অভিনন্দন, বেগম খালেদা জিয়া!

2

২৩ বছর পর বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি থেকে পতাকা নেমে গেছে। এতে কষ্টের কিছু নাই। আশাহত হওয়ারও কোনো কারণ দেখিনা। মানুষের পোড়া মাংসের গন্ধ, বারুদে দীর্ণ হয়ে যাওয়া খেটে খাওয়া শরীর কিম্বা রাতের আঁধারে-দিনের আলোতে ইজ্জত হারা নারীর কাছে এই ‘গণতন্ত্র’ ও ‘সংবিধান’ রক্ষার ‘নির্বাচনে’র কোনো মূল্য নাই। এ রকম নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজের জন্য সরকারি গাড়ি, বাড়ি আর পতাকা বরাদ্দ না নিয়ে ইতিহাসে অনন্য উচ্চতায় স্থান করে নিয়েছেন বেগম থালেদা জিয়া। অর্জন করেছেন মানুষের ভালোবাসা। 

তারেক মোরতাজা:

গণতন্ত্র’, ‘সংসদ’, ‘সংবিধান’ এবং ‘নির্বাচন’ নিয়ে ৪২ বছর বয়সী যে দেশটির মানুষ দ্বিধা বিভক্ত। যে দেশে জামায়াত শিবিরের গুটি কতক মানুষের ভয়ে আওয়ামী লীগের মত একটা দল এক তরফা ‘নির্বাচন’ নামের একটা জুয়াখেলাকে নিজেদের জন্য ফরজ করে নিয়েছে। সে দেশেও আমাদের আশা আছে!

কারণ এ দেশটা এখন নতুন প্রজন্মের হাতে যাচ্ছে, ধীর লয়ে। যখন পুরোপুরি দ্বৈত নাগরিক ও দ্বৈত আদর্শের লোকরা রাজনীতি থেকে অবসরে যাবেন কিম্বা বয়সের কাছে হার মানতে বাধ্য হবেন- তখন নতুন, ভালো এবং উদার কিছু আশা করা সম্ভব।

২৩ বছর পর বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি থেকে পতাকা নেমে গেছে। এতে কষ্টের কিছু নাই। আশাহত হওয়ারও কোনো কারণ দেখিনা। মানুষের পোড়া মাংসের গন্ধ, বারুদে দীর্ণ হয়ে যাওয়া খেটে খাওয়া শরীর কিম্বা রাতের আঁধারে-দিনের আলোতে ইজ্জত হারা নারীর কাছে এই ‘গণতন্ত্র’ ও ‘সংবিধান’ রক্ষার ‘নির্বাচনে’র কোনো মূল্য নাই। এ রকম নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজের জন্য সরকারি গাড়ি, বাড়ি আর পতাকা বরাদ্দ না নিয়ে ইতিহাসে অনন্য উচ্চতায় স্থান করে নিয়েছেন বেগম থালেদা জিয়া। অর্জন করেছেন মানুষের ভালোবাসা।

বাংলাদেশের সৃষ্টির সাথে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল জিয়া সরাসরি জড়িত ছিলেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বেগম জিয়া ছিলেন আপসহীন। মানুষ মনে রেখেছে। রাজনীতি মানে কেবলই ক্রমাগত বল প্রয়োগ কিম্বা মানুষ হত্যা নয়। অনেকে বলবেন বেগম জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী অভিযুক্ত করছেন। এ রকম অভিযুক্ত অনেকেই হযেছে। এথেন্সে সক্রেটিসকেও অভিযুক্ত করে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু সত্য টিকে গেছে।

জামায়াত বিএনপির সাথে আন্দোলনে আছে। আগে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সাথে ছিল। যে সময় সরকারি অফিসগামি কর্মীকে রাস্তায় ন্যাংটা করা হয়েছে সে সময় আওয়ামী লীগ-জামায়াত সখ্য দেখেছে মানুষ।
এখন যেহেতু জামায়াত বিএনপির সাথে, তাই এটাকে অপরাধ বিবেচনা করা হচ্ছে- কারণ জামায়াত আওয়ামী লীগের সাথে নেই। আওয়ামীলীগের সাথে থাকলে আমরা সবাই চুপ করে থাকাটা কর্তব্যমনে করতাম। যে রকম হাসিনার এরশাদ প্রাপ্তিকে জ্ঞান করি।

