মুহম্মদ জাফর ইকবাল-এই দশকের আগাচৌ

2

[এই লেখাতে প্রথমে বলা হয়েছিলো যে জাফর ইকবাল চরম মিথ্যাচার করেছেন এই বলে যে, বিএনপি ক্ষমতায় এসে হেফাজতের ১৩ দফা বাস্তবায়ন করবে। বিএনপি যদিও এপ্রিলে ১৩ দফা দেয়ার পরে বলেছিলো যে তারা ১৩ দফা কে পুরো সমর্থন করে না তবু এর পরে অনেক নেতা এমন সব বিবৃতি দিয়েছেন যাতে মনে হয় বিএনপি হেফাজতের ১ দফাকে সমর্থন করে। সুতরাং এই ক্ষেত্রে জাফর ইকবালকে মিথ্যাচার করেছেন বলা যায় না।]

আব্দুল গাফফার চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম, সংষ্কৃতি ও রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবি পরিমন্ডলে এক উজ্জল নক্ষত্র। জনগনের মধ্যে তিনি খ্যাতির চূড়ায় ওঠেন এরশাদের সময় হতে নব্বই দশকে। সেই সময়ে তার লেখা কলাম ছিলো দেশের সকল রাজনীতি সচেতন নাগরিকের জন্যে অবশ্যপাঠ্য। অবশ্য সেই সময়েই যারা দেশের সংবাদ মহলের পুরাতন দিকপালদের সাথে কথাবার্তা বলেছেন, তারাই আব্দুল গাফফার চৌধুরী সম্পর্কে অনেক অনেক অপ্রিয় কথা শুনেছেন। নিজের জীবন-অভিজ্ঞতা নিয়ে গালগল্প ফাদা, মিথ্যে name-dropping, সহকর্মীদের সাথে অসততা আরো অনেক কিছু। কিন্তু সেই সময়টা ছিলো মিডিয়া জগৎ এ অভিজাততন্ত্র। যারা ছিলেন মিডিয়া এলিট, তাদের কর্ম ও চিন্তা নিয়ে সাধারন নাগরিকদের সমালোচনা-বিশ্লেষন, মিডিয়ার দারোয়ানদের চোখ এড়িয়ে গনমাধ্যমে প্রকাশের উপায় ছিলো না।

আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-০১ সরকারের শেষ বছরগুলোতেই গাফফার চৌধুরীর নক্ষত্র পতন শুরু হয়। তার গালগল্পের সরস সমালোচনা ব্যংগ, মিডিয়ার নিজস্ব জগৎ ছাপিয়ে জনমানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়া শুরু হয়। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের অন্ধ তোষন এবং সেই সরকারের দেশব্যাপী তষ্করসর্দারদের সমর্থন, সাধারন মানুষের কাছে গাফফার চৌধুরীর মনোবৃত্তিক সততার স্বরূপ উন্মোচিত করে ফেলে। এছাড়া রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে তার একের পর এক বিভ্রান্ত বিশ্লেষন তার বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্যতাও স্পষ্ট করে তোলে। অবস্থা এমন দাড়ায় যে তিনি পরিনত হন আগামী রাজনীতির দিক প্রকৃতির সবচেয়ে বিশ্বস্থ নির্দেশক হিসেবে, তিনি যেটি বলবেন তার উল্টোটাই ঘটবে এটা ধরে নেয়া হয় নিরাপদ। আব্দুল গাফফার চৌধুরীর চূড়ান্ত পতন ঘটে ২০০২-২০০৫ এর সময়ে। একের পর এক আজগুবী কলাম লিখে তিনি পরিনত হন দেশের হাস্যস্পদ পাত্রে। শেষ পর্যন্ত তার ঠাই হয় আওয়ামী দলীয় মুখপাত্রগুলির নির্জন লোকালয়ে। সেখান থেকে তিনি আজও বের হয়ে আসতে পারেন নি। স্বয়ং আওয়ামী সমর্থকরাই তাকে নিয়ে লজ্জিত। এখন সবচেয়ে ঘোর আওয়ামী সমর্থকেরাও গনমাধ্যমে, সোশ্যাল মিডিয়াতে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লেখার রেফারেন্স, লিংক দিতে দ্বিধা বোধ করে। তার নাম নেয়াটাও মনে করে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্মানের জন্যে দারুন ক্ষতিকর।

