বাংলাদেশের জীবনযাত্রায় নাটকের প্রভাব

by Jahid Islam

বাঙ্গালি জাতির নাটকপ্রিয়তা নিয়ে জ্ঞানীগুণী গবেষকরা হয়ত ইতিমধ্যেই বিস্তর লিখেছেন। নাটক ব্যাপারটি যে আমাদের মজ্জাগত-ছোটখাট কিছু উদাহরণ এর মধ্য দিয়ে এই পুরনো সত্যটিকে আবারও তুলে ধরার চেষ্টা থেকে এই লেখার প্রয়াস।

আমি যখন ছোট, আমাদের গ্রামের অনেক বাড়িতেই তখন টেলিভিশন ছিলনা। তবে আমাদের ঘরে একটা সাদা কালো টিভি ছিল। এতে রাতে সাপ্তাহিক বা প্যাকেজ নাটক দেখতে আসা উপচে পড়ার ভিড়ের কথা আমার এখনো মনে আছে। আমাদের যে রুমটাতে টিভি ছিল ঠিক সেই রুমের বিছানাটার মাঝখানের একটা তক্তা ভেঙ্গে গেছে একটা সময়। হয়ত ঘুণে ধরা কাঠ ছিল। তবু আমার বিশ্বাস এতে হাউসফুল দর্শকের একটা না একটা ভূমিকা না থেকে যায় না। “কোথাও কেউ নেই” নাটকে বাকের ভাইয়ের আসন্ন ফাঁসির কথা কল্পনা করে ভক্তকুলের মধ্যে যারা মহিলা দর্শক ছিলেন (আমি এবং আমার ভাই ছাড়া প্রায় সবাই এবং তারা বেশীর ভাগ ছিলেন আমার চাচি ও ফুপু সম্প্রদায়ের) কয়েক পর্ব ধরে তাদের সে কি মলিন চেহারা ! এমনকি এই নাটকে বাকের ভাইয়ের ফাঁসির বিরুদ্ধে ঢাকা শহরে মিছিল এবং হুমায়ূন আহমদের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণের মত ঘটনা শুনেছি। ঘটনার সত্যতা যাচাই করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে যদি সত্য নাও হয় তবু এই ধরনের জনশ্রুতি তৈরির ব্যাপারটি নাটকের প্রতি আমাদের ভালবাসাকেই নির্দেশ করে।

নাটকের এই প্রভাব গ্রামীণ সাদাসিধে মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চ শ্রেণীর শিক্ষিত মানুষ,সবার মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। এমনকি এই দেশের আদালতে পর্যন্ত। যোদ্ধাপরাধীদের বিচারে আসামীর বিরদ্ধে অপরাধের প্রমাণ স্বরূপ যে সব ডকুমেন্ট সরবরাহ করা হয় তাতে স্থান পেয়েছে মুনতাসির মামুনের লেখা নাটক। হেরেসিম লেবেদেফ যিনি বাংলা নাটকের সূত্রপাত করেন বলে এক সময় মাধ্যমিক শ্রেণীর বইয়ে পড়েছিলাম আজ বেঁচে থাকলে তাকে হয়ত জিজ্ঞেস করা যেত, “ ভাইসাব আপনার উদ্ভাবিত জিনিসটির এই সাফল্য দেখে আপনার অনুভূতি কেমন” ?  তিনি যে জিনিস চালু করেছিলেন তার প্রভাব যে একদিন একটা গোটা জাতির প্রাত্যহিক জীবনে পড়বে এবং এ দিক থেকে যে তিনি একদিন শেকসপিয়ারকেও ছাড়িয়ে যাবেন তিনি কি তা কখনো চিন্তাও করেছিলেন ?

দেশীয় রাজনীতিতে নাটকের প্রভাব আরও প্রকট। আর তাই  নাট্যকাররা  জনপ্রিয় পলিটিক্যাল কমেনট্রিও লিখে থাকেন দৈনিক পত্রিকায়। এমনকি টিভি টকশোতও রয়েছে তাদের প্রাধান্য। তাদের যুতসই বিশ্লেষণ পড়ে পাঠক চলে যান কল্পনার রাজ্যে। দর্শক বা পাঠকের উদ্ভাবনী শক্তিকে উসকে দেন এই নাট্যকাররা। ঘোরতর সঙ্কট হতে জাতিকে রক্ষা করার জন্য জাতীয় পতাকা দিয়ে রেকর্ড করার মত নাটকীয় বিষয়টি খুঁজে বের করেন সমঝদার পাঠকবৃন্দ। এখানেই শেষ নয়। এই নাটকের অভিনেতারা অনেকেই দেশের সেবায় নিয়োজিত সাংসদ। তাঁরা যে কোন সঙ্কটে দেশকে রক্ষা করবেন ঠিক সেভাবে যেমনটা সিনেমাতে প্রিয় গোথাম নগরীকে রক্ষা করেন ব্যাটম্যান।

পিছিয়ে নেই মঞ্চ নাটকও। সমানতালে এর প্রভাবও রয়েছে দেশের রাজনীতিতে। মঞ্চ নাটকে যেমন জোরে জোরে সংলাপ বলা হয়, আমাদের রাজনীতিবিদরাও বক্তৃতায় অনেকটা সে কাজই করেন। যিনি যত জোরে সংলাপ বলবেন তিনিই এই মঞ্চে তত ভাল বক্তা বা অভিনেতা। এমনকি নাটকের আদলে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ সাজানোও ত আমাদের রাজনৈতিক ঐতিহ্যেরই অংশ।

নাটকের দৃশ্যে কাহিনীর প্রয়োজনে দৃশ্যপটে উঠে আসে হারিয়ে যাওয়া পুরনো চরিত্র। এমনটা আছে আমাদের রাজনীতিতেও। কয়েকদিন আগে দেখলাম শামীম ওসমান সাহেব বক্তৃতা দিচ্ছেন এবং জনতা এই মহান বীরকে তুমুল করতালি দিয়ে অভিবাদন জানাচ্ছে। ঠিক যেন রোমান বীর জুলিয়াস সিজারের মত। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে তার ভোট না গণনা করেই যে প্রতিপক্ষের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা সম্ভব এ সত্যটিও এই মহান নেতা খুব ভাল করেই জানেন। কিন্তু তবু তিনি জনপ্রিয় নেতার ভূমিকায় অভিনয় করবেন এবং বাজারে এই অভিনয়ের সমঝদার দর্শকও কাছে। আওয়ামি লীগ যদি সত্যিই অনেক দিন  ক্ষমতায় থাকে তখন তিনি আসবেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যেমনটা আসতেন জয়নাল হাজারি । মানুষ তাকে নতজানু হয়ে সালাম দিবে। আর ভাব করবে এমন – “ আহা আপনাকেই ত জাতি চায়। এতো দিন কোথায় ছিলেন ? ”/ জাতির ক্রান্তি লগ্নে জাতিকে মূল্যবান পরামর্শ দেবার জন্য তিনি টকশোতেও হাজির হবেন। কিংবা “সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূল” শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে তিনি আসতেই পারেন অতিথি বক্তা হিসেবে।

শাহবাগ আন্দলনের অন্যতম নায়ক ইমরান এইচ সরকার পুলিশের হাতে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনিও এ জাতির আরেকজন দক্ষ নেতা (পড়ুনঃ অভিনেতা)/ ছোট বেলায় পড়েছিলাম দক্ষ নেতারা নাকি উপদেশের বদলে উদাহরণ দেন। তিনি যে সরকার দলের সমর্থক নন তা তিনি জাতিকে উদাহরণ দিয়ে (অভিনয় দিয়ে) বুঝিয়ে দিতে চাইলেন। আর তাই তিনি গুলশান নাটক মঞ্চস্থ করলেন। শুয়ে শুয়ে শ্লোগান দিয়ে (ডায়ালগ দিয়ে) যে নাটকে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করা যায় এখানেই বিশ্ব এই অভিনব কলার সাথে প্রথম পরিচিত হল।

 

থেমে নেই আমাদের প্রধানমন্ত্রীও। তিনি থেমে থাকলে চলবে কেন, তিনিই যে এ সময়ে নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ! বর্তমান নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল যে কেবল আদালতের রায় ও সংবিধান সমুন্নত করার জন্যই এবং এটি যে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত কোন স্বার্থ বা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লোভ থেকে নয় গোটা জাতির সামনে কান্নার অভিনয়ের মাধ্যমে তা তিনি ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে মৃত মানুষের পরিবারকে বা আগুনে ঝলসে যাওয়া মানুষকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে তিনি যত দ্রুত কান্না করতে পারেন, তা দেখে বিজ্ঞজন মাত্রই স্বীকার করবেন যে সঠিক সময় এমেরিকায় জন্ম হলে তিনিই হতেন রোণাল্ড রিগ্যান কিংবা আর্নল্ড শোয়ারজনিগার এর মত অভিনয়ে পারদর্শীদের সবচেয়ে উপযুক্ত রাজনৈতিক প্রতিযোগী।

বর্তমান পরস্থিতিতে বিরোধী দলবিহীন এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নিশ্চিতভাবেই  জয় লাভ করবে। এই নির্বাচন করা না করা সমার্থক। কিন্ত না, যে কোন মূল্যে এই “নির্বাচন-নির্বাচন” নাটকটি মঞ্চায়িত করতে হবে। এটিত আসলে ১৯৯৬ সালে মঞ্চায়িত নাটকটিরই দ্বিতীয় পর্ব। একদলীয় হলে কি ! সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে কোন ছাড় নেই। তাই সেনা মোতায়েনও করা হবে । এটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে কিনা তা দেখতে সদা তৎপর রয়েছে “৭১ টিভি” / সকাল হতে বিকেল তারা এর লাইভ কাভারেজ দিবে।

হাসিনা এই নির্বাচন না করেই ক্ষমতায় থাকতে পারতেন, যেমনটা স্বৈর শাসকরা করে থাকেন। একজন স্বৈর শাসকের সাথে তার গুণগত পার্থক্য না থাকলেও এই অভিনয় তিনি করবেন। সহ অভিনেতা হিসেবে এই নাটকে তিনি বেছে নিয়েছেন রাজনৈতিক নাটকের অন্যতম থ্রিলার কিংবদন্তী এরশাদকে। পার্শ্ব অভিনেত্রি হিসেবে রওশন বরাবরের মত এবারেও ভাল।

আমরা যে সরকারদলীয় মন্ত্রী, এমপিদের হলফনামা দেখে শোকে মুহ্যমান হবার ভান করি, তারা যে এরকম এই ব্যাপারটা কি আমাদের অজানা ছিল, নাকি তাদের চরিত্র সম্পর্কে আমাদের  যে ধারনা এই ঘটনা তার সাথে একেবারেই বেমানান ? তাও আমরা অবাক হবার ভান করি।কেননা এতে নাটকীয়তা বজায় থাকে।

নাটক যে আমাদের অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে সেটা আরও ভাল বুঝা যায় যখন আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতিরা (সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে নরম মনের মানুষেরা এই পদ অলংকৃত করেন) ফাঁসির দণ্ড প্রাপ্ত আসামিকে মাফ করে দেন। তারা আবার পুনর্জীবন লাভ করে। দণ্ড মাফ প্রাপ্ত কৃতী সন্তানরা দেশ জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। কেউ কেউ তাই এম পি মন্ত্রী হয়ে জাতির সেবায় মগ্ন হন। আবার যাবজ্জীবন দণ্ড পেলেও হয়ত অনেকের মুক্তি নেই। কেননা দর্শকদের চাহিদা মাথায় রেখে তৈরি হয় নাটক। প্রয়োজনে চাহিদা অনুসারে কাহিনীর পরিবর্তন ঘটে। দর্শকের কাঙ্খিত ভিলেনের ফাঁসি হয়। দর্শক এবং নির্মাতা সকলেই নির্মল আনন্দ লাভ করেন।

 

তবে কেউ যেন ভাবতে না পারে যে দেশে সুবিচারের ব্যত্যয় হয়েছে সেই দিকেও রয়েছে সরকার বাহাদুরের কড়া দৃষ্টি। আর তাই  সরকার দলীয় এমপি মন্ত্রী পর্যন্ত  ন্যয় বিচারের দণ্ড থেকে রেহাই পান না। টাকার ব্যাগ সহ ধরা পড়লেও কে যে নির্দোষ, বিদেশী লবির অপপ্রচারনার শিকার কোন দেশ প্রেমিক নেতা কিংবা নিপাট ভদ্রলোক সেজে থাকেলও কে যে আসলে সাংবাদিক পেটান তার সব রহস্যই ভেদ করে সরকার। অনেকটা ডিটেকটিভ নাটকের সুক্ষ্ণদর্শী ডিটেকটিভের মত।

পরিশেষে, বলা যায় নাটক আমাদের জাতীয় জীবনের এক অবিছেদ্য অংশ। দেশের রাজনীতির তুলনা হতে পারে কোন জনপ্রিয় থ্রিলার নাটকের সাথে যার প্রতিটি মুহূর্তে আছে নাটকীয়তা। সমঝদার দর্শকই হয়ত সময়মত ব্জানিয়ে দেবেন যে তাঁরা ভবিষ্যতে কাকে মঞ্চে দেখতে চান আর কাকে চান না।

ভাতের বদলে চেতনা খান, দিদির উপর চাপ কমান

by নিরীহ পাবলিক:

গুম, হত্যা, খুনাখুনি, বোমাবাজী, অবরোধ, হরতাল, অস্ত্র মিছিলে দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। শত শত গার্মেন্টস বন্ধের পথে, ঘর্মাক্ত কৃষক তার সারা বছরের সাধনার ফসল বেচতে না পেরে নিজেই তাতে আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে ফেলছে, ব্যবসা বাণিজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্প প্রতিষ্ঠান সব কিছু কার্যত অচল। আর এরই ব্যাকগ্রাউন্ডে চেতনা’বাদী সরকার বিশ্বরেকর্ড করা পতাকা বানিয়ে তার অচেতন সমর্থকদের নিয়া চোখ বুঝিয়া গাহিতেছে, ‘ওমা ফাগুনে তোর আমার বনে ঘ্রানে পাগল করে’। চোখ খুলিয়া একটু ঘিলু খাটালেই তাদের বুঝার কথা এই ঘ্রান আমের নয়- এই ঘ্রান গোলা-বারুদ আর রক্তের। কিন্তু আওয়ামী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর মনুষ্য ঘিলু একই মানবদেহে থাকতে পারে না। তাই এই চেতনাবাদীদের ঘিলু খাটানোর প্রশ্নই আসে না। বিদেশী শক্তির দাসত্ব করতে করতে দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে এখন ভূখা নাঙ্গা দিশেহারা পাবলিকদের চেতনায় চেতাইয়া দিদি ক্ষমতার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কতিপয় ঘিলু বিহীন দ্বিপদী তাতে চোখ বুজে চন্দ্রনৃত্য করবে সেটা বলাই বাহুল্য। ১০ টাকা কেজি চাল, ডিজিটাল বাংলাদেশ আর দিন বদলের মুলা দেখিয়ে দিদি ক্ষমতায় এসেছিলেন। আর তার বিদেশী প্রভুদের কাছে প্রতিজ্ঞা করে এসেছিলেন ইসলামী রাজনীতির ঠেকানোর, বোরখা বিক্রি কমানোর, সেনাবাহিনীর মধ্য থেকে ইসলামী চেতনা দূর করে সেনাবাহিনীকে ভারত প্রেমিক করে তোলার, দেশকে সম্পূর্নরূপে ভারতের সেবাদাসী বানানোর। দিদি তার বিদেশী প্রভূদের কাছে দেয়া নির্বাচনী ওয়াদা ঠিক মতোই পালন করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। আর দেশের পাবলিকের কাছে ১০ টাকা কেজি চাল দেয়ার ওয়াদা ভোলাতে চেতনার বাণিজ্যে নেমেছেন। চালের বদলে চেতনা চিবিয়ে এখন দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হবে।

কিন্তু সমস্যা অন্যখানে। হাসিনার বাপের আমলে চেতনার ডিব্বা সবচেয়ে বেশী টইটম্বুর ছিলো। তবুও বাঙ্গালী ভাতের বদলে চেতনা খেতে রাজী হয় নাই- ক্ষেপে গিয়ে তারা বরং উড্ডীন পতাকা আর মানচিত্র খেতে চেয়েছিলো। এই কালে হাসিনা তার ঘিলু বিহীন দ্বিপদীদের কাঁধে ভর করে কতদিন বাঙ্গালীদের ভাতের বদলে চেতনা খাওয়াইয়া অচেতন করে রাখতে পারবে! শেষে না বাঙ্গালী আবার বিছানো পতাকা খেতে চায়! বিশ্ব রেকর্ড সাইজের পতাকায়ও তাতে কুলাবে না। কারন চেতনাবাদী বুদ্ধিজীবিদের এতো ঘ্যানর ঘ্যানর, প্যানর প্যানর, ছাত্রলীগের রাম-দা, চাপাতী আর হাসিনার এতো নাকি কান্না সত্ত্বেও দেশে এখন মুক্তিযোদ্ধার চাইতে রাজাকারের সংখ্যা বেশী।

হিংসার দৌড় জিঘাংসা পর্যন্ত

by Fakaruddin Ahmed:

আমার মতোই অনেকেই আছেন, যারা কাদের মোল্লার নামই হয়ত শুনি নাই বা শুনলেও মনে রাখি নাই । আজকে তাদেরও পরিস্থিতির কারনে এই ব্যাক্তির নাম শুনতে হইছে, জানতে হইছে। চেতনার কেরামতিতে আরও কতকাল যে এই ব্যাক্তির নাম শুনতে হবে , আল্লাহ তায়ালা ভাল জানেন ।

এইতো সেদিন ঢাকা মানুষে মানুষে ভরে উঠল। পুরো মিরপুরে কয় ঘর লোক ছিল, আমি তো সেই ছোট থেকেই যাই। সেইখানে ২২-২৪ বছরের এক শিক্ষিত তরুণ অমন অস্থির দিন গুলাতে বলা নাই কয়া নাই, একেবারে সব চিনে ফেলবে, তারপর পাড়ার- গ্রামের- এলাকার সবচেয়ে বড় রংবাজ হয়ে উঠবে, তারপর সেই সব মানুষকে এমন কেয়ামত দেখায়া ছাড়বে ! বুঝি না কেমনে সম্ভব ! তামিল ছবির স্টোরি শুনতেছি না , তো।

আবার কেরানীগঞ্জ ! মিশন ইমপসিবল – ২ !

জামায়াত ইসলামির পলিটিকাল চেইন দুমড়ে মুচড়ে একাকার হয়ে যাওয়ার পর তৈরি হইছে এক ভয়াবহ সমস্যা। এই সমস্যা কেবল জামাতের না এইটা সবার সমস্যা । তৃনমূলের জামাতিদের কনটেঈন করা যাইতেছে না। এইটা যে একটা এক-কালিন সমস্যাই কেবল না এর ভবিষ্যৎ মুখি ডায়নামিক্স আছে ।

সমাধানের পথ , একটা হইতেছে – শান্তিপূর্ণ , মেধাবি সবার জন্য উইন-উইন  এবং দীর্ঘ মেয়াদে ফলপ্রশু। এই পথ ধরে হেঁটেছে সব সফল জাতি। আর সেই পথ ধরে সাঊথ আফৃকায় গড়ে উঠে রেইনবো নেশন । একেই বলে নেশন বিল্ডিং।

সমাধানের পথ আরেকটা হচ্ছে- ক্লিনসিং -যেইটা আওয়ামি লীগ করতেছে। নির্মূল তাত্ত্বিকদের নির্মূল তত্ত্ব একজিকিউট করাই এমন  সমাধআনের পথ , সেই পটহের শেষ আছে কিনা কেউ জানি না, দেখছিও না , কিন্তু যে উন্মাদনা দেখছি তা ভয়ের।

হিংসা , অবিশ্বাসের , অশ্রদ্ধা , প্রবঞ্চনার, ফ্যসিজমের, ভুল ত্তত্বের আর তার বিপরীতে প্রতিরোধের ধারাবাহিকতা তৈরি হয়ে গেছে সমাজে ।
কেমন করে আগাব আগামির দিনগুলাতে সেই ভয় তো সবাই পাচ্ছি।
আর এই ক্লিন্সিং ডকট্রিন কাজ করে না , যেইটা ইসরাইলী(ফিলিস্থিনি) , হিন্দুস্থানি(কাস্মিরি), রাশান (চেচেন), চিন(উইঘ্র) উদাহরণ থেকে শিখে নিতে পারলে সবচে ভাল হয়।
কাদের মোল্লা, সাইদির মত লেসার , স্ট্যাটিক, ভুলে যাবার মত পলিটিকাল ফিগার দের কিভাবে এনলার্জ আর ডায়নামিজম দেয়া হইল , সেইটা সাধারণ মানুষ জানে , কিন্তু জাতির ঘাড়ে চেপে বসা অসাধারণ মানুষগুলা জানে না, বুঝবেও না। কারন  হিংসার দৌড় জিঘাংসা পর্যন্ত , সত্য আর সুন্দর পর্যন্ত পৌছায় না।
আমার আপনার নিজের চেতনার, রাগের, প্রতিশোধের না হয় বিজয় হবে
কিন্তু আমার পরেও আমি থাকব, আমাদের সন্তানেরা , ছোট ভাইরা থাকবে;
তাদেরও কি এক বৃত্তে আটকে থাকতে হবে।