আওয়ামী লীগ এত জামায়াত বিরোধি মনোভাব দেখায় তো তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করছে না কেনো? উত্তর একটাই তাইলে যুদ্ধাপরাধী আর স্বাধীনতা বিরোধি তাবিজের বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে। তবে এইবার নাকি নিষিদ্ধ করবে!

বেগম খালেদা জিয়া শহীদ জিয়ার রাজনীতি অনুসরণ করুন

খোমেনী ইহসান: 

বাংলাদেশ সিকিম নয়। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হওয়া একটি দেশ। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ শুধু ঔপনিবেশিক পাকিস্তানকে পরাস্ত করেনি, ভারতকেও হারিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে বাংলাদেশতে নিয়ে অনেক কুবাসনাই করেছিল ভারত। এজন্য মুক্তি বাহিনীর বাইরে মুজিব বাহিনীর মতো একটি স্বশস্ত্র গ্রুপেরও জন্ম দিয়েছিল তারা। যেই বাহিনীকে ভারত সামরিক ও রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ দিয়েছিল, যেন তারা ৭১ এর পরেও পাঁচটি বছর ভারতের হয়ে বাংলাদেশে সক্রিয় থাকে।

কিন্তু বাংলাদেশের মু্ক্তিযুদ্ধের রিয়েল ফাইটারদের কারণে এটা সম্ভব হয়নি। মুজিব বাহিনীকে ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধারা, যারা বেশির ভাগই ভারতে আশ্রয় বা প্রশিক্ষণ নেননি এবং দেশটির মতাদর্শিক দীক্ষা নেননি, সফল হয়েছিল। তারাই সম্মুখ সমরে পাকিস্তানী হানাদারদের একের পর এক পরাজয় ছুঁড়ে দিয়েছিলেন।

খোদ ভারতে যাওয়া রাজনৈতিক নেতৃত্বের বেশির ভাগও ভারতীয় রাজনীতির গুটি হননি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়লে আমরা দেখতে পাই প্রবাসী সরকারের বেশির ভাগ সদস্য ভারতের ভূমিকার ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকে যেন ভারত নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে বাংলাদেশকে দখলে নিতে না পারে এজন্য তাদের সচেতনতা ছিল সর্বোচ্চ পর্যায়ের।

আমরা দেখেছি ভারতের সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার স্বীকার করেও কিভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ভারতীয় আধিপত্য এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। শেখ মুজিব তাই ২৫ মার্চ রাতে ভারতে পালিয়ে না গিয়ে গ্রেফতার হয়ে পাকিস্তানে নীত হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়েল পর পাকিস্তানী কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি প্রথমে লন্ডনে গেছেন। পরে ভারতে গেছেন। সেক্যুলার রাষ্ট্র পরিগঠনের পরেও তিনি মুসলিম দেশগুলোর সাথে দ্রুত সম্পর্ক তৈরি করেছেন। এমনকি ১৯৭১ এর গণহত্যার অন্যতম খলনায়ক ভুট্টোকে বুকে টেনে নিয়েছেন। লালগালিচা সম্বর্ধনা দিয়েছেন।

আমরা ভুলে যাই যে শেখ মুজিব স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বিমানবন্দরে দাড়িয়েই ভারতকে বলেছেন তার সৈন্য-সামন্ত ফিরিয়ে নিতে। অথচ ভারত চেয়েছিল অনেক বছরের জন্য সৈন্য মোতায়েন রাখতে। ভারত বাংলাদেশের সিভিল প্রশাসনেও নিজস্ব লোক বসাতে চেয়েছিল। এমনকি অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থাও চেয়েছিল। বুড়ো-বুড়িরা নিশ্চয় মনে করতে পারবেন যে স্বাধীনতার পর কিছু দিন ভারতীয় মুদ্রা চলেছিলও বটে।