শিক্ষা-দীক্ষা এবং ব্যাক্তিগত-প্রফেশনাল অর্জনে মুহম্মদ জাফর ইকবাল আব্দুল গাফফার চৌধুরীর চেয়ে অনেক এগিয়ে কোন সন্দেহ নেই। নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক সীমাবদ্ধতা লুকিয়ে আবেগের সুক্ষ ও দক্ষ প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক মধ্যমপন্থী জনগন ও আধুনিকতার আদর্শবাদী তরুন প্রজন্মের কাছে তিনি এক ও অদ্বিতীয় অবস্থানে উঠে যান গত দুই দশকে। তার মনন জগৎএ যে এক তিক্ত ও বিশাল বিকলাংগতা আছে সেটা কেবলমাত্র যারা বিশ্বসচেতন এবং প্রকৃত প্রগতিশীলতা নিয়ে ওয়াকিবহাল ছিলেন তারাই দেখতে পেতেন। তিনি তার বুদ্ধিবৃত্তিক বিকলাংগতাকে মানুষের কাছে অনেকদিক পর্যন্ত লুকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন কারন তিনিও দেশের মিডিয়া জগৎ এর অপত্য স্নেহ ও সম্মানের পাহারাদারীতে সুরক্ষিত ছিলেন। কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক বিকলাংগতা, শারীরিক সমস্যার মতোই জনসাধারনের সামনে বেশীদিন লুকিয়ে রাখা যায় না, বিশেষ করে যদি জনসম্মুখে বিচরন হয় প্রায়শ ও নিয়মিত।

গত কয়েক বছরে মুহম্মদ জাফর ইকবালের বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্যতা সাধারন মানুষের সামনে উন্মোচিত হতে শুরু হয়েছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কারনে এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে সবার মাঝে অতি দ্রুত। তার চিন্তাচেতনা এখন আর আগের যুগের মতো অভিজাত মিডিয়ার অন্দরে সুরক্ষিত নয় বরং এখন তা পাবলিক ডিসকোর্সের অংশ এবং এই পাব্লিক ডিসকোর্স এর গতিপ্রকৃতি দেখে এটি ভবিষৎবাণী করা মোটাই রিস্কি নয় যে যে পথ যাত্রা করে আব্দুল গাফফার চৌধুরী আজকে রাজনৈতিক বোদ্ধামহলে হাস্যস্পদ ও অপাংক্তেয় পরিনত হয়েছেন, মুহম্মদ জাফর ইকবাল অতি দ্রুত সেই পথে অনেকদূর এগিয়ে গেছেন। সেই অনুমিতি আরো শক্ত হয়েছে তার সাম্প্রতিক প্রকাশিত কলাম, “ভাবনা ও দুর্ভাবনা” এর মাধ্যমে। তার লেখার প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠছে যথারীতি আগের মতোই, কিন্তু এই ঝড় সীমাবদ্ধ কেবল তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের মধ্যেই। তার সমর্থক জনসাধারনও এখন তাকে নিয়ে এতোটা লজ্জিত বোধ করছে যে তারা আর নিজের নামকে জাফর ইকবালের চিন্তা-চেতনার সাথে জড়িত করতে দ্বিধা বোধ করছে।

জাফর ইকবাল যে একজন মৌলবাদী, অপ্রগতিশীল মানুষ এটা আর নতুন করে তুলে ধরার কিছু নেই, এটি এখন Public Knowledge। আমি আগের একটি লেখা, “একজন অনালোকিত মানুষ” এ জাফর ইকবালের মধ্যে Enlightenment মূল্যবোধের তীব্র অভাব নিয়ে লিখেছিলাম। অনেকেই বিভিন্ন বিশ্বাসে মৌলবাদীহতে পারে, মৌলবাদী হওয়া অনৈতিক কিছু নয়। কিন্তু তার সর্বশেষ লেখার মধ্য দিয়ে জাফর ইকবাল নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অনৈতিক, ভন্ড ও মিথ্যেবাদী হিসেবে। সাধারনের সামনে তার নৈতিক অবস্থানের আর কিছুমাত্র অবশিষ্ট নেই।

