অনলাইনে আওয়ামী লীগের ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন

অনেকে ব্লগে অনেক বছর ধরে আছেন অনেকেই নাই ।
তাই যারা নবিস ফেসবুকার __ তাদের জন্য একটা একটা গুরুত্বপূর্ন পোষ্ট ।

সামু ব্লগের শুরুতে অনেক ছাগু অপারেশন ছিলো । তারা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অনেক কথা লিখতো ।
সেই উৎপাতে অতিষ্ট হয়ে __ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি গঠন করলো এটিম ।
এরা ছাগু তাড়াতে ওস্তাদ ছিলো ।
এদের বিক্রমে ব্লগ একসময় অনেকেটাই ছাগুমুক্ত হলো । কিন্তু ছাগসঙ্গে সর্বনাশ হওয়ার কারনে
__ এটিম দুএকজন এক্সট্রিমিষ্ট এবং এটিম সমর্থিত কিছু আওয়ামী ছাগু শুরু করলো রিভার্স খেলা ।
সেটা হলো ___ যে কোন একটা জামাতী/স্বাধীনতা বিরোধী নিক খুলে __ নোংরা কিছু কথা বলা ।
ব্যাস তাদেরকে গালি খাওয়ানো । শুধু নোংরা না __ এমন সব চিন্তা যেগুলো কখনো জামাতী এমনকি স্বাধীনতা বিরোধীরাও বলবে না ।

যা হোক যারা পুরানো ব্লগার ___ তারা খুব দ্রুতই এসব মানুষ এবং এদের পোষ্ট সম্পর্কে সচেতন হয়ে যেতো ।

সমস্যা বাধে __ নতুন ফেসবুক সেনসেশন নিয়ে ____ এদের অনেকেই সেলেব্রেটি __ কি কারনে সেলেব্রেটি এটা কেউ জানে না __ অনেকে আছে কিছু না বুঝেই চেতনাধারী __ কিছু বলার আর কিছু করার আগে ২ সেকেন্ড চিন্তা করে না । এদের কারনে যেকোন পেইজ যেকোণ পোষ্ট হিট হতে দেরী হয় না ।

___

এইরকম চরম কিছু নোংরামী __ বেশ কয়েকমাস ধরেই ফলো করছিলাম ।
মূলত এরজন্য দায়ী আমার ব্লগের কিছু উগ্রপন্থী আওয়ামী ছাগু __ রাসেল রহমান এবং তার চু***র পো* গ্যাং ।

___
এদের এ্যাকটিভিটি প্রথম নজরে আসে __ জামাতের মুখমাত্র বাশের কেল্লা যখন ব্যান করা হয় । তখন বেশ কিছু আওয়ামীপন্থী বাশের কেল্লা পেইজ সৃষ্টি হয়েছিলো । তারা সম্ভব অসম্ভব সবকিছুই শেয়ার করতো __ এবং সেগুলো মানুষ বিশ্বাস করে শেয়ার দিতো ।
মূলত পেইজের পিছনের কারা আছে এটা সহযে টের পাওয়া যায় না । তাই যেকেউ যেকোন পেইজ খুলে নষ্টামি শুরু করতে পারে

____
এবং বেশ কিছুদিন ধরে তাই করা হয়েছে __ পিনাকী ভট্টচার্যের মতো ফেসবুক এক্টিভিষ্ট __ গয়েস্বর রায়ের একটা ফটো শেয়ার করেছেন যেখানে সে বলছে __ যে খালেদা জিয়া মা দূর্গা।
এটা মূলত একটা ফটোশপের কাজ । এই খবরের কোন লিংক নেই ।
এধরনের আরো কিছু ফটো তৈরী করে হয়েছে __ শুধু মাত্র বিএনপিকে খারাপ দেখানোর উদ্দেশ্য ।

____

গতকাল পোষ্ট সম্পর্কে একজন দৃষ্টি আকর্ষন করলো ।

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805254202834552&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=1&relevant_count=3

সেটা হচ্ছে রাজিব হাসান নামের এক ভদ্রলোকের । উনি প্রথম আলো পত্রিকার সাব এডিটর ।
উনি এই আমার ব্লগ আর সিপি গ্যাং গ্রুপের খোলা ___ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের ৬০০০ লাইক পাওয়া একটা পেইজের পোষ্ট শেয়ার দেন । যেখানে দাবী করা হয়েছে __ শহীদ বুদ্ধিজীবিরা কাফের আর নাস্তিক ।

