম কাজ হবে তারা যে সমাজে এ আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চায় সে সমাজের বাস্তব অবস্থা উপলব্ধি করা এবং পটেনশিয়াল ফলোয়ারদের মন-মগজ ও রুচির বাস্তবতা অনুধাবন করা। এরপর নিজেদের মডেলকে সে সমাজের বাস্তবতা অনুসারে এডজাস্ট করা। এছাড়া অন্য কিছু করে যারা কেবলি নিজেদের কনভিকশন অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে চায় (সেটা তাদের কাছে যত শুদ্ধই হোক) তারা সে আদর্শ সম্পর্কে একটা পাবলিক ফোবিয়া তৈরি করে মাত্র। এতে সে আদর্শের ক্ষতি ছাড়া উপকার হয় না। সম্ভবত, বাংলাদেশের এ ‘সুডো লিবারেল’ ফ্যনাটিক শ্রেণী দেশের সমাজ বাস্তবতা জানেন কিন্ত, মানতে চান না। তারা ভিন্ন মতের মানুষকে ইনক্লুশানে না বরং নিত্য নতুন কারণ দেখিয়ে এক্সক্লুশানের মাধ্যমে নিজেরদের এক্সক্লুসিভনেস প্রমাণ করতে চান। যারা নিজেদেরকে লিবারেলিজমের অনুসারি মনে করেন এবং নিজেদের আদর্শ ( liberty and equality, civil rights, freedom of the press, freedom of religion) সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা রাখেন তাদের উচিত হবে এগিয়ে এসে এ ফ্যনাটিক শ্রেণীর আদর্শিক এবং মানসিক সু চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

One thought on “প্রেক্ষিত হিজাবঃ এ কেস স্টাডি ফর দ্য গ্রোথ অব লিবারেল ফ্যনাটিসিজম

  1. I’m no blind patriot but your Bangla write-up consists of an inordinate number of non-Bangla words. Either be true to the Bangla language or write the damn thing in English!

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s