ছ্যারছ্যার আলীর দিনরাত্রি ও একটি খুনের গল্প (সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে)

by Watchdog bd

সকালটা কেমন যেন অন্যরকম মনে হল ছ্যারছ্যারের কাছে। রাতে ভাল ঘুম হয়নি। প্রতিরাতের মত দুঃস্বপ্ন আজও পিছু ছাড়েনি। মধ্যরাত হতে বিছানায় এপাশ ওপাশ করেছে কেবল। ফজরের নামাজেও যাওয়া হয়নি আজ। অন্ধকারকে এমনিতেই ভয় পায় সে। তার উপর যোগ হয়েছে অবিশ্বাস্য রকম কুয়াশা। শীতকালটা বলতে গেলে ঘরে বসে কাটাতে হচ্ছে তাকে। কোথায় যেন থমকে গেছে তার জীবন। গেল একটা বছর এক রাতের জন্যেও ভাল করে ঘুমাতে পারেনি। চোখ বন্ধ করলে সামনে এসে দাড়ায় চেনা একটা মুখ। রক্তমাংস হীন কঙ্কালের মত অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে থাকে তার দিকে, কি যেন জিজ্ঞেস করতে চায়। প্রশ্নটা শোনার আগেই ঘুম ভেঙ্গে যায় তার। দরদর করে ঘামতে থাকে। ধর ফর করে উঠে বসে বিছানার উপর। রাতের পর রাত ঘটে যাওয়া ঘটনার আজও ব্যতিক্রম হলনা। কিন্তু তারপরও সকালটা কেমন যেন অন্যরকম মনে হল তার কাছে। প্রতিদিনের মত কুয়াশার হিস হিস শব্দটাও আজ তীব্র অনুভূত হলনা। সূর্যটাও মনে হল সকাল সকাল বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। দরজা খুলে শীতের সকালটা দেখার ইচ্ছা আজ আর চেপে রাখতে পারল না। বেরিয়ে এলো নিঃশব্দে।

সাপের মত হেলে দুলে এদিক ওদিক করছে সকালের কুয়াশা। দশ হাত দুরের জুমাঘরটাও দেখতে অসুবিধা হল ছ্যারছ্যারের। উচু মিনারটাকে দেখাচ্ছে অনেকটা দৈত্যের মত। প্রতিদিনের মত আজ আর ভয় পেলো না সে। ভাল কিছু ঘটতে যাচ্ছে আজ, বাতাসে তার গন্ধ পেল। কুয়াশা ভেদ করে কারও হাঁটাচলার আওয়াজ পেয়ে সজাগ হয়ে উঠল সে। সক্রিয় হয়ে গেল তার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়। পকেটে হাত দিয়ে পিস্তলের উপস্থিতিটা নতুন করে পরখ করে নিল। বিদ্যুৎ গতিতে পিছু ফিরল এবং পিস্তল উচিয়ে খোঁজ করল অদেখা শত্রুর।

’ভয় পাইয়েন না মামা, আমি চেঙ্গিস দফাদার, আফনের ড্রাইভার কাম বডিগাট’।

চেঙ্গিসকে দেখে অবাক হলনা ছ্যারছ্যার। গেল একটা বছর ছায়ার মত লেগে আছে তার পেছনে। যেখানেই যায় তার যাওয়াও বাধ্যতামূলক। এমনটাই নাকি ওপরমহলের নির্দেশ। বাংলাদেশি আসল ন্যাশনালিস্ট পার্টি ছেড়ে আমজনতা লীগে যোগ দেয়ার পর হতেই এসবের শুরু। গুড়া কৃমির মত বংশবিস্তার করেছে তার শত্রু। এমনকি তালাক দেয়া স্ত্রীদের কেউ কেউ নাম লেখাচ্ছে শত্রু শিবিরে। এসব বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় ছ্যারছ্যারের। তালাক দিলেও মাসোহারা দিচ্ছে চার স্ত্রীর সবাইকে। অনিয়মিত শারীরিক মিলনও বাদ যাচ্ছে না মেনু হতে। ঘরের তিন বিবির এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই। তবু কেন শত্রু ক্যাম্পে নাম লেখাতে হবে এর কোন কুল কিনারা করতে ব্যর্থ হল ছ্যারছ্যারের মগজ।

’চ্যাঙ্গিস, তুই ঘরে যা। আইজ একলা ঘুরতে মুন চাইতাছে। আমার কিছু হইব না। যা ঘরে গিয়া নাস্তা খা’ চেঙ্গিসেরও অন্য চাহিদা মেটানোর সময় ছিল এটা। তাই সানন্দে, অনেকটা ভুতুরে কায়দায় মিলিয়ে গেল কুয়াশার ঘন চাদরে। চেঙ্গিসের বিদায়ের সাথে সাথে চারদিকটা নতুন করে দেখে নিল ছ্যারছ্যার। আকাশের দিকে তাকাল এবং বুক ভরে লম্বা একটা নিঃশ্বাস নিল। ছাগলনাইয়া তার পাচ আঙ্গুলের মত, অথচ একটা বছর অনেকটা গর্তের ভেতর কাটাতে হয়েছে তাকে। রাজনীতির পাশাপাশি পাবলিক ফাংশনও বন্ধ। সাত পাচ মিলিয়ে এমনটা হওয়ার কোন কারণ ছিলনা। অনেক আশা নিয়ে যোগ দিয়েছিল আমজনতা লীগে।

তত্ত্ববধায়ক আমলের শুরুতে ছ্যারছ্যার বুঝে গিয়েছিল আসল ন্যাশনালিষ্ট পার্টির দিন শেষ। মাল কামানোর দৌড়ে টিকে থাকতে হলে তাকে দল বদলাতে হবে, এবং তা যথা সম্ভব দ্রুত। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্বান্ত নিতে আগে অনেকবার দেরি করেছে। তার ফলও পেয়েছে হাতেনাতে। তাই এ যাত্রায় সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার মনস্থির করল। বন্ধু ইলশা হাজি তাকে রাস্তা দেখাল। ফেঁপে উঠা ব্যাংক ব্যালেন্সের মাপকাঠিতে উপজেলা চেয়ারম্যান পদটা খুব ছোট মনে হয়েছিল তার কাছে। তাই চোখ উপরের দিকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিল। হাজির ভাষায় পুরানো এমপি তত্ত্বাবধায়কের দালালি করেছে বিধায় নমিনেশনের বাজার এবার খোলা। চাইলে যে কেউ সওদা করতে পারবে। পৌষ মাসের কোন এক সোনাঝরা সকালে গায়ে আতর, মুখে তিব্বত স্নো আর সাথে সাত নম্বর বিবি নিয়ে রওয়ানা দিল ঢাকার দিকে।

নমিনেশন বোর্ডের মুখোমুখি হতে পাক্কা একমাস অপেক্ষা করতে হয়েছিল ছ্যারছ্যারকে। দিনটা ছিল শুক্রবার। রোজা রাখতে বাধ্য করেছিল বিবি খামুসি বেগম। মিরপুর মাজারেও মানত করেছিল। গুলশানের গেস্ট হাউজ হতে ধানমন্ডি নমিনেশন বোর্ডে পৌঁছতে পাক্কা দুই ঘন্টা লেগে গেল তাদের। নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘন্টা দেরি হওয়ায় তেলে বেগুনে ভাজি হয়ে অপেক্ষায় ছিলেন নেত্রী। হাজির হতেই তাৎক্ষণিক ভাবে ফুটন্ত কড়াইয়ে নামিয়ে দিল ছ্যারছ্যারকে। মৌখিক সালামের পাশাপাশি পা ছুয়ে সালাম দেয়ার চেষ্টা করতে এক ধাক্কায় সরিয়ে দিল তাকে।

’অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ মিয়া। আপনে তামাম দুনিয়ারে বোকা বানাইবার পারেন, মাগর আমারে পারবেন না। আমি এ লাইনের ডক্টর।’নেত্রীর কঠিন ভাষায় সজাগ হয়ে গেল ছ্যারছ্যার। নমিনেশন বোর্ডে যাদের আশা করছিল তাদের কাউকে না দেখে একটু হতাশ হল। কথা ছিল ফেনীর আয়নাল হাজারীও থাকবে এবং সমর্থন জানাবে তার প্রার্থিতার। নেত্রী আর তার একমাত্র বোনকে দেখে প্রথম ধাক্কায় বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিল সে। ভাবলেশ হীন দুই বোনের চেহারার সবটা জুড়ে ছিল খাই খাই ভাব। এর প্রমান পেতেও ছ্যারছ্যারকে বেশিক্ষণ আপেক্ষা করতে হয়নি।

’মুখের কথায় চিড়া ভিজে না মিয়া, পান চিনি লাগে। তা কত দিতে পারবা খোলাসা কর। ইলশা হাজী ৫৫ লাখের অফার দিছে। এক পয়সা কম হলে দোকান বন্ধ।’ ৮৫ লাখে দফারফা হল শেষপর্যন্ত। সিদ্ধান্ত হল ৮০ লাখ যাবে বাবার নামে তৈরী মাজারে, আর বাকি ৫ লাখ দলীয় ফান্ডে। প্রথম অংকটা পরিশোধ যোগ্য কেবল নগদে, দ্বিতীয়টা চেক হলেও নাকি ক্ষতি নেই। সবকিছু ভালয় ভালয় শেষ হওয়ায় ফুরফুর মেজাজেই বের হল ইন্টারভিউ বোর্ড হতে। রাজ্যের উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষমান খামুসি বেগম খবরটা পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরল। অবশ্য কান্নাকাটি ও রোজা আনন্দে আর পানাহারে রূপ নিতে বেশিক্ষণ লাগল না। ছ্যারছ্যার আনন্দেও কমতি ছিলনা, কিন্তু একটা বাস্তবতা তার মনে খচখচ করতে থাকল, ইলিশা হাজী! হাজীর সমর্থন নিয়েই সে ঢাকায় এসেছিল, অথচ নেত্রী জানাল সওদার বাজারে সেও নাকি একজন সওদাগর। ব্যাপারটা তার কাছে ঘোলাটে মনে হল। খোলাসা করার তাৎক্ষণিক তাগাদা হতে ফোন করল ইলশাকে। কিন্তু ও প্রান্ত হতে কেউ উত্তর দিল না। ছ্যারছ্যারের মনে হল হাজির ব্যাটা ইচ্ছা করেই তাকে এড়িয়ে যাচ্ছে। অশ্লীল একটা গালি দিয়ে ছুড়ে ফেলল ফোনটা।

পরের ছয়টা মাস বহমান নদীর মত বয়ে গেল ছ্যারছ্যারের জীবন। ইলেকশন বাতাসে লন্ডভন্ড হয়ে গেল তামাম দুনিয়া। তিন বিবি আর ইলশাকে নিয়ে ছাগলনাইয়্যার আকাশ আর মাটি এক করে ফেলল সে। আমজনতা লীগের অনেকেই সমর্থন নিয়ে এগিয়ে গেল, অনেকে আবার গোপনে আসল ন্যাশনালিস্ট পার্টির দালালি করল। এ নিয়ে খুব একটা চিন্তা করল না ছ্যারছ্যার। রাজনীতির সমীকরণ তার ভাল করেই জানা ছিল। এ-ও জানা ছিল এখানে স্থায়ী শত্রু-মিত্রের পাশাপাশি দিনরাত বলেও কিছু নেই। সবকিছু ছিল টাকার খেলা। তার চোখে টাকায় যেমন নমিনেশন কেনা যায় তেমনি দিনকে ও রাত বানানো যায় রাজনীতির সুক্ষ্ম চালে । ছ্যারছ্যার নিজকে সওদাগর ভাবতে ভালবাসে। তার চোখে সওদার ময়দানে অসম্ভব বলে কিছু নেই, মুল কথা দিন শেষে আসল পণ্যের মালিকানা। নির্বাচনে জিতে তেমনি এক পণ্যের মালিক বনে গেল রাতারাতি। ইলশার সাথে ভুল বুঝাবুঝিটা ইলেকশনের শুরুতে মিটিয়ে নিয়েছিল অনেকটা বাধ্য হয়ে। হাজীর সমর্থনটা তার জন্যে জরুরি ছিল বিভিন্ন কারণে। কোটি টাকা খরচের জন্যে বিশ্বস্ত দুটো হাতের প্রয়োজন ছিল, পাশাপাশি প্রয়োজন ছিল তিন বিবি ম্যানেজ করার কৌশলী একজন খেলোয়ড়। ইলশাকে চিনতে ভুল হয়নি তার। কারণ সে ছিল তেমনি একজন পাকা খেলোয়াড়। এবং ভুলটা করেছিল এখানেই।

ইলশা হাজী আর খামুসি বেগমের গোপন সম্পর্কটা তরতর করে বেড়ে উঠে অনেকটা ছ্যারছ্যারের নাকের ডগায়। নির্বাচন উপলক্ষে ছাগলনাইয়ার গ্রামে গঞ্জে ওরা একসাথে ঘুরে বেরিয়েছে বিনা বাধায়। গঞ্জের বাজারে স্বামী স্ত্রী পরিচয় দিয়ে মিলিত হতেও কোন অসুবিধা হয়নি। ছ্যারছ্যারের লোকেরাও তাদের চিনতে পারেনি খামুসী বেগমের চোখ মুখ বন্ধ করা বোরকার কারণে। ইঙ্গিতটা প্রথম পায় ড্রাইভার চেঙ্গিসের কাছ হতে। কিন্তু ইলেকশনের কারণে আমলে নেয়ার সময় পায়নি। তাছাড়া চেঙ্গিসকে সময় অসময়ে আসল ন্যাশনালিস্ট পার্টির দালাল বলে সন্দেহ হয়েছে তার। তাই বিশ্বাস অবিশ্বাসেরও একটা প্রশ্ন ছিল। এমপি হওয়ার কারণে ছাগালনাইয়্যা ছেড়ে ঢাকা আসাটা ছিল বাধ্যতামূলক। ৩ কোটি টাকার নির্বাচনী বিনিয়োগ লাভজনক করায় প্রয়োজন ছিল বিরামহীন পরিশ্রমের। কম বয়সী খামুসিকে ঢাকায় আনতে তাই মন সায় দেয়নি। কারণ সে জানত ঢাকায় তাকে সকাল-সন্ধ্যা ব্যস্ত থাকতে হবে। তাছাড়া চেঙ্গিসের ইঙ্গিতটাও সে ভুলেনি। কিন্তু এ ব্যাপারে ইলশার যুক্তির কাছে হার মেনেছিল অন্য কারণে। মন্ত্রিত্ব চাইলে স্ত্রী-সংসার থাকা নাকি বাধ্যতামূলক।

দুপুরটা চাইলেও ভুলতে পারবেনা ছ্যারছ্যার। আসল ন্যাশনালিস্ট পার্টির ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছিল সেদিন। সৌদি সাহায্য ফান্ডের জনৈক সৌদিকে ৫০ লাখ টাকা কমিট করেও দিতে পারছিল না ব্যাংক বন্ধ থাকার কারণে। বাসায় রাখা নগদের কথা মনে হতে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে সেদিকেই রওয়ানা দিল। ঝামেলায় এতটাই মগ্ন ছিল খামুসিকে ফোন করতে ভুলে গেল। রাস্তার হরেক ঝামেলা চুকিয়ে গুলশানের বাসায় যখন হাজির হল ততক্ষণে বেলা বেশ পরে গেছে। এমন অসময়ে শেষ কবে বাসায় এসেছিল মনে করতে পারল না। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পরল দৃশ্যটা। খামুসি আর ইলশা এক অন্যকে জড়িয়ে গড়াগড়ি গাচ্ছে বৈঠকখানার মেঝেতে। দুজনেই উলঙ্গ। ভূমিকম্পটা কোথা হতে শুরু করবে কিছু বুঝে উঠতে পারল না সে। নামে হাজী হলেও বয়সে তরুণ ইলশা আসলে হাজী নয়। হাজী নিয়ে হজ্ব ব্যবসা তার আদিম ব্যবসা। ব্যবসার খাতিরেই হাজী টাইটেল ব্যবহার করতে হয়েছে তাকে। কুচকুচে কালো চেহারা, পেটা শরীর আর মুখে ঘন কালো চাপ দাড়ির কারণে দেখতেও অনেকটা আজরাইলের মত দেখায়। বয়সের পার্থক্য থাকলেও তাকে বন্ধু হিসাবেই নিয়েছিল ছ্যারছ্যার। উপহার হিসাবে সামনের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদটাও বরাদ্দ রেখেছিল তার জন্যে। ইলশাও জানত ব্যাপারটা।

পয়েন্ট ফাইভ ক্যালিবারের পিস্তলটা পকেটে না থাকায় সে যাত্রায় বেচে গিয়েছিল ইলশা। তবে তা বেশিদিনের জন্যে নয়।

আইডিয়াটা মাথায় ঢুকে চেঙ্গিসের একটা মন্তব্যে। পরিকল্পনার বাকিটা ছিল তার নিজের। সমঝোতার কথা বলে সংসদ ভবনে নিয়ে আসার দায়িত্ব দিল চেঙ্গিসকে। সবকিছু জানার পর বিপদের খুটিনাটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল চেঙ্গিস। কিন্তু এ নিয়ে তর্কে গেলনা সে। তার দায়িত্ব ছিল মোহম্মদপুর বাসা হতে ভুলিয়ে ভালিয়ে ইলশাকে গাড়িতে উঠানো। এ কাজে তার কামিয়াভির আসল কাহিনী ছ্যারছ্যারের বোধহয় কোনদিনই জানা হবেনা। কথা মত দশটার আগেই ইলিশাকে হাজির করা হল সংসদ ভবনের আঙ্গিনায়। চেঙ্গিসের ফোন পেয়ে উপর হতে নেমে এলো ছ্যারছ্যার। পকেটে পয়েন্ট ফাইভ ক্যালিবারের লোডেড পিস্তল। নাটকের নাটবল্টু আগেই টাইট দেয়া ছিল, অপেক্ষা ছিল কেবল শেষ পর্বের। দরজা খুলে ইলশাকে দেখে বাঁকা একটা হাসি দিল ছ্যারছ্যার। চোখ মুখ ঠান্ডা হয়ে গেল ইলশার। ছ্যারছ্যারের এহেন চাউনির সাথে তার পরিচয় অনেকদিনের। কি ঘটতে যাচ্ছে তা অনুমান করতে সামান্যতম অসুবিধা হলনা। ভয়ে বিস্ময়ে ছানাবড়া হয়ে গেল তার চোখ মুখ। মুখ হতে মৃত্যুর কলেমাটা বেরিয়ে এল অনেকটা যন্ত্রের মত। শেষ করতে পারল না কলেমা তার আগেই গর্জে উঠল ছ্যারছ্যারের পিস্তল। ছাতি বরাবর ছোড়া গুলিটা এপাশ ভেদ করে ওপাশে চলে গেল। রক্তের প্লাবন এসে ধাক্কা দিল ছ্যারছ্যারের চোখে মুখে। পকেট হতে রুমাল বের করে মুছার চেষ্টা করল। কাজ হলনা তাতে। ব্যকসীটে লুকানো গামছার বস্তাটা বের করে দিল চেঙ্গিস। প্রয়োজনীয় পানিও তৈরী ছিল পরিকল্পনা মাফিক।

’মামা, হেয় দেহি মরে নাই। কৈ মাছের মতন খালি চিৎপটাং দিতাছে। কি করুম জলদি কন’।
চেঙ্গিসের কথায় খুব একটা অবাক হলনা ছ্যারছ্যার। শক্ত লোহা পেটানো শরীরে বুলেট ঠিকমত ঢুকবে কিনা এ নিয়ে তার আগেই সন্দেহ ছিল। ’যা, এইবার প্লান বি মত কাজ কর। খানকির পুতেরে পুরানো ঢাকার আলেয়া ক্লিনিকে নিয়া যা। কথা বলা আছে হেগো লগে, শেষ কামটা হেরাই কইরা দিব।’ কথাটা বলে শেষবারের মত ফিরে তাকাল ইলশার দিকে। রক্তের সমুদ্রে ডুবন্ত একটা লাশ দেখে ভয় পেয়ে গেল সে। মনে হল চোখ দুটো এখনো নড়ছে ইলশার, ঠোট দুটোও কাঁপছে। কি যেন একটা বলতে চাইছে সে। ’বান্দীর বাচ্চা, ৩ কুটি খরচা কইরা এম্পি হইছি। তুর মত দশটা ইলশা এক লগে ভাজি খাওনের খেমতা রাখি আমি। সইত্যডা সময় মত বুঝলে ইলশা হইয়া তুই আজ কৈ মাছের মত দাপাদাপি করতিনা।’ চোয়াল শক্ত করে লৌহ কঠিন ভাষায় উচ্চারণ করল শেষ কথা গুলো। ইলশার লাল রক্তাক্ত মুখের উপর নোংরা একদলা থু থু মেরে ঝড়ো বেগে বেরিয়ে গেল গাড়ি হতে।

ঘটনার দিন হতে বাকি বছরটা ছ্যারছ্যারকে কাটাতে হয়েছে অজানা আশংকায়। একদিকে জেলের ভয়, অন্যদিকে ক্ষমতা হারানোর শংকা। সবচেয়ে বেশি জ্বালাতন করেছে পেপারওয়ালারা। খামুসি বেগমকে ছাগলনাইয়া পাঠাতেও কষ্ট হয়েছে তার। স্ত্রীর মুখ বন্ধ রাখাটা ছিল খুবই জরুরি। এ কাজে সাহায্য করার মত কাউকে খুজে পায়নি এ যাত্রায়। অবশ্য সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল এমনটা বললে মিথ্যা বলা হবে। দুর্দিনে সবার আগে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিল প্রশাসন। একে একে পাশে দাঁড়িয়েছিল থানা-পুলিশ, কোট-কাচারি, ব্যাবসায়ী-রাজনীতিবিদ। ফাগুন মাসের শেষ দিন দেশের প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত ফোন করে নিশ্চয়তা দিয়েছিল। তাতেও নিশ্চিত হতে পারেনি ছ্যারছ্যার। হাতে কাগজ অথবা নেত্রীর ফোন না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়ার উপায় ছিলনা তার। দিনগুলো একে একে মাসে রূপান্তরিত হচ্ছিল, মাস গুলো বনে যাচ্ছিল বছর। অন্তহীন অপেক্ষার শেষ কোন বন্দরে তা খুঁজতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছিল ছ্যারছ্যার।

