By Al Maruf বিলেতে যারা কিছু দিনের জন্যও বসবাস করেছেন তারা এই দেশের লোকেদের কুকুর প্রীতির সাথে পরিচিত । এদের জীবনে কুকুরের গুরুত্ব এতটাই যে, বাপ মা মারা গেলে পারলে এরা খুশি হয় , কিন্তু নিজের কুকুর মারা গেলে এরা খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয় । কুকুরের জন্য আলাদা কবরস্থান পর্যন্ত আছে এদেশে । অবশ্য আমরা বাংলাদেশীরা মুজতবা আলী স্যারের কল্যাণে এদের এই দিকটার সাথে অনেক দিন আগে থেকেই পরিচিত, পন্ডিত মশায়ের পুরো পরিবার আজও এদের কুকুরের এক ট্যাং এরই সমান । এ ব্যর্থতা এদের পশু প্রেমের নয় – আমাদের মানুষ প্রেমের ঘাটতির । আমাদের দেশে মনে হয় সবচে নিচু স্তরের সরকারি কর্মচারি আজ পর্যন্ত এই পন্ডিত মশায়েরা । সে যাই হোক অর্থনীতি নিয়ে নাহয় আর কচকচ নাই করলাম – সে জন্য বাংলায় এক আবুল মালই যথেষ্ট । দুঃখের বিষয় হলো আমার ফেবু ফ্রেন্ডলিষ্টে যারা আছেন তাদের প্রতি আমার খুবই ভালো ধারনা ছিলো এতোদিন – কিন্তু যুবলীগ নেতা মিল্কি আর তারেক হত্যা কান্ডে কারও কারও খুশি হতে দেখে নিজেকে চিম্টি কেটেছি । আমরা যারা রাজনীতি সচেতন অথবা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কনসার্নড, তাদের মধ্যে মিল্কি অথবা তারেকের বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের ব্যাপারে ঘোলাটে প্রতিক্রিয়ায় আমি যার পরনাই হতাশ । যেখানে আমরা দু-দুজন মানুষের অপঘাতে মৃত্যুতে খুশি হই – সেখানে মিজানুর রহমান অথবা পুলিশ- রেব কে দোষী করি কোন বিবেকে ? নাকি আমার দল না করলে সেই মানুষ কোন মানুষই না । হতে পারে সে অপরাধি – ২৫ টা খুনের আসামী, কিন্তু বিনা বিচারে তার হত্যাকান্ডে খুশি হলে আমরা কি এক বিন্দু কম অপরাধি হলাম ? এই যদি হয় আমাদের মানষিকতা, তাহলে সারা জীবন মানবাধিকার- মানবাধিকার বলে ম্যাৎকার করলেও আমাদের পুরো বাংলাদেশ পাচ টন লাটের কুকুরের এক ঠ্যং এরচেয়ে মুল্যবান হতে পারবেনা কোনদিনই । আমাদের সরকার যন্ত্র আর আমাদের রাজনীতিবিদেরা হচ্ছে আমাদের আয়না – আমাদের মানষিক হিনমন্যতা এদের দিকে তাকালেই পরিষ্কার চোখে পড়ে । যতদিন আমরা পরিবর্তন না হবো ততদিন এরা পরিবর্তন হবে তা কিভাবে আশা করি ? সে যাই হোক কুকুর প্রসংগে ফিরে আসি । এতবেশি কুকুর নিয়ে কথা বলছি বলে ভাববেন না যে এরা আমার পছন্দের প্রাণীর লিষ্টে খুব একটা উপরে, বরংচ উল্টোটাই ঠিক । কুকুরের গায়ের দূর্গন্ধটা আমার অসহ্য লাগে, তার উপর যখন এরা কুকুরের মুখে মুখে চুমু খায় সেটা দেখে ঘেন্নায় বমি আসে । কেননা কুকুরের সবচে অপরিচ্ছন্ন যায়গা এই