এলিট ফোর্স এবং দ্রুত বিচার আদালত, এই দুয়ের কার্যকর ফাংশন

1

 

by Faiz Taiyeb
সন্ত্রাস নির্মূলে এলিট ফোর্স র‍্যাব কে অপ্রাতিষ্ঠানিক দমনকারী হিসেবেই তৈরি করা হয়েছিল। বিচার বহির্ভূত হত্যা দিয়ে শুরু হলেও, সেই সময় মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা এতটাই নাজুক ছিল যে দেশের নাগরিক এবং দেশে অবস্থানরত ভিনদেশী সবাই এই এলিট ফোর্স এর কর্মকাণ্ড কে স্বাগত জানিয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে আমরা অতি উতফুল্ল ছিলাম। অন্যতম একটা উদাহরণ ছিল পিচ্ছি হান্নান কিংবা নাঃগঞ্জের যুবদল নেতা ডেভিড হত্যা। রাজপথে পড়ে থাকা ডেভিডের লাশ নগর জীবনে স্বস্তি এলে দিয়েছিল। এই অসামান্য ঘটনা আমাদের সামাজিক নিরাপত্তার অতি অতি নিচু মাত্রা নির্দেশনে ব্যাপক তাৎপর্য মন্ডিত। আজ এত বছর পরে আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা বাড়েনি তো বেটেই বরং অতি শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন ঘরে ঘরে গুম, অপহরন আতংক।
কিন্তু উচত ছিল র‍্যাব প্রতিষ্ঠার সাথে সাথেই আমাদের আদালতের বিচারকি সক্ষমতা কে বড়িয়ে অতি দ্রুত র‍্যাবকে কে সহায়ক ফোর্স হিসবে একটি দক্ষতায় ভরা চৌকশ পুলিশ বাহিনীতে রূপান্তর করা, যারা অপরাধী ধরার ক্ষেত্রে পুলিশের ব্যর্থতাকে ঢেকে দেবে। এরা পুলিশ কে চৌকশ হতে প্রশিক্ষণ দিবে। হয়তবা এই লক্ষে একই সময়ে একটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়েছিল, যাদেরকে ৯০ দিনের মধ্যে বিচার বন্দোবস্তের কথা বলা হয়েছিল। এই ট্রাইবুনাল শুরু করেছিল খুবি ভাল ভাবে। দরকার ছিল র‍্যাব শুধু মাত্র এই দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল সম্পর্কিত মামলার তদন্ত, অপরাধী ধরা, চার্জশীট তৈরী ইত্যাদি কাজে দ্রুততা নিশ্চিত করবে। এটা না করে র‍্যাবকে দেয়া হোল মিছিল ঠেকানো, ময়লার গাড়ীতে ঢিল মারার আসামী ধরার, অবরোধে ঢাকার গেট, অর্থাৎ ক্ষমতা পাহারা দেয়ার রাজনৈতিক প্রকল্পে। পাল্লা দিয়ে বাড়লো বিরোধী দমনের ক্রসফায়ার। এটা এখন বিএনপি জামাত দমনের কার্যকর মেশিন। তাই তারা র‍্যাব এর বিলোপ চাচ্ছে। সেই সাথে আধুনা যুক্ত হয়েছে ক্ষমতাসীন দের বিবাদমান পক্ষ প্রতিপক্ষের নির্ভুলে র‍্যাবের সহায়ক হয়ে উঠা।
এলিট ফোর্স নিয়ে আমাদের চাওয়া সরকার আর বিরোধীদের চেয়ে ভিন্ন।
কিন্তু আমরা চাচ্ছি, একটি দ্রুত বিচার আদালত থাকবে যারা নাগরিকের চাহিদামত ৯০ দিন বা এরও কম সময়ের মধ্যে সুবিচার নিশ্চিত করবে। এর তদন্ত কাজ, অপরাধী ধরা, চার্জশীট তৈরি ইত্যাদি কাজে র‍্যাব এর মত একটি চৌকশ প্যারা মিলিটারি থাকবে যারা পুলিশ কে সার্বক্ষণিক সহায়তা দিবে, সময় ক্ষেপণ, দলীয় বাধা, আম্লাতান্ত্রিক জটিলতা, ক্ষমতাসীন আর পদধারী দের অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্য ঠেকিয়ে অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করনে ট্রাইবুনাল কে সার্বক্ষণিক সহায়তা করবে।
এছাড়া সরকার এ রয়েছে নাগরিক শান্তি স্থাপনে চাঞ্চল্যকর মামলা দ্রুত নিস্পত্তির প্রয়োজনীয়তা, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান গুলোর রয়েছে তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নে অযাচিত বাধা হটানোর প্রয়োজনীয়তা। সুতরাং এই সময়ে আমাদের এলিট ফোর্স দরকার। কারন আমাদের সমাজ প্রবলভাবে অপরাধ প্রবন।
এর বাইরেও রয়েছে নাগরিক কে যে কোন ধরনের সাপোর্ট দেয়ার কাজ, যেটা অপরাধ সম্পর্কিত নাও হতে পারে। এটা পুলিশের সোশাল রিস্পন্সিবিলিটি এবং সেন্স অফ সার্ভিস (সেবা) কে উন্নততর এবং মানবিক করতে ভূমিকা রাখবে।
আমরা বলছি, এলিট ফোর্স এবং দ্রুত বিচার আদালত এর এই দুয়ের কার্যকর ফাংশনে নিন্ম আদালত এবং পুলিশ চ্যালেঞ্জ এ পড়বে। অন্যভাবে বলা যায় পরিকল্পত ভাবে দুর্নীতি গ্রস্ত আদালত এবং পুলিশ এর উপর রাষ্ট্রীয় চাপ বাড়ানো হবে। এতে নিন্ম আদালত এবং পুলিশ এর সৎ এবং দক্ষ হয়ে উঠার উপর নাগরিক চাপও বাড়বে।
তবে, যত দিন সমাজে কর্মসংস্থানের হাহাকার থাকবে, যতদিন মানসম্পন্ন এবং পেট চালানোর মত নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরি না হবে তত দিন সমাজের এই অপরাধ প্রবনতা অব্যহত থাকবে। কাজ না পেয়ে নিন্ম, মধ্য এবং উচ্চ বিত্ত নিজ নিজ পরিসরে রাজনৈতিক দুরব্রিত্তায়নের হাতিয়ার হয়ে নিজেদের অপরাধে সপে দিবে। মালিকের অমানুষিক নির্যাতনে বা মারধর খেয়ে প্রান্তিক পরিবারের সেইসব শিশু শ্রমিক সেই মালিকেরই হত্যাকারীর ভুমিকায় অবতীর্ণ হতে চাইবে। তত দিন মিছিলে ভাড়া করা লোকের অভাব হবে না, হত্যায়-গুম-খুনে ভাড়াটিয়া খুনীর অভাব হবে না। অস্তিত্বের প্রয়োজনে যে পেশা মানুষ বেছে নেয়, সে পেশায় সে অতি বেশি পারঙ্গম হয়ে উঠে। তাই আজ আমাদের ছিটকে চোররা হয়ে উঠছে নিখুঁত প্রফেশনাল কিলার।
রাষ্ট্র ব্যবস্থা কি সেই দিকে তার চিন্তা নিবিষ্ট করবে? করবে চূড়ান্ত সমাধানের বন্দোবস্ত? এলিট ফোর্স, দ্রুত বিচার আদালত এইসব তো নিতান্তই সাময়িক কথা। এটা চূড়ান্ত ভাবে সমাজ কে অপরাধ প্রবনতা থেকে বাচাবে না।
অপরাধের উৎস মূলে নিরাময় চাই।