আজকের এই সময়ে, যখন দেশের মধ্যে বিশাল রকমের ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন হচ্ছে, যখন সারা জাতি চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন জাফর ইকবালের মতো একজন পতিত বুদ্ধিজীবি নিয়ে কথাবার্তা অযথা সময়ের অপচয় মনে হতে পারে। কিন্তু মৃত্যুর পর একটি শবদেহকে যেমন চারিদিকে পচন ছড়ানো হতে বিরত রাখার জন্যে অতি দ্রুত সৎকার করা দরকার ঠিক তেমনি একজন প্রাক্তন প্রভাবশালী বুদ্ধিজীবির নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পচনের পর তার দ্রুত সৎকার করা প্রয়োজন, তা না হলে সেই পতিত বুদ্ধিজীবিও চারিদিকে পচনের রেশ ছড়িয়ে যেতে থাকে।

জাফর ইকবালের সর্বশেষ কলামে তার দ্বিচারীতা ও মিথ্যাচার নিয়ে অনেক কথাই বলা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। তবু আরেকবার সেগুলির কিছু অংশ পয়েন্ট ধরে তুলে ধরা দরকার বলে মনে করি।

জাফর ইকবালের দ্বিচারীতার সবচেয়ে স্পষ্ট উদাহরন  ২০১৩ এ বাংলাদেশে সবচেয়ে বড়ো অনিশ্চয়তার উৎস, তত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন নিয়ে তার নিস্তবদ্ধতায়। এই পুরো সময়টিতে জাফর ইকবাল মানুষের ভোটাধিকার এবং গনতন্ত্র নিয়ে কোন কথা বলে নি কারন তিনি জানেন দেশের অধিকাংশ মানুষ তার মতের বিরুদ্ধে। এই লেখায় তিনি তাচ্ছিল্যের সাথে বলেন, ” সামনে নির্বাচন। নির্বাচন কিভাবে হবে, সেটি এখনও দেশের মানুষ জানে না। দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানী-গুণী মানুষেরা এই নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। কাজেই নিশ্চয়ই কিছু একটা ফর্মুলা বের হয়ে যাবে, আমি সেটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না”/ অথচ তিনি কিন্তু ২০০৬ এর একই রকম পরিস্থিতিতে খুব ভালো মতোই মাথা ঘামিয়েছিলেন। অজস্র কথা বলেছিলেন সুষ্ঠু নির্বাচন এবং নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে। তার সেই বিখ্যাত কলাম, ‘একজন অসুখী রাষ্ট্রপতি’ (০৩.১১.০৬)র কথা নিশ্চই তার স্মরনে আছে।

সেই লেখায় ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখার জন্যে সংবিধানের অজুহাত তোলা বিএনপি এবং বিএনপি সমর্থিত রাষ্ট্রপতি ইয়াজুদ্দীন নিয়ে জাফর ইকবাল অনেক কথাই বলেছিলেন। এমনকি দেশের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ক্ষোভকেও তিনি অতি সংবেদনশীলতায় অনুধাবন করতেন। “‘১৪ দলের কর্মীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ এবং ক্রোধ বিস্ফোরনের মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণটুকু একটা ষড়যন্ত্রের মতো, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা, ক্রোধোম্মত্ত কর্মীরা হাতের লগি এবং বৈঠা নিয়ে এখন কি করবে…?”  তিনি আওয়ামী নেতাকর্মীদের ক্ষোভকে খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারেন। আজকে প্রতিপক্ষের ক্ষোভ অনুধাবনের বিন্দুমাত্র চেষ্টা তার নেই।

