বাবার কাধ

1

images (2)

আজ ৩০ দিন হলো ব্যারিস্টার রফিক কারারুদ্ধ। সম্পূর্ণ বানোয়াট অভিযোগের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমানাদি ছাড়া একজন নাগরিককে বন্দী করে রাখা বাংলাদেশেই সম্ভব। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ চার্জশিট দাখিলে ব্যর্থ হয়- এমতাবস্থায় নিম্ন আদালত সাধারনত মামলা বাতিল করে দেয়। কিন্তু এক্ষেত্রে উল্টো তদন্তের সময় দিয়ে অভিযুক্তদের কারাগারে প্রেরণ করে- যেই তদন্ত হবার কথা গ্রেপ্তারের আগেই- এও এক নতুন দৃষ্টান্ত। তদন্তকারী গোয়েন্দারা ব্যারিস্টার রফিক কে বলে ‘স্যার, আমাদের কোনো প্রশ্ন নাই’।

রাজনীতির প্যাচ এ পড়া এসব গোয়েন্দাদের জন্য দুখ্যই হয় – বেচারারা জীবিকার তাগিদে স্বৈরাচারের চাকর এখন – তাদেরতো চাকুরী করতেই হবে।

আব্বা কিন্তু খুব সফল আইনজীবী – রাজনীতি থেকে দুরে থেকে আর দশটা সুশীলের মত ঘরের সোফায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দেবার কথা তার। তিনি আর তার ছেলেমেয়েরা ‘নাগরিকের’ বেশে তাদের বিত্তবান জীবন উপভোগ করবেন – আর্ট এক্সিবিশন এ যাবেন, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত এর আসরে মাথা দুলাবেন আর রাজনীতিবিদদের কটু গন্ধে নাক সিটকাবেন – এমনটাই হবার কথা। যখন তাদের নিরাপত্তার বলয় ভেঙ্গে যাবে, তখন তারা দোষারোপ করবেন সেই কটু রাজনীতিকেই। যেই মানুষটি ষষ্ট শ্রেণী থেকেই নিজের জীবন-জীবিকা নিজেই উপার্জন করেছেন, তিনি এই বিলাশিতাতুকু করতেই পারতেন ।

কিন্তু তিনি কখনই দায়িত্ব এড়িয়ে যাননি। তিনি আমাদের প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দিয়েছেন সুবিধাপ্রাপ্ত সক্ষম মানুষ হিসেবে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতি আমাদের দায়িত্বের কথা। আর সেই দায়িত্ব সবচেয়ে কার্যকরীভাবে পালন করা যায় দেশের নীতিনির্ধারণে সক্রিয় ভূমিকা রেখে – সেই লক্ষেই রাজনীতিতে অংশগ্রহন। রাজনীতি অবশ্যই সেচ্ছানীতি নয়, এই উপলব্ধিটা আমাদের রক্তের মধ্যে মিশিয়ে দিতে চেয়েছেন তিনি- সারাজীবন।

আমার ছোটবেলার সবচেয়ে মধুর স্মৃতি আব্বার জন্য জোর করে জেগে থাকা – তিনি খুব রাত করে ফিরতেন। সারাদিন হয়ত ঠিকঠাক খাওয়াও হয়নি, কিন্তু বাড়ি ফিরে তার প্রথম কাজ ছিল আমাকে কাধে নিয়ে ঘুম পাড়ানো – তা তিনি যতই ক্লান্ত-ক্ষুধার্ত হন না কেন । যেই পরম মমতায় তিনি আমাকে কাধে নিতেন, দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন তার থেকে হাজারগুন বেশি ভালবাসায়- আর কেউ বিশ্বাস করুক আর না করুক – তার পরিবারের এই একটি বিষয়ে কোনো সন্দেহ নাই।

আজ সেই রাজনীতির দায়ে এক সেচ্ছাচারী স্বৈরাচারী শাসকের শিকার তিনি। আর কতদিন বন্দী থাকবেন তা একমাত্র স্বৈরচারই জানে। আমার বাবাকে কাধে নেবার শক্তি বা সামর্থ আমার নেই – কিন্তু আমার বিশ্বাস যে দেশকে তিনি পরিবার করে নিয়েছেন , সেই দেশের অবশ্যই আছে।

Questions for Joy

The son of honorable PM Mr. Joy has come across some evidence (http://www.natunbarta.com/politics/2013/11/10/53771/bc91b7a26941ba1af949ca82b05eafb6) regarding the involvement of the arrested Leaders. I will not dignify his comments with a rational response. Instead I will pose the following questions, which to me are more rational:

1. He has evidence of incidents that dates back to September 24th but even with months of gathering ‘evidence’, he did not present them in CMM court on Saturday. Why should he not be detained and questioned by Detective Branch (DB) of Bangladesh for withholding evidence and obstructing Justice?