ঐতিহাসিক তথ্য-প্রমাণ থেকে আমরা সিদ্ধান্ত টানতে পারি যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব কখনোই ভারতের ব্যাপার অসতর্ক ছিলোনা। তারা ভারতের সহযোগিতা নিলেও বাংলাদেশের স্বাধীন সত্ত্বা কায়েমের প্রতি জোর দিয়েছেন। তবে স্বাধীনতাকে পুঁজি করে একটি দল, গোষ্ঠী ও শ্রেণীর ক্ষমতা লিপ্সা চরিতার্থ হওয়ার কারণে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক পরিগঠন হয়নি, যার ফলে বাংলাদেশের স্বাধীন সত্ত্বা পুরোপুরি বিকশিত হতে পারেনি।

কিন্তু আমি অন্য একটি জায়গা ফোকাস করতে চাই। বিশ্ব বাস্তবতা ও নিজস্ব সক্ষমতার প্রশ্নে ভারত ১৯৭১ এ বাংলাদেশকে দখল করে নেয়নি এটি সত্য। কিন্তু ভারত যদি চাইতো তবে কি এটি অসম্ভব ছিলো? ভারত কি কিছু দিনের জন্য, কয়েক মাস বা বছরের জন্যও এটা পারতো না?

আমি মনে করি বাংলাদেশ সম্পর্কে খুব বেশি জানে ভারত। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষকে সবচেয়ে ভালো জানে বলেই ১৯৭১ সালে এদেশকে বাগে পেয়েও দখলের সাহস করেনি। কুবাসনা তাদের মধ্যে থাকতেই পারে। কিন্তু সাহস দৃশ্যমান করেনি, এটাই বাস্তবতা।

কেন দখল করেনি ভারত? তারা জানে বাংলাদেশকে দখল করলে খবর আছে। মানে ১৯৪৭ এর সীমানা মুছে দিলে বাংলাদেশীরা সাবেক সুবে বাংলা এবং অরুনাচল ও সেভেন সিস্টার নিয়ে আবার স্বাধীন হওয়ার জন্য সংগ্রাম করে দেবে বলে ভারতের একটা সন্দেহ আছে।

বৃটিশ উপনিবেশ ও পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের জনগণ কী আচরণ করেছে এটা তো ভারত দেখেছে। ভারত ভালো করেই জানে যে ভারতবর্ষের অন্য জায়গার লোকেরা যখন ইংরেজদের গোলামি করাকে নিয়তি মেনে নিয়েছিল তখনও সুবে বাংলার মানুষেরা লড়াই করেছিল। ১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ পর্যন্ত বৃটিশের বিরুদ্ধে স্বশস্ত্র সংগ্রাম চলেছে। ভারতবর্ষের অন্য এলাকার মানুষেরা ইংরেজি শিখেছে, মদ খেয়েছে, ফর্সা মেয়েদের সাথে শুয়েছে। কিন্তু হাতে গোণা কিছু উচ্চ বর্নের হিন্দু-মুসলমান ছাড়া অন্যরা এসব করেনি।

অনেককেই দেখি বদরাজনীতি করতে গিয়ে ইতিহাস-নৃতত্ত্বও গুড়িয়ে দিতে চান। সুবে বাংলার বিশেষ করে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের ইতিহাসও বৃটিশের দালালির ইতিহাস নয়। ফকিরদের সময় থেকেই তারা লড়াই করেছে। এই যে পাকিস্তান হয়েছে তার পক্ষেও তারা লড়াই করেছে। দুই পাঞ্জাবের স্থানান্তর আর পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার স্থানান্তর সম্পর্কে খোঁজ নিলেই বুঝা যাবে এখানকার হিন্দুরা মাতৃভূমির সাথে কিভাবে সম্পর্কিত।

