Emrul Mahmud
আমাদের সুশীলরা এখন বলছেন এক দিক থেকে ছাড় দিলে হবেনা; দুই দিক থেকে ছাড় দিতে হবে। আমরাও খুব খুশি বাহ! বেশ ভালোতো; সুশীলরা নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে কথা বলছেন। কোন পক্ষের নিকট বুদ্ধিকে বন্ধক রেখে পরামর্শ দিচ্ছেননা। কিন্তু আমাদের মাথায় এই সহজ কথাটি আসছেনা যে যিনি সংকট সৃষ্টি করেছেন, তাকেই ছাড় দিতে হবে। আজকের এই সংকটে উভয়পক্ষ ছাড় দিয়ে সমযতায় আসলে সংকট থেকে উত্তরন হবেনা; সংকট আরও ঘনীভূত হবে। যার প্রতিফলন আমরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। যারা সংবিধানের অর্ধশতাধিক প্রভিশনকে অপরিবর্তনীয় গণ্য করেছেন; যাদের উদ্যোগে সংবিধান থেকে মানুষের ‘রেফারেন্ডাম’কে বাতিল করা হয়েছে; তারাই সংকট সৃষ্টি করেছেন। যিনি ঘুড়ী উড়িয়েছেন তাকেই তো নাটাই টেনে ধরতে হয়। অন্য কারো নাটাই টানার সাথে তো এই ঘুড়ী নিয়ন্ত্রণের কোন সম্পর্ক নেই। মোদ্দাকথা নাটাইয়ের নিয়ন্ত্রন যিনি ঘুড়ী উড়িয়েছেন তার হাতেই এখনও বলবত আছে। তিনি নাটাই টেনে ধরলেই তো নির্বাচনের ঘুড়ী ঠিকভাবে উড্ডীয়মান হবে।
এই সহজ কাণ্ডজ্ঞান টুকু সুশীলরা বুঝতে পারছেননা বা না বোঝার ভান করছেন। মানুষ পক্ষপাত দুষ্ট হওয়া সত্ত্বেও, সমাজের কিছু মানুষ থাকে বিবেকবান, যারা সবসময়ই ন্যায় কে হক আর অন্যায় কে নাহক বলতে দ্বিধা বোধ করেননা; যারা সকল দলের ন্যায়-অন্যায় কে মানুষের নিকট তুলে ধরতে দ্বিধা বোধ করেননা; যারা টাকা কিংবা অন্য কিছুর বিনিময়ে বিবেককে বন্ধক রাখেননা; এসব কারনেই এই শ্রেণীর মানুষদেরকে প্রগতিশীল বা সুশীল সমাজ বলা হয়। কিন্তু আমাদের এই সুশীলরা এতোই অন্ধ যে সরকারের কোনো দোষ দেখেন না। ক্রমিক গণহত্যায় ও উনাদের বিবেক জাগ্রত হয়না। হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি উনাদের দৃষ্টির অন্তরালে থাকে। দিল্লীর লাড্ডু আর আওয়ামী লীগ সরকারের হালুয়া-রুটি খেয়ে ‘নৌকা’য় বিবেক বন্ধক রেখেছেন। এই আওয়মিপন্থি সুশীলরাই ২০০৭ সালে নিরপেক্ষতার আবরণে অবৈধ সরকার এনে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় আনার সকল ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করেছিল, এখনও তারা বায়না খুঁজছে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আওয়ামীলীগকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখার। ২০০৭ সালে আপনারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে পেরেছিলেন। এবার যেহেতু পানি পরিষ্কার; তাই প্রয়োজন পানি ঘোলা করার। দুই দিক থেকে ছাড় দেওয়ার পরামর্শ – পানি ঘোলা করার অংশ হিসেবেই মানুষ ধরে নিচ্ছে।
Recent Comments