Cut the Gordian knot

by Nuraldin Zia

This year started with a rude awakening for the elite Bangladeshi law enforcement agency, Rapid Action Battalion, popularly known as RAB. In an official letter to the inspector general of Bangladesh police, the United States authorities notified that individual members and units of the Rapid Action Battalion are ineligible for any further US training and assistance because of acts of gross violation of human rights committed by the members this elite force.

This allegation against RAB is not a new one. Since its inception as an elite force in March 2004, RAB has continuously been implicated in gross violation of basic human rights. Killing people with alleged criminal backgrounds in the name of crossfire became the ‘signature’ tactic of the force. Human rights groups so far tallied more than 2000 extrajudicial killings which were attributed to RAB.

Despite all the initial allegations against the battalion members, the government of Britain and United States continued their support for years. While the battalion continued to receive military training from Britain and the United States, despite all the allegation of extra judicial killing, the sudden change in heart of the major western backers of RAB is a clear indication that something went very wrong with the way RAB is perceived in the west. The embargo on any further US sponsored training, which was put on the members of RAB is a major blow to the credibility to a force which earned its name and fame fighting Islamic terrorism.

One possible reason the west might have continued supporting RAB despite allegations of extra judicial killing was its success in annihilating the home grown Islamic terrorism that rattled parts of Bangladesh during early part of this decade. Other factors that might weigh in the west’s decision to support RAB was it widespread popularity, professional work ethics as well as its politically blind modus operandi.

However RAB’s work ethics and professionalism started to take a turn towards the worse with ascent of Awami League as ruling party. Starting as early as 2008, RAB, previously criticized for extra-judicial killings of highly vetted criminals, allegedly started getting involved in abductions of businessmen and politicians. In 2009, three RAB men were arrested[i] on charges of abducting two businessmen and robbing them of gold and money.

On June 20 2011, two RAB men were captured by a crowd as they unsuccessfully try to abduct Chowdhury Alam, a local government leader and opposition leader, from Gulshan area of the capital. Later a patrol team of Police rushed to the spot and rescued them. One of the rescued was a RAB personnel identified by the meida as ASI Md Billal Hossain (ID No 314772 and Personnel No 4016801)[ii] belonging to RAB headquarters. Five days later, another group of people allegedly identifying themselves as RAB members kidnapped Mr. Chowdhury Alam. Mr. Alam has not been seen since then.

Apart from abductions, extortions and robbery, RAB continued with extra judicial killings through incidences knows as crossfires and shoot outs. In a recent development, Ain O Salish Kendra – ASK (Legal Aid and Human Rights Organization), Bangladesh cited 49 incidents of extrajudicial killings by law enforcement agencies mostly by RAB, only in the first the two months of 2014. The organization also confirmed 179 extrajudicial deaths in the year 2013. As a result of changing tactics of RAB, ASK could directly attribute 24 such deaths to RAB, 18 to police and for another 137 incidents, an agency could not clearly be linked.

On February 11, 2014 plain clothed armed men identifying themselves as RAB picked up Mridul Kumar Chowdhury in front of his house in Hazari Lane area of Chittagong. Prior to the incident, the gold trader lodged a case against some RAB personnel as they allegedly snatched a consignment of gold he sent to Dhaka. In an interview after being released from RAB custody, Mridul Kumar Chowdhury said that while being tortured by the abductors, he was asked time and again how he ‘dared’ file the case against RAB.

However, a probe committee consisting of law enforcement agency members surprisingly quashed the allegation[iii] clearing RAB of any involvement with the abduction.

The international human rights defender, Human Rights Watch, in all its recent communiques regarding Bangladesh, has recommended disbanding RAB. According to one of its’ recent reports titled ‘Democracy in Crossfire’ HRW unambiguously attributed extrajudicial killings, enforced disappearances, arbitrary arrests and unlawful destruction of private property on RAB personnel.

Human Rights Watch also repeated its call to the government to end the reign of impunity enjoyed by members of Bangladesh’s security forces working in RAB. They also urged to try the RAB members responsible for criminal offences.

Although RAB has been involved in such crimes for the last several years, the recent murder of seven people in Narayanganj has put RAB back into intense public scrutiny. As one followed the series of events leading to the discovery of seven corpses in Shitalakhya, it seemed that the RAB had turned into a mercenary force, a ruthless group of professional killers, who instead of working against the criminal godfathers had started working for the criminal godfathers in exchange of a hefty sum of money. Under intense publicity of the incident and as a result of loud public hue and cry, three seniors officers of RAB perceived to be responsible for the Narayanganj killings have been forced to go into retirement.

Data received from the RAB Headquarters says that almost two thousand RAB men[iv] faced departmental actions for committing criminal offences since 2004. That means, on an average, 16 members of the battalion had to be disciplined every month. These numbers draw an alarming picture of the current state of RAB. First, when 2000 members of a force with total membership of approximately 11000 are convicted of criminal offense, meaning nearly 1 in 5 RAB personnel are convicted of some form of crime and secondly when totally mind-blowing and credible allegations of acting as professional killers on behalf of notorious criminals surfaces against the whole senior leadership of a battalion; it becomes a very legitimate question whether this agency should exist as a guardian of rule of law. One of the most serious allegations about RAB is that the government has lost its control over the force.

There are clear indications that the force is totally demoralized and has lost its way. It is high time to take the sternest decision regarding this rogue force and disband it if needed. The sooner, the better.