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805255296167776&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-a-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-prn2%2F1471112_805255296167776_1942651929_n.jpg&size=533%2C763

খুজতে গিয়ে দেখা গেলো __ এইটা সেই বিখ্যাত রিভার্স পেইজ __ যেখানে প্রোমোট করা হচ্ছে __ বিএনপি জামাতের নেতাদের মুক্তি চায় ।
এবং সবশেষে পাওয়া গেলো __ সেই বিখ্যাত ফটোসংবাদ

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805253952834577&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-a-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-frc3%2F1467357_805253952834577_343600566_n.jpg&size=720%2C456

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805254519501187&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-f-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-prn2%2F1490918_805254519501187_379323394_o.jpg&smallsrc=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-f-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-prn2%2F1499605_805254519501187_379323394_n.jpg&size=1057%2C797

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805254949501144&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Fscontent-b-iad.xx.fbcdn.net%2Fhphotos-frc3%2F1390683_805254949501144_324898650_n.jpg&size=510%2C724

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805255129501126&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-b-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-ash4%2F1462866_805255129501126_1136641474_n.jpg&size=515%2C559

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805253272834645&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-e-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-frc1%2F902342_805253272834645_1420339422_o.jpg&smallsrc=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-e-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-ash3%2F1463394_805253272834645_1420339422_n.jpg&size=1068%2C778

_____

মূলত এই পেইজটা থেকে দেশের বরন্য মানুষকে গালাগালি করে __ বিএনপি-ছাত্রদলযে ভয়ংকর একটা দল সেটা প্রমান করা হচ্ছে ।

তাই এদের পাতা ফাদে পা দেবার আগে দশবার ভাবুন ।

আর এটা ছাত্রদলের অফিসিয়াল পেইজ কিনা জানা নেই __ কিন্তু এখানে দেখেন ক্লিয়ারলী অফিসিয়ালি তারা বুদ্ধিজীবিদের স্মৃতিতে কর্মসূচি দিচ্ছি।

____
অনেকে ভাবতে পারে -__ আমার কি দায় পড়েছে এসব নিয়ে লেখার । আমি বিএনপি এক্টিভিষ্ট নই __ বিএনপি খুব বেশী কাজকর্ম আমার ভালো লাগে না ।বিএনপির নিজস্ব সমালোচনা আছে আমার __ কেউ চাইলে সেসব কম্পাইল করে দেয়া যাবে ।
তো আমি এটা লিখলাম কেন ?? বিএনপি মানুষজন আমি যা দেখলাম অনলাইনকে খুব গুরুত্ব সহকারে নেয় না ।
তাই তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করার পরও তার এটাকে গুরুত্ব সহকারে নেয় নি ।

কিন্তু দেখুন এই নোংরামীটা কতোদূর ছড়াচ্ছে ___ যারা বিএনপি আওয়ামী লীগ কিছু করে না __
তারা এই নির্বাচনের সময় সঠিক দাবী করার বদলে বিএনপি পক্ষে যাবে বলে চুপ করে বসে আছে ।

_____
জাতীয় রাজনীতিতে রিভার্স গেমতো কম দেখা হলো না । ব্লগের এসব রিভার্স খেলতে
দেখেছি আওয়ামী পান্ডাদেরই ।

বাশের কেল্লা ভুয়া ফটোশপ দিয়ে প্রপাগান্ডা করে ___ আমার দেশের কাবা শরীফের গিলাফ নিয়ে মিথ্যাচার অনেক লীগারের টপিক ।

কিন্তু কেউ বলে না __ আওয়ামী লীগ __ আরেকজনের ঘাড়ে দোষ চাপানোর জন্য কি পরিমান নোংরামী করে বেড়ায় __ যারা দেখে তাদের গা শিঊরে উঠে আওয়ামী লীগের নোংরামী
গভীরতা চিন্তা করে ।

একবার ভাবুন __ এসব নোংরা কীট গুলো শহীদ বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে এসব লেখা লিখছে শুধু বিপক্ষ দলকে ঘায়েল করার আশায় ।

_______
অনলাইন প্লিজ কোন কিছু শেয়ার করার আগে প্রমোট করার আগে সোর্স দেখে নিশ্চিত হয়ে নিন ।
আপনারা চুপ করে বসে থাকবেন __ আর সরকার এইদিকে মানুষ মারার উৎসব করবে ।
মানুষের পরিচয় দিন __ এসব নোংরামীর পিছনে লাথি মেরে এদের কবল থেকে দেশকে উদ্ধার করুন ।