মুখ – পারসোনাল হাইজিনের এত বড় কদরদানেরা কিভাবে যে এই কাজটা করে আল্লাহ মালুম । অনেকদিন পর দেখা হলে মানুষে মানুষে হ্যান্ডশেক-কুলোকোলি করে, মিডলইষ্টের ভাইয়েরা খায় মুখে চুমু, ইতালিয়ানরা খায় একদম সরাসরি ঠোটে । কিন্তু কুকুর কি করে জানেন ? দেখা হলেই এক কুকুর শুকে আরেক কুকুরের পাছা – এটা অনেকটা মানুষের হ্যান্ডশেকের মতো । আগে কখনও খেয়াল করিনি, কিন্তু ইদানিং খুব ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম – কুকুর সে যত উন্নত সংকরেরই হোক, ল্যব্রাডোর কিবা গ্রে-হাউন্ড, জেনেটিক্যালি মোডিফাইড বা ন্যাচারাল সিলেকশানে স্বভাব তাদের একই । কিন্তু এতেও যে আল্লাহতাআলা আমাদের জন্য কি শিক্ষা লুকিয়ে রেখেছেন তা বুঝতে পারলাম ইদানিং । আপনি যখন বিদেশ বিভুইয়ে লুংগি পরনে একজন লোক দেখেন তখন কি আপনার আমেরিকার কথা মনে পড়ে ? না । লন্ডনের রাস্তা ঘাটে পানের পিকের দাগ দেখলে এইটা যে কোন বাংগালীর কাজ সেটা বুঝতে আইনস্টাইন হওয়া লাগেনা । ঠিক এই ভাবে বাংলাদেশে রাজনীতিবিদ চিনে নিতে হলে আপনাকে দেখতে হবে এই লোক অন্যের কোন যায়গা থেকে শুকা শুরু করে । যখন দেখবেন কোন বাংলাদেশি অন্যের খারাপ দিক নিয়ে কথা বলে বলে তার আলোচনা শুরু করে আর অন্যের গিবত করে করেই তার কথা শেষ করে, এমনকি তা করতে পেরে বিমলানন্দ ভোগ করে আর ভাবে “মুই কি হনু রে” । আল্লাহর কসম চোখ বুঝে বলে দিতে পারেন এই লোক রাজনীতি করে অথবা না করলে করার পরামর্শ দেন – খুব উপরে যাবে । বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের এই পাছা শুকার ইতিহাস একদম আদিম । আমাদের মন্ত্রি-এমপি এমনকি ছাপোষা পাতি-নেতা ছাতিনেতার কথা ছেড়েই দিলাম, গনতন্ত্রের মানষকণ্যাই যখন কথা বলেন – এর অর্ধেক কাকে নিয়ে গিবত করেন তা কোন বাংলাদেশিকে দ্বিতীয়বার জিগ্গেশ করা লাগেনা । এটা করতে পেরে তিনি যেমন বিমলানন্দ পান – স্বজাতির মধ্যে হাততালিও দেবার লোকের অভাব নাই । ভেবেছিলাম নতুন প্রজন্মের রাজনিতিবিদেরা হয়ত উন্নত দেশে থেকে থেকে এই সংস্কৃতি থেকে কিছুটা বেরোবেন – আমাদের পন্ডিত মশায়েরা পুরো পরিবার সমেত লাটের কুকুরের এক ঠ্যাং থেকে ধিরে ধিরে দুই, তিন ঠ্যাং এর সমান হবেন । কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি দিয়ে এই নতুন প্রজন্মের রাজনীতিবিদেরা আমাদের কান ধরে নিয়ে যাচ্ছেন পুরোনদের মতোই । মিলেমিশে আমাদেরকে পুরো জাতিকে লাটের কুকুরের চার ঠ্যাং সমান নয় বরং উল্টো চার ঠ্যাং ওয়ালা লাটের কুকুরের সমানে পরিণত করছেন – আর আমরা তা দেখে বিমলানন্দে হাততালি দিচ্ছি । |