 

[i] http://bdnews24.com/bangladesh/2009/10/04/rab-men-arrested-on-abduction-mugging-charges

 

[ii] http://archive.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=163708

 

[iii] http://bdnews24.com/bangladesh/2014/03/18/rab-cleared-of-abduction-charge

 

[iv] http://bdnews24.com/bangladesh/2014/05/11/2000-rab-men-punished-in-10-years

RAB বিলুপ্তি কোন সমাধান হতে পারে কি !

 

By KMB Bappy

যখন কেউ খুন-অপহরণের সমাধান দিতে গিয়ে বলেন- “RAB বিলুপ্ত করা হোক” তখন আমার মনে পড়ে যায় পিলখানার ঘটনায় কেউ কেউ বিডিআর বিলুপ্ত করার পরামর্শ দিয়েছিলেন । তাদের পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়েই সম্ভবত বিজিবি নামকরণ করা হয়েছিলো । লাভটা কি হয়েছিলো বা কাদের পকেটে মুনাফা গিয়েছিলো সেটা এখন সবাই নিশ্চিত । এভাবে একটি প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী বিলুপ্ত করে দেয়া যায়না বা এর পরিণতি কখনোই ভালো হয়না । কারণ-


১। তাদের অপকর্মের দায় নেবার জন্য তখন আর কেউ থাকবেনা । বিচারের পথ রুদ্ধ হয়ে যায় চিরদিনের জন্য । যে মানুষগুলো অন্যায়ের শিকার হয়েছেন তারা আজীবন চেষ্টা করলেও বিচার পাবেন না । সকল অপরাধী রক্ষীবাহিনীর মতো পার পেয়ে যাবে । তাদের জমানো কাড়ি কাড়ি টাকার হিসাব নেবারও কোন উপায় থাকবেনা । তাদের পরিবারগুলো আরো শান্তিতে থাকবে তখন । কোন সাংবাদিকের ক্যামেরা বা জনতার চোখ তাদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিতে পারবেনা ।

২। র‌্যাব বিলুপ্ত করা হলে এই সদস্যরা তখন পুরাতন বাহিনীতে ফিরে যাবে । র‌্যাব এর দায় সেনা বা পুলিশ বাহিনী কখনো নেবেনা । সেনাবাহিনীতে বা পুলিশে মিলে যাবার পর একই ব্যক্তি নতুন ইউনিফর্ম নিয়ে পরিবর্তিত মানুষ হয়ে যাবে তা ভাবার কোনই কারণ নেই ।

৩। যে অপরাধে র‌্যাব বিলুপ্তির প্রসঙ্গ তোলা হচ্ছে, একই অপরাধে গত পাঁচ বছরের মধ্যেই পুলিশ বিলুপ্ত হয়ে যাবার কথা ছিলো । সেনাবাহিনীতেও সব ফেরেশতাদের বিচরণ ভাবা বাতুলতা হবে । অতএব বাহিনীকে দোষারুপ করার কোন যৌক্তিক কারণ আর থাকেনা ।

৪। তারপরও অনেকে হয়তো বলবেন র‌্যাব বিলুপ্ত করলে অন্তত গুম-খুন কিছুটা কমবে । অর্থাৎ আমরা কতোটা স্বার্থপর জাতি সেটা তখন প্রকাশ পেয়ে যাবে । নিজে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা চাই যেভাবেই হোক । এর জন্য শেখ হাসিনা কে প্রধানমন্ত্রী মেনে নিয়ে তার কাছেই আবেদন জানানো হবে যেনো র‌্যাব বিলুপ্ত করা হয় । অথচ সকল বাহিনীর মূল চালিকাশক্তি হলেন শেখ হাসিনা । বিলুপ্ত করবেন কাকে ?

৫। আওয়ামী লীগের মূল টার্গেট হলো দেশের প্রতিটি এলাকায় গডফাদারভিত্তিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গোটা দেশ দখলে রাখা । নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমান কিছুটা বোকা বলেই সামনে চলে আসে বেশি । কিন্তু প্রতিটি এলাকায় মানুষেরা বিপদে পড়ে যেসব আওয়ামী নেতার বাসায় সহযোগিতার আশায় ভীড় করে তারা হলো বুদ্ধিমান গডফাদার । এরা শোষণ করে কিন্তু মজলুমকে বুঝতেই দেয়না । এরা নির্বাচনে যখন ভোট কারচুপি করে একক ভাবে পাশ করে আসে তখনো কেউ কিছু বলতে সাহস পায়না । এদের একটি ফোনে/আহবানে যখন কোন বিপদ কেটে যায় বা কাজ সম্পন্ন হয়ে যায় তখন মানুষেরা আর চিন্তা করতে চায়না এদেরকে এতো ক্ষমতা কে দিয়েছে । এসব গডফাদারদের হাতে নির্বিঘ্নে দেশ তুলে দেয়ার জন্য র‌্যাব-পুলিশকে বিতর্কিত করে ফেলা এবং দুর্বল করে দেয়া একটা আওয়ামী কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয় ।

তারপরেও ধরে নিলাম সরকার জাতির স্বার্থে র‌্যাব বিলুপ্ত ঘোষণা করলো । তারপর কি হবে ? আপনারা যারা এটা কামনা করেছিলেন- কেউ কি ফুলের তোড়া দিতে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ? নাকি আপনারা ধরে নিবেন আওয়ামী লীগ সঠিক পথে ফিরে এসেছে ? কোনটাই করতে পারবেন না । কারণ বিলুপ্তি ঘোষণা/নিষিদ্ধ ঘোষণা কোনদিনও সমাধান হতে পারেনা । বরং ততদিনে হয়তো সমুদ্র জয়ের মতো অপরাধ দমন শীর্ষক আরেকটি নাটকের মঞ্চ বানাবে সরকার । এভাবে নিজেদের ভুলে আওয়ামী লীগের হাতে যারা আরেকটি কার্ড তুলে দিতে চাচ্ছেন তাদেরকে এখনি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন ।