যাই হোক বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের এখনো আতঙ্ক আছে। তাই তারা বাংলাদেশ দখল করতে চায় না। তারা ভালো করেই জানে বাংলাদেশ সিকিম, আসাম-ত্রিপুরা, কাশ্মীর বা আহমেদাবাদ নয়। এই সব দেশের স্বাধীন সত্ত্বা, তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, স্বাধীনতা টেকানোর সক্ষমতা ও জনগণের রাজনৈতিক অবস্থান বাংলাদেশের মতো ছিলো না। এই সব দেশের ভারতের সাথে মিশে যাওয়ার কিছু বাস্তবতাও ছিল।

আর বাংলাদেশ মানে বাংলাদেশ। এটি এমন একটি দেশ যার স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস আছে। পৃথিবীর আর কোনো দেশের বিজয় দিবস নেই।

আমি বলছি না যে ভারত বাংলাদেশকে সকাল বিকাল চুমো খেতে চায়। বলছি না যে, ভারত প্রতিনিয়ত সীমান্তে গুলি করে বাংলাদেশের জনগণকে হত্যা করে না। আন্তর্জাতিক নদীতে ফারাক্কাসহ অন্যান্য বাদ দিয়ে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করছে না। ফেন্সিডিল ও চোরাচালান দিয়ে বাংলাদেশের ক্ষতি করছে না। বাংলাদেশের মেয়েদেরকে ভারতীয় ব্রোথেলগুলোতে পাচার করছে না। অন্তর্ঘাতমূলক নানা কর্মকাণ্ড করছে না।

আমি এই সব ঘটনাঘটন স্বীকার করেও বলছি যে ভারত অবশ্যই বাংলাদেশকে দখল করতে চেষ্টা করছে না। তাহলে ভারত কী করছে? তারা এমন কিছু করছে যা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অস্বাভাবিক ও অস্বীকৃত নয়। ভারত অবশ্যই বাংলাদেশে আধিপত্য করছে।

বাংলাদেশে ভারত নিজেদের নিয়ন্ত্রণন কায়েম করতে চায়। এজন্য তারা এখানে বশংবাদ সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে চায়। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন পদে নিজের নাগরিকদের, নিদেনেপক্ষে ভারতীয় দালালদের বসাতে চায়। বাংলাদেশের গণমাধ্যম, সংস্কৃতি, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা ও পুলিশিংয়ে ভারত আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। আরো অনেক কিছু চায় এবং তার জন্য ভারত কাজ করে।

ভারতের এই আচরণকে আমরা স্বাভাবিক ও স্বীকৃতি ব্যাপারই মনে করি। কারণ এটি দুনিয়ার সব শক্তিশালী দেশ তার দুর্বল প্রতিবেশীর সাথে করে থাকে। আমাদের কাছে বিষয়টি পষ্ট হবে যদি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিাকোর, সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবেক রাষ্ট্রগুলোর সাথে রাশিয়ার, সিরিয়ার সাথে লেবাননের, সৌদির সাথে বাহরাইন ও ইয়েমেনের, কেনিয়া ও ইথিওপিয়ার সাথে পাশের দেশগুলানের সম্পর্ককে বিচার করে দেখি।

এখন কথা হচ্ছে রাজনীতি করতে চাইলে তো কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। সব দুর্বল দেশেই হায় হায় করার রাজনীতি আছে। সিকিম টাইপের সিনড্রোম আছে। কিন্তু প্রতিবেশী শক্তির আধিপত্য যদি খর্ব করতে হয় তবে হায় হায় করার কিছু নাই। সিকিমের জিগির তোলারও প্রয়োজন নাই। কিভাবে, কোথায়, কেন আধিপত্য তৈরি হচ্ছে কিভাবে হচ্ছে তাকে বুঝে ঠিক কাজটি করাই দরকারি।