 

One thought on “এলিট ফোর্স এবং দ্রুত বিচার আদালত, এই দুয়ের কার্যকর ফাংশন

  1. যত দিন সমাজে কর্মসংস্থানের হাহাকার থাকবে, যতদিন মানসম্পন্ন এবং পেট চালানোর মত নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরি না হবে তত দিন সমাজের এই অপরাধ প্রবনতা অব্যহত থাকবে। কাজ না পেয়ে নিন্ম, মধ্য এবং উচ্চ বিত্ত নিজ নিজ পরিসরে রাজনৈতিক দুরব্রিত্তায়নের হাতিয়ার হয়ে নিজেদের অপরাধে সপে দিবে। মালিকের অমানুষিক নির্যাতনে বা মারধর খেয়ে প্রান্তিক পরিবারের সেইসব শিশু শ্রমিক সেই মালিকেরই হত্যাকারীর ভুমিকায় অবতীর্ণ হতে চাইবে। তত দিন মিছিলে ভাড়া করা লোকের অভাব হবে না, হত্যায়-গুম-খুনে ভাড়াটিয়া খুনীর অভাব হবে না। অস্তিত্বের প্রয়োজনে যে পেশা মানুষ বেছে নেয়, সে পেশায় সে অতি বেশি পারঙ্গম হয়ে উঠে। তাই আজ আমাদের ছিটকে চোররা হয়ে উঠছে নিখুঁত প্রফেশনাল কিলার।
    রাষ্ট্র ব্যবস্থা কি সেই দিকে তার চিন্তা নিবিষ্ট করবে? করবে চূড়ান্ত সমাধানের বন্দোবস্ত? এলিট ফোর্স, দ্রুত বিচার আদালত এইসব তো নিতান্তই সাময়িক কথা। এটা চূড়ান্ত ভাবে সমাজ কে অপরাধ প্রবনতা থেকে বাচাবে না।
    অপরাধের উৎস মূলে নিরাময় চাই।

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s