মুহাম্মদ জাফর ইকবালকে নিয়ে একটা আকাশ কুসুম স্বপ্ন

2

মুহাম্মদ জাফর ইকবালের পদত্যাগটা আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির যে কাজ তিনি করছিলেন – সেটার বিরুদ্ধে বামপন্থী সংগঠন আর আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের
অবস্থানে ক্ষুব্ধ হয়ে ।
তার পদত্যাগ পত্রে সেই অভিমান স্পষ্ট ।
আমার মনে হয় – সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার আইডিয়া খুবই চমৎকার । নিজে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে গিয়ে পরীক্ষা দেবার কারনে জানি শুধু একটা ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হওয়া গেলে ব্যাপার কতো ভালো হতো আমার জন্য ।

একটা জেলায় একটা বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেই সেটার ৫০% কোটা সুবিধা সে জেলার লোক পাবে – এমন হাস্যকর দাবী শুধু সিলেটিদের পক্ষেই করা সম্ভব । বলাবাহুল্য
শিক্ষিত হিসাবে সিলেটিদের খুব সুনাম কোন কালেই ছিলো না । লন্ডনি পয়সায় লাফঝাপ দেয়া – আর মননে শিক্ষিত হওয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার ।
(যদিও বাংলাদেশের সবচে প্রগেসিভ অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান সিলেটি – তবে তাকে হিসাবের বাইরে রাখতে হবে – কারন মাল মুহিতের মতো ছাগল অর্থমন্ত্রী হয়ে – তাকে ক্যান্সেল করে হিসাব সমান করে ফেলেছে  )
এইরকম একটা অযৌক্তিক দাবী করে – তারা দেশেবাসীর সামনে ভাড় হিসাবে নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরলেন ।
যদিও ৫০% কোটার সাথে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের পদত্যাগের কোন সুত্র খুজে পাচ্ছি না ।
তাই যারা প্রতিবাদ করছেন – সঠিক চ্যানেলে প্রতিবাদ করেন । প্রতিবাদটা মন্ত্রীদ্বয় আর বাম সংগঠন গুলোর বিরুদ্ধে হওয়া দরকার ।

=====
মুহাম্মদ জাফর ইকবাল আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন । তার রাজাকার বিরোধী অবস্থান তীব্র ছিলো সবসময়ই । আদর্শিক অবস্থানে তার মতো তীব্রতা না থাকলে তার অবস্থানকে যথেষ্ঠ শ্রদ্ধা করতাম । মূলত আমাদের প্রজন্ম এবং পরের প্রজন্মকে রাজাকার ঘৃণা করানো শেখানোতে তার অনেক অবদান আছে । এই কারনে মুহাম্মদ জাফর ইকবালকে
রাজাকাররা এবং রাজাকারপ্রেমীরা তীব্র ঘৃণার চোখে দেখে । যেটা খুব সহজেই আগে বোঝা যেতো – বিনা কারনে জাফর ইকবাল বিদ্বেষ দেখে ।

সম্প্রতি সময়ে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল নিজেই নিজের দেবতুল্য অবস্থান বিতর্কিত করেছেন – খোলাখুলি আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নিয়ে । রাজাকারের বিচার আর জামাত নিষিদ্ধ করন নিয়ে আওয়ামী টালবাহানাকে উনি হালকা করতে চেষ্টা করেছেন । যেনো রাজাকার বিরোধী ঘৃণার রোষ আওয়ামী লীগের ঘাড়ে না বর্তায় ।

ব্যক্তিগত ভাবে আমার অবাক লেগেছে – উনি বিএনপির সময় সব দূর্নীতি, কূটচাল, মানবাধিকার লংঘন , ষড়যন্ত্র দেখতে পান — কিন্তু আওয়ামী লীগের ডাকাতী , সন্ত্রাস , মানবাধীকার লংঘন , কূটচাল , ষড়যন্ত্র দেখতে পান না । সম্প্রতি সময়ে তার লেখা পড়ে মনে হয়েছে , যে কোন মূল্য আওয়ামী লীগ ক্ষমতা যাক এটাই দেখতে চেয়েছিলেন ।
নিরপেক্ষ নির্বাচন হৌক , প্রধানমন্ত্রী দুনিয়ার সবচে বড়ো মিথ্যুক জোচ্চর হোক , যেকোন উপায়ে ক্ষমতা আকড়ে থাকুক – এসব তিনি এড়িয়ে গেছেন । রাজাকার বিরোধী ঘৃণা
তার এইপর্যায়ে গেছে – যে বর্তমানে আওয়ামী লীগের দেশ লুন্ঠনকে তিনি বৈধতা দিচ্ছেন ।