হাওয়া বদলের পালাটা শুরু হয় তিন মাস আগে। ইলশা হত্যার তদন্তের ভার তারই আপন ভায়রা ভাইয়ের হাতে ন্যস্ত হওয়ার পর বুঝে গিয়েছিল কি ঘটতে যাচ্ছে। এ ফাঁকে কথা বলে চেঙ্গিসকে রাজী করানো গেছে। নগদ হিসাবে তাকে দেয়া হবে এক কোটি, ঢাকায় একটা ফ্লাট, সাথে পরিবারের দায় দায়িত্ব। পিস্তল নিয়ে খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা গেছে ইলশা। আর এই অনাকাঙ্খিত ঘটনার দায় দায়িত্বের সবটাই বর্তাবে চেঙ্গিসের ঘাড়ে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে নাম আসবে ছ্যারছ্যারের। চেঙ্গিস জেলে যাবে এবং খবর ওয়ালাদের মাথা ঠান্ডা হওয়ার সাথে সাথে রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে অপরাধ মাপ করে দেবেন খোদ প্রেসিডেন্ট। অপরাধ ও শাস্তি পর্বের এমন ঝাঁঝালো কাহিনী অতি উঁচুমহলেও সত্যায়িত হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু কিছু কাগজপত্রের।

একা একা ঘুরতে আজ আর ভাল লাগল না ছ্যারছ্যারের। মনটা কেমন আনচান করে উঠল। মেয়ে মানুষের অভাবটা হঠাৎ করেই মাথায় চাপল। ঝামেলার কারণে এ দিকটায় চোখ ফেরানো হয়নি অনেকদিন। ইলশার নিকেতনের ঢেরাটা আপনা হতেই তার কাছে চলে আসবে, মনে হতেই নেচে উঠল তার চোখ মুখ। ভীষন হালকা মনে হল নিজেকে। দুরে কোথাও পাখীর ডাক শুনতে পেল। কুয়াশার ফাক গলে সূর্যটাও বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে। সংসদে যাওয়া হয়নি অনেকদিন। নাওয়া খাওয়া সেরে ওদিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মনে মনে।

দরজায় পা রাখার আগেই বেজে উঠল ফোনটা। ভায়রা ভাইয়ের নাম্বারটা দেখে উড়ন্ত ঈগলের মত ঝাপিয়ে পরল তার উপর। এদিক ওদিক তাকিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিল।

’দুলাভাই আছেন কিমুন? শৈলডা বালা নি? মনডা বালা নি? – কথার খৈ ফুটল ছ্যারছ্যারের মুখে।
’হ ছোট মিয়া বালা, তয় খবর তো আমার না, খবর আফনের’।
’কি কৈতে চান জলদি জলদি কন, মশকারা বালা লাগে না’
’আরে ছোট মিয়া রিপোর্ট যে দিয়া দিলাম হেই খবর কি আছে আফনের?’
’রিপোর্ট? কন কি? কবে? কার কাছে?
’ধীরে মিয়া, ধীরে। তিনডা মাস কষ্ট করলাম আমি, আর আফনে তা তিন মিনিটে গিলতে চান।’
’দুলাভাই, যা কওনের চালাইয়্যা কন, তর সইতাছে না আর’।
’বুঝি মিয়া বুঝি, আরে আমরাও এই পথা মাড়াইছি। খুন খারাবি আমরাও করছি। তাই খবরের মর্ম বুঝতে কষ্ট হয়না’
’তা কি আছে রিপোর্টে?’
’বিস্তারিত অহন কওন যাইব না, তয় জানাইয়া রাখি শুক্কুর বার বাদ জুমা আফনের ড্রাইভাররে নিতে আইব। ইলশা খুনের অপরাধে তার সামান্য কিছু বিচার হইব। আফনে হইলেন তার স্বাক্ষী।’

আকাশের দিকে তাকালো ছ্যারছ্যার। কুয়াশা ভেদ করে লুটিয়ে পরা সূর্যের রশ্মি গুলো লক্ষ কোটি মাইল বেগে ধেয়ে আসা উল্কা তরঙ্গের মত মনে হল তার কাছে। অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইল ঐ দিকটায়। ঈশান কোনে ঝুলে থাকা কুয়াশার শেষ খন্ডটা দেখতে কেমন যেন ইলশার মুখটার মত দেখাল। দাঁত বের করে হো হো করে হেসে উঠল সে। ’আমি রাজনীতিবিদ, ৮৫ লাখ খরচ্চা কইরা নমিনেশন কিনছি, এ খালি এমপি হওয়ার নমিনেশন না, তোর মত বান্দীর পোলা গো খুন করারও নমিনেশন। আবার জন্ম নিলে ৫৫ লাখ না, দুই কুটি লইয়া ঢাকা আহিস।’ ছ্যারছ্যারের অট্টহাসিতে ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেল সকালের নীরবতা।

গোলাম আযমের গ্রেফতার উপলক্ষে ঢাকাস্থ ছাগলনাইয়্যা সমিতির র‍্যালিতে যোগ দিতে হবে ছ্যারছ্যারকে। র‍্যালির প্রধান অতিথি সে। ইলশা পর্ব এখানেই সমাহিত করে পা বাড়াল বাইরের দুনিয়ায়।

Of Causes and Means

2

by Shafiqur Rahman

Power Politics means political action characterized by exercise of power and especially of physical force by a political group as a means of coercion in the attainment of its objectives. Like many political terms with aggressive undertones, the term came from the Germans, machtpolitik, who were determined to set out to develop the archetypes in un-subtlety in political actions  in their not too distant past. In Bangladesh too, the main political parties have been engaging in naked power politics since the dawn of the new democratic era in 1991 but it has reached hitherto unknown depth of depravity this time around.

In the everyday violent melee of the power politics it is sometimes easy to lose sight of the strategies behind the tactics. With some presumption, it is not hard to divine the broad strategies behind the two warring faction. Basically the AL government is pursuing a two pronged strategy. Its preferred strategy is to get BNP to participate in an election managed and supervised by AL so that the next AL government gets the stamp of legitimacy from domestic constituents and international partners. Failing that, ALs second option is to try to paint Jamaat as full-fledged terrorist organization internationally and BNP as its patron-accomplice and manage the low level insurgency by BNP and Jamaat indefinitely while seating snugly at the throne of state power.

BNPs strategy is singular; it is going by the tested and proved way to pry open the governments grip on power by preparing the ground for a third party to intervene. BNP incapable of creating that scenario on its own, that’s why Jamaat is so indispensable to them now. Few can doubt that if BNP can achieve the goal of power politics without the help of Jamaat, it will discard Jamaat in an instance like an used tissue paper.

In pursuance of this strategy BNP is again following the manual of tactics to create maximum destabilization by interrupting the regular life of the country. But this year the BNP led opposition has upped the ante. Not only the life of the general people are being interrupted but also their life itself is being targeted. Especially the series of vehicle burning with people inside has aroused universal disgust and apprehension of this dastardly deed becoming regular part of Bangladesh politics.

The ruling Awami League on the other hand is using state power in unprecedented crushing of political opposition. Whole ranks of senior leadership has been rounded up and all mass-political activity has been clamped upon. In scenes reminiscing brutal foreign occupation, law enforcement agencies are using lethal forces without restraint.

In the daily barrage of the atrocities and excesses of the political power players it is easy to lose sight of the root cause that underlie this current round of confrontation. BNP wants a free and fair election; a election that most neutral observers agree that BNP will win handsomely. AL also recognizes that and that why it is determined to hold an election under its term and deny the people have its say. This foundational subtext of power politics is not due to any inherent virtue of the two parties, the situation is essentially reverse of what was in place in1996 and 2006. The only difference being that this time, opinion polls and local elections have repeatedly underscored this fact of ground.

The AL government is aware of the original sin of its position that is why it is throwing around a host of allegations about BNP to obfuscate the issue. BNP doesn’t want election, it wants to free war-criminals. BNP do not want to respect the rule of law as enshrined in the constitution recently amended by AL to uphold democracy. BNP wants to install a religious theocracy. BNP is colluding with hostile foreign entities. BNP wants to reverse the great developmental achievements of the AL government. BNP is joined in the hip with Jamaat, a terrorist organization. Terror tactics cannot be allowed to succeed. Terrorism is the biggest threat facing the country and so on.

Every time I hear this litany of complaint from AL leaders and apologists, I am reminded of the world’s most contentious issue, the Israel-Palestinian conflict. The global community broadly recognizes the fundamental injustice at the heart of the Is-Pal conflict, an occupying power appropriating land from a native people and denying them freedom to choose their own destiny. Again to obfuscate the core injustice, apologists of Israeli lebensraum employ myriad complaints against the Palestinians.

They say that Israel doesn’t have a reliable partner in Palestinians for peaceful settlement. Palestinians do not want peace. Palestinian authority is deeply in cahoots with religious absolutists and terrorists. Palestinians use heinous terror tactics. Palestinians are backed by foreign entities determined to annihilate Israel. Palestinians are living far better under Israeli occupation than their counterparts living in Arab absolutist regimes. Israel is an oasis of civilization and progress in the midst of a sea of barbarism. Sound’s familiar? And all the while Israel is busy changing the facts in the ground so that a peaceful settlement becomes all but impossible.

Just like Israel-Palestinian issue, the current political problem in Bangladesh is complex and there is no easy solution that will satisfy all parties. But this should not mask the simple injustice lying at the heart of the issue. The controversy about the means used in the political confrontation should not mask the cause of the conflict.

A Time to Love and a Time to Die- 1 – A Note on Neo- Nazi Propaganda Machine of AL

7

by M Chowdhuri

“Be careful of what you say” – is the common theme of all advises I have received from friends and families in my recent visit to Dhaka. Deserted streets of the capital, news of death and there was fear in the air; I could not help but feeling like the Erich Maria Remarque character Ernst Graeber in Nazi Germany. Since I don’t have any delusion about soldiers of any war, that “Graeber Syndrome” passed away soon enough. However, I could not stop wondering if what I am feeling and seeing is a Deja Vu from someone living in Berlin during the rise of Nazis.

This uneasy feeling kept growing with every passing day as I continue to witness how the government is controlling the media (social and otherwise), manipulating the nation with effective use of propaganda and amongst all these, the regime is steadily working towards what it wants with. And it is working to an extent.  The regime’s ultra nationalist armies ( “GonoJagoron Moncho” and all) playing their parts with organizing  colourful rallies, gathering, protests and actions keeps reminding me of the SA of the German Nazis, their elite intelligentsia with all its extreme dedication for the cause reminds me of the Ahnenerbe if the Nazis.

Last few weeks our national headlines reported, death of 100+ people in a time span of little over 3 weeks, various cities being “occupied” by the Oppositions ( as if we are in a middle of a war), questionable execution of a political personality  and the law enforcement agencies preparing for assaults (and then the assault) in the “occupied territory” with the help of Chatra League, Awami Leagues student wing. During the same period, the regime also “re-elected” themselves by gaining majority seats in the parliament in a “voteless” election.

 clip_image002[2]

However, the regime did attempt diversions to everything above with staging events like 1) creation of the largest national flag, 2) National Anthem sing-off with 200 thousand voices etc.  Apparently the nation “came together” as “one” and celebrated the “days of days” with pride. I asked one of my friends, if he felt in any shame in celebrating a victory that failed to establish justice and peace in the land if there was a pang of indignity in celebration when the nation is clearly in dismay; with pride he told me that I did not know what I was talking about and if I were there ( in the flag making event), I too would be “mesmerized” by the “unity of the nation”.

And that gave me clarity; The rallies, the mass gathering and celebrations has the power to create a sense of belongingness. And the current regime has been using this as a propaganda weapon for at least a year now. It all makes sense, this is why when an “issue” dies out, the so called GonoJagoron Moncho need to find another “issue” to keep ball rolling.

 I once read a confession of a Nazi (Hans Grimdt) I read once, it goes like:

“It was my first time at a rally in 1935.  …..The sight of tens of thousands people standing shoulder to shoulder with each other shouting Heil Hitler took my breath away. From that moment on, I love the Nazis”

 clip_image004[2]

I know a number of people (who were not used to be pro-Awami League) blown away by the calls of “Ditiyo Muktijuddho” describing their experience of the ” GonoJagoron ” festivities using similar words- the similarity of the experience is frightening .

Hitler and Goebbles operated in an all encompassing propaganda machine which included press (controlled), art, music, rallies, posters, radio, schooling and parades etc.  A careful consideration of the propaganda machine of the current regime in Bangladesh will make you wonder if a modernized and more aggressive propaganda machine is in play. The greatest display of the neo-fascist mentality of the Bangladesh’s Awami regime is the example they made out of “Amar Desh” editor Mahmudur Rahman and other media (Diganta TV, Islamic TV), which is not very different from the strategy adopted by Nazi regime in Germany.  I was particularly baffled by the ban on the Islamic TV- one of my friend ( who is a virtual spoke person of the GonoJagoron Moncho) explained to me that the Islamic TV (the fundamentalist Islamic people) promotes ideas that are “un bengal”. I ignored this as a personal view initially, but I was convinced when the Awami Intelligentsia decided to propagate the same ideas in national TV. This ultra-nationalist tactics is no different than Nazi tactics of labeling opposing ideas  as “un-German” ( in a famous move, Joseph Goebbls disrupted  the premier of the movie All Quiet on the Western Front on December  5, 1931 and later banned the movie as un-German).

And the Awami propaganda machine is somewhat successful in creating a group of people who, blinded by the Awami dogma are trying to fighting a battle which is long over. This same group of people stands by the regime supporting the massacre of Shapla Chottor in the name of progressiveness, shows absolute zero reactions to the arrests of fellow online activists in the name of peace  and forgets to utter a single word of protest when the regime “re-elects”  itself in a voteless election. This groups labels anyone against the doctrine  as “enemy of the state” ( Razakar, Paki etc. etc.)  with such conviction that renowned freedom fighters like Kader Siddiqi is not even spared. All in the name of democracy and liberation. What Awami propaganda machine does for the regime is exactly what Hitler dreamt his own propaganda machine to do:

“Propaganda tries to force a doctrine on the whole people… Propaganda works on the general public from the standpoint of an idea and makes them ripe for the victory of this idea.”

After Kader Mollas execution, I asked a friend if he was convinced of his guilt. His answer was,

“No, I am not. The excuse of justice should not stop us from eradicating the Razakars from Bangladesh ” .

Frightfully close to Hermann Göring declared on March 3rd, 1933:

“I don’t have to worry about justice; my mission is only to destroy and exterminate, nothing more!”

রিপাবলিকান পার্টি ভার্সাস আওয়ামী লীগ

  • পলিটিক্যাল ওরিয়েন্টেশনে উল্টো মেরুর হলেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সমর্থকদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টি, বিশেষভাবে নিও-কনদের ব্যাপক মিল লক্ষ্য করা যায়। রিপাবলিকান পার্টির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অন্যদলের তৈরি স্থিতিশীল ও বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির কাঁধে চড়ে ক্ষমতায় এসে সবকিছু ফেলে রেখে যুদ্ধের দামামা বাজানো শুরু করা। হাওয়া থেকে পাওয়া, অথবা ক্ষেত্রবিশেষে নিজেদের তৈরি করা খবরের উপর ভিত্তি করে পায়ে পা বাঁধিয়ে যুদ্ধাবস্থা তৈরি করা বা যুদ্ধ লাগিয়ে ছাড়া। তাদের পালে ক্রমাগত হাওয়া দিতে থাকে হেরিটেজ ফাউন্ডেশন বা ফক্স চ্যানেলের মতো আশীর্বাদপুষ্ট ঘৃণাজীবি থিংকট্যাঙ্ক ও মিডিয়া – ব্যাপারটা যেন, এ মুহূর্তে আমেরিকা বা বিশ্বের জন্য এটাই সবচেয়ে জরুরী কাজ, বাকি সব গৌণ। অন্য সকল ক্ষেত্রে তাদের ব্যাপক ব্যর্থতা থেকে জনগণের দৃষ্টি সরিয়ে নিতে কৃত্রিম ভাবে যুদ্ধাবস্থা তৈরির এই কৌশল রিপাবলিকান পার্টির সিগনেচার মুভ। পেছন থেকে মদদ যোগায় AIPAC এর মতো যায়োনিস্ট লবি এবং ডিক চেনির হ্যালিবার্টনের মতো সংস্থাগুলো যারা যুদ্ধক্ষেত্রে রসদ ও সার্ভিস পৌঁছানোর বিলিয়ন ডলারের কন্ট্রাক্ট নিয়ে কাড়াকাড়ি করে, যুদ্ধ যাদের কাছে শুধুই ব্যবসা। চতুর্মাত্রিক প্রচারণায় বিভ্রান্ত জনগণ পুরোপুরি বুঝে ওঠার আগেই শুরু হয়ে যায় যুদ্ধ।

    আমেরিকার জনগণের বৈশিষ্ট্য হোল এরা যুদ্ধকালীন প্রেসিডেন্টের পাশে থাকে, অন্তত বেশ কিছু সময়ের জন্য। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ঐক্যবদ্ধ হওয়া জনগণের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে অনায়াসে পার করে দেয়া যায় দুই টার্ম। কিন্তু ততদিনে সর্বনাশ যা হবার তা হয়ে গেছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলা যুদ্ধে উদরপূর্তি হয়েছে হ্যালিবার্টন সমগোত্রের, ফলস্বরূপ জাতীয় অর্থনীতির মেরুদণ্ড গেছে ভেঙ্গে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সাধারণ জনগণ যখন অনুধাবন করে পরের বেলার অন্ন সংস্থানই এ মুহূর্তে তাদের সবচেয়ে বড় চিন্তা – বিশাল কোন মতাদর্শিক সংকট বা গায়ে পড়ে বিশ্বের মোড়লগিরি নয়, পরবর্তী নির্বাচনে তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করে। অন্য দল ক্ষমতায় আসার পর আর সব ছাপিয়ে তাদের একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান হয়ে ওঠে বা উঠতে বাধ্য হয় ভেঙ্গে পড়া অর্থনীতির পুনরুদ্ধার। ভুল এ দলটিও যে করে না, তা নয়। তবে পায়ে পা বাঁধিয়ে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলায় তাদের উৎসাহ কম, আর সে সুযোগই বা কোথায়? বন্ধ হয়ে যাওয়া অর্থনীতির চাকা রাতারাতি চালু হচ্ছে না কেন, এ নিয়ে জনগণ ও বিরোধী দলের কাছে ক্রমাগত জবাবদিহি করতেই নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম। একসময় অর্থনীতির চাকা ঘোরে, স্থিতিশীল ও বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির কাঁধে বন্দুক রেখে রিপাবলিকানরা জনগণকে বুঝিয়ে চলে Clash of Civilization এর সংকট এবং তাতে আমেরিকার নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা। হালে সবখানে তারা দেখতে পায় মৌলবাদ ও ইসলামিক সন্ত্রাসবাদের উত্থান, কেউ না চাইলেও তারা দেখতে পায় আমেরিকায় বসে শরীয়াহ আইন বাস্তবায়নের অবাস্তব দাবী এবং তার মারাত্মক কুফল! শুরু হয় তাদের সিগনেচার ট্যাক্টিক্স – fear and hate mongering. মৌলিক চাহিদা পূরণ হবার পর উদ্বৃত্ত অর্থনীতিতে বলীয়ান জনগণ মনে করে, তাই তো! দেখাতে চাওয়া জুজু তারা আবার দেখতে শুরু করে। অতীত-অভিজ্ঞতা ভুলে গিয়ে তারা চেতনাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে। শুরু হয় ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি!

    ডিটেইলস ও পরিসরে পার্থক্য ছাড়া আমেরিকার জায়গায় বাংলাদেশ এবং রিপাবলিকান পার্টির জায়গায় আওয়ামী লীগকে প্রতিস্থাপন করুন – ঘটনাপ্রবাহ খুব চেনা মনে হয় কি?

    তবে কিনা যুক্তরাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ এ খেলায় তিতিবিরক্ত হয়ে উঠলে আর কিছু না হোক, চার বছর পরপর অন্তত নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় অন্যান্য চেক-অ্যান্ড-ব্যালান্সের সুযোগ নিশ্চিত রাখার কথা বাদই দিলাম। অন্যদিকে কেবল নামে গনতান্ত্রিক হয়ে ওঠার দাবিদার বাংলাদেশে পাঁচ বছর পরপর একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের গ্যারান্টিও নেই!

রফিউর রাব্বি – যিনি হাঁটছেন আপনার বিপরীতে

by Fakaruddin Ahmed

টর্চারসেল পরিচালনাকারীরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে।  এটা কোন বি এন পি জামাতির কথা না , এটা রফিউর রাব্বি আজ ফেসবুকে লিখেছেন ।

রফিউর রাব্বি নারায়ন গঞ্জ আওমি লীগের একজন নিবেদিত প্রান কর্মি, তার বাইরে উনি মুলতঃ একজন শিল্প সাহিত্যর মানুষ । আজ আমাদের চোখ এমন পট্টি দিয়ে আবৃত , আমরা তার কান্না দেখছি না ,  আমাদের কান ভরা তুলা আমরা তার কান্না শুনতে পারছি না ।
একটা যুদ্ধে মানুষের মৃতুকে আপনি জাসটিফাই না করেন, তবু মেনে নেন। তার বিচার হতে পারে; তা আমরা দেখেছি।
কিন্তু তকির মৃতুকে কিভাবে মেনে নিব আমরা ?
ত্বকি হত্যার বিচারের জন্য কি আমরা ৪২ বছর অপেক্ষা করতে চাই ?
আর ত্বকি হত্যার আসামি মাফিয়া গোস্টি-কে আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় নিয়ে যাব ?
একটা প্রতিবাদ হবে না ?
আমাদের মিডিয়া , আমাদের মধ্যবিত্ত সুশিলতা, আমাদের ইন্টেলেকচুয়াল হতে চাওয়া চোখ ব্যস্ত পাকিস্থানি ইমরানের পাছায় লাঠির ঘা বসাতে কিংবা দশিটার পাছায় মলমের মালিশ দিতে ।

কিন্তু একজন মানুষ, একজন রফিউর রাব্বি নিজের ত্বকিকে

হারিয়ে ভাবছেন বাংলাদেশের সব ত্বকিদের কথা।
এভাবেই কী একজন রফিউর রাব্বি-ই কি আমার প্রত্যেকের ঘরের ত্বকির কথা ভাববে ?