শেষকথা হলো- আমাদের প্রতিটি বাহিনী জনগণের টাকায় পরিচালিত । অতএব তাদের যাবতীয় কর্মকান্ডের জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহীতা থাকতে হবে । খুনি-অপরাধী যেই বাহিনীতে থাকবে সেই বাহিনীর আইনে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে । রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে আত্মীয়তার সুযোগে কেউ যেনো রাজনীতির ঘুটিতে পরিণত না হয় সেই পর্যবেক্ষণ বাড়াতে হবে । এই কাজগুলো সরকার করবেনা । যারা সত্যিকার অর্থে দেশকে ভালোবাসে তাদেরকেই করতে হবে । র‌্যাব-পুলিশ-সেনাবাহিনী কেউ যদি না থাকতো দেশের সবচেয়ে লাভবান হতো আওয়ামী লীগ- এটা আমাদেরকে মাথায় রাখতে হবে । যদি সত্যিকার অর্থেই বিলুপ্ত করতে হয়- আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় অভিশাপকেই বিলুপ্ত করতে হবে । সেটা উপরওয়ালা করবেন নাকি জনগণ করবে এটা সময় বলে দেবে ।

 

৭৫’এর হত্যা যদি অবৈধ হয় এ হত্যাও অবৈধ…

by Watchdog Bd
নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে মানুষ। ভুতুরে কায়দায় হাওয়া হয়ে যাচ্ছে ওরা। নগর, বন্দর, হাট-মাঠ-ঘাট হতে কোন এক অলৌকিক শক্তিবলে উধাও হচ্ছে দু’হাত দু’পা ওয়ালা আদম। ১৯৩৯ হতে ৪৫ সাল পর্যন্ত ইউরোপে অহরহই ঘটতো এ ঘটনা। ১৯৭৩-৭৫ সালে সদ্য জন্ম নেয়া বাংলাদেশও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল নিখোঁজ হওয়ার ভৌতিক অধ্যায়। হিটলারের গেস্টাপো আর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালীর রক্ষীবাহিনী নীরবে, নিঃশব্দে, অনেকটা ’ইনভিজিবল ম্যান’ কায়দায় হানা দিত দুয়ারে। এ যেন মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে খোদ আজরাইলের আগমন। এ ধরণের শাহী আগমনের শেষ গন্তব্য কোন বন্দর তা জানতে আমাদের হয়ত কবর হতে উঠিয়ে আনতে হবে ৫০ হতে ৭০ মিলিয়ন ইউরোপীয়, এশিয় আর আফ্রিকান জীবন। বাংলাদেশের বেলায় এর সঠিক পরিসংখ্যান আমরা কোনোদিনই জানতে পারবো না মেরুকরণ নামক রাষ্ট্রীয় কলেরার কারণে। পরিসংখ্যান ব্যুরো কেন, কবরেও আমাদের মেরুকরণের ভুত। এ ভুত যেনতেন ভুত নয়, খোদ আজরাইল নিযুক্ত যান্ত্রিক ভুত, যা দম দেয়া পুতুলের মত খোঁড়াক যোগায় রাষ্ট্রীয় ’তামাশার’… হিটলার ও তার গেস্টাপো বাহিনী এখন ইতিহাস। মানব সভ্যতার এ কলংকিত অধ্যায় সভ্যতা মূল্যায়নের উপকরণ হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং সামনেও করে যাবে আরও হাজার বছর। কিন্তু হায়! বিনা বিচারে নাগরিক হত্যা ঠাই নিতে পারেনি আমাদের ইতিহাসে। বরং এ অবৈধ সাংস্কৃতি স্থায়ী আসন করে নিয়েছে শাসন ব্যবস্থার কাঠামোতে। শেখ মুজিব হতে শুরু করে জিয়া, এরশাদ, খালেদা এবং হাসিনা চক্রের কোন চক্রই বেরিয়ে আসতে পারেনি দেশ শাসনের এই আজরায়েলি ভুত হতে। খালেদা জিয়া সরকার RAB নামের যে গেস্টাপো বাহিনীর জন্ম দিয়েছিল হাসিনা সরকারের ছায়াতলে পল্লবিত হয়ে তা পরিণত হয়েছে বিশাল মহীরুহে। ম্যান্ডেট নিয়ে দেশ শাসনের গণতান্ত্রিক রেওয়াজে অলিখিত আইন হয়ে গেছে বিনা বিচারে হত্যা নামের পশুত্ব। এবং তা বৈধতা পাচ্ছে সরকার ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় হতে। ক্রসফায়ার নামক হুমায়ুন আহম্মদিয় নাটক শুরুতে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল শাসন ব্যবস্থার অক্ষমতা ও নাগরিক অধিকার ফিরে পাওয়ার আকুতি হতে। শত শত হত্যাকান্ডের পর কতটা সফল হয়েছে এ আয়োজন? স্বাভাবিক জন্মমৃত্যু সহ একটা সহজ সরল জীবনের কতটা কাছে যেতে পেরেছি আমরা? দুর্নীতি, হত্যা, গুম, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ধর্ষণ সহ সমাজের অবক্ষয় গুলো কতটা কমানো গেছে হত্যাকান্ডের মাধ্যমে? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এখন ঘরের বাইরে যেতে হয়না, বরং দুয়ারে এসে জানিয়ে দেয় দুর্নীতি ও সন্ত্রাস নামক রাষ্ট্রীয় অলংকারের শক্তিমত্তা। দুর্নীতিতে উপর্যুপরি চ্যাম্পিয়নশীপ জাতি হিসাবে আমাদের এনে দিয়েছিল বিশ্বখ্যাতি। এ অধ্যায়ের সফলতম সংযোজন হিসাবে কাজ করছে আজকের বিনাবিচারে হত্যাকান্ড। বিশ্ব মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে মানবতাবিবর্জিত বাংলাদেশি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। স্বভাবতই সরকারকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে আর্ন্তজাতিক চাপ। এবং এখানেই হয়ত অন্যের সাথে নিজের পার্থক্য ও বুদ্ধিমত্তা তুলে ধরতে পেরেছেন দেশপ্রেমের ১নং দাবিদার আমাদের প্রধানমন্ত্রী। হয়ত প্রতিপক্ষের সৃষ্টি হত্যাযন্ত্র ভোতা হয়ে আসছিল ডিজিটাল যুগে। তাই আবিস্কার করতে বাধ্য হন এর ডিজিটাল সংস্করণ। রাতের আধারে ক্রসফায়ার নাটক সাজানোর বাংলাদেশি মিথ্যাচার সহজে গেলানো যাচ্ছিল না আর্ন্তজাতিক মহলে। স্বভাবতই হুমকির মুখে পরছিল দেশটার বৈদশিক সম্পর্ক। সমস্যার এমন সহজ ও কার্যকর সমাধানের জন্যে চাইলে হাসিনা সরকারকে নোবেল দেয়া যেতে পারে। আসলেই তো, প্রয়োজন কি রাতের আধারে ক্রসফায়ার নামক মঞ্চনাটকের! বরং ’শক্তিধর’ শত্রুকে ভুত বানিয়ে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা অথবা দেশটার হাওর-বাওর, বিলে ফেলে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়! কেউ জানবে না কে হত্যা করেছে, কেন করেছে, এবং এ নিয়ে জবাবদিহিতারও প্রয়োজন হবেনা আর্ন্তজাতিক মহলে। আইন-আদালত সহ দেশিয় বিচার ব্যবস্থার প্রায় সবটাই তুলে দেয়া হয়েছে দলীয় কর্মীদের হাতে। দলীয় ক্যাডার হতে সদ্য প্রমোশন পাওয়া আদালতের বিচারকগণও টগবগ করছেন সরকার প্রধানের প্রতিদান ফিরিয়ে দিতে। আইনী ঝামেলার দেশীয় ফ্রন্ট সরকারের জন্য ঝামেলামুক্ত।