এটা আমার জন্য খুব কষ্টকর একটা ব্যাপার – যাকে রোল মডেল মনে করতাম – তার দলকানাত্ব শুধু আমার উপর না – দেশের উপরই নেগেটিভ ইফেক্ট ফেলে ।

====

কিন্তু যে দলই করুন না কেন – মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মতো মানুষ বাংলাদেশের দরকার আছে । তার প্রভাবের কথা বর্ণনা করে – আরো ৫০০০ লাইন যোগ করবো না এই লেখাতে।
যারা তার প্রভাব সম্পর্কে সচেতন তারা জানেন তিনি কি। রাজাকাররা আর রাজাকারপ্রেমীরাও তার প্রভাব সম্পর্কে সচেতন ।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার প্রয়োজনীয়তা এখনো ফুরিয়ে যায়নি। উনার বিজ্ঞান-প্রযুক্তি দিয়ে পরিচালিত মন আর মনন দরকার আছে – দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একটির ।

উনি পদত্যাগ পত্র বাতিল করে আবার তার অবস্থানে ফেরত যান এই কামনা করি । যদিও তিনি সরাসরি আওয়ামী লিগের পক্ষে অবস্থান নিয়ে দেশের অধিকাংশ মানুষের মুখোমুখি দাড়িয়েছেন — আশা করবো – তিনি তার ঘৃণা শুধু রাজাকার বিরোধীতায় সীমাবদ্ধ রাখবেন –
গড়পড়তা সব মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাবেন না ।
কারন হচ্ছেন – তার বিরোধীপক্ষ – যদি রাজাকার ধরি – তারাও শক্তিশালী । আর তিনি যে দলের জন্য অন্ধ – সে দলেও তার শুভাকাংক্ষী কম । ভালো মানুষের শুভাকাংক্ষী কম থাকে ।
তার দলের ভিতরে তার পিঠে ছুড়ি মারা মানুষের অভাব হবে না; কার্যত – এরা জামাতীদের চেয়ে কম নোংরা না ।
====
যদিও জানি এসব লিখে কোন ফল হবে না – কারন বাংলাদেশে ট্রেন্ডই আছে – জ্ঞানী গুণী মানুষদের কোন একটা ট্যাগ দিয়ে নোংরাতম ভাষায় তাকে আক্রমন করে অপদস্থ করার ।
মুহাম্মদ জাফর ইকবালের দলই এই কাজ-এ সবচে দক্ষ এবং পাইওনিয়র ।

সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে তার দাবী মেনে তাকে তার পদে ফেরত দেয়ার – একটা
আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখতে পারি ।

ভাবতে পারি মুহাম্মদ জাফর ইকবাল – শুধু আওয়ামী লীগের জন্য না লিখে – দেশের সবার জন্য লিখবেন ।

ভাবতে পারি – বিএনপির লোকজন – রাজাকারপ্রেম বাদ দিয়ে – মুহাম্মদ জাফর ইকবালকে তার প্রাপ্য সম্মান দিয়ে আওয়ামী লীগের মতো ট্যাগবাজিতা থেকে বের হয়ে আসবে ।

একটা পারফেক্ট বাংলাদেশের মনে হয় আমরা এই স্বপ্ন সফল করে ফেলতে পারবো ।
কিন্তু বাস্তব অনেক কঠিন ।