ঠিক কাজ হলো দুর্বলতা কাটিয়ে উঠা। সক্ষমতা অর্জন করা। সমৃদ্ধি অর্জন করা। কেন আমার দেশের মানুষ প্রতিবেশী দেশের দালালি করছে, তার কারণ খুঁজে সমাধান দেওয়া। কেন ৫৮ সিট পাওয়া বিরোধী দলটি বাধ্য হয়ে ভারতের বশংবদ হয়ে গেছে তার জন্য কার কতখানি দায়-দায়িত্ব আছে তার প্রতিকার করা।

ঠিক কাজটি না করে শুধু শুধ কথা খরচ করলে কী লাভ হবে যে ভারত বাংলাদেশের সব কিছুর মালিকহয়ে গেছে? কী লাভ এ কথা বলায় যে সেনাবাহিনীতের র’র পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলছে? কী লাভ এ কথা বলায় যে গণভবন পাহাড়া দিচ্ছে ভারতীয় অফিসাররা? কী লাভ এ কথা বলায় যে বাংলাদেশে কে ক্ষমতায় বসবে, না আসবে তার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে দিল্লীর সাউথ ব্লক?

আমি মনে করি প্রতিবেশী দেশ সব নিয়ে গেল, নিয়ে গেল বলে চিৎকার করাটা প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি। বাংলাদেশে এই রাজনীতির কোনো সফলতা নাই। বরং এই রাজনীতি আত্মঘাতী।

১৯৭১ এও ভারতকে নিয়ে বাড়বাড়ন্ত ভীতি ছড়ানো হয়েছিল। যেই ভীতির চোটে জামায়াত-মুসলিম লীগ আত্মহত্যা করেছে। ভারতের ব্যাপারে তাদের সতর্কতা ঠিক থাকলেও একে ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা, হানাদারকে সমর্থক হওয়াটা ভালো কোনো ব্যাপার নয়।

যাই হোক বাংলাদেশের পরিণতি সিকিমের মতো হচ্ছে মনে করে খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার দরকার নাই। আতঙ্কের রাজনীতির বদলে তার উচিত সাহসের রাজনীতি করা। দেশ দখল হয়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা করার বদলে তার উচিত জিয়ার মতো ভাবা কিভাবে দেশকে গড়ে তোলা যায়, কিভাবে প্রতিযোগীকেও টেনশনে রাখা যায়।

বেগম খালেদা জিয়া, আপনি জিয়ার রাজনীতি করেননি। এবং করছেন না। দেশ ভারত দখল করবে মনে করে অপশক্তির রাজনৈতিক মতাদর্শের ফাঁদে পড়া আর দেশকে স্বাধীন করতে জিয়ার মতো এগিয়ে যাওয়া এক ব্যাপার নয়।

আপনার কাছে অনেক যোগ্য লোক, সাহসী ও সৃজনশীল এক সমর্থক বাহিনী আছে। তাদের নিয়ে আপনি রাজনীতি পুনর্গঠন করুন। প্রতিষ্ঠান গড়ুন। যারা সৃজনশীল তাদের কাজের সুযোগ দিন। যারা এখন আপনাকে ভুল রাজনীতি করিয়ে অসহায় করে তুলছে তাদের তাড়িয়ে দিন। তারা আপনাকে ব্যবহার করছে, নিরাপদে থেকে ব্যবহার করছে, কিন্তু আপনার বিপদের সময়ে পাশে দাড়াচ্ছে না।

খালেদা জিয়ার বক্তব্য

2

খোমেনী ইহসান:
খালেদা জিয়া যা বলেছেন, তাকে অনেকে বিকৃত করছে। যারা এটা করছে, তারা আসলে স্বৈরতন্ত্রের পক্ষে নিজেদের সমর্থন জানাচ্ছেন। এদের চরিত্র সম্পর্কে মানুষ হুঁশিয়ার হোক। মুর্খরা কথা বিকৃত করে নিজেদের বিদ্যা ফলাতে চায়। নাহলে বুঝতো যে তাদের মানুষ কতখানি প্রত্যাখ্যান করে। 