“দি মুক্তিযুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রি”

by Jahid Islam

“দি হলকাস্ট ইন্ডাস্ট্রি” নামে একটা বইটি আছে । লিখেছেন অ্যামেরিকান ভদ্রলোক নরম্যান ফিঙ্কেলস্টাইন। বইটিতে তিনি তুলে ধরেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদীদের উপর নির্যাতন এর কাহিনীকে কেন্দ্র করে কীভাবে একটি বিশেষ সুবিধাবাদী শ্রেণী গড়ে উঠেছে। কোন সন্দেহ নেই যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদীদের উপর কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ভয়াবহ অত্যাচার হয়েছে। তবে এটিকে কেন্দ্র করে যেই সুবিধাবাদী শ্রেণী মুনাফা অর্জন করছে তিনি এই বইতে তাদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। তিনি দি নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকে এই কনসেপ্টের প্রমোশনাল ভেহিকেল বলেছেন।

আমাদের দেশের জন্য একটা বই লেখা দরকার। নাম হতে পারে দি মুক্তিযুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রি”।আমাদের  দেশে ইন্ডাস্ট্রির সদস্যরা নিউকনিয়ান ভাবধারায় বিশ্বাসী। সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং ইনসাফ এই যে সকল মূলনীতির উপর ভিত্তি করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এই শ্রেণীর এতে বিশেষ ইন্টারেস্ট নেই। নিউকনিয়ানদের মূল বক্তব্য অনেকটা এরকম সাম্রাজ্যবাদকে আমরা যেভাবে মন্দ বলে এতদিন বিচার করে এসেছি সেটা ভুল। একেব্যতিক্রম’ বলে গণ্য করতে হবে। কারণ পাশ্চাত্য সভ্যতাই একমাত্র সভ্যতা। যুদ্ধ করেই এই সভ্যতাকে রক্ষা করতে হবে। সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের বিরোধিতা এতদিন করা হয়েছে একটা উদারনৈতিক পাপবোধ থেকে, অর্থাৎ মনে করা হয়েছে যুদ্ধবিগ্রহ হানাহানির কাজটা বোধহয় ঠিক হচ্ছে না। এখন এইসব পাপবোধ ঝেড়ে ফেলতে হবে। পাশ্চাত্য সভ্যতাকে রক্ষা করাই এখন প্রধান ও একমাত্র কাজ।আপনি এখানে সাম্রাজ্যবাদএর স্থলে “ আওয়ামী বাকশাল” পড়ুনদেশী সেপাইদের মতামত হল- আওয়ামী বাকশালকে আমরা যেভাবে মন্দ বলে এতদিন বিচার করে এসেছি সেটা ভুল। একেব্যতিক্রমবলে গণ্য করতে হবে। কারণ এটি একমাত্র চেতনাবাহি দল । যে কোন মূল্যে এই দলকে  রক্ষা করতে হবে। প্রয়োজন হলে যত দরকার মানুষ মারতে হবে। বাকশালের বিরোধিতা এতদিন করা হয়েছে একটা উদারনৈতিক পাপবোধ থেকে, অর্থাৎ মনে করা হয়েছে  মত প্রকাশ করতে না দেওয়ার কাজটা বোধহয় ঠিক না। এখন এইসব পাপবোধ ঝেড়ে ফেলতে হবে। এই দলটিকে রক্ষা করাই এখন প্রধান ও একমাত্র কাজ। কনসেপ্টটা এক, শুধু প্রেক্ষাপট অনুযায়ী চরিত্রও গুলোর পরিবর্তন হয়েছে।” এই ইন্ডাস্ট্রির প্রচারিত মতামতের সাথে আপনি কোন ভাবেই দ্বিমত পোষণ করতে পারবেন না। যদি করেন এই ইন্ডাস্ট্রি আপনার উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। এবার আপনি ডানপন্থী, বামপন্থি, আস্তিক, নাস্তিক, জামায়াত, হেফাজত ,বা  আরও যে সব শ্রেণী বিভাগ এর কথা চিন্তা করা যায় তার যেটিরই অন্তর্ভুক্ত হন না কেন। এদের মূখপাত্র হিসেবে আছে বেশ কিছু প্রভাবশালী মিডিয়াও, ঠিক যেমনটা আছে নিউকনিয়ানদের।

 

আজকের এই দিনে খোলা চোখে দেখলে আপনার মনে হতে পারে যে, দেশে আপাত চলমান এই সমস্যার মূল কারণ হয়ত ৭১’এর যোদ্ধাপরাধীদের বিচার। আপনি যদি এটি ধরে থাকেন অপেক্ষায় থাকুন, আপনি খুব তাড়াতাড়ি ভুল প্রমাণিত হতে যাচ্ছেন। কেননা,  নিউকনিয়ান ভাবধারায় বিশ্বাসীদের সবসময় শত্রু প্রয়োজন।একটা শ্রেণীকে এদের দরকার যার ভয়ে মানুষ এদের ভোট দিবে, ক্ষমতায় আনবে বা এদের প্রভাব বজায় থাকবে । তাই নিয়ম অনুসারে যোদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়ে যাওয়ার পর আসবে অন্য কোন ইস্যু যেমন- ইসলামিক টেররিজম কিংবা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ঠিক যেমনটা অ্যামেরিকান মুভিতে কমিউনিস্টদের পতনের পর  রাশিয়ান ভিলেনদের বদলে এসেছে আরব ভিলেন। আবার যদি কখনো অন্য কোন একটি আইডিয়োলজি আওয়ামীলীগের জন্য হুমকির কারণ হিসেবে আত্তপ্রকাশ করে তখন সেটিই এই শত্রুর স্থানটি দখল করবে । কেননা শত্রুর এ স্থানটিই হল এই  ইন্ডাস্ট্রির ভ্যালু প্রপোজিশন যেটি কোন ক্রমেই ফাঁকা রাখা যাবে না । “দি মুক্তিযুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রি” লেখার জন্য একজন দেশী নরম্যান ফিঙ্কেলস্টাইন দরকার।”

(“দি মুক্তিযুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রি” নামের উদ্দেশ্য কোন ভাবেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান হানিকরা নয় বরং যারা এটাকে নিয়ে ব্যবসা করে তাদের সঠিক চিত্র তুলে ধরা।)

 

দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে​র সাথে প্রথম মুক্তিযুদ্ধে​র সামঞ্জস্যতা এবং উত্তরণের ধারনাঃ

by Abdullah Mahmud
 
লেখাটা যখন লিখছি তখন চলছে সরকারের পেটুয়া যৌথ বাহিনীর অভিযান। অনেকেই বর্তমান সংকটকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেন। সংকটের মূল কিন্তু একজায়গায়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগের নিরঙ্কুশ বিজয় হয়েছিল কিন্তু পাকিস্তানের স্বৈরশাসক ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে ছিল। স্বৈরশাসক ক্ষমতা হস্তান্তর না করাতে যে সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তা থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছিল ১৯৭১ সালে। সংকট শুধুমাত্র ক্ষমতা হস্তান্তর না করার প্রেক্ষাপটই ছিলনা সাথে যুক্ত হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানের দীর্ঘ দিনের শোষণ-নিপীড়ন এবং জুলুম-নির্যাতনের প্রতিবাদে জনগণের বিস্ফোরণ। অনেকেই বর্তমান সংকট কে মুক্তিযুদ্ধের সাথে তুলনা করে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আর তাই দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের সাথে প্রথম মুক্তিযুদ্ধের সামঞ্জস্যতা খোঁজার একটা প্রয়াস থেকেই এই লেখা।
 
২০১৩ সালের সংকটের সাথে ১৯৭১ সালের প্রথম সামঞ্জস্যতা হোল; ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরির অন্যতম কারন ছিল জনগণের রায়ে নির্বাচনে জয়ী দলকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে স্বৈরশাসকের জোরপূর্বক ক্ষমতা ধরে রাখা। ২০১৩ সালের  সংকটের মুলেও জনগণের মতকে তোয়াক্কা না করে স্বৈরশাসকের ন্যায় জোরপূর্বক ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা।
 
২০১৩ সালের সংকটের সাথে ১৯৭১ সালের দ্বিতীয় মিল হোল; ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরির আরকটি কারন হোল পশ্চিম পাকিস্তানের দীর্ঘ দিনের শোষণ-নিপীড়ন এবং জুলুম-নির্যাতনের প্রতিবাদে জনগণের বিস্ফোরণ। আজকের প্রেক্ষাপটেও যে সংকট তৈরি হয়েছে তা শুধুমাত্র নির্বাচন কেন্দ্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয় না। এর সাথে যুক্ত হয়েছে ১৯৭১ সালের মতই সীমাহীন দুর্নীতি, শোষণ-নিপীড়ন এবং জুলুম-নির্যাতনের প্রতিবাদে জনগণের বিস্ফোরণ। গ্রামে গঞ্জে সাধারন জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছে সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে।
 
২০১৩ সালের সংকটের সাথে ১৯৭১ সালের তৃতীয় মিল হোল; ১৯৭১ সালে প্রভাবশালী রাষ্ট্রের বেশির ভাগই পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যায় যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। ২০১৩ সালের সংকটেও এখন পর্যন্ত বুজা যাচ্ছে প্রভাবশালী রাষ্ট্রের বেশির ভাগই আওয়ামীলীগের অন্যায়কে পরোক্ষ ভাবে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে।
 
বর্তমান সংকটের সাথে ১৯৭১ সালের চতুর্থ সামঞ্জস্যতা হোল; ১৯৭১ সালে আওয়ামীলীগের অধিকাংশ নেতারা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহন করেননি, তাদের অধিকাংশের নিকট প্রথম দিকে প্রেক্ষাপটটা ছিল ক্ষমতায় যাওয়ার আর তাই কেউ স্বেচ্ছায় কারাবরণ করেছিলেন কেউবা ভারতে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেছিলেন। ক্ষমতার জন্য আন্দোলন আর জনগণের মুক্তির জন্য সংগ্রাম এক জিনিস নয়। জনগণের মুক্তির সংগ্রাম অধিকাংশ স্বার্থপর রাজনীতিবিদরা করতে পারেননা। মুক্তি সংগ্রামে যে ধরনের সততা, ঐকান্তিকতা এবং নিষ্ঠার প্রয়োজন হয়, তা দুর্নীতিপরায়ন রাজনীতিবিদদের থাকেনা। ২০১৩ সালে এসেও বিএনপির অধিকাংশ নেতারা ক্ষমতার জন্য আন্দোলন করছেন, জনগণের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করতে পারছেননা। জনগণের মুক্তির সংগ্রাম করতে পারছেননা বলেই সারাদেশে মানুষ যখন তীব্র আন্দোলন করছে তখন ঢাকায় নেতারা ১৯৭১ সালের মতই কেউ স্বেচ্ছায় কারাবরণ করছেন আর কেউবা আত্মরক্ষার জন্য পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বর্তমান সংকটের সাথে ১৯৭১ সালের পঞ্চম মিল হোল; ১৯৭১ সালে এদেশের মানুষ নিগ্রহের শিকার হয়েছিল অন্য অঞ্চল থেকে আসা পশ্চিম পাকিস্তানিদের রাষ্ট্রযন্ত্রের সিদ্ধান্তের দ্বারা। ২০১৩ সালে এসেও মানুষ নিগৃহীত হচ্ছে অন্য অঞ্চল ভারত থেকে সরাসরি রাষ্ট্রযন্ত্রের নিয়ন্ত্রনের দ্বারা।
 
বর্তমান সংকটের সাথে ১৯৭১ সালের ষষ্ট মিল হোল; ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানিরা পাক হানাদার বাহিনী দ্বারা নির্বিচারে পাখির মত গুলি করে মানুষ মেরেছিল। এখনকার সরকারও নিজেদের স্বৈরশাসন আঁকড়ে রাখার জন্য পাক হানাদার বাহিনির ন্যায় যৌথ বাহিনী দিয়ে নির্বিচারে পাখির মত গুলি করে মানুষ মারছে।
 
বর্তমান সংকটের সাথে ১৯৭১ সালের সপ্তম মিল হোল; ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সংকটে অপরচুনিস্ট গ্রুপ অনেক ছিল। ইনফ্যাকট শেখ মুজিবুর রহমান তার লেজিটিমেট ক্ষমতা চেয়েছিলেন; স্বাধীনতা বা স্বাধীন বাংলাদেশের ধারনা উনার নিকট ছিলনা। ২০১৩ সালের সংকটেও অনেক ধরনের অপরচুনিস্ট গ্রুপ কাজ করছে।
 
বর্তমান সংকটের সাথে ১৯৭১ সালের অষ্টম মিল হোল; ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম আরেকটি কারন হোল মুষ্টিমেয় গুষ্ঠির স্বার্থ, সংস্কৃতি রক্ষার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের উপর রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্পেষণ, ২০১৩ সালে এসেও  মুষ্টিমেয় গুষ্ঠির স্বার্থ, সংস্কৃতি রক্ষার জন্য রাষ্ট্র সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের উপর নিষ্পেষণ চালাচ্ছে।
 
বর্তমান সংকটের সাথে ১৯৭১ সালের নবম মিল হোল; ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের মিডিয়ার অধিকাংশই পাকিস্তান সরকারের অন্যায় দাবির পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। ২০১৩ সালে এসেও বাংলাদেশের অধিকাংশই মিডিয়াই সরকারের অন্যায় দাবির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
বর্তমান সংকটের সাথে ১৯৭১ সালের দশম সামঞ্জস্যতা হোল; ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এদেশের কিছু মানুষ পাকিস্তানকে রক্ষার জন্য দেশের সাথে বেঈমানি করে রাজাকার হয়েছিল। ২০১৩ সালে এসেও এদেশেরই কিছু মানুষ চেতনা রক্ষার নামে দেশের অধিকংশ মানুষের মতের বিরুদ্ধে ভারতের দালালী করছেন।
 
এভাবে আরও অনেক সামঞ্জস্যতা আপনি খুঁজে পাবেন  ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সাথে ২০১৩ সালের সংকটের। এই সংকট থেকে উত্তরনের পথ সম্পর্কে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কথা বলছেন। উত্তরনের সম্ভাব্য উপায় কি হতে পারে সে সম্পর্কে  আলকপাত করছি-
যারা বলছেন দুইদলের মধ্যে সংলাফের মাধ্যমে সমাধান করতে; তাদের বুজা উচিত আওয়ামীলীগ চাইলেও সমঝোতায় পৌঁচতে পারবেনা, কেননা আওয়ামীলীগ চালাচ্ছে ভারতের নীতিনির্ধারক। ভারতের এজেনডা বাস্তবায়নের জন্যই ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছে। (সত্যিকার জনগণের ভোটে সরকার ক্ষমতায় আসেনি- এ সহজ হিসাব বুজার জন্য পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলোর ভোট কাস্টিঙের পরিসংখ্যান দেখলেই বুজতে পারবেন)।
 
যারা ভাবছেন জাতিসংঘ কিংবা বিভিন্ন পরাশক্তির হস্তক্ষেপে সমাধান হতে পারে; তাদের ধারনাও ভুল। কোন দেশেরই সংকট উত্তরণে জাতিসংঘ কিংবা বিভিন্ন পরাশক্তির সরাসরি হস্তক্ষেপ করেনা যদিনা তাদের সরাসরি স্বার্থজড়িত থাকে। সে দিক থেকে চিন্তা করলে আমাদের উল্টো আতঙ্কিত হতে হয়; কেননা পরাশক্তির পক্ষে যায় এমন উপকরন সরকার লালন করছে।
 
আরেকটি ধারনা হোল সেনাবাহিনীর ক্যুর মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। তাদের জ্ঞাতার্থে বলছি; পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করা হয়েছিল একারনেই যে ভারতের স্বার্থপরিপন্থী কোন দেশপ্রেমিক এবং আপোষহীন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যাতে তাদের ছকের বাধা না হতে পারে। এখনকার সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসাররা ভারতের প্রতি নতজানু। কেন ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার কথা বলা হয় তা বোধকরি ব্যাখ্যা করার প্রয়জন নেই।
 
সংকট থেকে মুক্তির আরেকটা ধারনা হোল সুশীলসমাজ এবং বুদ্ধিজীবীদের নেত্রিত্তে এই সরকারকে উৎখাত করে তৃতীয় শক্তির মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন। সে ধরনের সম্ভাবনাও খুবই ক্ষীণ। আর সেটা হলেও সংকট থেকে উত্তরনের সুযোগ থাকবেনা। তৃতীয় শক্তির এমন কোন শক্তি নেই যে তারা সার্বভৌমত্ত রক্ষা করে দেশ চালাবেন। তৃতীয় শক্তি আসলে তা ভারতের নিকট নতজানু হয়েই আসবে। রাজনৈতিক বাস্তবতায় তাদের কোন জনসম্পৃক্ততা নেই। জনগণের মুক্তির আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার আর আঁতাতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকারের রুপ, সিদ্ধান্তগ্রহণ ক্ষমতা এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকতার ধরনও আলাদা হবে। তাই তৃতীয় শক্তির মাধ্যমে সমাধান হলে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন না হয়ে পরাশক্তিদের উদ্দেশ্যের বাস্তবায়ন হবে।
 
এতক্ষন সংকট উত্তরণের ধরনগুলো শুনে অনেকেই হয়তোবা হতাশ হয়ে পড়েছেন। যেকোনো সংকট হলে তা থেকে উত্তরণের পথ অবশ্যই থাকে। অনেকগুলো ওয়ে আউটের মধ্যে বেস্ট অপশানটা কি হতে পারে তার জন্যই সকল অপশানের পর্যালোচনা।
 
বেস্ট অপশানটা তাহলে কি? আমার মতে বেষ্ট অপশান হোল জনগণের মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয় এমন সরকারের বাস্তবায়ন। সেক্ষেত্রে মুক্তি সংগ্রামে অংশগ্রহনকারী যোগ্য নেতাদের, যারা হীন ব্যাক্তি কিংবা গোষ্ঠী স্বার্থের উদ্দেশ্যে আন্দোলন না করে জনগণের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করছেন, তাদেরকে ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে হবে। জনগণের মুক্তি সংগ্রামে অংশগ্রহন না করে আত্মরক্ষার জন্য পালিয়ে বেড়ানো নেতাদের রাষ্ট্রযন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত করলে দেশ ১৯৭২ সালের মতই সংকটে পড়বে।  পাকিস্তান আমাদের সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার থেকে বঞ্চিত করেছিল বলেই আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা লাভ করেছিলাম।  ১৯৭২ এ যে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল তাতে বাংলাদেশের সকল মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। আর এই জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলিত না হওয়ার কারন হোল যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন না করে দিল্লী বসেছিল তারাই ৭২ এ এসে ভারতের সংবিধানের আদলে বাংলাদেশের সংবিধান রচনা করেছিল।
 
এতো গেল সংকট থেকে উত্তরণের পরের ধাপ। প্রশ্ন হোল বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের উপায় কি? উত্তর হল জনতার মুক্তি সংগ্রাম। সেই সংগ্রাম শুরু হয়ে গেছে। গ্রামে গঞ্জে সাধারন জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছে সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে। প্রতিদিন পাকহানাদার বাহিনির ন্যায় সরকারের পেটুয়া যৌথবাহিনী পাখির মত গুলি করে মানুষ মারছে। সাধারন জনতা বুলেটের মোকাবেলা করছে বাঁশ, লাঠি আর ইট-পাটকেল দিয়ে। প্রশ্ন হোল এভাবে কি পারা যাবে? না এভাবে পারা যাবেনা। এ সংগ্রামে জয়ী হতে হলে যৌথবাহিনীর দেশপ্রেমিক সিপাহীদেরকে সাধারন জনগণের পক্ষে এসে দাড়াতে হবে। যৌথবাহিনীর সকল সদস্য সরকারের পাচাটা গোলাম নয়; অনেকেই বাধ্য হয়ে কর্তব্য পালন করছে মাত্র। এ মুহূর্তে একজন মেজর জিয়াউর রহমানের প্রয়োজন। যিনি কিনা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও এদেশের স্বার্থে পাকিস্তান সরকারকে তোয়াক্কা না করে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। আজ জাতি এমন একজন জিয়াউর রহমানের অপেক্ষায় যার ডাকে রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে বহু দেশপ্রেমিক পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী থেকে বেরিয়ে এসে রাষ্ট্রের অন্যায় যুদ্ধের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।  যুদ্ধ অবশ্য সকলে করতে পারেনও না। ১৯৭১ সালেও বহু মানুষের যুদ্ধ করার বয়স এবং সামর্থ্য থাকার পরেও যুদ্ধে অংশগ্রহন করেননি। এ সংকটেও তারাই এগিয়ে আসবেন, যারা সততা এবং ন্যায়পরায়ণতার সাথে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণের মুক্তি সংগ্রামের পাশে দাঁড়াবেন।  রাষ্ট্রযন্ত্রের দেশপ্রেমিক নাগরিকগন এ সংকট মুহূর্তে এগিয়ে না আসলে বহু রক্তে অর্জিত সার্বভৌমত্ত আর টিকে থাকবেনা। এদেশ সিরিয়ার ন্যায় গৃহযুদ্ধে দুকে দুকে মরবে।

Rogue ইনসটিটিউশন এবং নাগরিক আনুগত্য

by  সায়নুল হোসেন

জিয়া হাসানের “ইনস্টিটিউশন এর পক্ষে থাকুন – আমার স্টেটাস এর সমালোচকদের সমালোচনার জবাব“ শিরোনামের পোস্ট-টিতে যে মত-বিনিময় হচ্ছে এবং তার উত্তর দিতে গিয়ে জিয়া হাসান যে স্ট্যান্ডার্ড দাঁড় করাচ্ছেন, তাতে একটি জিনিস পরিষ্কার,  স্বাধীন বাংলাদেশে ডাবল স্ট্যান্ডার্ডই যেন একমাত্র স্ট্যান্ডার্ড।

 

   সম্মানিত সংসদ-সদস্য বা বিশিষ্ট সংস্ক্রৃতি-ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামানের গাড়ি-বহরের উপড় যে হামলা হয়েছিল, তা একটি নিন্দনীয় অপরাধ। জিয়া হাসান তুলে ধরতে চেয়েছিলেন কেন তা অপরাধ। তুলে ধরতে গিয়ে, ইনস্টিটিউটের ভায়োলেন্সের রাইট আছে বলেছেন। তাহলে কখন ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে ভায়োলেন্স জায়েজ হবে? তাঁর উত্তর অনুযায়ী, সোশাল মোরাল সেটি ঠিক করবে। সমাজ যখন মনে করবে, জায়েজ, তখন ভায়োলেন্স জায়েজ। জনতা যে আন্দোলনে  সম্পৃক্ত হবে, সেখানে আইন-বাহিনীর সব চেক-পোস্ট কর্পূরের মত উড়ে যাবে। এইটা তাঁর স্টান্স। এই জায়গাতে তাঁর সাথে আমার ভিন্নমত।

   তাঁর কথা যদি মেনে নিই, তবে নূরের গাড়িতে যদি কয়েকজন জামাতী আক্রমণ না করে কয়েক লক্ষ বাঙ্গালী আক্রমণ করত, তবে তা হত জায়েজ। আর আমি মনে করি, নূরের গাড়িতে লক্ষ লোক কেন, যদি ষোল কোটি লোকও আক্রমণ করত, তা-ও হত নিন্দনীয়, বিচারযোগ্য অপরাধ। কিংবা আরও সহজভাবে বলি, শাহবাগের লক্ষ লক্ষ জনতা যদি হাতের সামনে মাহমুদুর রহমানের গাড়ি পেয়ে সেখানে সামান্য একটা ঢিল দিত, সামাজিক নৈতিকতার আধিক্য বা প্রাধান্য দিয়ে সেটাকে জায়েজ ভাবার কোন কারণই নেই।

   জিয়া হাসান এই পোস্টটিতে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড যেখানে আমাদের একটিমাত্র সিংগল স্ট্যান্ডার্ড, সেখানে ইন্সটিউশনের ভায়োলেন্সের রাইট নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড লিখতে গেলে তাকে আরও কয়েকটা নোট লিখে যেতে হবে মনে হচ্ছে। তাঁর লেখাগুলোর অপেক্ষায় রইলাম। তবে, আমি কেন লিখতে বসেছি? কারণ, এই বিতর্ক আমার বড় কাম্য বিতর্ক। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড-এর যে ধুম্রজাল গত বিয়াল্লিশ বছর ধরে আমাদেরকে অন্ধ করে রেখেছে, সে ধুম্রজালটি সরাতে হবে এখনই।

   এবং, এই ধুম্রজাল সরানোর জন্যে, চলুন, দবির-কবীর-এর উদাহরণের আশ্রয় নিই। ধরুন, দবীর তার প্রিয় সাইকেলটি হারিয়ে ফেলল (বা কেউ সেটাকে চুরি করে নিয়ে গেল)। একদিন দবীর দেখল, সাইকেলটি তার পাড়ার কবীর দিব্যি চালিয়ে বেড়াচ্ছে। সাইকেলটি রাখাও হচ্ছে কবীরের বাড়িতে। দবীর এখন কি করতে পারে?

