You arrogant ass! You killed us!

1

You arrogant ass! You killed us! অহংকারী গর্দভ! তুমি আমাদেরকেই মেরে ফেললে!

The Hunt for Red October মুভীটি অনেকেই দেখেছেন। সদ্যপ্রয়াত লেখক টম ক্ল্যান্সি’র থ্রিলার অবলম্বনে বানানো এই ছবিটিকে সাবমেরিন লড়াইএর যাবতীয় মুভীগুলির অন্যতম সেরা বলা হয় (সাধারনত জার্মান ক্ল্যাসিক Das Boot ছবির পরেই)/ টান টান, রুদ্ধশ্বাসের পুরো ছবিটির ক্ল্যাইম্যাকটিক একশন দৃশ্যটি থিলার এর চরম উৎকর্ষতায় উন্নীত। এই ক্ল্যাইম্যাক্স সীন থেকেই মনে দাগ কেটে থাকা উপরের লাইনটি নেয়া। নীচে ইউটিউবের দুই মিনিটের ভিডিওটিতে এই চূড়ান্ত মূহুর্ত গুলি আছে। তার আগে যারা ছবিটি দেখেন নি কিংবা উইকিপেডিয়া বা IMDb তে যাওয়ার সময় নেই, তাদের জন্যে কিছুটা অবতরনিকা।

৮০’র দশকের শুরুতে কোন এক তীব্র শীতের ভোরে এক সোভিয়েত নেভাল বেস থেকে প্রথম পে্ট্রলে বের হলো সোভিয়েত নেভীর নতুনতম সংযোজন, টাইফুন ক্লাস মিসাইল সাবমেরিন Red October। এই নতুন সাবমেরিনে প্রথম সংযোজিত হয়েছে এক রিভলিউশনারী প্রযুক্তি, ম্যাগনেটো-হাইড্রোডাইনামিক প্রোপালশন সিস্টেম, যেটা কোনো প্রপেলার ছাড়া নি:শব্দে পানি নীচে সাবমেরিনকে চালিত করবে। নি:শব্দে , রাডার এড়িয়ে চলতে পারাই সাবমেরিনের সবচেয়ে আকাংখিত বৈশিষ্ট্য। নতুন প্রযুক্তির এই নতুন সাবমেরিনের ক্যাপ্টেনের দ্বায়িত্ব দেয়া হলো সোভিয়েত নেভীর সবচেয়ে চৌকষ আর অভিজ্ঞ সাবমেরিনার মার্কো রেমিয়াস (শন কনোরী) কে। কিন্তু নেভীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মোটেই আচ করতে পারে নি যে ক্যাপ্টেন মার্কো রেমিয়াস এর মনে রয়েছে সম্পূর্ন অন্যরকম বাসনা।

দীর্ঘদিন ধরে ধীরে ধীরে রেমিয়াস সোভিয়েত রাষ্ট্রব্যবস্থার উপরে বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠছিলেন। তিনি ভালোই বুঝতে পেরেছিলেন যে এই নতুন নি:শব্দ প্রযুক্তি শীতলযুদ্ধের ব্যালেন্স ওফ পাওয়ার কি রকম উল্টে দেবে। কারন এই প্রযুক্তির সাহায্যে ষোলটি নিউক্লিয়াস মিসাইল সমৃদ্ধ এক একটি টাইফুন-ক্ল্যাস সাবমেরিন একেবারে আমেরিকার উপকূলে চুপকরে বসে থাকতে পারবে এবং এর ফলে সোভিয়েত ইউনিয়ন যেকোন সময়ে অতি দ্রুত মিসাইল লন্চ করে ব্যালেন্স পাল্টে দেয়া আকস্মিক ফার্স্ট স্ট্রাইক ক্যাপেবিলিটি অর্জন করবে। রেমিয়াস সিদ্ধান্ত নেয় যে সে এই নতুন সাবমেরিন নিয়েই আমেরিকার পক্ষে ডিফেক্ট করবে যেনো এই প্রযুক্তি একটি পরাশক্তির কুক্ষিগত না থাকে। রেমিয়াস তার সাবমেরিনের অন্যান্য অফিসারদেরকেও আগে থেকে বুঝিয়ে সুজিয়ে সম্মিলিত ডিফেকশনের পক্ষে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। রেমিয়াস Red October ঘাটি ত্যাগ করার আগ মূহুর্তে পাঠানো এক চিঠিতে নেভীর উচ্চতম কর্মকর্তাদের তার ডিফেকশনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।