সরকারের প্রতি বক্তব্য  

‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে না দেয়ায় খালেদা জিয়া বলেছেন, শেখ হাসিনা রক্তের গঙ্গা বইয়ে দিচ্ছেন। এই রক্তের গঙ্গার ওপর দিয়ে তিনি তার নৌকায় চড়ে ক্ষমতায় বসবেন। এই আশা দুরাশা। সেটা ভুলে যেতে বলেন। দেখবো কতদিন আটকে রাখতে পারেন। কর্মসূচি চলবে যতদিন এ রকম করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ভুলে যাইনি সেই দিনগুলোর কথা। আজকে সারা দেশকে কি অবস্থা করে রেখেছেন। সাহস থাকলে ছেড়ে দিতেন। দেখতেন যে কিভাবে জনগণ রাস্তায় নেমে আসে। মা-বোন, ভাই, কৃষক-শ্রমিক, মেহনতি জনতা, ছাত্র-যুবক সব বেরিয়ে আসতো আজকে।

আপনারা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন। দেশের প্রতিটি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছেন। এই সরকারই না বলেছিল, খালেদা জিয়া বের হোক রাস্তায়? আজকে আমি রাজপথে যেতে চাই। কেন বাধা দিচ্ছেন? তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তাদের তো রাজপথে নামার সাহস নেই। দুনিয়ার সিকিউরিটি নিয়ে চলেন, আর মানুষ মারেন। মানুষ গুম করেন। মানুষ খুন করেন। সারা দুনিয়া জেনে গেছে যে হাসিনা কত মানুষ খুন করেছে। কত মানুষ গুম করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এই পুলিশ বাহিনী, র‌্যাব বাহিনী। কাজেই, আজকে না হলে কালকে হবে এই অবস্থান। কালকে আমাদের মিছিল হবে। বন্ধ করুন আপনারা, আমরাও দেখবো। আর কত মানুষ মারবেন? তা-ও দেখবো। এর আগেও তো মেরেছেন। তার পিতা ক্ষমতায় থেকে ৩০ হাজার লোক মেরেছেন। আর এখন আরও মারছেন। মারেন।

এর পরিণতি যে শুভ হবে না- তা তারা বুঝেছেন। জনগণ দেখেছে। এর পরিণতি শুভ হয় না। এর পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ ও কঠিন। জবাবদিহি করার জন্য প্রস্তুত থাকেন। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা আইনজীবীদের ওপর আক্রমণ করেন, গ্রেপ্তার করেন, সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছেন, মা-বোনদের ওপর নির্যাতন করছেন। আপনি না (প্রধানমন্ত্রী) মহিলা। আপনার মহিলাদের প্রতি এতটুকু সম্মান নেই। এতটুকু দরদ নেই। যে, আমরা মহিলাদের অন্তত সম্মানটা রক্ষা করি। সেটাতো আপনারা করেন না। কি আচরণ করেছেন?

অথচ আমাদের সময় ১৭৪ দিন আপনারা হরতাল করেছেন। অবরোধ করেছেন। নানা রকম বিশৃঙ্খলা করেছেন। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ মেরেছেন। একটা গুলিও আমি চালাইনি। দেশের প্রতি, জনগণের প্রতি দরদ আছে আমাদের। মায়া আছে। সেজন্যই আমরা জনগণকে গুলি করে হত্যা করতে পারি না। কিন্তু আপনারা যেভাবে নৃশংসভাবে গুলি করছেন, হত্যা করছেন। তার জবাবদিহি করতে হবে। তার জবাব আপনাদেরকে দিতে হবে। এই রক্তের সাগর পাড়ি দিয়ে নৌকা তার গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে না। আজকে রক্তের সাগরে নৌকায় করে উনি হাওয়া খেতে যাচ্ছেন। দেখতে পাবেন ক’দিন পরেই তার পরিণতি।