আজকে আওয়ামী লীগের পুরোদেশের জনমতের বিরুদ্ধে যেয়ে সংবিধানের অজুহাত তুলে ক্ষমতা আকড়ে ধরা নিয়ে তার কোনো কিছু বলার নেই, ‘একজন অসুখী প্রধানমন্ত্রী’ লেখা তো দূরের কথা। এই জাফর ইকবাল একজন ধর্মনিরপেক্ষতার অনুসারী হতে পারেন, তিনি একজন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’র অতন্দ্র সৈনিক হতে পারেন, কিন্তু তিনি কোনো রকমেই একজন গনতন্ত্রী নয়। তিনি একজন দলান্ধ, দ্বিচারী। এই জিনিষটি দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়েছে গত কয়েক মাসে।

জাফর ইকবাল যেই দলের একনিষ্ঠ অনুসারী, সেই দলকে রক্ষার সকল চেষ্টায় এতটাই উন্মত্ত হয়েছেন যে তিনি তার ইতিহাসজ্ঞানও পুরো গুলে ফেলেছেন। তিনি লিখেন, “একাত্তরে এই রাজনৈতিক দলটি যা যা করেছিল এখন তারা আবার ঠিক সেই একই কাজগুলো করতে শুরু করেছে। তারা হিন্দুদের আক্রমণ করছে, তাদের বাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে, ট্রেন লাইন তুলে ফেলছে”/ দিনরাত ৭১ এর নাম জপরত জাফর ইকবাল বিস্মৃত হয়েছেন যে ১৯৭১ এ যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীই পাকহানাদার বাহিনীর চলাচল বিঘ্নিত করতে সংগত কারনেই রেললাইন, ব্রীজ ধ্বংস করতো। সেই সময়ে তার ঘৃনিত রাজাকার বাহিনীকেই পাকবাহিনী রেললাইন পাহাড়া দিতে নিয়োজিত করতো।

জাফর ইকবালের মধ্যে এই জ্ঞানটুকু থাকার আশা করা বৃথা যে ২০১৩ তে দেশের মধ্যে সংখ্যালঘুদের উপর যাবতীয় সংঘবদ্ধ আক্রমনে জামাত-শিবিরের চেয়ে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে অনেক বেশী। সম্প্রতি পাবনায় ঘটে যাওয়া আক্রমনে সংশ্লিষ্টদের সাথে আওয়ামী নেতৃত্বের সম্পর্ক দেখিয়ে দিয়েছে ডেইলী স্টারের ছবিতে। সিপিবি নেতা মুজাহিদ সেলিম স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে , পাবনায় “সংখ্যালঘুদের উপরে হামলায় আওয়ামী লীগ জড়িত”/  স্বয়ং আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেছেন যে সাঁথিয়ার ঘটনার জন্য স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দায়ী। সংবাদের এই রূপ তার চোখে পরে না। সর্বত্র তিনি কেবল জামাত-শিবির আর বিএনপি’র কালো হাতই দেখেন। তার মনোবৈকল্য এতটাই হয়েছে যে তিনি যদি চোখের সামনে দেখেন শেখ হাসিনা সংখ্যালঘুদের বাসায় আগুন দিচ্ছে তবে তিনি লিখবেন হাসিনার ছদ্মবেশে খালেদাই এই হামলা করছে।

জাফর ইকবাল অনৈতিকতার চূড়ান্তে পৌছেছেন এই কথাগুলির মধ্য দিয়ে। ” আজকাল দেশের গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকাগুলো জরিপ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করে নিয়ে আসছে। মজার ব্যাপার হলো, ১৬ কোটি মানুষের দেশে হাজার দেড়েক মানুষের জরিপ নিলেই ১৬ কোটি মানুষের মনের কথা বের হয়ে আসছে!” / জাফর ইকবাল নিজেকে বাংলাদেশে বিজ্ঞান সচেতনতার একজন পুরোধা মনে করেন। দেশের শিশু কিশোরদের গানিতিক দক্ষতার বিকাশে তিনি অনবদ্য ভূমিকা রাখেন। এই তিনিই তার রাজনৈতিক আনুগত্যের কারনে অতি সাধারন বিজ্ঞান ও গানিতিক জ্ঞান নিয়ে তাচ্ছিল্য করার মতো নীতি বিবর্জিত কাজ করতে দ্বিধা বোধ করেন না। পরিসংখ্যান নিয়ে জ্ঞাত, যে কোন কলেজ পড়ুয়া ছাত্রই জানে র‍্যান্ডম স্যাম্পলিং এর শক্তিশালী প্রতিনিধিত্বের কথা। আজকের দুনিয়ার রাজনীতি নিয়ে ওয়াকিবহাল যে কেউ জানে যে দেশে দেশে বিভিন্ন রকম পোলিং এর বহুল ও নিয়মিত ব্যবহারের কথা। জাফর ইকবাল আমেরিকা নিয়ে তরুন প্রজন্মকে উপদেশ দিতে খুবই পছন্দ করেন। তিনি নিশ্চই জানেন যে আমেরিকায় প্রায় প্রতিদিনই কিভাবে বিভিন্ন রকম পোলিং এর ফলাফল বের হয়। তিনি যদি গনিত নিয়ে সামন্যতম আগ্রহী হন তবে এটাও নিশ্চই জানেন যে আমেরিকায় ৩৩ কোটি লোকসংখ্যার জন্যে দেশব্যাপী পোলিং এর গড় স্যাম্পল সাইজ এক থেকে দেড় হাজার।