2. How did he come across such vital evidence? What gives him the authority to conduct such investigation and acquire ‘evidence’ that the DB failed to present? Is he a government official and does he have legal access to certain information? Why should he not be detained and questioned by DB to reveal his sources? Clearly being son of prime minister is not a qualification that can shield him from being questioned. And if he gathered evidence through illegal means, why should he not be tried in court?

3. Is it possible that he manufactured evidence to entrap the top most opposition leaders? He being non-elected civilian is accusing former and current elected representatives of the people, who have combined vote of few hundred thousands. Why should he not be detained for conspiracy and defaming the leaders- in the process hurting hundreds of thousands of voters? Putting people in prison for defaming facebook status is a reality in Bangladesh. What makes Mr Joy immune from it?

4. Is it possible that Mr Joy has either fully or partially orchestrated the series of bomb attacks and arson? It seems painting the opposition as terrorists is the best way to delegitimize their cause. If the leaders are arrested for plotting, with the same line of reasoning, why should Mr Joy not be arrested for plotting and entrapping opposition through arson and violent attacks?

The statements of Mr. Joy only shows how typical his political rhetoric is. Instead of rising above the flock of mentally decapitated fellow party men, he joins the conspiracy of clowns. With enemies like this, who needs friends?

হরতাল, হত্যা আর ক্ষমতা

এই হত্যার দায় আমাদের রাজনীতির। বি এন পি কে স্পষ্ট করে বলতে হবে তারা সন্ত্রাসকে বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দিবে না আর আওয়ামিলীগ কে দেখাতে হবে তারা মৃত্যুকে ভোটের বাজারে বিক্রি করবে না। সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রদান যেমন অধিকার, ঠিক তেমনি হরতালকে বর্জন করাও অধিকার। রাষ্ট্রীয় বা রাজনৈতিক সন্ত্রাস দিয়ে আপনি কোনভাবেই সেই অধিকার হরণ করতে পারেন না।

সন্ত্রাস দিয়ে যদি হরতালকে ‘কার্যকর’ করতে হয়, তাহলে সেটা আর হরতাল থাকে না, জুলুমে পরিনত হয়- এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় হরতাল আহবানকারী দল। অন্যদিকে হরতাল কে ব্যর্থ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা আর সেই লাশের অজুহাতে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরা। আমাদের বিরোধী দল কি এতই নির্বোধ যে নিজেদের হরতাল নিজেরাই অকার্যকর করার সুযোগ করে দিবে? আমাদের সরকারী দল কি এত বড় জানোয়ার যে দেশের নাগরিকদের পুড়িয়ে মারবে? দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, উপরের দুটি প্রশ্নের উত্তরী ইতিবাচক হতে পারে।

নতুন প্রজন্মকে এই দুটি দলের উপর আরো প্রভাব বিস্তার করতে হবে আর সতর্ক থাকতে হবে যেন তারা নিজেরা উল্টো প্রভাবিত না হয়। মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য রাজনীতি, রাজনীতিবিদদের ক্ষমতায়নের জন্য মানুষ না। আমাদের আগের প্রজন্ম এটা ভুলে গেলেও, আমাদের দায়িত্ব তাদের মনে করিয়ে দেয়া।
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/67717/%E0%A6%B8%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%82%E0%A6%B8%E0%A6%A4%E0%A6%BE_%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7%E0%A7%87_%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%B0_%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%9B%E0%A7%87%E0%A6%87_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A6%B2_%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8B%E0%A6%B0_%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A7%87

স্বাধীনতার চেতনা by raadrafique

মতামত প্রকাশের মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। শুধুমাত্র বিরোধী মতের হওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান  কে যেভাবে জেলে পাঠানো হলো তা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটেও বিরল। একটি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে মানুষের অভিমত প্রকাশের সমস্ত পথকে আটকে আওয়ামীলীগ আরো অনেক বিরল দৃষ্টান্ত স্তাপন করুক, এটাই কি সবার চাওয়া? এটাই কি স্বাধীনতার চেতনা? একদিকে নিরীহ মানুষ পুরছে, আরেকদিকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটা দল পূর্ণাঙ্গ স্বৈরাচারে রুপান্তরিত হয়েছে। ‘স্বাধীনতার’ নামে , ‘চেতনার’ নামে আর কত মানুষ বিসর্জন দিবে? এই যদি হয় স্বাধীনতা তাহলে পরাধীনতা কি?