একটি গণতান্ত্রিক বাদর নাচ

দুই টাকার বাদাম চাবাইতে চাবাইতে বৈকালিক ভ্রমনে বের হয়েছি । পথিমধ্যি দেখি এক দাদী বয়সী মহিলা বাদর নাচ দেখাচ্ছে । রঙ্গ দেখার লোভে জনতার ভিড়ে উলুক ঝুলুক করে ঠেলে ঠুলে দাঁড়িয়ে পড়লাম । সামনের পোলাপান গুলো বলছে – বুবু বুবু – ডিগবাজি দেয়ান ।
দাদী বয়সী বুবু বাদরের গলার দড়ি ধরে টান দিতে বাদরটি ডিগবাজি দিলো ।
পোলাপান হাততালি দিলো দেদারসে । এরপর বুবু বাদরটিকে কিছু প্রশ্নোত্তর জিজ্ঞেস করলেন —
তুই জোটে থাকবি?
বাদর মাথা ঝাকায় – হ্যা ।
তুই জোটে থাকবি না ।
বাদর ডিগবাজি দেয়া।
তুই নির্বাচনে যাবি ?
বাদর লজ্জা পাওয়ার ভান করে মুখ ঢাকে । মাথা নাড়ে – অর্থ্যাৎ না ।
তুই ১৩ দফা দিবি –
বাদর উচ্ছাস প্রকাশ করে । লম্ফ ঝম্ফ দেয় ।
বুবু বাদরটিকে একটা কলা পুরুস্কার ঘোষনা করে – জিজ্ঞেস করে – নির্বাচনে যাবি।
বাদরটি আনন্দে আত্মহারা হয়ে – মাথা ঝাকায় হ্যা হ্যা । কলাটি পুরুষ্কার হিসাবে পায় ।

এরমধ্যে একটি সুন্দরী মেয়েকে দেখে বাদরটা শিষ দেয় ।
বুবু তাকে কড়া শাসন করে । বাদরটি তার গলার রশি ধরে টানাটানি করে – সুন্দরীর কাছে যাবার জন্য প্রতিবাদ করে ।
বুবু বাদরের লেজ ধরে আচ্ছা করে মচকে দেন ।
বাদরটি কাদো কাদো ভঙ্গিতে জড়ো সরো হয়ে যায় ।
বুবু বলে – এবার রাজনৈতিক নেতার ভাব ধরো ।
বাদরটি বেশভূষা ঠিকঠিকা করে – গলাবাজির ভান ধরে ।
বুবু বাদরটিকে ছেড়ে দেয় – বাদরটি বুবুকে ভেঙচি কাটে । প্রতিবাদী হয় ।
বুবু বাদররটিকে খাচায় পোড়ার হুমকি দেয় ।
বাদরটি গণতান্ত্রীক ভাবে বুবুর স্বৈরাচার মেনে নেয় ।
বাদরটি ভায়োলেন্স, ভেঙ্গচি , অসহোযোগ বাদ দিয়ে – বুবুকে কনভিন্স করতে থাকে কেন –
তাকে স্বাধীনতা দেয়া উচিত – তার গলায় প্রেসিডেন্সির মালা দেয়া উচিত ।

সামনের সারির প্রগতীশীল পোলাপানরা বাদরের গণতান্ত্রীক আচরনে মুগ্ধ হয়ে – তাকে পয়সা ছুড়ে দেয় । হাততালি দেয় – বাদরটি কতো সহবত জানে ।

কিন্তু আমার নজর এড়ায় না – বুবু শক্ত হাতে একটা হান্টার মুঠোবন্ধি করে রেখেছিলো – আড়াল করে — বাদরটি একবারের জন্যও হান্টার থেকে চোখ সরায়নি ।

বাদাম চিবুতে চিবুতে নব্যস্বৈরাচারীর গণতান্ত্রিক বাদর নাচ দেখে মাথা নাড়তে নাড়তে বৈকালিক ভ্রমণের ইতি টানি

=========
ImageImageImageImageImageImageImageImage

হরতাল বিষয়ক উপলব্ধি

হরতালে পুড়ে মারা যাওয়া একটা বাচ্চার ছবি দেখলাম । ভয়ংকর অবস্থা । ওয়াকিং  ডেড নামে একটা জম্বি সিরিয়াল দেখে  আর জম্বি মানুষের সমাজে বসবাস করে — কোন ধরনের অনুভূতিই আর অবশিষ্ট নাই। তারপরো একটু খারাপ লাগলো।
হরতাল নিঃসন্দেহে তুলে দেয়া উচিত । এক একটা হরতালে দেশের অর্থনীতির শত কোটি টাকা ক্ষতি হয় — এটা এখন সম্ভবত
বাচ্চা ছেলেরাও জানে ।

কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় — বাংলাদেশের যেই রাজনৈতিক কালচার – লাশ , আহত মানুষ, জনজীবনের চরম দুর্দশা ছাড়া ক্ষমতাসীনদের দৃষ্টি আকর্ষন করা যায় না । বিএনপি দাবী করছে – তত্ত্বাবধায়ক সরকার , একটা লেভেল প্লেইং ফিল্ড, একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন । তাদের এই নায্য দাবীকে আদায় করার অন্য কোন বিকল্প পদ্ধতি আছে ??