(১) কবীরের কাছ থেকে জোড় করে সাইকেলটি তুলে নিয়ে আসতে পারে (কারণ, সাইকেলের আসল মালিক তো দবীরই)।

(২) পাড়ার সরকারী ছাত্রনেতাকে অনুরোধ করতে পারে সাইকেলটি উদ্ধার করে দেয়ার জন্যে (কারণ, ছাত্ররাই তো জনগণের অধিকার রক্ষার আদায়ে বারবার আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছে)

(৩) দবীর নিজের সাইকেলের কথা ভুলে গিয়ে অন্য কোন নিরীহ সাবের-এর সাইকেলটি চুরি করে নিজেই চালাতে পারে (“যে রাষ্ট্রে যে নিয়ম”, সমাজের মোরাল হয়তো এখানে যেতে পারে)

(৪) উপড়ের সবগুলোই

   উপড়ের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে ভাবতে থাকুন। সে ফাঁকে, জাপানে ইন্‌জিনিয়ারের চাকুরি করেও ম্যানেজমেন্টে আইন নিয়ে সামান্য যে জ্ঞান নিতে হয়েছে, তার কিছুটা শেয়ার করি।

   গণতান্ত্রিক সমাজ-ব্যবস্থায় আইনের একটি মূল নীতি হল, ব্যক্তির নিজের সিদ্ধান্ত নিজের নেয়ার মৌলিক অধিকার অন্য কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আপনি দিনে ষাট টাকা রোজগার করে পঞ্চাশ টাকার চটপটি খাওয়ার ইচ্ছা করলে, আইন বলবে, আপনার সেটা খাওয়ার অধিকার আছে। “এত সামান্য উপার্জনের লোক-এর চটপটি খাওয়ার দরকারটি কি?”-এ নিয়ে নৈতিকতার বিতর্ক হয়তো করা যায়, কিন্তু ষোলকোটি লোক তাকে ছিঃ ছিঃ করলেও কোনভাবেই তার চটপটি খাওয়ার অধিকারকে বাধা দিতে পারবে না। এটাই গণতন্ত্রে আইনের অধিকার। একইভাবে ব্যক্তি তার পছন্দমত সাইকেল কিনবে, সেটা তার মৌলিক অধিকার।  আমার-আপনার বা রাষ্ট্র নামক কোন ইনস্টিটিউশনের ক্ষমতা নেই তার এই সাইকেলের স্বত্বাধিকার থেকে তাকে বঞ্চনা করার।

   আইনের আরেকটি মূল নীতি হল, আইন প্রয়োগের ক্ষমতা আম-জনতার নেই। উপড়ের দবীর-কবীর-এর উদাহরণে দবীরের সাইকেলটি কবীরের বাসা থেকে নিয়ে আসার ক্ষমতা আছে শুধু পুলিশের, এবং এই নির্দেশটি দেয়ার দায়িত্ব আছে শুধু বিচারকের। আপনার সাইকেল, তাই বলে আপনি নিজে গিয়ে নিয়ে আসবেন, এই অধিকার আপনার নেই। এই অধিকারটি আছে শুধু সরকারের (বা পুলিশের)। জিয়া হাসান ভাই-এর এখানেই ভুল। রাষ্ট্রের ভায়োলেন্সের অধিকার আছে যে তত্ত্বটি দিয়েছে, তা সঠিক নয় । রাষ্ট্রের কেবল আইন প্রয়োগের অধিকার আছে।

   কথা হল, কবীর যদি বিচারপতির নির্দেশ সত্বেও সাগ্রহে সাইকেলটি পুলিশের বা রাষ্ট্রের হাতে দিতে রাজী না হয়, রাষ্ট্রের তো তখন ভায়োলেন্স প্রয়োগ করতেই হবে। আমি সেখানে একমত। তবে, বুঝতে হবে, এটি আইনের মধ্যে থাকা শক্তি-প্রয়োগ। কবীরকে গুলি করে সাইকেলটি নিয়ে আসার ক্ষমতা রাষ্ট্রকে দেয়া হয় নি। সাইকেলটি কবীরের কাছ থেকে নিয়ে আসার জন্যে “সমানুপাতিক” শক্তি-প্রয়োগের বাইরে রাষ্ট্র কোন ভায়োলেন্স-এ যেতে পারবে না। আর, রাষ্ট্র নিজেই ঐ সাইকেলটি নিজের বলে দাবী করতে পারবে না। দুটোই বে-আইনী।

   প্রশ্ন হল, পুলিশ বা বিচারক উভয়ই যদি আইনের বাইরে যায়, তাহলে কি হবে? বিচারক যদি বলে সাইকেলটা দবীরের হলেও সাইকেল চালাতে পারবে কেবল কবীরই কিংবা পুলিশ গিয়ে যদি দবীরকে বলে, সাইকেলটা দবীর নিজের দাবী করলেই দবীরকে জামাত-শিবির নামে আখ্যায়িত করা হবে, সুতরাং, অফ্‌ যাওয়াই ভাল, তাহলে দবীর কি করবে? তার অধিকার রক্ষার দায়িত্ব এবং ক্ষমতা যাদের দেয়া হয়েছে, তারাই যদি সংবিধান বা আইন না মেনে চলে, তবে কে আইন প্রয়োগ করবে?

এই প্রশ্নের সহজ উত্তর নেই। ফুটবল খেলায় একটি বলের বদলে দুইটি বল দিয়ে খেললে কি হবে তার উত্তর যেমন আমার জানা নেই, ব্যাপারটিও তাই। একটি নৈরাজ্য তৈরি হবেই। সেখানে সন্দেহ নেই। এবং এই নৈরাজ্যের কারণে দবীর বা কবীর-এর চাইতে হাজারো গুণ বেশি দায়ী হবে বিচারক বা পুলিশ (সরকার) কারণ ক্ষমতা ও প্রিভিলেজ তাদেরকে বেশি দেয়া হয়েছিল।

   একাত্তরে (সত্যিকার অর্থে, সত্তরের নির্বাচনে) পাকিস্তান নামক দেশ শাসনের ক্ষমতা বঙ্গবন্ধু অর্জন করেছিলেন। আইনানুযায়ী বঙ্গবন্ধুর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা। রাষ্ট্র (মিলিটারী জান্তা) নিজেই আইন ভঙ্গ করলো। উল্টো হানাদার হয়ে আক্রমণ করলো নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের। দবীর বা কবীর নয়, রাষ্ট্র নিজেই আইনের বাইরে চলে গেল। এখানে রাষ্ট্রের উপড় ভরসা করার আর কোন আইনগত ভিত্তি ছিল না। কাজেই, নতুন করে আইনকে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে এই  পাকিস্তান নামক হানাদার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ছাড়া উপায় ছিল না। একাত্তরে খানসেনাদের মারাটা জায়েজ ছিল কি-না, সরকার যেখানে নিজেই আইনকে তোয়াক্কা করে নি, সেখানে এই প্রশ্নটি অবান্তর। তখনকার জামাতী-মুসলিম লিগারদের মোরাল-এর বিচারে যাওয়ার আগে, আইনের জায়গায়ই এখানে ওরা নিজেদেরকে বে-আইনী হয়ে গেছে, সেটা উপলব্ধি করাটা জরুরী।

   আজকের অবস্থা কি একই রকম? আজকের আওয়ামী লীগের সরকার আর একাত্তরের ইয়াহিয়ার সরকারের মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কি? অর্থাৎ সরকার আইনের বাইরে নিজেকে নিয়ে গেছে কি? বিচারপতিরাও সংবিধান-রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে নিজেদেরকে সংবিধানের উপড়ে ভাবা শুরু করছে কি? রাষ্ট্র (সরকার ও বিচার বিভাগ) যখন দবীর-কবীরের অধিকার রক্ষা না করে নিজেকে আইনের বাইরে নিয়ে যায়, তখনও দবীর-কবীর-রা কি আইনের খেলা খেলবে? আমি জানি, জিয়া হাসান কি উত্তর দেবেন। উনি বলবেন, জনগণ যদি বাঁধ-ভাঙ্গা স্রোতের মত বের হয়, তবে সব স্বৈরাচার বিদায় নেবে। কিন্তু, এই উত্তরে একাধিক সমস্যা আছে। প্রথমত, সব জনগণ বের হবে না (যেমন, কবীরের মত সুবিধাভোগীরা বা দবীরের মত নীরবে নিভৃতে ক্রন্দনকারীরা)/যারা ঘরে থাকবে তাদেরকে কি হিসেবে চিহ্নিত করবেন? বাধ-ভাংগার পক্ষে না বিপক্ষে? মোরাল হ্যাজার্ড যে চলে আসবে না তা কিভাবে বুঝবেন (অর্থাৎ, অসৎ উদ্দেশ্যের লোকেরাই যে জোর-গলায় শ্লোগান দেবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়?)/ দ্বিতীয়ত, এই বাঁধ-ভাঙ্গার কাজটি রমনার বটতলায় বসে বৈশাখীর গান শোনার মত ফ্রি হবে না, অনেক জীবন যাবে এখানে। তাহিরির স্কয়ারের জোয়ার আনতে গিয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই বার শ লোকের প্রাণহানি ঘটেছে। তার বদলে কোন এক বে-আইনী লোক হোসনী মোবারক-কে গুলি করে তাকে সরিয়ে দিলে ১১শ নিরানব্বই লোকের জীবন বাচতো। জিয়া হাসানের সমাধানে এই ১১শ নিরানব্বই লোকের জীবন বাঁচানোর অপ্‌শন নেই।

   উপসংহার হল, রাষ্ট্র স্বৈরাচারী হয়ে গেলে সবকিছু অমানবিক হয়ে যায়। আইনের সোপান ব্যর্থ হয়। এখানে ফল্ট্‌-টলারেন্ট সিস্টেম কাজ করে না। আমার-আপনার সবচাইতে পবিত্র দায়িত্ব আমাদের সরকারকে স্বৈরাচারী না হতে দেয়া। এখানে মোরাল-এর মত সাব্‌জেক্টিভ বিষয় আনতে গেলে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড অনিবার্য ভাবে চলে আসবে। লক্ষ লক্ষ শাহবাগী দিয়ে মাহমুদুর রহমানকে ভয় দেখানো আর কয়েক ডজন জামাতী দিয়ে নূরকে আঘাত করা দুটোই বে-আইনী, কে করছে তা দিয়ে ন্যায্যতা যাচাই করার ব্যাপার এটা না। আমাদের এমন কিছুকে আস্কারা দেয়া ঠিক হবে না, যেখানে বে-আইনী হওয়াটা অনিবার্য আইন হয়ে উঠে।

   পুনশ্চঃ আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-কে অবরোধ করার কর্মসূচীর বিরুদ্ধে। দবীর-কবীর-এর উদাহরণে অবরোধ বা পিকেটিং-এর কোন ন্যয্যতা নেই। কেউ নিজেকে বঞ্চিত মনে করলে বিচারকের কাছে যান। বিচারক বঞ্চিত-এর বিরুদ্ধে রায় দিলে মেনে নিতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় গণ-আন্দোলন বলে কোন শর্ট-কার্ট নেই। স্বৈরাচার সরানোর কোন গণতান্ত্রিক উপায়ও নেই।

Sainul Hossain’s Blog is www.prottasha-bd.com

চেতনার বিশ্বরেকর্ড

1

Human-Flag-2

আমরা ইংরেজি প্রভার্ব “নিরো ফিড্‌লস ওয়াইল রোম বার্ন্স” যখন শুনি তখন নিশ্চয়ই মনে মনে দৃশ্যায়ণ করার চেষ্টা করি যে ব্যাপারটা কীভাবে সম্ভব। এসময় আমরা খুব ইথিকালি চিন্তা করি বলে দৃশ্যায়ণের কাজটি খুব স্থূল হয়ে যায়। নিরো তো আর গর্দভ ছিলো না, সে নিশ্চয়ই ব্যাপারটির মাঝে একটা অ্যাস্থেটিক ক্রুয়েলটি নিয়ে এসেছিলো, যার নান্দনিকতা ভেদ করে নৃশংসতার ডোমেইনটি বোঝা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয়নি।

কথাগুলো যদি বুঝতে কষ্ট হয় তাহলেও সমস্যা নেই, ভালো উদাহরণ আছে বোঝানোর জন্য। এবং উদাহরণগুলো দেশী।

উদাহরণ ১: যখন সাভারে রানা প্লাজা ধ্বসে পড়ল তখন প্রথম আলোর মেরিল তারোকালোক নাচাগানার অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া। আজ থেকে ৫০০ বছর পর কেউ যদি ঘটনাটা শোনে সেও ভাববে কীভাবে সম্ভব এটা? কিন্তু সে যদি আমাদের পেত তাহলে আমরা তাকে বোঝাতে পারতাম যে প্রথম আলো তো আর বেকুব নয়। তারা সেই “অ্যাস্থেটিক ক্রুয়েলটি” বোঝে। তারা প্রোগ্রামটি বন্ধ করতে রাজি নয়, স্বার্থ জড়িত। আবার এটাও বুঝছে যে ক্রুয়েলটি হয়ে যাবে যা মানুষ পছন্দ করবে না। এখানেই প্রথম আলোর নন্দন তত্ত্ব প্রয়োগের মুন্সিয়ানা। আনিসুল হক বলল: এটা তারা জর্জ হ্যারিসনের “কনসার্ট ফর বাংলাদেশ”-এর আদলে করছে। প্রোগ্রাম চলল, আবার তাতে চাঁদাও ওঠানো হোলো অর্ধ লক্ষাধিক টাকার। ব্যস, রোম বার্ন করার সময় নিরোর ফিডল বাজানোর ক্ষেত্র তৈরি হয়ে গেল। গান-বাজনাও হোলো, আবার কেউ আপত্তি তুললে তাকে মুখ ঝামটাও দেয়া হোলো – আমরা তো এত এত টাকা তুলেছি, তোমরা কী করেছো? এটার ফ্যালাসিটা অনেকেই ধরতে পারবে না, কারণ তারা নান্দনিকতা ভেদ করতে পারে না। টাকা তোলা এক জিনিস, আর নাচগান করা আরেক জিনিস। এ দুইটা জিনিস একসাথেই হতে হবে এমন না। প্রথম আলো নাচগান না করেও টাকা তুলতে পারতো, টাকা তোলার জন্য নাচগান শর্ত ছিলো না। ঐ পরিমাণ টাকা প্রথম আলো নিজেদের ব্যাংক ব্যালেন্স থেকেও দিতে পারতো। অথবা স্রেফ চাঁদা তুলেও করতে পারতো। টাকা না তুললেও কোনও সমস্যা ছিলো না। জাতীয় একটি দুর্যোগে প্রথম আলোর নাগরিক আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, সেটাকে প্রথম আলো ভেট নজরানা দিয়ে রিভার্স করতে পারবে না।

উদাহরণ ২: দেশ যখন রাজনৈতিক সমস্যার একেবারে অতল গহ্বরে তখন একদল দেশপ্রেমিক গেছেন জাতীয় পতাকার ব্লক বানিয়ে বিশ্বরেকর্ড করতে। এখানে অ্যাস্থেটিক ক্রুয়েল্টি কোথায়। আমি বরং আর না বলি। আপনারা দেখুন তো এখানে অ্যাস্থেটিক ক্রুয়েলটি কোথায় ধরতে পারেন কিনা? এটার নৃশংসতা কোথায় আগে বের করুন। এরপর চিন্তা করুন যে তারা কোন নান্দনিকতা ব্যবহার করলেন সেই ক্রুয়েলটি ঢাকার জন্য। বোঝা খুবই সহজ। কেন এই অ্যাস্থেটিক ক্রুয়েলটি তাদের করতে হোলো। কেননা, দেশপ্রেমের আসল যে পরিচয় তাদের এই সময় দিতে হতো সেটি তারা করতে অপারগ, তাদের স্বার্থ জড়িত, বিসনেস ল-এর ভাষায় এজেন্সি কনফ্লিক্ট হয়ে যাবে। কিন্তু আবার দেশপ্রেমের যে সোল প্রোপ্রাইটরশিপ সেটা ছাড়লেও তো চলবে না, সেটাই তো মূল ব্যবসা। কাজে কাজেই বিশ্বরেকর্ডের নান্দনিকতা।

গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ফালা ফালা হয়ে গেছে। আর কোনও দেশ এতোগুলো নিরো একসাথে প্রডিউস করতে পারেনি।

Who represents the ‘people’?

by Zahedul Amin 

As the country gets increasingly mired in political crisis resulting in arson, destruction and death to innocent civilians, the general people seem to be running out of patience. Both PM and opposition leader have been claiming to represent the general mass, while at the same time, conveniently ignoring their views.  As made amply clear in recent opinion polls, a vast majority of people support a poll time caretaker government over a more partisan one. While people squarely reject hartals and it’s crippling impact on the economy. Responsibility for civilian deaths during recent strikes falls squarely on the opposition and their failure to apologize will prove costly in coming poll.

The current crisis emanated from the Supreme Court verdict which declared the caretaker government system as unconstitutional, allowing the government to amend constitution. Despite leeway in terms of undertaking two more polls under caretaker government, and initial opposition from senior leaders of the ruling party, the government went ahead with the amendment. The biggest irony is that AL, while in opposition in mid 90s had to force the BNP government to enact the caretaker government bill enforcing 183 days hartal.

Although almost all polls under the current AL government have been deemed fair, the upcoming national election has greater weight with far reaching ramifications inducing the AL government to possibly rig it. The crux of the matter boils down to the lack of trust between the two major parties which is unlikely to alter overnight. The recent phone conversation between the PM and opposition leader is the case in point for the non-existence of a proper working relationship.

The situation is expected to escalate beyond control if the status quo remains. A poll without the main opposition is unlikely to be credible, both nationally and internationally, and may suffer the fate of the Feb 15, 1996 poll government. The opposition is also likely to continue agitation post Jan 5 poll which will further devastate the economy.

The opposition, on its part, should make utmost effort to accommodate a compromise for ensuring participation. Recent opinion polls have given them an edge in terms of electoral support which may translate into a big majority. So far, Opposition have clearly failed to pay its cards well and had to resort to arson instead of engaging the general people in the anti-government movement.

 Government has a larger responsibility in the dialogue process and their highhanded behavior is totally uncalled for. Despite knowing about impending political turmoil from 2011 onwards, they haven’t taken any concrete steps to resolve the CTG issues keeping it for the last moment. The Bangladeshi constitution provides supreme authority to the PM subordinating the influence of other cabinet members. Hence the balance of power is unlikely to be evened out even if major opposition leaders were to accept crucial ministries in the ‘all-party’ government keeping PM at the helm.

The future dialogue (if any) will primarily hinge on the person heading the interim poll-time government. It will be naïve on the part of government to expect opposition to accept the AL chief as the head the interim government, while the opposition must not expect the government to go beyond the purview of the constitution.

Civil society leaders and constitution experts have suggested several solutions falling within the tenets of current constitution. Both parties have so far ignored these voices and are going ahead with their plans.

As the Game of Throne for the country’s Prime Minister-ship draws near, we find both leaders at loggerhead again. One is championing the constitution while the other wants the return of Caretaker/neutral government. Don’t be surprised if their roles change in five years time again claiming to represent peoples’ views.