শিষ্ঠাচার, সংলাপ আর সংগ্রাম

আবেগ, আকাঙ্খা, হতাশা এই সবই যেমন মানব অনুভূতি, ঠিক তেমনিভাবে প্রতিবাদও সহজাত প্রবৃত্তি। নরম স্বরে, ভদ্র সুরে মিথ্যা অভিযোগ তুললেই তা সত্য হয়ে যায় না, আর মিথ্যার প্রতিবাদে উত্তেজিত হলেই প্রতিবাদ গ্রহণযোগ্যতা হারায় না।

আপনি একটি রাজনৈতিক দলকে সরকারের সমস্ত অঙ্গসংস্থা দিয়ে পাঁচ বছর নিয়মতান্ত্রিকভাবে অবরুদ্ধ করে রাখবেন, দলটির নেতা কর্মীদের করের পয়সায় কেনা বুলেট দিয়ে হত্যা করবেন, গ্রেপ্তার,হয়রানি, গুম, নির্যাতন করবেন, ‘রক্ষক’ পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে স্বাধীনভাবে বিচরণের নুন্যতম অধিকারকে ক্ষুন্ন করবেন, দলটিকে ‘সন্ত্রাসী’ ট্যাগ দিয়ে তার রাজনৈতিক কার্যালয়কে একটি পুলিশের ফাড়িতে পরিনত করবেন, সংলাপের ডাক দিয়ে সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন – আর তারপর ‘শিষ্ঠাচারের’ নাম করে সাজানো বুলির ফাদে ফেলতে চাইবেন। এই শিষ্ঠাচারের থেকে ঔধত্ত অনেক উত্তম, আর সেই ঔধত্ত যদি হয় যুক্তিসঙ্গত, তাহলে তা অনুকরণীয়।

বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে যদি আমরা শিক্ষা নেই, তাহলে দেখি সংলাপের নামে কালক্ষেপন নতুন কিছু না। ইয়াহিয়া খান সংলাপের ডাক দিয়ে, সংলাপে বসেই গণহত্যার আয়োজন সম্পন্ন করেন। বর্তমান সরকারও একদিকে আলোচনার কথা বলে অন্য দিকে রাস্তায় সশস্র বি জি বি মোতায়েন করেছে আর  নাগরিকদের উপর গুলিবর্ষণের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু সব স্বৈরচারই একটা বিষয়ে ভুল করে – তারা ধরেই নেয় জনগণ তাদের আজ্ঞাবহ। তারা ভুলে যায়, জনগনই সকল ক্ষমতার উত্স। যত তারাতারি শাসক্গষ্টির এই উপলব্ধি হবে, তত তারাতারি সকলের মঙ্গল।

দানবীয় গণতন্ত্র

“কক্সবাজারের চকরিয়ায় ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে মিছিল করার চেষ্টা করেন বিরোধী নেতাকর্মীরা। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে বিজিবি-পুলিশ গুলি চালালে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই বিএনপি কর্মী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ”
মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞা অগণতান্ত্রিক আর স্বৈরাচারী। আর গুলি করে হত্যা, স্রেফ খুন। জনগনের করের পয়সায় কেনা বন্দুক দিয়ে জনগনের সেবায় নিযুক্ত সরকারের বেতুন্ভুক্ত পুলিশ, র্যাব, বি জি বি কে ব্যবহার করে যে রাজনৈতিক দল গ্রেপ্তার-হত্যা-নির্যাতন চালাচ্ছে, তাদের বিচার চাওয়া কি আমাদের স্বাধীনতার চেতনা না?
http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMTBfMjZfMTNfMV8xXzFfODA4OTM%3D

আমি প্রত্যেকটা হত্যার বিচার চাই, প্রত্যেকটা গুলির কৈফিয়ত চাই। যারা আজ নিশ্চুপে হত্যাকান্ড মেনে নিচ্ছেন, নাগরিক অধিকারকে বিসর্জন দিচ্ছেন-তারা শুধু একটা দানব্কেই শক্তিশালী করছেন। এই দানবই একদিন আপনার স্বাধীনভাবে বেচে থাকার অধিকারকে কেড়ে নিবে।