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভাবছে তাদের কখনোই ক্ষমতা ছাড়তে হবে না, আগের টার্মে একই ভুল বিএনপি করেছিলো —
সে সময়ে কি আওয়ামী লীগ হরতাল দেয়া বন্ধ রেখেছে ?? মানুষ পুড়িয়ে মারে নাই ?
শেরাটনের সামনে দোতালা বাসে গান পাউডার দিয়ে ১২-১৪ মানুষ মারা ইতিমধ্যে ভুলে গেছে মানুষ ?
নাকি লগি বৈঠার তান্ডব ভুলে গেছে মানুষ ?? ১ টা লাশ পড়লে ১০ টা ফেলার হুমকি ভুলে গেছে মানুষ ??

১৯৯১-১৯৯৬ সালে ১৭৩ দিন হরতাল দিয়েছে আওয়ামী লীগ ২০০১-২০০৬ সালে দিয়ে ১৩৩ দিন। শেখ হাসিনা নিজে প্রমিস করেছিলেন – বিরোধী দলে গেলে আর হরতালের রাজনীতি করবেন না , হরতাল দিবেন না । এসব কী ভুলে গেছে মানুষ ?

=====

খুব যৌক্তিক প্রশ্ন যে — হরতালে লোকক্ষয় হচ্ছে, নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে, শত কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে, হরতাল দাঙ্গা ফ্যাসাদ বন্ধ করা উচিত; তো এখন যৌক্তিক দাবী আদায়ের উপায় কি ?
কোন উপায় নাই । ধ্বংসাত্মক কাজ ছাড়া কারো দৃষ্টি আকর্ষন করার কোন উপায় নাই ।

উপায় একটা ছিলো – সেটা হলো আওয়ামী ঘেষা , আওয়ামী পন্থী , আওয়ামী সহানুভূতিশীল মানুষদের উচিত ছিলো — নিরপেক্ষ নির্বাচন , ত্বত্তাবধায়ক সরকার এর দাবীতে বিএনপিকে সাপোর্ট দেয়া । এটা বিএনপির প্রতি সাপোর্ট না – এটা যেটা সঠিক , যেটা নায্য তার প্রতি সাপোর্ট । এসব নিয়ে লেখা লেখি করা । আমাদের দেশের একটা ভাইব্রেন্ট সিভিল সোসাইটি দরকার – যেটা যেকোন যৌক্তিক ইস্যুতে বিরোধী দল , সরকারী দলকে লাইনে রাখবে ।

আমি আপনাদের গ্যারান্টি দিতে পারি  আওয়ামী ঘেষা , আওয়ামীপন্থী , আওয়ামী সহানূভূতিশীল ৯৯% মানুষের ওয়ালে এই বিষয়ে কোন কথা দেখবেন না । তাদের কাছে এসব কোন ইস্যু না —
কিন্তু তাদের নিশ্চুপতার কারনে যদি একটা বাচ্চা ছেলেকে হরতালকারীরা পুড়িয়ে দেয় – তখন আবার সেটা তাদের ইস্যু হয়ে যায় ।

আশ্চর্য আমাদের দেশের মানুষ, আশ্চর্য তাদের মানসিকতা।burnt-in-hartal-1

আওয়ামী ধর্মের সমালোচনা এবং একটি প্রশ্ন

নিজের চোখে ইতিহাস সৃষ্টি হতে দেখলাম(যদিও কানের উপর দিয়ে প্রচুর প্রেশার গেলো) খুব বেশী দূরে না – আজকে থেকে ৫ মাস পরই ফেসবুক ভরে যাবে খালেদা জিয়ার “হ্যা অবশ্যই” পর্যন্ত অডিও ক্লিপে।
গ্রুপে গ্রুপে ঘৃণা ছড়ানো হবে ।
৫ বছর পর বলা হবে – খালেদা জিয়া রাজাকার বাহিনীর প্রধান ছিলেন ১৯৭১ এ।
আরো ৫ বছর বাচ্চাদের ইতিহাস বই-এ ছাপা হবে – খালেদা জিয়ার নির্দেশে ইয়াহিয়া,( শেখ সাহেবের প্রিয়)
ভূট্টো আর টিক্কা খান মিলে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছিলো।
Continue Reading