6a00e0097e4e6888330120a67ddcd2970c-500wi

রাষ্ট্র ও সমাজের শক্র হিসাবে জুয়েল, মিজান, রাজিব ও ইসমাইলদের কতটা কুপ্রভাব ছিল যা দুর করতে তাদের লাশ ডোবা নালায় পুত্‌তে হল? স্থানীয় এসব পেটি-দুষ্কৃতিকারীদের জন্ম ও উত্থানের পেছনে কাদের হাত থাকে নাগরিক হিসাবে আমাদের সবার জানা। বিচার দুরে থাক এ নিয়ে কথা বলাও রাষ্ট্রীয় অপরাধ। এবং এ অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতে এক পায়ে দাড়িয়ে থাকে দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা। একজন আবুল মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ স্থানীয় নয়, বরং সমসাময়িক বিশ্বের অর্থনৈতিক মোড়ল খোদ বিশ্বব্যাংকের। তাদের অভিযোগ, মন্ত্রীর ক্ষমতাবলে এই বাংলাদেশি বিশ্বব্যাংকের মত আর্ন্তজাতিক সংস্থায় ক্যাডার পাঠিয়েছিল অবৈধ লেনাদেনার তাগাদা দিতে। ক্ষমতা না থাকায় চাইলেও তারা পারেনি আবুল হোসেনকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করাতে। কিন্তু তারা যা করেছে তা ১৫ কোটি মানুষের পেটে লাথি মারার শামিল। অথচ বিচারের দায়িত্বটা ছিল সরকারের। একই সরকার যারা শাস্তির নামে জুয়েল, ইসমাইলদের বিনাবিচারে জীবন্ত কবর দেয়, পাশাপাশি পুরস্কৃত করে আবুল মন্ত্রীর মত মেগা লুটেরাদের। রাজনীতির অন্দরমহলে কথাটা নিয়ে ফিসফাস চলে, অনেক সময় হাসি-ঠাট্টা পর্যন্ত গড়ায়। বলা হয়, আবুল মন্ত্রী নগদ ৬০ কোটি টাকায় মন্ত্রিত্ব ক্রয় করে নিয়েছেন । তাই বিচার দুরে থাক, মন্ত্রীসভা হতে বিদায়ের রাস্তাও নাকি তার জন্যে ছিল বন্ধ। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের বিশাল এক প্রকল্প এই আবুল হোসেনের জন্যে থমকে গেছে। অথচ সরকার প্রধান আসামীর কাঠগড়ায় দাড় করাচ্ছেন বিশ্বব্যাংকের মত আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানকে। সংসদ ভবনের রাজকীয় আসনে বসে দেশের আইন-আদালত আর ন্যায় অন্যায় নিয়ে যারা কথা বলেন তাদের শতকরা ৯৯ জনের ব্যাকগ্রাউন্ড ঘাঁটলে কি বেরিয়ে আসবে তা অনুমান করার জন্যে মনোবিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। এসব আউলিয়াদের কাহিনী কি একজন জুয়েল অথবা ইসমাইলের চাইতেও ভয়াবহ নয়?