এই সমাবেশ আজকে হয়নি। আবার কালকে করবো। দেখবো, আপনারা আসেন, বসে থাকেন গেটের কাছে। ঠিক আছে। প্রতিদিন আমিও একই কাজই করবো। চলুক কতদিন চলে। আপনি মনে করেছেন কি? দেশটা কি আপনাদের একার? পৈতৃক সম্পত্তি হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের- যে গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে আমাদের সমাবেশ বন্ধ করতে চায়, পুলিশ বাহিনী দিয়ে সমাবেশ বন্ধ করতে চায়? সাহস থাকলে কাউন্টার প্রোগ্রাম করে দেখাতেন। সাহস নেই। ১০টা লোকও আসে না। ভাড়াটিয়া লোক আনে। ডিসি-এসপিদের দিয়ে লোক আনায়। বুঝি এটা আমরা। না হলে এমন করুণ পরিণতি হয়? ১৫৪টা আসন আনকনটেস্টেড হয়ে যায়? আর বাকি রয়েছে কি? বাকিগুলোও করে ফেলবেন। ওটা কোন ইলেকশন নয়। এটা যে সিলেকশন হয়েছে তা আজকে জাতির কাছে পরিষ্কার। দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার। তাই মানুষ আজকে ধিক্কার দিচ্ছে। ধিক্কার দেই আমরা এই সরকারকে।

পুলিশের প্রতি বক্তব্য 
পুলিশকে লক্ষ্য করে খালেদা জিয়া বলেন, কি করছেন? আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোন বিরোধ নেই। আপনারা দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু আমি মনে করি যে, দায়িত্বটা সুন্দরভাবে পালন করুন। সম্মানের সঙ্গে থাকুন যেন আমরাও কাজ করতে পারি। আপনারাও কাজ করতে পারেন। আপনারা পুলিশ বাহিনী। কিন্তু এটা তো ঠিক নয় যে, আমাকে আমার বাড়ি থেকে বের হতে দেবেন না। এটা তো ঠিক নয়। এখানে আপনাদের যে অফিসার ছিল, সে গেল কোথায়। তার সঙ্গে তো আমি কথা বলতে চেয়েছি। সে কোথায়? কেন আমার পথ আটকিয়েছে? কেন সে আসছে না এখন সামনে? এতক্ষণ তো অনেক কথা বললেন। এখন মুখটা বন্ধ কেন? এই যে মহিলা। আপনার মুখটা এখন বন্ধ কেন? বলেন তো কি বলছিলেন এতক্ষণ ধরে। মুখটা বন্ধ কেন এখন? দেশ কোথায়? গোপালী? গোপালগঞ্জ জেলার নামই বদলে যাবে বুঝেছেন? গোপালগঞ্জ আর থাকবে না।

সরকারের প্রতি বক্তব্য 

সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, আল্লার গজব পড়বে, আপনারা যা শুরু করে দিয়েছেন। কতগুলো আলেমকে হত্যা করেছেন। এতিমকে হত্যা করেছেন। কতগুলো বিডিআর অফিসারকে হত্যা করেছেন। সেদিন কোথায় ছিল হাসিনা? এতগুলো অফিসারকে মারলো। ৫৭ জন অফিসার হত্যা করলো। সেদিন হাসিনার এ ফোর্স কোথায় ছিল? কেন সে পাঠায়নি। আসলে তো সে নিজেই জড়িত ছিল বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে। সেজন্যই আজকে, নতুন নতুন অনেক অপরিচিত চেহারা দেখা যায়। যাদেরকে চেনা যায় না যে, তারা আসলেই বাংলাদেশী কিনা। বাংলাদেশের আজকের যে কর্মসূচি ছিল, আপনারা যদি দেশকে ভালবাসতেন, তাহলে আজকে ছিল আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং মার্চ ফর ডেমোক্রেসি ছিল আমাদের কর্মসূচি। আপনারা গণতন্ত্রও চাবেন না, দেশ রক্ষা করতেও দেবেন না। গোলামি করবেন? দালালি করবেন? এই গোলাম তো রাখবে না। লেন্দুপ দোরজি’র ইতিহাসটা পড়ে দেখুন। সেও কিন্তু টেকেনি বেশিদিন। তাকেও বিদায় দিয়েছে এত দালালি করে, দেশ বিক্রি করে। কাজেই এই দেশ বিক্রি চলবে না। দেশ রক্ষা হবেই ইনশাআল্লাহ।