এই সংবাদটি পাওয়া মাত্রই সোভিয়েত নেতৃত্বে চরম তোলপাড় শুরু হয়। আটলান্টিকে থাকা সকল সোভিয়েট নৌযানকে আদেশ দেয়া হয় যেভাবেই হোক রেড অক্টোবরকে খুজে পেয়ে ধ্বংস করতে। রেড অক্টিবরের আমেরিকা যাত্রাপথে সবচেয়ে কাছা কাছি ছিলো সোভিয়েট অ্যাটাম সাবমেরিন (সাবমেরিন শিকারী) Konovalov আর আমেরিকান সাবমেরিন ইউএসএস ডালাস। এদের কাছে কিছুক্ষনের জন্যে রেড অক্টোবরের উপস্থিতি রাডারে ধরা পরে। এরপরেই শুরু হয় আটলান্টিকের গভীরে রেড অক্টোবর, কোনোভালভ আর ডালাস এই তিন সাবমেরিনের ইদুর-বেড়াল খেলা এবং এটিই ছবিটির মূল ঘটনা।

শিকারী সাবমেরিন কোনোভালভ এর ক্যাপ্টেনের দ্বায়িত্বে ছিলো ভিক্তর তুপোলেভ নামের একজন অফিসার। এই তুপোলেভ আবার রেড অক্টোবরের ক্যাপ্টেন রেমিয়াসেরই একজন প্রাক্তন ছাত্র এবং সাবমেরীন যুদ্ধের আসল দীক্ষাই তার হয়েছে রেমিয়াসের হাতে। কিন্তু অহংকারী, দূর্বিনীত এবং মতান্ধ তুপোলেভ, তার লিবারেল, জনপ্রিয় শিক্ষক রেমিয়াস মনে মনে আগে থেকেই তীব্র অপছন্দ করতো এবং এবার আসল সাবমেরীন যুদ্ধে তার শিক্ষককে হারিয়ে দিয়ে ধ্বংস করার সুযোগ পেয়ে তুপোলেভ একেবারে মরীয়া এবং একরোখা হয়ে পড়ে। রেড অক্টোবরকে ধাওয়া করার মধ্যে মরীয়া তুপোলেভ একের পর এক ঝুকিপূর্ন সিদ্ধান্ত নিতে থাকে। তুপোলেভ এর অধীনস্থ অফিসাররা, বিশেষত তার এক্স-ও (এক্সিকিউটিউভ অফিসার) বার বার তুপোলেভকে সতর্ক করে যে তার পদক্ষেপগুলি কোনোভালভকেই বিপন্ন করতে পারে। কিন্তু একগুয়ে, অহংকারী তুপোলেভ কোনো কথাই কানে তোলে না। আর জাহাজে ক্যাপ্টেনের আদেশের অমান্য করা মানে সরাসরি বিদ্রোহ করা, যা নেভীতে প্রায় অমার্জনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত।

অ্যাকশনের চূড়ান্ত মূহুর্তে রেড অক্টোবরকে হাতের কাছে পেয়ে তুপোলেভ আরেকটি হটকারী সিদ্ধান্ত নেয়। সাবমেরীন থেকে নিক্ষেপ করা টর্পেডোতে একটি সেফটি সুইচ থাকে, যে সুইচটি নিক্ষেপের পর বেশ কিছুদূর যাওয়ার পরে অটোমেটিক্যালী ওফ হয়ে যেয়ে টর্পেডোর বিস্ফোরককে আর্মড করে ফেলে। এর কারন যদি সেফটি অন না থাকে, তবে এই সব টার্গেট সিকিং টর্পেডো সবচেয়ে নিকটস্থ জাহাজ হিসেবে, নিক্ষেপকারী সাবমেরীনকেই টার্গেট চিহ্নিত করে ঘুরে আসতে পারে। রেড অক্টোবর যখন খুব কাছে, তখন এক্স-ও’র তীব্র আপত্তি উপেক্ষা করে, নিজেই সুইচ টিপে, তুপোলেভ কোনোভালভ সাবমেরিন থেকে সেফটি ওফ করা টর্পেডো ছুড়ে রেড অক্টোবরের দিকে।

রেড অক্টোবরের ক্যাপ্টেন রেমিয়াসের কৌশলের ফলে শেষ মুহুর্তে তুপোলেভ এর ছোড়া টর্পেডো ঘুরে আসে তার সাবমেরীন কোনোভালভ এর দিকেই অমোঘভাবে। যখন নিশ্চিৎ মৃত্যু আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড দূরে, তখন তুপোলেভ এর এক্স-ও তীব্র ঘৃনাভরে তুপোলেভকে বলে

You arrogant ass! You killed us! অহংকারী গর্দভ! তুমি আমাদেরকেই মেরে ফেললে!

একেবারে শেষমুহুর্তে নিস্ফল গালি দেবার চেয়ে আগে থেকেই কোনো পদক্ষেপ নেয়া দরকার নয় কি?

One thought on “You arrogant ass! You killed us!

  1. Liked it! The last line says it all-“একেবারে শেষমুহুর্তে নিস্ফল গালি দেবার চেয়ে আগে থেকেই কোনো পদক্ষেপ নেয়া দরকার নয় কি?”

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s