প্রধানমন্ত্রী হয়ত ভুলে গেছেন অথবা জেনেও না জানার ভান করেন, ১৯৭৫ সালে উনার পিতাকে হত্যা করার প্রেক্ষাপটও কিন্তু তৈরী করা হয়েছিল অপ্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে। এসব অভিযোগ আদালতে উঠানোর সুযোগ না দিয়ে রাতের আধারে তাকে হত্যা করা হয়েছিল কাপুরুষের মত। প্রধানমন্ত্রী নিজেও কি একই কাজ করছেন না? RAB দিয়ে গুম করিয়ে গোপনে যাদের হত্যা করছেন তারাও কি কারো পিতা, সন্তান অথবা ভাই নন? পার্থক্যটা কোথায়? জাতির পিতার সন্তানদের শোক কি তাহলে বাকি শোকের চাইতে ভিন্ন? জানতে চাইলে জিজ্ঞেস করে দেখতে হবে মিজান অথবা রাজীব পরিবারের কাউকে। ৭১’এর আত্মস্বীকৃত খুনি আর ধর্ষকদের বিচারের জন্যে আয়োজন করা হয়েছে কোটি টাকার আদালত। অথচ ক্রসফায়ার নাটকে কাউকে বলি করতে চাইলে তা হওয়া উচিৎ ছিল গোলাম আযম, নিজামী, আমিনী আর সাকা চৌধুরীর দল। একজন ইসমাইলের অপরাধ কি তাহলে নিজামীর অপরাধের চাইতে বেশি?

মানুষের মৌলিক অধিকারের অন্যতম অধিকার তার স্বাভাবিক জন্ম-মৃত্যুর নিশ্চয়তা। ব্যর্থ রাজনীতি আর অপশাসন-কুশাসনের কুটজালে আটকে মানুষ আজ নাম লেখাতে বাধ্য হচ্ছে অন্যায় আর অবৈধ পথে বেচে থাকার মিছিলে। এ মিছিলের হোতা আর নেত্রীত্বে যারা আছে তাদের গায়ে হাত না দিয়ে যদু, মধু, রাম, শ্যামদের মতো বাই-স্ট্যান্ডার্ডদের গায়ে হাত দিয়ে আর যাই হোক সুশাসন কায়েম যে সম্ভব নয় তা অনুধাবন করার সময় এসেছে। ১৯৭৫ সালে যেমন সম্ভব হয়নি ২০১১ সালেও তা সম্ভব হবেনা।

জননী জন্মভূমি…

by Watchdog Bd

বিএনপির দ্বিতীয় টার্মের সময় তখন। প্রবাস জীবনে ব্রেক নিয়ে দেশে অবস্থান করছি। বাবার মৃত্যুর পর অর্ধশতাব্দি পুরানো আমাদের পারিবারিক শিল্পকারখানার চরম দুরবস্থা। জীবন প্রদীপ নিভু নিভু করছে প্রায়। এ অবস্থা হতে বেরিয়ে আসতে হবে এবং যথাসম্ভব দ্রুত…এমন একটা দায়িত্ব নিতে মার জরুরি তলবের কারণে অস্ট্রেলিয়া হতে ফিরে আসতে হল। বছর দেড়েক লাগল নড়বড়ে অবস্থা গুছিয়ে নিতে। এবং দুই বছরের মাথায় শুরু হল নতুন যাত্রা। কর্তন বর্ধনের পর প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক কর্মচারী নিয়ে শিল্পের ভিত্তিটা শক্ত পায়ের উপর দাঁড়িয়ে গেল।

চারদিকের বাণিজ্য বাতাস তখন অস্বাভাবিক ভারী। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। কাছ হতে দেখলে গোটা শহরকে মনে হবে চাঁদাবাজীর লাস ভেগাস। সহজ আয়ের এসব বীর সৈনিকদের সংখ্যা হাতে গুনে মুখস্ত রাখা সমস্যা হয়ে দেখা দিল। শেষপর্যন্ত মাছের ভাগার মত ভাগ করতে বাধ্য হলাম। এক ভাগা বিএনপির, এক ভাগা ছাত্রদলের, এক ভাগা আওয়ামী লীগ ও তার সহযোদ্ধাদের, এক ভাগা মসজিদ, মাদ্রাসা, ওয়াজ, মিলাদ, জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে, খৎনা, ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ও একভাগা মাননীয় সরকার মহোদয়ের বেতনভুক কর্মচারীদের। ডিসি সাহেব চাঁদার ইংরেজী তরজমা করে এর গায়ে কন্ট্রিবিউশন তকমা লাগিয়ে ঘন ঘন এলান ফরমানো শুরু করলেন। ওসি সাহেবের কেবল টাকা নয়, সুন্দর এক সকালে এত্তেলা পাঠালেন স্ত্রী ঢাকা যাবেন মার্কেটিংয়ে, আমাদের গাড়িটা দরকার। সাথে থাকতে হবে ট্যাংকভর্তি তেল। বাংলাদেশ নামক দেশটার জন্মের উষালগ্ন হতে দেশের বাইরে। তাই অনেক কিছুর উপর নূন্যতম ধারণা ছিলনা। একটা জাতি সন্মিলিতভাবে এভাবে নোংরামির কোমর পানিতে নামতে পারে আমার জন্য তা ছিল অভাবনীয়, বিস্ময়কর।