পুলিশের প্রতি বক্তব্য 

পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, হাসিনার দালালি করে লাভ হবে না। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে থাকুন। জনগণের সঙ্গে থাকুন। দেশের মানুষের সঙ্গে থাকুন। তবেই কাজে দেবে। দেশ বাঁচবে, মানুষ বাঁচবে। আজকে সবার দায়িত্ব হয়ে গেছে দেশ বাঁচানোর। মানুষ বাঁচানোর। আর আপনারা ঘরে ঢুকে এখন মানুষ হত্যা করছেন। মনে করেন যে, এগুলোর হিসাব নেই? এই মা-বোনের কান্না। এই আলেমে দ্বীনের কান্না, বিডিআর অফিসারদের স্ত্রীদের কান্না এগুলো কি বৃথা যাবে? এগুলো কোনও দিনই বৃথা যাবে না। আজকে যারা এই জুলুম-নির্যাতন করছেন তাদেরকেও এদের মতো একদিন চোখের পানি ফেলতে ফেলতে চোখ বন্ধ হয়ে যাবে। এখনও সময় আছে।
এ সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তখন তাদেরকে বিরোধী নেত্রী বলেন, ধাক্কাধাক্কি বন্ধ করুন। আমরা কোন ধাক্কাধাক্কি করতে আসিনি। আমি বলছি, আপনারা চাকরি করেন, চাকরি করবেন। কিন্তু এ রকম আমাদের গায়ের উপরে উঠে পড়বেন না। দূরে থাকুন। আপনাদের জায়গা যেখানে সেখানে থাকুন। আজ আপনাদের তো রাস্তার উপর থাকার কথা। আপনারা বাড়ির মধ্যে এসে গেছেন কেন? আপনাদের মেয়েরা এত ঝগড়া করে কেন? উত্তেজিত ও ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আরও বলেন, এই মেয়েরা। চুপ করো। ক’দিনের চাকরি হয়েছে যে, এত কথা বলো? কিসের জন্য এত কথা বলো? চুপ থাকো। বেয়াদব কোথাকার। আপনার অফিসার কোথায় গেল? আসলো না? তাদের বলবেন, আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাই। বুঝেছেন? কি বোঝেননি কথাটা। এটা তো বাংলাভাষা। নাকি অন্য কোন ভাষায় বলতে হবে আপনাদেরকে। বুঝেছেন? সেই অফিসার কোথায়? তাকে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলবেন।’

Where Are We Heading?

1

By Sabuz Khan

Since the 1947’s India-Pakistan separation – West Pakistan imposed Urdu as the official language of East Pakistan and proposed to write Bengali in Arabic scripts. Fuelling outrage amongst the people, where the majority (54%) speaks in Bengali, leading to a country-wide Language Movement outcry and criticism. Pakistan finally decided to recognise Bangla as the second official language in 1956, followed by the major protest in 1952. The thought of having an independent country has started since then.

What a wonderful language. Many have given lives; you’re familiar with some of them. Now we speak Bengali (some speaks Hingli*) – and proudly celebrate 21st February every year.

CHANGE IN STATE OF PLAY!
India is a passing craze! Indian TV channels are getting increasingly popular in Bangladesh, influencing the country’s culture and lifestyles. Bangladesh pays hefty annual subscription fees of appx. BDT 1,706,532,410, whereas Bangla channels are banned in India.

Bollywood songs are played in Bangla serials & movies, including the concerts paying tribute to the national events days. People happily use Hindi terms/words in their daily conversations and Social Medias. Non-resident Bangladeshis’ shamelessly speaks in Hindi/Urdu. National politics itself is far involved with India, than any time before!

The idea is pathetic. We have given lives to earn our independence from one country – now handing over ourselves to another.