নিম্ন আদালত সম্প্রতি মানি লন্ডারিং মামলায় তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছে। এটি নিঃসন্দেহে বিএনপি নেতা-কর্মীদের জন্যে একটি সুখবর! আওয়ামী পন্থী ও চেতনা লিমিটেডের জন্যে বিরক্তিকর ও বটে। কিন্তু, আমি বা আমার মত সাধারণ মানুষ যারা সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত নয় অথচ রাষ্ট্রের ভবিষ্যত চিন্তায় কিছুমাত্র হলেও চিন্তিত, তাদের মনে কয়েকটি প্রশ্ন পেন্ডুলামের মতই দুলছে। তবে কি সরকার তারেক রহমানকে খালাস দিয়ে নিজেদের ভবিষ্যত মামলার হাত থেকে পরিত্রানের উপায় খুঁজে নিল? নাকি শেষ সময়ে এসে প্রমান করতে চাইছে যে বিচার বিভাগ স্বাধীন ভাবে কাজ করে এবং এর ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। নাকি এর মাধ্যমে জনগনের আই ওয়াশের ব্যবস্থা করা হলো যে এই সরকারের অধীনেই নির্বাচন সুষ্ঠু এবং প্রভাবমুক্ত হতে যাচ্ছে।
তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেই যে উপরিল্লিখিত ধারণা সকল সঠিক তাহলে আরেকটি প্রশ্ন অবারিত ভাবে উঠে আসে। আর সেটি হলো, তাহলে কি অপরাপর বিএনপি নেতাকর্মী, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মী সহ সকল মিথ্যা মামলার আসামীরা খালাস বা মুক্তি পাচ্ছেন অচিরেই? নাকি এসবই সাজানো নাটক মাত্র! বিএনপির কাছেও জনগন অন্তত এটুকু প্রত্যাশা করবে যেন তারা ক্ষমতা লাভের উপায় হিসেবে কোনো প্রকার অলিখিত চুক্তিতে নিজেদের আবদ্ধ করে জনগনের সাথে হঠকারিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন না করেন।
আর যদি ধরে নেয়া যায় আমাদের অনুমান সঠিক নয়, সে ক্ষেত্রে বুঝতে হবে সরকার এর আগামী পদক্ষেপ কি হতে পারে? তারা কি একদলীয় নির্বাচন থেকে জনগনের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নেবার কৌশল হিসেবে এই রায়টিকে ব্যবহার করছেন? নাকি নিম্ন আদালতের এই রায়ের পর উচ্চ আদালত থেকে আরো কঠোরতর রায় আসছে শীঘ্রই?
জনগনের জন্যে এবং জনগনের দ্বারা নির্বাচিত যে কোনো সরকার জনগনের উন্নতিকল্পে নিরপেক্ষভাবে কাজ করবেন এটাই জনগনের প্রত্যাশা। জনস্বার্থে যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহনের আগে যদি সরকার সুশীল সমাজের মতামত গ্রহণের পাশাপাশি জনগনের প্রত্যাশা এবং মতামত জেনে সিদ্ধান্ত নেন নিঃসন্দেহে তা হবে দেশ ও জাতির জন্যে মঙ্গলজনক। আগামীতে যে সরকার ই নির্বাচিত হোক, জনগনের প্রত্যাশা ও স্বার্থ রক্ষাকে অগ্রাধিকারদান পূর্বক জাতীয় উন্নতিকল্পে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবেন এইটুকু আশা করা যেতেই পারে। সেই সাথে মামলা-হামলা বর্জিত একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠবে এমনটাই কামনা ও প্রার্থনা করি আমরা।