দুপুরের খাবারের জন্য বাসায় ফিরছি। কড়া রোদ। রিক্সা নেই কোথাও, তাই হেঁটেই রওয়না দিলাম। কয়েক শ গজ যাওয়া হয়নি, ঘ্যাচ করে হুড খোলা একটা জীপ পথরোধ করে ফেলল। পুলিশ। থ্রি নট থ্রি রাইফেল তাক করে মাটিতে শুয়ে পরার তাগাদা দিল। আমি মূর্তির মত ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম। অন্য একজন ওকিটকিতে কথা বলতে শুরু করল।
-স্যার একজনরে ধরছি। মসজিদের সামনে। বাকিরা পলাইছে। ঠিক আছে, জলদি আসেন।
একটু পর পালের গোদা থানার ওসি এসে হাজির। এসেই মা-বাবার নামে কুৎসিত একটা গালি দিল এবং সহকারীকে নির্দেশ দিল পাশের সেলুন হতে কাঁচি এনে আমার চুল গুলো কেটে দিতে। প্রমাদ গুনলাম। হিসাব কষে দেখলাম নিজকে প্রকাশের এটাই উত্তম সময়। অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হিসাবে সাময়িক ভিসা নিয়ে বাস করছি বাংলাদেশে। নিজের অধিকার সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন। বাংলা নয়, ইংরেজিতেই শুরু করলাম চোর-পুলিশ খেলা।
হু দ্যা ফাক ইউ আর টু কাট মাই হেয়ার?
স্তম্ভিত হয়ে গেল কথিত একজন সন্ত্রাষীর মুখে ইংরেজি শুনে।
তুই বড় চুলের মাস্তান। তোর কাছে এতকিছুর জবাব দিতে বাধ্য নই।
ডাজ কনষ্টিটিউশন অব বাংলাদেশ লিমিটস ইটস সিটিজেনস রাইট টু হেভ লং হেয়ার? ইফ সো, প্রভাইড মি এভিডেন্স।
এবার থেমে গেল ওসির মুখ। হয়ত আশা করেনি তর্কের সবটা ইংরেজিতে চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ।
– ইউ আর আন্ডার এরেষ্ট।
– নো প্রবলেম। লেট মি টক টু মাই এম্বাসি এন্ড গেট সাম হেল্প।
সংখ্যায় ওরা ছিল ৭/৮ জন। পিনপতনের নীরবতা নেমে এল ঘটনাস্থলে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের ড্রাইভিং লাইসেন্সটা পকেটেই ছিল। নিজের পরিচয় যেচেই প্রকাশ করলাম। দমে গেল পুলিশ বাহিনী। এ ফাঁকে খবর চলে গেলে আমাদের কারখানায়। শিফট বন্ধ করে প্রায় ১০০ শ্রমিক ঘেরাও করে ফেললো গোটা এলাকা। চারদিকে টান টান উত্তেজনা। পুলিশ দল নিজেদের ভেতর ফিসফাস শুরু করে দিল। একজন এসে জিজ্ঞেস করল, আপনি কি রহমান সাহেবের ভাই?
– নট রিয়েলি, আই এম নট, রাদার হি ইজ মাই ব্রাদার। ইংগার ব্রদার।
– আমরা কি আপনাদের কারখানায় গিয়ে কথা বলতে পারি? অতি বিনয়ের সাথে পালের গোদা অনুরোধ জানালেন।
– অভার মাই ডেড বডি। উই উইল স্কয়্যার আওয়ার ইস্যু রাইট হেয়ার।
এবার পুলিশের ঘাড়ে চেপে বসলাম আমি। শুধু শুধু নাম ধাম জিজ্ঞেস করতে থাকলাম। শুরু হল ক্ষমা পর্ব। ভাষ্য মতে কত গুলো মাস্তানকে ধাওয়া করছিল ওরা। তাদের সবার মাথায় লম্বা চুল। দেখতে আমিও নাকি তাদের মত। ততক্ষণে জনতার স্রোত বাড়তে শুরু করল। ঘটনাস্থলে আমাদের পারিবারিক বন্ধু পৌরসভার চেয়ারম্যানকে দেখতে পেলাম। সাথে আমার ছোট ভাই। ওরা শহরের হোমরা চোমরা, মুরুব্বি। জোর করে সরিয়ে আনল আমাকে। রক্তের দাপাদাপি থামাতে ডাক্তার ডাকা হল। তিনদিনের মাথায় সবকিছু থিতু হয়ে এল।

corrupt-police
মাস না গড়াতেই মার সাথে বুঝাপড়ায় বসতে হল। স্বপ্ন আর বাস্তবতার লড়াইয়ে বাস্তবতাই জয়ী হল। ফিরে গেলাম দত্ত্বক নেয়া দেশ অস্ট্রেলিয়ায়।…

ক্ষমতার পালাবদল কি বদলাতে পারবে এসব অসূস্থ সংস্কৃতি? নাকি নতুন বোতলে পুরানো মদ ঢালার মত জাতীয়তাবাদিরাও ঢালতে শুরু করবে চরিত্র সংকটের নতুন সিফিলিস? তাহলে আর কিসের জন্য এ হা হুতাস…কারণ আমার জন্য স্বাধীনতা মানে চুলেরও স্বাধীনতা, গণতন্ত্র মানে মুক্ত বাতাসে চলাফেরার স্বাধীনতা…