Zahedul Amin is the director of Finance at LightCastle Partners, an emerging market specialized business planning and intelligence firm. (for details visit www.lightcastlebd.com)

 

 

অনলাইনে আওয়ামী লীগের ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন

অনেকে ব্লগে অনেক বছর ধরে আছেন অনেকেই নাই ।
তাই যারা নবিস ফেসবুকার __ তাদের জন্য একটা একটা গুরুত্বপূর্ন পোষ্ট ।

সামু ব্লগের শুরুতে অনেক ছাগু অপারেশন ছিলো । তারা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অনেক কথা লিখতো ।
সেই উৎপাতে অতিষ্ট হয়ে __ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি গঠন করলো এটিম ।
এরা ছাগু তাড়াতে ওস্তাদ ছিলো ।
এদের বিক্রমে ব্লগ একসময় অনেকেটাই ছাগুমুক্ত হলো । কিন্তু ছাগসঙ্গে সর্বনাশ হওয়ার কারনে
__ এটিম দুএকজন এক্সট্রিমিষ্ট এবং এটিম সমর্থিত কিছু আওয়ামী ছাগু শুরু করলো রিভার্স খেলা ।
সেটা হলো ___ যে কোন একটা জামাতী/স্বাধীনতা বিরোধী নিক খুলে __ নোংরা কিছু কথা বলা ।
ব্যাস তাদেরকে গালি খাওয়ানো । শুধু নোংরা না __ এমন সব চিন্তা যেগুলো কখনো জামাতী এমনকি স্বাধীনতা বিরোধীরাও বলবে না ।

যা হোক যারা পুরানো ব্লগার ___ তারা খুব দ্রুতই এসব মানুষ এবং এদের পোষ্ট সম্পর্কে সচেতন হয়ে যেতো ।

সমস্যা বাধে __ নতুন ফেসবুক সেনসেশন নিয়ে ____ এদের অনেকেই সেলেব্রেটি __ কি কারনে সেলেব্রেটি এটা কেউ জানে না __ অনেকে আছে কিছু না বুঝেই চেতনাধারী __ কিছু বলার আর কিছু করার আগে ২ সেকেন্ড চিন্তা করে না । এদের কারনে যেকোন পেইজ যেকোণ পোষ্ট হিট হতে দেরী হয় না ।

___

এইরকম চরম কিছু নোংরামী __ বেশ কয়েকমাস ধরেই ফলো করছিলাম ।
মূলত এরজন্য দায়ী আমার ব্লগের কিছু উগ্রপন্থী আওয়ামী ছাগু __ রাসেল রহমান এবং তার চু***র পো* গ্যাং ।

___
এদের এ্যাকটিভিটি প্রথম নজরে আসে __ জামাতের মুখমাত্র বাশের কেল্লা যখন ব্যান করা হয় । তখন বেশ কিছু আওয়ামীপন্থী বাশের কেল্লা পেইজ সৃষ্টি হয়েছিলো । তারা সম্ভব অসম্ভব সবকিছুই শেয়ার করতো __ এবং সেগুলো মানুষ বিশ্বাস করে শেয়ার দিতো ।
মূলত পেইজের পিছনের কারা আছে এটা সহযে টের পাওয়া যায় না । তাই যেকেউ যেকোন পেইজ খুলে নষ্টামি শুরু করতে পারে

____
এবং বেশ কিছুদিন ধরে তাই করা হয়েছে __ পিনাকী ভট্টচার্যের মতো ফেসবুক এক্টিভিষ্ট __ গয়েস্বর রায়ের একটা ফটো শেয়ার করেছেন যেখানে সে বলছে __ যে খালেদা জিয়া মা দূর্গা।
এটা মূলত একটা ফটোশপের কাজ । এই খবরের কোন লিংক নেই ।
এধরনের আরো কিছু ফটো তৈরী করে হয়েছে __ শুধু মাত্র বিএনপিকে খারাপ দেখানোর উদ্দেশ্য ।

____

গতকাল পোষ্ট সম্পর্কে একজন দৃষ্টি আকর্ষন করলো ।

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805254202834552&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=1&relevant_count=3

সেটা হচ্ছে রাজিব হাসান নামের এক ভদ্রলোকের । উনি প্রথম আলো পত্রিকার সাব এডিটর ।
উনি এই আমার ব্লগ আর সিপি গ্যাং গ্রুপের খোলা ___ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের ৬০০০ লাইক পাওয়া একটা পেইজের পোষ্ট শেয়ার দেন । যেখানে দাবী করা হয়েছে __ শহীদ বুদ্ধিজীবিরা কাফের আর নাস্তিক ।

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805255296167776&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-a-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-prn2%2F1471112_805255296167776_1942651929_n.jpg&size=533%2C763

খুজতে গিয়ে দেখা গেলো __ এইটা সেই বিখ্যাত রিভার্স পেইজ __ যেখানে প্রোমোট করা হচ্ছে __ বিএনপি জামাতের নেতাদের মুক্তি চায় ।
এবং সবশেষে পাওয়া গেলো __ সেই বিখ্যাত ফটোসংবাদ

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805253952834577&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-a-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-frc3%2F1467357_805253952834577_343600566_n.jpg&size=720%2C456

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805254519501187&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-f-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-prn2%2F1490918_805254519501187_379323394_o.jpg&smallsrc=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-f-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-prn2%2F1499605_805254519501187_379323394_n.jpg&size=1057%2C797

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805254949501144&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Fscontent-b-iad.xx.fbcdn.net%2Fhphotos-frc3%2F1390683_805254949501144_324898650_n.jpg&size=510%2C724

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805255129501126&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-b-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-ash4%2F1462866_805255129501126_1136641474_n.jpg&size=515%2C559

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=805253272834645&set=a.706470839379556.1073741829.100000499398149&type=3&src=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-e-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-frc1%2F902342_805253272834645_1420339422_o.jpg&smallsrc=https%3A%2F%2Ffbcdn-sphotos-e-a.akamaihd.net%2Fhphotos-ak-ash3%2F1463394_805253272834645_1420339422_n.jpg&size=1068%2C778

_____

মূলত এই পেইজটা থেকে দেশের বরন্য মানুষকে গালাগালি করে __ বিএনপি-ছাত্রদলযে ভয়ংকর একটা দল সেটা প্রমান করা হচ্ছে ।

তাই এদের পাতা ফাদে পা দেবার আগে দশবার ভাবুন ।

আর এটা ছাত্রদলের অফিসিয়াল পেইজ কিনা জানা নেই __ কিন্তু এখানে দেখেন ক্লিয়ারলী অফিসিয়ালি তারা বুদ্ধিজীবিদের স্মৃতিতে কর্মসূচি দিচ্ছি।

____
অনেকে ভাবতে পারে -__ আমার কি দায় পড়েছে এসব নিয়ে লেখার । আমি বিএনপি এক্টিভিষ্ট নই __ বিএনপি খুব বেশী কাজকর্ম আমার ভালো লাগে না ।বিএনপির নিজস্ব সমালোচনা আছে আমার __ কেউ চাইলে সেসব কম্পাইল করে দেয়া যাবে ।
তো আমি এটা লিখলাম কেন ?? বিএনপি মানুষজন আমি যা দেখলাম অনলাইনকে খুব গুরুত্ব সহকারে নেয় না ।
তাই তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করার পরও তার এটাকে গুরুত্ব সহকারে নেয় নি ।

কিন্তু দেখুন এই নোংরামীটা কতোদূর ছড়াচ্ছে ___ যারা বিএনপি আওয়ামী লীগ কিছু করে না __
তারা এই নির্বাচনের সময় সঠিক দাবী করার বদলে বিএনপি পক্ষে যাবে বলে চুপ করে বসে আছে ।

_____
জাতীয় রাজনীতিতে রিভার্স গেমতো কম দেখা হলো না । ব্লগের এসব রিভার্স খেলতে
দেখেছি আওয়ামী পান্ডাদেরই ।

বাশের কেল্লা ভুয়া ফটোশপ দিয়ে প্রপাগান্ডা করে ___ আমার দেশের কাবা শরীফের গিলাফ নিয়ে মিথ্যাচার অনেক লীগারের টপিক ।

কিন্তু কেউ বলে না __ আওয়ামী লীগ __ আরেকজনের ঘাড়ে দোষ চাপানোর জন্য কি পরিমান নোংরামী করে বেড়ায় __ যারা দেখে তাদের গা শিঊরে উঠে আওয়ামী লীগের নোংরামী
গভীরতা চিন্তা করে ।

একবার ভাবুন __ এসব নোংরা কীট গুলো শহীদ বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে এসব লেখা লিখছে শুধু বিপক্ষ দলকে ঘায়েল করার আশায় ।

_______
অনলাইন প্লিজ কোন কিছু শেয়ার করার আগে প্রমোট করার আগে সোর্স দেখে নিশ্চিত হয়ে নিন ।
আপনারা চুপ করে বসে থাকবেন __ আর সরকার এইদিকে মানুষ মারার উৎসব করবে ।
মানুষের পরিচয় দিন __ এসব নোংরামীর পিছনে লাথি মেরে এদের কবল থেকে দেশকে উদ্ধার করুন ।

জামাতে ইসলামি সম্বন্ধে আমার ধারণা

Asif Shibgat Bhuiyan

এমফ্যাসিস দেখুন প্রথমত, আমার ধারণা। তার মানে হচ্ছে এখন আমি যে কথাগুলো বলব সেগুলো কুরআন হাদীসের আপ্ত বাণী নয়, সেই এক্সপেকটেশান আমার কাছে করাও ভুল। এই ধারণায় আমার ব্যক্তিগত ইসলামি চিন্তার প্রভাব রয়েছে এবং নিঃসংকোচে মানতে রাজি আছি যে আমার ব্যক্তিগত ইসলামি চিন্তা সবাইকে গ্রহণ করতে হবে না। যে কেউ আমার সাথে এ ব্যাপারে দ্বিমত করতে পারেন এবং আমিও যে কারও সাথে দ্বিমত করতে পারি। কমেন্টে খিস্তি খেউড় করে বা ব্যক্তিগত আক্রমণ করে লাভ নেই। তবে সমালোচনা করতেই পারেন, সেই সমালোচনা গ্রহণ বা বর্জন করার এক্সক্লুসিভ রাইট আমার রয়েছে।

এই লেখাটি একটা তাগিদ থেকে লিখছি। মানুষজনের কথাবার্তা শুনলে মনে হয় একজন ইসলামপন্থি হতে হলেও আমাকে জামাতকে অচ্ছ্যুৎ ঘোষণা করে কথা বলতে হবে। আমি সেটা একদমই সাপোর্ট করি না।

আমি জামাতের সদস্য নই আমি জামাত করি না। পিরিয়ড। তবে আমার জামাত না করাটা আমার জন্য কোনও ক্রেডিটের কথা নয় এবং জামাতের জন্যও কোনও ডিসক্রেডিটের কথা না। আমি এত গুরুত্বপূর্ণ কেউ নই এবং সেটা আমি প্রিটেন্ডও করব না। আমি কি জামাতকে রাজনৈতিক ভাবে সাপোর্ট করি? কমপ্লিকেটেড প্রশ্ন। আমি কোনও ইসলামি দলকে একক ভাবে বাংলাদেশের ক্ষমতায় দেখতে চাই না, না জামাত, না তাবলীগ, না আহলে হাদীস, না এইচটি। আমি শরি’আর পক্ষপাতী কিন্তু সেটা বাংলাদেশের মানুষের শরি’আ বাস্তবায়নের যে হাস্যকর ইম্ম্যাচিউর আন্ডারস্ট্যান্ডিং সেই শরি’আ না। যেহেতু এই স্ট্যাটাস এই বিষয়ের না, আমি বিশদ ব্যাখ্যায় যাবো না। আবার আমি কোনও সেক্যুলার পন্থি দলকেও একা সরকারে দেখতে চাই না। আমার ব্যক্তিগত ধারণা যে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় ইসলামি দল সহ কয়েকটি ডানপন্থি দলের যে জোট – এটিই এই মুহুর্তে বেটার। খেয়াল করবেন যে এটা আমার প্র্যাকটিকাল স্ট্যান্স, আইডিওলজিকাল স্ট্যান্স না। আইডিয়ালি কী হওয়া উচিৎ, সেটা অ্যাকাডেমিক আলোচনা, আরেকদিন। সুতরাং আমি রাজনীতিতে বিএনপি-জামাত ও অন্যান্য দল সম্বলিত জোটকে সাপোর্ট করি। একা বিএনপিকেও না, একা জামাতকেও না।

জামাতের ১৯৭১ এর ভূমিকা – এটি আমার সিনসিয়ার স্বীকারোক্তি যে ১৯৭১ এর ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে আমি কনফিউজ্‌ড। এটা এডুকেটেড কনফিউশান, আমি বেশ কিছু বই পড়েছি এবং রেসাল্ট দাঁড়িয়েছে এই যে পিকচারটা আমার কাছে গ্রে। গ্রে-কে আমি জোর করে সাদা বা কালো বানাতে পারব না। কোলাবরেশান – আমার কাছে কোনও ফ্যাক্টর নয়। সত্যি কথা বলতে আমি যখন চিন্তা করি যে ১৯৭১ সালে আমি থাকলে কী করতাম, আমার মাথা ব্ল্যাঙ্ক থাকে। দিস ইজ গড’স অনেস্ট ট্রুথ। ওয়ার ক্রাইম? অবশ্যই! আমি সেই নবীর গর্বিত উম্মতের সদস্য যিনি বলেছিলেন যা যদি তার মেয়ে ফাতিমাও চুরি করে, তাহলে তার হাত কেটে নেয়া হবে। আফসোস যে হতভাগারা ইসলামে চোরের হাত কাটা নিয়ে মানবতাবাদের মায়াকান্না দেখে, কিন্তু ইসলামের ইমপেকেব্‌ল সেন্স অফ জাস্টিস খুঁজে পায় না। মানবতাবাদ সুবিচার ছাড়া আর কী? যাই হোক জামাতের যে কোনও সদস্য যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী থাকলে বিচার হতে হবে এবং উপযুক্ত শাস্তিও হতে হবে। কিন্তু অবশ্যই অবশ্যই সুষ্ঠ বিচারের মাধ্যমে কোনও রকম পক্ষপাতিত্বের বিন্দুমাত্র সুযোগ না রেখে প্রকৃত অপরাধীকে শাস্তি দিতে হবে। একজন নিরাপরাধ ব্যক্তি শাস্তি পাওয়ার চেয়ে লাখ লাখ অপরাধী খালাস পেয়ে যাওয়া একটি ইসলামি প্রিন্সিপ্‌ল এবং মানবতার বেসিক দাবী। এটা নিয়ে কোনও কথাও হতে পারে না, অসম্ভব। আপনি চূড়ান্ত বুদ্ধু বা চূড়ান্ত পাজি না হলে এটা স্বীকার করে নেয়াটা আপনার মানুষ হওয়ার প্রমাণ। আমি মনে করি যে জামাতের নিজের উদ্যোগ নিয়ে সুষ্ঠ বিচারে সহায়তা করা উচিৎ। ঠিক যেমন ‘উমার তার নিজ ছেলেকে ব্যভিচারের শাস্তি দিতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি।

জামাতের ইসলামিক কমিটমেন্ট – জামাত রাজনৈতিক কর্মকান্ডে প্রচুর ভুল করেছে -পলিটিকাল, স্ট্র্যাটেজিকাল এবং ইসলামিকও। যে কোনও দল বা গ্রুপ মাত্রই ভুল করবে না এটা হওয়াটা অসম্ভব, অসম্ভব। জামাত, তাবলীগ, আহলে হাদীস, এইচটি, মুসলিম ব্রাদারহুড, দেওবন্দী সব্বার ভুল আছে। যে দল মনে করে তারা ভুল করে না তারা ডিসইলিউশনড। আমাদের দেশের একজন প্রসিদ্ধ স্কলার আমাকে বলেছেন যে তারা জামাতের থিংক ট্যাংককে কিছু সংস্কারের প্রস্তাব লিখিত আকারে দিয়েছিলেন। তারা গ্রহণ করেননি। সুতরাং হ্যাঁ, জামাতের ভুল আছে, সংখ্যায়ও সেগুলো কম নয়। অন্য সব দলের অবস্থা তথৈবচ। নবীজী (সা:) চলে যাওয়ার পর ত্রিশ বছর ইসলামি স্টেট একটা আদর্শিক অবস্থায় ছিলো, উইথ মাইনর হিকাপস। এরপর কিছু ডিস্ক্রিট রিজিনাল বা ইনডিভিজুয়াল ব্রিলিয়ান্স ছাড়া ইসলামিক স্টেট এবং এর সামষ্টিক অভিজ্ঞতা সবসময়ই প্রশ্নবোধক ছিলো। এতে এত উতলা হওয়ার কিছু নেই। ইসলাম মাসুম, মুসলিমরা নয়, ব্যক্তিগত ভাবেও নয়, সামষ্টিক ভাবেও নয়।

যে ব্যাপারটির আমি ঘোর বিরোধী সেটি হোলো জামাতকে ডিহিউম্যানাইজ করার ক্রমাগত চেষ্টা, কখনও তাদের ১৯৭১ এর ভূমিকা নিয়ে, কখনও তাদের ইসলামিক ভুলের দোহাই দিয়ে। ইদার কেস, আমি তাদের ডিহিউম্যানাইজ করার পক্ষপাতি নই। তাদের কড়া সমালোচনা করা হোক, তাদের ভুল পাবলিকলি আলোচিত হোক। যেমন আর সব দলকে করা হয়, হবে। কিন্তু তাদের মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, তাও যুগ-যুগান্ত ধরে, নাতি-পুতি সবাইকে? সমালোচনার পাশাপাশি তাদের সকল নাগরিক অধিকারকে ডিনাই করা (যার মাঝে তাদের রাজনৈতিক অধিকার) আমি সমর্থন করি না। এই ক্ষেত্রে আপামর মুসলিমদের ভূমিকার আমি নিন্দা জানাই। আজকে কাদের মোল্লার এই পরিণতির জন্য আপনি আমি তো ভাবের স্ট্যাটাস দিচ্ছি, কিন্তু এই অবস্থায় ব্যাপারটাকে নিয়ে আসার জন্য গত কয়েক দশক ধরে অজামাতি মুসলিমদের ভূমিকা রয়েছে। রক্তের দাগ আপনার আমার হাতেও।

জামাতের উল্লেখ করার মতো বহু কাজ আছে। প্রচুর ইসলামি বইয়ের পাবলিকেশন ও দোকান তাদের। বাংলাদেশে দুটি কনসেপ্টের আনডাউটেড পাইয়োনিয়ার তারা – ইসলামিক স্কুল এবং ইসলামিক ব্যাংকিং। আপনি এসবের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করবেন না? আমি ইনশাআল্লাহ্‌ বুকে হাত দিয়ে করব। একটা ভায়োলেন্সের দায়ে অভিযুক্ত দলের নাগরিক অবদানগুলো যদি স্বীকার না করা হয় তবে তো তাদেরকে এক্সপায়েট করার কোনও সুযোগই আপনি রাখলেন না। এরপর যদি সেই দলের মূল নেতারা না হোক, মাঠপর্যায়ের কর্মীরা যদি ধৈর্য হারায়, আপনি তো সমালোচনা করে খালাস, কিন্তু দায় কি এড়াতে পারবেন?

না শিবিরের সন্ত্রাস সমর্থনযোগ্য নয়, যেমনটি নয় ছাত্রদলের বা ছাত্রলীগের। বাংলাদেশের সবচেয়ে সন্ত্রাসী সংগঠন আর যেই হোক শিবির নয়। তার মানে এই নয় যে জামাত বা শিবির দায় এড়াতে পারবে। তার মানে এও নয় যে শুধুমাত্র জামাতকেই আপনি টার্গেট করে সলিটারি কনফাইনমেন্টে পাঠাবেন।

বহু জামাত কর্মী বা তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে আমার কথা হয়েছে। তারা নর্মাল মানুষ, আমার মতোই, অনেকে আমার চেয়েও বেটার, অ্যাজ এ মুসলিম অ্যাজ এ পার্সন। এটা আমার হার্টফেল্ট বিলিফ যে সব মুসলিমই আমার চেয়ে বেটার মুসলিম।

শাহবাগঃ আত্মপরিচয়ের সন্ধান বনাম আত্মপ্রতারণা — আমান আবদুহু

by Aman Abduhu

আমি শাহবাগকে অভিনন্দন জানাই। ওরা তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে সফল। বাংলাদেশের রাম-বামপন্থী প্রগতিশীলের দল কিছু লাফাঙ্গা ছেলেমেয়েকে এক জায়গায় জড়ো করে বড় একটা কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছে। বরং ওরা এমন একটা কাজ করতে পেরেছে, যে কাজের কোন কন্ট্রোল-অল্টার-ডিলিট বাটন নেই।

বর্তমান বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ সবচেয়ে বড় প্রসঙ্গ। একটা জাতি স্বাধীনতার চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় পরে এসে নিজের শেকড়ের সন্ধানে, নিজের ইতিহাস খননে, সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছে। সাদা চোখে দেখলে খুব অভূতপূর্ব একটা ঘটনা। সমস্যা হলো, এই পৃথিবী আর পৃথিবীর মানুষগুলো এতো জটিল যে সাদাচোখে কিছু দেখাটা নিরেট বোকামি। ঐ বোকামী না করতে গেলে দেখতে হয়, কারা এই আন্দোলন করেছে? কারা বাস্তবায়ন করলো বাংলাদেশে ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার’?

এ কলংকমুক্তির আন্দোলনের মূল শক্তি হলো পনেরো ষোল বছর বয়সী কিশোর কিশোরী থেকে শুরু করে ত্রিশ পয়ত্রিশ বছর বয়সী যুবক যুবতীর দল। এরা মুক্তিযুদ্ধ চোখে দেখা দূরের কথা, জন্মই নিয়েছে বহু বছর পরে। আর যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেছে, যুদ্ধের সময় বিভিন্ন কষ্ট করেছে, ঐ প্রজন্মটা চুপ করে বসে থেকেছে। কি চমৎকার? যার বিয়ে তার খবর নাই, পাড়াপড়শীর ঘুম নাই।

তাহলে ঠিক কি কারণে এই নতুন প্রজন্ম হ্যামিলনের ইঁদূরের পালের মতো দলে দলে যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাস্তবায়ন করাটাকে তাদের জীবন যৌবনের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে নিয়েছে? আমার মতে এ প্রশ্নের উত্তরে মাঝেই আছে বর্তমান বাংলাদেশ কে সঠিকভাবে বুঝবার উপায়।

মানুষ পৃথিবীতে শান্তির সাথে, আনন্দের সাথে বাঁচতে চায়। মানুষের বেসিক চাওয়া হলো নিরাপদে নিজ পরিবার বন্ধু সমাজের সাথে ভালোভাবে জীবনটা কাটানো। এরপর গিয়ে মানুষ ন্যায় অন্যায় হিসাব করে, নিজ মতপ্রকাশের অধিকার চায়। আব্রাহাম মাসলোর হায়রার্কি।

বাংলাদেশ একটা পশ্চাতপদ দেশ। পৃথিবীর অন্য দেশে, যেখানে মানুষের অধিকার আর স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার স্বাভাবিক গ্যারান্টি আছে, ওখানে গেলে বিষয়টা ভালোভাবে বুঝা যায়। বাংলাদেশে একটা নির্বোধ মানুষও কিশোরবেলাতেই বুঝে যায়, ভবিষ্যতে কি হবে তার কোন ঠিক ঠিকানা নাই। ন্যায় অন্যায়ের কোন বালাই নাই, সবজায়গাতে চুরি দুর্নীত ধান্দাবাজি আর শক্তির জয়জয়কার। ফলে মোটামুটিভাবে সবার ভেতরে অবচেতনে একধরণের বিক্ষুদ্ধ হতাশা গুমড়ে মরে। ঠিক এটাকেই কাজে লাগিয়েছে আওয়ামী ও বামপন্থীরা। নতুন প্রজন্মের সব হতাশা আর নপুংসকতার ক্ষোভের জন্য পত্র পত্রিকা আর জাফর ইকবালের দলদের দিয়ে বেশ কবছর ধরে স্কেপগোট বানিয়ে তুলেছে জামায়াতকে। সত্যিকার যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তান আর্মিকে হাতে কাছে না পাওয়ার ক্ষোভ এই রাগকে আরো ভালোভাবে ফেনিয়ে তুলেছে।

নতুন প্রজন্ম বিশ্বাস করে, স্বাধীনতার মূল চেতনা হলো যুদ্ধাপরাধের বিচার নিশ্চিত করা। নতুন প্রজন্ম বিশ্বাস করে, যুদ্ধাপরাধ করেছে জামায়াত। এ বিশ্বাসের আগুনে আগুনে লাকড়ির যোগান দিয়েছে জামাত নেতাদের নির্বুদ্ধিতা। এবং একটা মানুষ যখন কিছু বিশ্বাস করে, তার শক্তি অনেক বেশি। নতুন প্রজন্ম আরো অবচেতনে গিয়ে বিশ্বাস করে, এই রাস্তা ধরে হাটলে তারপরে সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। নতুন সুর্য উঠবে, তার সোনালী রোদে হেসে খেলে নেচে গেয়ে ঘুরতে থাকবে বাংলাদেশীরা।

বর্তমান বাংলাদেশ আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-উত্তর জার্মানীর মাঝে আশ্চর্যজনক সব সাদৃশ্য। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর দেশটা যখন বিধ্বস্ত, চাকরি বাকরি খাবার নিরাপত্তা কিছুর গ্যারান্টি নাই, তখন হিটলার মানুষের সে ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে দেশপ্রেমে উদ্ভুদ্ধ করেছিলো। সেই একই সংঘবদ্ধ ক্ষোভকে শক্তিকে পরিণত করেছে রাম-বামপন্থী ফ্রগতিশীলরা। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে তাকে কাজে লাগাচ্ছে। সুতরাং জাতি এখন বিপুল ক্ষোভে বুকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ, যদিও ক্ষোভটা আসলে মুক্তিযুদ্ধের না, এদের তো যুদ্ধের সময় জন্মই হয়নাই, বরং ক্ষোভটা হলো নিজের অক্ষমতার। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কলংক মোচনের পথে যাত্রা শুরু করেছে দানবীয় একটা শক্তি। যুদ্ধাপরাধের বিচার হচ্ছে।

সমস্যা হলো মুক্তিযুদ্ধের কলংকমোচনের পরও বাংলাদেশ সেই পশ্চাতপদ, অনুন্নত, সন্ত্রাসাক্রান্ত এবং নিজেরা নিজেদের ধ্বংস করতে ব্যস্ত একটা দেশ হিসেবেই থেকে যাবে অবধারিতভাবে। বরং সংঘর্ষে সংঘর্ষে অবস্থা আরো খারাপ হবে। তখন এই শাহবাগিরা হতবাক হয়ে একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করবে, কামডা কি হইলো? এবং তখন এই ফ্রান্কেষ্টাইন দানবের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য দরকার হবে নতুন নতুন স্কেপগোটের।

তবে মুনতাসির মামুন আর জাফর ইকবালের দল আপনার আমার ধারণার চেয়েও বেশি বুদ্ধিমান। তারা ইসলামী জঙ্গিবাদকে সেই ভিকটিম হিসেবে ফর্ম করার জন্য এখন থেকেই কাজ শুরু করেছে। যারা বাংলাদেশের ভালো চান,তাদের উচিত দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা উন্নত করার জন্য কাজ করা। তা যদি না হয়, তাহলে এই জাতি আজীবন বিপ্লবী হিসেবে থেকে যাবে এবং দানবীয় একটা সাপের মতো নিজেই নিজের লেজ চাবাতে থাকবে।

জামাতের সাথে যা হয়েছে, তাতে জামাত পয়েন্ট অভ নো রিটার্ণে চলে গেছে। সরাসরি সংঘাত না হলেও, ঘৃণা আর বিভক্তির এই সীমারেখা বাংলাদেশে আর কোনদিন মুছবে না। এবং আগামী দিনগুলোতে একাত্তর নিয়ে আরো অনেক কথাবার্তা হবে। একাত্তরের যুদ্ধের মূল কারণ কি ছিলো? পশ্চিম পাকিস্তানিদের অত্যাচার? না কি গাদ্দার মুজিবের সাথে ভারতের ষড়যন্ত্র? এইসব প্রশ্ন আরো অনেক বেশি শোনা যাবে। আমার জন্ম একাত্তরের বহু পরে। এখন আমি যদি শর্মিলা বসুর মতো তথ্যনির্ভর একটা বই লিখে ফেলতে পারি অথবা একটা মুভি বানিয়ে ফেলতে পারি, তখন শাহবাগ প্রাণপণে চেষ্টা করবে যুদ্ধাপরাধ যেহেতু সম্ভব না, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে আমাকে ফাঁসি দিতে। শাহবাগ এমন একটা শক্তি, যার কাছে বিচারের অর্থ হলো ফাঁসি। শাহবাগের হাত ধরে বাংলাদেশের এই দেশপ্রেম এমনটা শক্তি হিসেবে বড় হবে, যার কাছে বিরোধী মতের একমাত্র প্রতিকার হলো ফাঁসি।

কিন্তু সবকিছুর একটা সীমা আছে। সেই সীমা যখন পার হয়ে যাবে, তখন রাষ্ট্র হিসেবে এই বাংলাদেশের গর্ব করার আর কিছু থাকবেনা। তখন একাত্তরের সাত বীরশ্রেষ্ঠকে নতুন ইতিহাসে লেখা হবে সাত বিশ্বাসঘাতকশ্রেষ্ঠ হিসেবে। মুক্তিযোদ্ধারা কেউ হবে বেকুব,আর কেউ হবে এ মাটির সাথে বিশ্বাসঘাতকারী। এমনটা হলে তা হবে সেই আত্মত্যাগকারী মহান মানুষগুলোর চুড়ান্ত অবমাননা। তারা কেউ আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো কলকাতায় দলে দলে গিয়ে মদ মাংসের উৎসবে দিন কাটাননি। ঐ মানুষগুলোর ত্যাগের সত্যিকার মূল্যয়ন সত্য ইতিহাস দিয়েই সম্ভব, মিথ্যা আর গণউন্মত্ততা কোনদিন তাদের জন্য সম্মান আনবে না।

বরং বাংলাদেশ যদি স্বাভাবিক ও মধ্যআয়ের দেশ না হয়,রাজনৈতিক হানাহানি যদি চলতেই থাকে, তাহলে আমাদের পরের প্রজন্মকে আমরা বর্তমান বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ একটা জাহান্নামে রেখে যাবো। কলংকমোচন তো দূরের কথা, বেঁচে থাকার জন্য চিৎকারই হবে ঐ বাংলাদেশের একমাত্র আকুতি।

এবারের সংগ্রাম ‘অস্তিত্বরক্ষার’ সংগ্রাম

সাদাতসহ আরো অনেকেই ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন। আমি নিজেও মনে করি এই টার্মের আগে সারাজীবন ধরে চেতনাব্যবসায়ী লীগের বিরুদ্ধে ভারততোষণের যে অভিযোগ আরোপ করা হত সেটাকে অনেকেই ‘প্রোপাগান্ডা’ হিসেবেই নিত। মানুষ মনে করত লীগ ভারতঘেঁষা একটা গোষ্ঠি। কিন্তু এবারের টার্মে ভারততোষণ, চাটুকারিতা ও সেবাদাসত্বের যে নজির তারা স্থাপন করেছে ইতিপূর্বে তা দেখা যায়নি, কল্পনার সীমাকে তারা অতিক্রম করেছে এ ব্যাপারে। দেশীয় স্বার্থকে সম্পূর্ণ জলাঞ্জলি দিয়ে একের পর এক যেসব পদক্ষেপ তারা নিয়েছে তাতে মনে হয় বিরাট কোন সাম্রাজ্যবাদি চক্রান্তের ঔপনিবেশিক সেবাদাস হিসেবে তারা দেশ ও জাতির সর্বনাশ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। ‘৪৭ এ রাজনৈতিকভাবে ভাগ হওয়া অখন্ড পাকিস্তানের এক অংশ পূর্ব পাকিস্তানের সাথে বিভিন্ন বৈষম্যমূলক শোষণের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠতে থাকে _ ক্রমান্বয়ে যার পরিণতিতে অবশেষে ‘৭১ এর রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালিদের এক সাগর রক্ত ও সীমাহীন ত্যাগতীতিক্ষার বিনিময়ে ‘বাংলাদেশ’ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যূদয় ঘটান। সেই যুদ্ধে ভারত আমাদের জন্যে অনেক কিছু করেছে, প্রায় কোটির কাছাকাছি শরনার্থীকে আশ্রয় দেয়া থেকে শুরু করে সামরিক সাহায্য-সহযোগিতা পর্যন্ত। রাজনৈতিক কারণেও বটে, তাদের কাছে যুদ্ধটা ছিল আসলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, পাকিস্তান ছিল এবং আজও ভারতের আজন্ম শত্রু।

এরপর থেকে যা শুরু হয় তা ভারতের আগ্রাসনের ধারাবাহিকতা। বিপুল পরিমাণ অস্ত্র যা পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণের সময় রেখে যায় তা ন্যায্যতঃ বাংলাদেশের প্রাপ্য হলেও বাংলাদেশকে তা দেয়া হয়নি। প্রায় সমুদয় বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসম্ভার ভারতীয় সেনাবাহিনী নিজের কব্জায় নিয়ে নেয়। স্বাধীনতা পরবর্তী আন্তঃরাষ্ট্রীয় চুক্তিসমূহের মধ্যে একটি শর্ত ছিল এই যে _ ‘বাংলাদেশের কোন ‘বর্ডার গার্ড’ বা সীমান্ত রক্ষীবাহিনী থাকতে পারবে না।’

১৯৭১ সালে যে সব শর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত সামরিক সাহায্য দেয়, তার অন্যতম শর্ত ছিল “Frontier Guards will be disbanded” (CIA Report SC 7941/71). অর্থাৎ বাংলাদেশের কোনো বর্ডার গার্ড থাকবে না। কিন্তু স্বাধীনতার পরে নানা কারনে পাকিস্তান রাইফেলস বালাদেশ রাইফেলসে (বিডিআর) রূপ নেয়। বিডিআর বাহিনীটি ছিলো আধাসামরিক বাহিনী, যার মূল কমান্ড ও ট্রেনিং ছিলো সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের মত। অন্যদিকে ভারতের বিএসএফ ছিলো সিভিল বাহিনী, যাদের ট্রেনিং, জনবল সবই ছিলো নিম্নমানের। এসব কারনে বর্ডারে কোনো যু্দ্ধ হলে তাতে বিডিআর সামরিক পেশাদারিত্ব দিয়ে বিজয়ী হত।

আজ উপমহাদেশে ভারতের বৃহত্তম বাজারে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার তৈরি হতে দেয়া হয়নি, সর্বতোভাবে বাংলাদেশের ওপর সাংষ্কৃতিক-সামরিক-অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে যা যা করা দরকার ভারত তার সবই করেছে। বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংস করার পেছনে তাদের পরিকল্পনা সাফল্য লাভ করতে পারতো না কখনো, যদি তাদের দেশীয় তাঁবেদার বাহিনী জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাদের সুযোগ করে না দিত। শেয়ার বাজার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেশের লাখো পরিবারকে সর্বস্বান্ত করে নির্বিঘ্নে প্রায় সম্পূর্ণই তাদের গ্রাস করতে দেয়া হয়েছে, ভয়াবহ ধরণের অবিশ্বাস্য ধরণের অসম চুক্তি করে বিপুল মুনাফা লুন্ঠনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাত গ্রাস করতে দেয়া হচ্ছে এমনভাবে _ আগামি দিনে খোদ বাংলাদেশের নিজের দেশে নিজেদেরই কোন নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হবে কিনা সন্দেহ। তথ্য প্রযুক্তি খাতের রিসোর্সগুলি অতি অল্প মূল্যে তাদের দিয়ে দেয়া হচ্ছে যা ধরে রেখে কাজে লাগালে বাংলাদেশের তরুণেরা আগামী দিনে প্রযুক্তি বিপ্লব ঘটাতে পারত। তৈরি পোশাক শিল্পকে ধ্বংস করতে হাজার হাজার ভারতীয় উদ্যোক্তাদের এই সেক্টরে অবাধে প্রবেশ করতে দেয়া হয়েছে, লক্ষ লক্ষ ভারতীয়দের এক বিশাল কর্মীবাহিনীকে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে আমাদের কর্মসংস্থানের বিরাট সংকট থাকা সত্বেও। আবাসন শিল্পে চট করে ঢুকতে পারেনি তবে চেষ্টা অব্যহত আছে, অচিরেই ঘুকে পড়বে যদি তাদের তাঁবেদাররা আবার ক্ষমতায় আসার সুযোগ পায়। এই তালিকা আরো অনেক দীর্ঘ হবে রেফারেন্স টানলে। ভারতীয়রা আমাদের উন্নয়ন চায় না, আমাদের সমস্ত সেক্টরকে ধ্বংস করতে চায় শুধু তাদের নিজেদের স্বার্থে, টিপাইমুখ বাঁধের মাধ্যমে পানিশূণ্য করতে চায় শুধু তাদের স্বার্থে, আমাদের ধর্মের প্রসারেও এমনকি পালনেও তাদের আপত্তি, আজকাল বিভিন্ন ব্লগে উপমহাদেশে আমাদের পূর্বপুরুষদের আদি ধর্ম সনাতনধর্মে আবার ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে হিন্দু মৌলবাদিদের পক্ষ থেকে, ভয়ংকরভাবে জেগে উঠছে হিন্দু মৌলবাদিদের দল, ৩-৫ বছরের মধ্যে ভারতের সাথে বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তান-চায়নার সর্বব্যাপী যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার বিরাট সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়ে হাদিসের ভবিষ্যদ্বাণীও রয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তার অনেকগুলো ইঙ্গিত দৃশ্যমান। এ ব্যাপরে বিস্তারিত আলাদাভাবে বলার ইচ্ছে আছে।

কাজেই ‘৪৭ এ যেমন সম্প্রদায়গত স্বার্থ রক্ষায় সময়ের প্রয়োজনে মুসলিমদের ‘পাকিস্তান’ গঠন করতে হয়েছে, ‘৭১ এ যেমন নৃতাত্ত্বিক জাতিগত সাংষ্কৃতিক পরিচয়গতভাবে পশ্চিম পাকিস্তানীদের অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ‘বাংলাদেশ’ গঠন করতে হয়েছে _ ঠিক তেমনিভাবে এই ২০১৩ তে নগ্ন ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে অযুত কন্ঠে গর্জে উঠতে হবে, পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে নির্লজ্জা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। তার প্রথম পদক্ষেপ হল ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদিদের দেশীয় তাঁবেদার গোষ্ঠিকে ‘না’ বলা। এইবার প্রতিরোধ করতে না পারলে সামনে যা যা হতে পারে, তাতে ‘৭১ এর হানাদার বাহিনীর অত্যাচারকে ভুলে যাবে বাংলার মুসলমানগণ, ভারতে এবার আসছে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদি, বিজেপির একাংশ ইতিমধ্যেই ‘বাংলাদেশ চলো’ পদযাত্রার প্রাথমিক ঘোষণা দিয়েছে, যাতে লক্ষ লক্ষ হিন্দু মৌলবাদির সমাবেশ ঘটানোর হুমকি দেয়া হয়েছে। এইবার ভুল করলে ‘৭১ এর মত এক সাগর নয়, এক মহাসাগর রক্তের বিনিময়েই আবার হারিয়ে যাওয়া স্বাধীনতাকে খুঁজে ফিরতে হবে।

তোমরা যারা এখনো আওয়ামীলীগে​র গোঁয়ার্তুমি​র যুক্তিকতা খুঁজে পাও——

কথা হচ্ছিল এক সুশীল ভাবাপন্ন লোকের সাথে যিনি নিজেকে ম্যাংগো পিপল বলে দাবী করেন(আদতে ঘাপটি মারা আওয়ামীলীগ )। উনি মহা বিরক্ত হয়ে বলছিলেন যত কষ্ট আমাদের ম্যাংগো পিপলের, খালেদা জিয়া দেশটারে শেষ কইরা ফেলছে।
আমি বললাম ভাই ক্রাইসিস তৈরি করল হাসিনা আর আপনে দোষ দিচ্ছেন খালেদাকে, ব্যাপার কি?
খালেদারে দোষ দিবনা তো হাসিনারে দিব, হাসিনাকি অবরোধ দিছে?
আমি বললাম, অবরোধ সৃষ্টির কারণটা কে তৈরি করেছে?
উনার উত্তর খালেদা। হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হইয়াও তারে ফোন দিছিল সমযতার জন্য কিন্তু খালেদা তার জবাবে সাড়া দেয়নি। সে ওই সময় সমযতায় আসলেই তো ল্যাঠা চুকে যেত।
আমি বললাম,  ভাই চমৎকার  আপনার ব্যাখ্যা! ক্রিকেট খেলা তো দেখছেন? খেলায় আম্পায়ার যে থাকে সে কিন্তু কোন দলের প্লেয়ার না। সে তৃতীয় আরেকজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি। মনে করেন বাংলাদেশ আর ভারত ক্রিকেট খেলা হবে; এখন ভারত খেলার নিয়ম পরিবর্তন করে বলল খেলার আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন ভারতের অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধনি। বাংলাদেশ বলল না আমরা নিরপেক্ষ আম্পায়ার চাই। ভারত বলল আচ্ছা তোমাদের থার্ড আম্পায়ার পদটা দেয়া হবে। বাংলাদেশ বলল না আমরা নিরপেক্ষ আম্পায়ার চাই। নিরপেক্ষ আম্পায়ার না হলে আমরা খেলব না। ভারত বলল ঠিক আছে দাদা খেইল না। আমরা ওয়াকওভার পাইয়া এমনেই জিতে যাব। এখন আপনি যদি বলেন ভারত এত শক্তিদর হয়েও বাংলাদেশকে থার্ড আম্পায়ার পদটা দিতে চাইছে আর বাংলাদেশ সেটা নিল না। কত বড় স্পর্ধা! খেলা কেন্দ্রিক যে সংকট তৈরি হোল তার জন্য বাংলাদেশই দায়ী তাহলে আপনার মানসিক সুস্থতা নিয়ে যে কেউই প্রশ্ন তুলবে। নিয়ম পরিবর্তন করে সংকট তৈরি করল ভারত আর আপনি দুষছেন বাংলাদেশকে। বাংলাদেশতো বলে নি যে খেলার আম্পায়ার মুশফিকুর রহিম কে দিতে হবে। বাংলাদেশের দাবি হোল নিরপেক্ষ আম্পায়ার এর অধীনে খেলা অনুষ্ঠিত হতে হবে, নয়তো এ খেলা হবেনা।
এবার আসি খালেদা-হাসিনার ফোনালাপ প্রসঙ্গে। আপনারা খুব সুকৌশলেই বলেন খালেদা,  হাসিনার ফোনের সময় যদি আলোচনায় আসতেন তাহলে এত সংকট হতো না। অথচ খালেদা জিয়া ফোনে স্পষ্টই বলেছিলেন – “আপনি কি র্নিদলীয় সরকার নিয়ে আলাপ করার জন্য আমাকে ডেকেছেন ? যদি এটি নিয়ে ডাকেন তাহলে আমি আসব। র্নিদলীয় সরকারের দাবি আমার একার না। এটা দেশের সব মানুষের দাবি। এখনো যদি নীতিগতভাবে র্নিদলীয় সরকারের দাবি মেনে নেন, তাহলে হরতালসহ সব কর্মসূচি বন্ধ করার দায়িত্ব আমি নেবো। সমাধান হয়ে গেলে তো আর কোন কর্মসূচির দরকার হবে না।  এখানে চিন্তার কিছু নেই। আপনি দাবি মেনে নিন। দেশের মানুষকে শান্তি দিন। এই দেশটা আপনারও না, আমারও না, ১৬ কোটি মানুষের। তাদের শান্তির কথা, স্বার্থের কথা চিন্তা করেন। আমি তো সেসময়ে আপনার দাবি মেনে ছিলাম। আমি তো এখন আমার দলের সরকার চাই না। আমার নিজের সরকারও চাই না। চাই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্দলীয় লোকদের সরকার। সেটা মানতে আপনার আপত্তি কেন বুঝতে পারছি না”।
ফোনালাপ যে আওয়ামীলীগের কৌশলই ছিল তা তারা ফোনালাপ প্রকাশের মাধ্যমেই বুজিয়ে দিয়েছে। পরবর্তী গোঁয়ার্তুমিগুলো সকলেরই জানা। মন্ত্রীদের পদত্যাগের নাটক, সর্বদলীয় সরকারের নামে মহাজোটীয় সরকার গঠন নাটক। আওয়ামীলীগের কৌশলই হচ্ছে যে কোন উপায়ে বিএনপিকে নির্বাচনের বাহিরে রাখা। আপনি যে আওয়ামীলীগকে উদার বলছেন; তারা দেখতে পাচ্ছে প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে আসছে না তারপরও তারা নির্বাচন করবেই বলে গোঁ ধরে আছে, এর থেকে নির্লজ্জ গোঁয়ার্তুমি আর কি হতে পারে। এরশাদ বলল সে নির্বাচনে যাবেনা, তারপরও  আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ বলেছেন “এরশাদ সাময়িক মনবঞ্চনা থেকে এই ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি আবার নির্বাচনে ফিরে আসবেন”  এরশাদ যখন বলল তাকে জোর করা হলে সে আত্মহত্যা করবে, তখন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ বলেছেন “নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে যা যা করার সবই করা হবে”/ তারমানে এরশাদকে জোর করে হলেও নির্বাচনে আনা হবে অথবা বহু মানুষ মেরে হলেও তারা ক্ষমতায় থাকবে।
উনারা খুবই বুদ্ধিমান! উনারা ভাবছেন সাধারন মানুষ উনাদের এই ছ্যাঁচড়ামো বুজতেছেনা। দূর! আমি যে কি বলছি? উনারা তো মানুষের মতের তোয়াক্কা করছেন না। উনারা মানুষের মতের তোয়াক্কা করলে, সংবিধান থেকে গণভোটের প্রথা তুলে দিতেন না। উনারা জনগণের ভোটে নয় বন্দুকের নলের উপর ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছেন। উনাদের নিকট গণতন্ত্র হল গভর্নমেন্ট অফ দ্যা ভারত, বাই দ্যা পুলিশ, ফর দ্যা আওয়ামীলীগ।
আমার মাথায় আসছে না, আওয়ামীলীগের এতো গোঁয়ার্তুমির পরও কিছু মানুষ তাদের অযুক্তিক দাবির যুক্তিকতা খুঁজে পান কেন?  এরা কি ম্যাংগো পিপল নাকি আওয়ামীলীগ?