খালেদা জিয়ার বক্তব্য

2

খোমেনী ইহসান:
খালেদা জিয়া যা বলেছেন, তাকে অনেকে বিকৃত করছে। যারা এটা করছে, তারা আসলে স্বৈরতন্ত্রের পক্ষে নিজেদের সমর্থন জানাচ্ছেন। এদের চরিত্র সম্পর্কে মানুষ হুঁশিয়ার হোক। মুর্খরা কথা বিকৃত করে নিজেদের বিদ্যা ফলাতে চায়। নাহলে বুঝতো যে তাদের মানুষ কতখানি প্রত্যাখ্যান করে। 

সরকারের প্রতি বক্তব্য  

‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে না দেয়ায় খালেদা জিয়া বলেছেন, শেখ হাসিনা রক্তের গঙ্গা বইয়ে দিচ্ছেন। এই রক্তের গঙ্গার ওপর দিয়ে তিনি তার নৌকায় চড়ে ক্ষমতায় বসবেন। এই আশা দুরাশা। সেটা ভুলে যেতে বলেন। দেখবো কতদিন আটকে রাখতে পারেন। কর্মসূচি চলবে যতদিন এ রকম করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ভুলে যাইনি সেই দিনগুলোর কথা। আজকে সারা দেশকে কি অবস্থা করে রেখেছেন। সাহস থাকলে ছেড়ে দিতেন। দেখতেন যে কিভাবে জনগণ রাস্তায় নেমে আসে। মা-বোন, ভাই, কৃষক-শ্রমিক, মেহনতি জনতা, ছাত্র-যুবক সব বেরিয়ে আসতো আজকে।

আপনারা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন। দেশের প্রতিটি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছেন। এই সরকারই না বলেছিল, খালেদা জিয়া বের হোক রাস্তায়? আজকে আমি রাজপথে যেতে চাই। কেন বাধা দিচ্ছেন? তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তাদের তো রাজপথে নামার সাহস নেই। দুনিয়ার সিকিউরিটি নিয়ে চলেন, আর মানুষ মারেন। মানুষ গুম করেন। মানুষ খুন করেন। সারা দুনিয়া জেনে গেছে যে হাসিনা কত মানুষ খুন করেছে। কত মানুষ গুম করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এই পুলিশ বাহিনী, র‌্যাব বাহিনী। কাজেই, আজকে না হলে কালকে হবে এই অবস্থান। কালকে আমাদের মিছিল হবে। বন্ধ করুন আপনারা, আমরাও দেখবো। আর কত মানুষ মারবেন? তা-ও দেখবো। এর আগেও তো মেরেছেন। তার পিতা ক্ষমতায় থেকে ৩০ হাজার লোক মেরেছেন। আর এখন আরও মারছেন। মারেন।

এর পরিণতি যে শুভ হবে না- তা তারা বুঝেছেন। জনগণ দেখেছে। এর পরিণতি শুভ হয় না। এর পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ ও কঠিন। জবাবদিহি করার জন্য প্রস্তুত থাকেন। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা আইনজীবীদের ওপর আক্রমণ করেন, গ্রেপ্তার করেন, সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছেন, মা-বোনদের ওপর নির্যাতন করছেন। আপনি না (প্রধানমন্ত্রী) মহিলা। আপনার মহিলাদের প্রতি এতটুকু সম্মান নেই। এতটুকু দরদ নেই। যে, আমরা মহিলাদের অন্তত সম্মানটা রক্ষা করি। সেটাতো আপনারা করেন না। কি আচরণ করেছেন?

অথচ আমাদের সময় ১৭৪ দিন আপনারা হরতাল করেছেন। অবরোধ করেছেন। নানা রকম বিশৃঙ্খলা করেছেন। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ মেরেছেন। একটা গুলিও আমি চালাইনি। দেশের প্রতি, জনগণের প্রতি দরদ আছে আমাদের। মায়া আছে। সেজন্যই আমরা জনগণকে গুলি করে হত্যা করতে পারি না। কিন্তু আপনারা যেভাবে নৃশংসভাবে গুলি করছেন, হত্যা করছেন। তার জবাবদিহি করতে হবে। তার জবাব আপনাদেরকে দিতে হবে। এই রক্তের সাগর পাড়ি দিয়ে নৌকা তার গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে না। আজকে রক্তের সাগরে নৌকায় করে উনি হাওয়া খেতে যাচ্ছেন। দেখতে পাবেন ক’দিন পরেই তার পরিণতি।

এই সমাবেশ আজকে হয়নি। আবার কালকে করবো। দেখবো, আপনারা আসেন, বসে থাকেন গেটের কাছে। ঠিক আছে। প্রতিদিন আমিও একই কাজই করবো। চলুক কতদিন চলে। আপনি মনে করেছেন কি? দেশটা কি আপনাদের একার? পৈতৃক সম্পত্তি হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের- যে গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে আমাদের সমাবেশ বন্ধ করতে চায়, পুলিশ বাহিনী দিয়ে সমাবেশ বন্ধ করতে চায়? সাহস থাকলে কাউন্টার প্রোগ্রাম করে দেখাতেন। সাহস নেই। ১০টা লোকও আসে না। ভাড়াটিয়া লোক আনে। ডিসি-এসপিদের দিয়ে লোক আনায়। বুঝি এটা আমরা। না হলে এমন করুণ পরিণতি হয়? ১৫৪টা আসন আনকনটেস্টেড হয়ে যায়? আর বাকি রয়েছে কি? বাকিগুলোও করে ফেলবেন। ওটা কোন ইলেকশন নয়। এটা যে সিলেকশন হয়েছে তা আজকে জাতির কাছে পরিষ্কার। দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার। তাই মানুষ আজকে ধিক্কার দিচ্ছে। ধিক্কার দেই আমরা এই সরকারকে।

পুলিশের প্রতি বক্তব্য 
পুলিশকে লক্ষ্য করে খালেদা জিয়া বলেন, কি করছেন? আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোন বিরোধ নেই। আপনারা দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু আমি মনে করি যে, দায়িত্বটা সুন্দরভাবে পালন করুন। সম্মানের সঙ্গে থাকুন যেন আমরাও কাজ করতে পারি। আপনারাও কাজ করতে পারেন। আপনারা পুলিশ বাহিনী। কিন্তু এটা তো ঠিক নয় যে, আমাকে আমার বাড়ি থেকে বের হতে দেবেন না। এটা তো ঠিক নয়। এখানে আপনাদের যে অফিসার ছিল, সে গেল কোথায়। তার সঙ্গে তো আমি কথা বলতে চেয়েছি। সে কোথায়? কেন আমার পথ আটকিয়েছে? কেন সে আসছে না এখন সামনে? এতক্ষণ তো অনেক কথা বললেন। এখন মুখটা বন্ধ কেন? এই যে মহিলা। আপনার মুখটা এখন বন্ধ কেন? বলেন তো কি বলছিলেন এতক্ষণ ধরে। মুখটা বন্ধ কেন এখন? দেশ কোথায়? গোপালী? গোপালগঞ্জ জেলার নামই বদলে যাবে বুঝেছেন? গোপালগঞ্জ আর থাকবে না।

সরকারের প্রতি বক্তব্য 

সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, আল্লার গজব পড়বে, আপনারা যা শুরু করে দিয়েছেন। কতগুলো আলেমকে হত্যা করেছেন। এতিমকে হত্যা করেছেন। কতগুলো বিডিআর অফিসারকে হত্যা করেছেন। সেদিন কোথায় ছিল হাসিনা? এতগুলো অফিসারকে মারলো। ৫৭ জন অফিসার হত্যা করলো। সেদিন হাসিনার এ ফোর্স কোথায় ছিল? কেন সে পাঠায়নি। আসলে তো সে নিজেই জড়িত ছিল বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে। সেজন্যই আজকে, নতুন নতুন অনেক অপরিচিত চেহারা দেখা যায়। যাদেরকে চেনা যায় না যে, তারা আসলেই বাংলাদেশী কিনা। বাংলাদেশের আজকের যে কর্মসূচি ছিল, আপনারা যদি দেশকে ভালবাসতেন, তাহলে আজকে ছিল আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং মার্চ ফর ডেমোক্রেসি ছিল আমাদের কর্মসূচি। আপনারা গণতন্ত্রও চাবেন না, দেশ রক্ষা করতেও দেবেন না। গোলামি করবেন? দালালি করবেন? এই গোলাম তো রাখবে না। লেন্দুপ দোরজি’র ইতিহাসটা পড়ে দেখুন। সেও কিন্তু টেকেনি বেশিদিন। তাকেও বিদায় দিয়েছে এত দালালি করে, দেশ বিক্রি করে। কাজেই এই দেশ বিক্রি চলবে না। দেশ রক্ষা হবেই ইনশাআল্লাহ।

পুলিশের প্রতি বক্তব্য 

পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, হাসিনার দালালি করে লাভ হবে না। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে থাকুন। জনগণের সঙ্গে থাকুন। দেশের মানুষের সঙ্গে থাকুন। তবেই কাজে দেবে। দেশ বাঁচবে, মানুষ বাঁচবে। আজকে সবার দায়িত্ব হয়ে গেছে দেশ বাঁচানোর। মানুষ বাঁচানোর। আর আপনারা ঘরে ঢুকে এখন মানুষ হত্যা করছেন। মনে করেন যে, এগুলোর হিসাব নেই? এই মা-বোনের কান্না। এই আলেমে দ্বীনের কান্না, বিডিআর অফিসারদের স্ত্রীদের কান্না এগুলো কি বৃথা যাবে? এগুলো কোনও দিনই বৃথা যাবে না। আজকে যারা এই জুলুম-নির্যাতন করছেন তাদেরকেও এদের মতো একদিন চোখের পানি ফেলতে ফেলতে চোখ বন্ধ হয়ে যাবে। এখনও সময় আছে।
এ সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তখন তাদেরকে বিরোধী নেত্রী বলেন, ধাক্কাধাক্কি বন্ধ করুন। আমরা কোন ধাক্কাধাক্কি করতে আসিনি। আমি বলছি, আপনারা চাকরি করেন, চাকরি করবেন। কিন্তু এ রকম আমাদের গায়ের উপরে উঠে পড়বেন না। দূরে থাকুন। আপনাদের জায়গা যেখানে সেখানে থাকুন। আজ আপনাদের তো রাস্তার উপর থাকার কথা। আপনারা বাড়ির মধ্যে এসে গেছেন কেন? আপনাদের মেয়েরা এত ঝগড়া করে কেন? উত্তেজিত ও ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আরও বলেন, এই মেয়েরা। চুপ করো। ক’দিনের চাকরি হয়েছে যে, এত কথা বলো? কিসের জন্য এত কথা বলো? চুপ থাকো। বেয়াদব কোথাকার। আপনার অফিসার কোথায় গেল? আসলো না? তাদের বলবেন, আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাই। বুঝেছেন? কি বোঝেননি কথাটা। এটা তো বাংলাভাষা। নাকি অন্য কোন ভাষায় বলতে হবে আপনাদেরকে। বুঝেছেন? সেই অফিসার কোথায়? তাকে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলবেন।’