শেখ হাসিনার এক্সিট রুট

by WatchDog

Awami League and BNP

যতই গো ধরেন না কেন যেতে উনাকে হবেই। ভাগ্যলিখন উনার লেখা হয়ে গেছে। তা ৫ই জানুয়ারির আগে হোক আর পরে হোক। ক্ষমতা বদলের যে অসুস্থ পথ তিনি আবিস্কার করে গেছেন একই পথ উনাকেও মাড়াতে হবে। অস্কার ফার্নান্দোরা সময়ের কালক্ষেপণ মাত্র। অতীতের স্যার নিনিয়ান অভিজ্ঞতা তাই বলে। এরশাদ ছিলেন বুদ্ধিমান, তাই ক্ষমতার পালাবদলে শেখ হাসিনার ভূমিকায় নামেননি। প্রায় মসৃন পথে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। ক’বছর জেল খাটলেও রাজনীতির মাঠ হতে কেউ তাকে নির্বাসনে পাঠাতে পারেনি। প্রতিশোধের জন্য খুন করতেও কেউ পিছু নেয়নি। এরশাদ বেঁচে আছেন আপন মহিমায়। হোক তা গৌরবের অথবা কালিমার। কেমন হবে শেখ হাসিনার এক্সিট? এ নিয়ে জল্পনা করার কি সময় আসেনি? অনেকে বলবেন প্রিম্যাচিউরড হয়ে যাবে এ জল্পনা। পায়ের তলার মাটি অনেকটা ভূমি ধ্বসের মতই সরে যাচ্ছে। সরকারী সুবিধার আড়ালে উনি হম্বিতম্বি যাই করেছেন তা কেবলই বাগরম্বতা, মৃত্যু পথযাত্রীর শেষ চীৎকার। উনি নিজেও তা জানেন। আসুন গণতন্ত্র ও সংবিধানের খাদেম এই স্বৈরশাসকের এক্সিট রুটের একটা ছবি আঁকার চেষ্টা করি।

নিকট অতীতের ইয়াজ উদ্দিনের মত বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে সরকার প্রধান বানিয়ে নির্বাচনে গেলেন। এবং বিপুল বিক্রমে পরাজিত হলেন। যদিও বিএনপি নেত্রী নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিচ্ছেন, ফলাফল ঘোষনার রাতে সে নিশ্চয়তা হুর মুর করে ভেঙ্গে পরার সমূহ সম্ভাবনা থেকে যাবে। অনেকের অনেক বকেয়া মেটানো বাকি নেত্রীর সাথে। তাই ইয়াজ উদ্দিন মার্কা নির্বাচন নেত্রীর এক্সিট রুটকে মোটেও মসৃন করতে পারবেনা।

দেশত্যাগ। বাই বর্ণ নৌকার সমর্থকরা নিশ্চয় চমকে উঠবেন। জননেত্রী, গণতন্ত্রের মানসকন্যা, শান্তির কন্যা উপাধিতে ভূষিত এই নেত্রীর যুদ্ধের মাঠ হতে পলায়ন এক কথায় উড়িয়ে দেবেন। অতীত অভিজ্ঞতা কিন্তু তা বলেনা। তত্ত্বাবধায়ক ঝড় হতে বাঁচার জন্য তিনি কিন্তু পালিয়েছিলেন। এবং পরিবর্তনের পালে হাওয়া লাগার পরই ফিরে এসেছিলেন দেশে। প্রশ্ন, কোথায় যাবেন?

১) ভারত – ভারতীয় সরকার তার অতিথির তালিকায় শেখ হাসিনাকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে ধন্য হবে। কিন্তু সমস্যা একটা থেকে যাবে। উলফা। আসামের স্বাধীনতার জন্য লড়াইরত এই দলের প্রায় প্রত্যেক নেতাকে ভারত সরকার হাতে তুলে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তাদের কেউ কেউ প্রতিশোধের জন্য এগিয়ে আসবেনা বিশ্বাস করা কঠিন। ভারত সরকারও চব্বিশ ঘন্টার পাহারা বসিয়ে নেত্রীকে আগলে রাখবে তারও নিশ্চয়তা নেই। তবে যাদের জন্য দেশের নদী আটকে রাস্তা করে দিয়েছিল বিনিময়ে তাদের কাছে সেফ প্যাসেজ আশা করা অন্যায় কিছু হবেনা।

১) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – সন্দেহ নেই নেত্রীর প্রিয় জায়গা। আপন সন্তানেরও বাস সে দেশে। মার্কিন মুলুকে বৈধ পথে আসায় কোন বাঁধা থাকবেনা। কিন্তু সমস্যা হবে ষ্ট্যাটাস নিয়ে। ওবামা সরকারের ন্যূন্যতম প্রটোকল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা বহুমুখি কারণে। এক, তিনি সরকারের প্রতিনিধিত্ব করবেন না। দ্বিতীয়, গেল ৪ বছর ধরে মার্কিন সরকারকে যত্রতত্র হেনস্থা করে গেছেন এই নেত্রী। সে দেশের অকৃত্রিম বন্ধু এবং বর্তমান বিশ্বের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ডক্টর মোহম্মদ
ইউনূসকে অপদস্থ করা সহজভাবে নেয়নি মার্কিন সরকার ও জনগণ। তার মূল্য কিছুটা হলেও পরিশোধ করতে হবে নেত্রীকে।

৩) অন্দরমহলের খবর হচ্ছে নেত্রী আগ বাড়িয়েই নাকি সমাধা করে রেখেছেন এ সমস্যা। রাশিয়া সফর এবং সে দেশ হতে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র আমদানী তারই মূল্য শোধ। কদিন আগে মধ্যপ্রাচ্যের একটা দেশের সাথে রাশিয়ার ভোট প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ রাশিয়ার পক্ষ নেয়ায় সে সন্দেহে হাওয়া লাগতে শুরু করেছে।

৪) পরাজয় মেনে নিয়ে বাংলাদেশে থেকে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক জনরোষ থিতিয়ে আসলেও মূল ভয় থেকে যাবে সেনাবাহিনীর তরফ হতে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর সেনানিবাস পরিদর্শনে গিয়ে নেত্রী যে বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তা ভুলে যাওয়া হবে মারাত্মক ভুল। শেখ হাসিনা ভাল করেই জানেন এই বাহিনী তার ৫৭ অফিসার হত্যাকাণ্ড এত সহজে ভুলে যাবেনা। এবং সময় সুযোগ বুঝে প্রতিশোধ নিতে এক মিনিট দেরি করবেনা।

শেখ হাসিনার নিরাপদ প্রস্থান নিয়ে আমার মত ম্যঙ্গোদের চিন্তা করার কোন কারণ আছে বলে মনে হয়না। নেত্রী নিজেই নিজের কবর খুড়ে রেখেছেন। সে কবরে পা দেয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে শারীরিক অপমৃত্যু সব সময়ই থাকবে অনাকাঙ্খিত। কারণ এ ধরণের মৃত্যু একজন অপদার্থকে পদার্থ বানায় এবং জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেয় মহান বানানোর চাপ। আর এই চাপ আমাদের বাধ্য করে তার জন্মদিন, মৃত্যুদিন, আগমন, নির্গমন নিয়ে সার্কাসের আয়োজন করতে।

Politics is hard work — are we willing?

1

by Jyoti Rahman

Will future historians think of 2013 as a pivotal year for Bangladesh?  If they were to do so, it will not be because of anything that happened in the first half of this eventful year.  The Shahbag Awakening, violence following the verdict in Delwar Hossain Sayedee’s war crimes case, peaceful and violent rallies by Hefazot-e-Islam, the Rana Plaza tragedy — none of these will rate alongside even 1975 or 1990, let alone 1947 or 1971.

All those events, and yet, as the year draws to a close, we are seeing replays of a drama we witnessed in Decembers past, where a government wants to hold an election come what may, citing the Holy Constitution, while the opposition wants to resist it at any cost, citing the fear of rigging.  The political gridlock leads to violent images like this.

That image is from 28 October 2006.  The December of that year was much like this December, and the one from 1995, and that of 1987.  And as in every such December, our opinionmaking, chattering, urban bhadralok class is up in arms about how our politicians are yet again failing us, how Bangladeshis are held hostage to the two feuding leaders, how the people are victims who don’t care about either parties and vote for them because there is no choice.

Are the people really victims who lack any alternative, hostages to the whims of the two sides?  Nearly a quarter century, four national elections and dozens of local ones —how long does it take for an alternative to emerge?  And it’s not like no one has tried to break through —leftists, Islamists, NGOwallahs, army officers, barristers, doctors, businessmen, HM Ershad, Kamal Hossain, Salman F Rahman, Kader Siddiqui, Badruddoza Chowdhury, Oli Ahmed, Mohammad Yunus, Moeen U Ahmed, Mannan Bhuiyan, there haven’t been any shortage of third force aspirants.

Chances are that when, rather than if, an election is held, four out of five voters will vote for the same parties and candidates who won the last four elections.  Even if there is a military coup, and the generals successfully send the two ladies packing, they will still rely on the same individuals who make up the two largest parties.

Perhaps it’s time the chattering bhadraloks finally accept that politics is hard work, and the politicians actually do cater, albeit in a haphazard and less-than-satisfactory ways, to the people.

——–

Politics is hard work.  Not just in Bangladesh, but everywhere.  It’s tedious, unglamorous.  Quite boring really.  In fact, the exciting stuff, the kind that gets you in the cover of the Time magazine, that stuff is usually all tip, and little iceberg.

The cover of the Time Magazine?  Let’s go back a few years, to 2011.  That year, the Time Magazine named ‘the protester’ the person of the year.  That year begun with popular uprisings that toppled long standing regimes in Tunisia and Egypt.  In Libya, the uprising turned into an insurgency that, with the help of NATO airpower, brought down the Qaddafi regime.  Massive protests rocked depression affected economies of southern Europe.  Closer to home, India saw large rallies against corruption.  In America, the Occupy movement captured a lot of media attention.

It would be quite unfair to say that the protests achieved nothing.  Arguably, Tunisia is a better place today for the protests.  Arguably, President Obama would not be talking about inequality had it not been for the Occupy movement.  But the contemporaneous commentaries about the protests seem quite hyperbolic with the benefit of hindsight.  These were not quite earth shattering, world changing events.  President Obama can have a dozen speeches about inequality, but it’s unlikely to change a single thing in the Capitol Hill.

And whatever gains have been made in Tunis is clearly off set by the setbacks in Cairo.  In the largest Arab country, secular liberal urbanites —at the risk of oversimplifying, the kind of people who flocked to Shahbag —could not organise themselves into a credible political party, lost terribly to the Islamists at the polling booth, went back to the street again to bring down a democratically elected president, and handed the country back to the generals who rule by decree, much like Hosni Mobarak did for three decades.

Politics is hard work.  Protesting this, demanding that, marching in the street, singing rousing anthems —that’s not politics.

Even if they get you in the cover of the Time Magazine, that stuff, without any organisation, will matter naught.

Did the Shahbag revelers really believe that they were changing the course of history?  Their naivete might be forgiven, but what excuse did their elder cheerleaders have?  How could those who lived through the 1968-69 uprising that brought down the Ayub regime —across the political aisle this includes everyone from Motia Chowdhury, Nurul Islam Nahid, Rashed Khan Menon to Mirza Fakhrul Islam Alamgir and Tariqul Islam —ever believe that nonsense?  Did they forget that despite taking a leading role in that uprising, the leftists lost the political advantage to Sheikh Mujibur Rahman and the Awami League?

Did the leftist cheerleaders of Shahbag learn nothing from their lived experience, never mind the histories of other uprisings in Tehran and St Petersburg and Paris?

Did they forget that politics is hard work, that one needed an organisation, a clear manifesto, and some strategies to attain power?

Those pundits who are now braying for some messiah to deliver us from the two battling begums — do they understand politics is hard work?

—–

Faham Abdus Salam writes about the bhadralok mentality here:

বাংলাদেশের এক নাম করা ইংরেজি কলামিস্টের সাথে আলোচনায় টিপিকাল সুশীল মানসিকতার পরিচয় পেলাম – এটাআলোচনা করা দরকার। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তার মত হোলো Why doesn’t the two hire a place and fight it out and leave us alone. ….  তোমারা লীগ, বিএনপি মারপিট করো – আমাদেরকে দু দণ্ড শান্তি দাও।

I agree with Faham’s thesis:

এই দেশটা শেখ হাসিনা কিংবা খালেদা জিয়ার কোনো সম্পত্তি না – এই কথাটা সবাই বিশ্বাস করে কিন্তু যা বিশ্বাস করে না তাহলো – এই দেশটা আমার, আমি ওন করি এবং আমার দায় আছে পরবর্তী প্রজন্মকে একটা বাসযোগ্য দেশ উপহার দেয়ার।তাই আমাদের সবার দায় আছে এটা নিশ্চিত করার যে কোনো মানুষই যেন এই দেশটাকে তার ইচ্ছার পুতুল বানিয়ে না ফেলে।বিএনপি, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রিয়ালিটি – আপনার কাজ শুধু ভোট দেয়া না, এই দুটো দলে যেন কখনোই কোনোহাসিনা কেউ হয়ে উঠতে না পারে, সেদিকে নিশ্চিত না করলে নিশ্চিত থাকুন: আপনি আপনার নিজের শান্তিটুকু খোয়াবেন।

He ends by asking:

আপনি জিজ্ঞেস করুন নিজেকে সততার সাথে – আপনার সন্তান যদি কখনো প্রশ্ন করে, সে উত্তর দিতে যতোটুকু সততা লাগেততোটুকু সততার সাথে, দেশটাকে যখন হাসিনা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য তার খেলনা ঘর বানিয়ে ফেলছিলেন আপনি কিআপনার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলেন তাকে থামাতে?

The thing is, I am not sure any amount of trying by any bhadralok pundit would have mattered.  For one thing, on a number of issues, Awami-leaning elders such as ABM Musa or Rehman Sobhan did caution the Prime Minister.  And she snubbed them.

Why wouldn’t she?  Try seeing things from her perspective.  Politics in Bangladesh is winner-takes-all.  The rules of the game —unitary state, unicameral legislature, first-past-the-post voting, the Article 70 —were not set by Hasina Wajed.  She is not the first one to try to win at any cost.  She has merely taken things further than her predecessor.  We don’t know if the BNP chief would have been quite as ruthless —I personally doubt that she would have—but what the Prime Minister is doing is hardly madness, there is in fact a lot of method in it.

The Prime Minister is playing a high stake game, one that has been entirely predictable, and was indeed predicted:

The prime minister knows she can count on the millions of AL voters, in every moholla and para of every city, town and village. If BNP leadership can be neutralised, that will be sufficient for a re-election. If not, in the lead up to the election, in 30,000 centres around the country, many anti-AL voters could be disenfranchised through targeted violence and intimidation. Essentially, what many Hindu voters in southern Bangladesh experienced in previous elections could happen to the anti-AL voters across the country.

And all these could happen days and weeks before the actual election day, with the state machinery playing an active role in it. Indeed, the election day could well be very peaceful, even festive.

Even if they tried, what difference could a Zafar Sobhan or an Afsan Chowdhury have made to the Prime Minister’s high stake gambit?

Politics is had.  Hasina Wajed knows it, even if the bhadraloks don’t.

Perhaps these bhadraloks had a better shot trying to shape BNP’s thinking?  I personally think so.  But I doubt most of the chattering class feels that way.

Here is how Shayan S Khan has put things recently in his facebook wall:

খালেদা জিয়া বলেন, “একদিকে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগে মামলা হচ্ছে, অন্যদিকে এক মন্ত্রীবলেছেন যে, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে ফেললে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে। এসব থেকে পরিষ্কার হয় যে, বিরোধী দলেরনেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।”

When Khaleda Zia makes a point like the one above, instead of holding on to the offer as a political card, it signals an essential difference between herself and Sheikh Hasina, whose every pronouncement seems aimed at scraping whatever political advantage she can for herself out of any situation.

Thanks to a media and cultural environment historically more saddled in its disposition towards Awami League politics, for a very long time now, an impression has been cemented in the collective psyche of a certain segment of the population (largely confined to the chattering classes of the capital) that Bangabandhu’s daughter, riding the good ship Joy Bangla that her father built, was obviously more preferable to Zia’s widow. I know within my social and familial setting it was as if axiomatic. It was hard to realise this “truth” seemed erected on a strange, untouchable pedestal bereft of any objective analysis, or evidence emerging to support it. To be fair, one didn’t really come across much overwhelming evidence to the contrary either.

But it lasted only until I learned to think for myself, and became open to the idea that supposed “truths” we’d been fed before developing a way to think could be overturned. And if more of us could affect the same, and carry out a fair assessment of the two women’s words and deeds over the last 12 years in particular, the least we would realise is this: at no point did Khaleda Zia take any prerogative to assume this country’s fate was subservient to her own will to power, or that the essence of its 140-50-60 million people, its raison d’être, hers to fashion.

Sad but true.

—–

So, instead of trying to shape the mainstream politics, our chattering class —with one important exception —is either willing or unwitting accomplice to possible dictatorship.

The exception is, of course, Mahmudur Rahman.

He might not consider himself a bhadralok.  And others of his class might not want to treat him as one of their own.  But make no mistake, a graduate of the country’s two best educational institutions, a successful executive in both private and public sector, Mahmudur Rahman is every bit bhadralok as Mahfuz Anam or Abed Khan.  And more than any other bhadralok of our time, Mr Rahman has thrown himself whole heartedly into politics, embracing lengthy prison terms for his cause.

Politics is hard work, and hard work is not something Mahmudur Rahman shies away from.  He is willing.

And yet, he has failed.

He single handedly took on the mighty Shahbag, broke it, and then, then nothing.

Politics is hard work, and merely willing is not enough.

Again, let’s go back to Egypt.  Muslim Brotherhood won decisively at the ballot box.  They had been waiting for eight decades.  Here was an organisation with a clear manifesto that finally attained power, and lost it before they could implement anything.

A different example perhaps, from an established democracy.  The American Tea Party movement has gained control of one of their two mainstream parties.  This faction controls the agenda in the American Congress.  In October, they tried to break the Obama presidency, risking US sovereign default and a possible global economic meltdown in the process.  And they lost.

Politics is hard work.  It’s more than just protest.  Even grabbing power is not enough.  One needs to exercise that power to achieve one’s ends.

Mahmudur Rahman, of course, did not even attain power.  But one must ask, what would he have done had the government fallen in the first week of May?

And if toppling the government was not the main point of Hefazot, then what was it he was trying to achieve?  Of course, there was brutality on 5 May.  Of course, AL’s hands are bloody.  But Mahmudur Rahman’s aren’t clean either.

—–

And that brings us to today’s crisis.  One way or other, the current gridlock will be resolved before long.  Something will give.  In fact, we can with some confidence predict how things will end.  There are really three options.

It is quite possible that there will be some compromise — perhaps the prime minister will step down, or BNP will agree to join even with the PM at the end — followed by an election, which if the polls are any guide, BNP wins comfortably.  That’s the optimistic scenario.

More pessimistically, there will not be any compromise, and we will be looking at either a neo-Bakshal regime or a good old fashioned military coup.

Many of our pundit classes are already braying for the last outcome.  Let me put it to these folks as bluntly as possible: stop think of the army as the deus ex machina; the situation currently playing out was perfectly predictable years ago; your silence and passive acceptance at that time also implies acceptance of the current state of crisis.

We just can’t live like this, lurching from crisis to crisis every five years, and then acting all surprised and puzzled when things fall apart.  Our political culture will never mature until we stop expecting army interventions anytime things go south.  I always hear the common lament that democracy in this country is limited to voting every five years.  Well, our bhadraloks need to start participating in the hard work of politics more frequently than once every five years.

And if a neo-Bakshali dictatorship is a necessary step in that process, so be it.

(First posted in Mukti-http://jrahman.wordpress.com/ ).