অথচ এই স্যাম্পল সাইজ নিয়েই গন্ডমূর্খের মতো জাফর ইকবাল বিনোদন করতে চান মজার কথা! আশ্চর্যবোধক চিহ্ন দিয়ে / আসল কথা জাফর ইকবাল জেনে শুনেই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতামত থেকে দৃষ্টি অন্যত্র ফিরাতে চান। তিনি যে দলের অনুসারী, তাদের অগনতান্ত্রিক ক্ষমতাকে বৈধ করতে তিনি সবকিছু করতে প্রস্তুত। নিজের অযৌক্তিক ও অবৈজ্ঞানিক মানসিকতাকে মানুষের কাছে স্পষ্ট-নগ্ন করার পূর্ন রিষ্ক নিয়েও।

সবার মনে হতে পারে যে আজকে যখন চারিদিকে এতো বড়ো বড়ো ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, রাজনীতির রুইকাতলাদের মধ্যে প্রবল আলোড়ন চলছে, নিকট ও দূরের পরাশক্তিরা যখন বাংলাদেশকে নিয়ে সবার সামনে অভূতপূর্ব দাবার চাল খেলছে, তখন জাফর ইকবালের মতো একটি ছোট মাছ নিয়ে সময় নষ্ট করার মানে কি? এর দরকার আছে। আমাদের রাজনীতি সচেতনায় জাফর ইকবাল একটি  confounding factor. আমাদের দেশের সমস্যার স্বরূপ বুঝতে পারা ও তার বিশ্লেষনকে তিনি দুই দশক ধরে তার কিশোর-সাহিত্যিক আবেগ ব্যবহার করে মানুষকে confound করেছেন। সৌভাগ্যক্রমে সাধারন মানুষ এই confounding factor টিকে অবশেষে আইডেন্টিফাই করতে পেরেছে। এখন এই   confounding factor টিকে যত দ্রুত isolate করে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর মতো রাজনীতির পাব্লিক ডিসকোর্স থেকে দূরে সরিয়ে ফেলা যাবে, ততই দেশের চিন্তা জগৎ এর পরবর্তী বিবর্তন ত্বরান্বিত হবে।

Links

1/ https://nuraldeen.com/2013/10/09/%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%9C%E0%A6%A8-%E0%A6%85%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%B7/

2/ http://www.amadershomoybd.com/content/2013/11/07/news0025.htm

2 thoughts on “মুহম্মদ জাফর ইকবাল-এই দশকের আগাচৌ

  1. অসাধারণ লেখা। লেখাটা bdnews24.com পাঠিয়ে দেন। কারণ ওরাই জাফরইকবাল নামক লাশটাকে বহন করছে। আরও সুন্দর ও বিশ্লেষন ধর্মী লেখা চাই।

  2. Mr. writer. You are walking on the same path of the mentioned biased intellectuals. Your analysis doesnot contain in-depth analysis of both side of the real facts going on, rather biased support to promote one party’s agenda…. BNP will surely form government and Jamat will be there too… Will see your analysis and comment then if you found to be another Gaffar Chowdhury….. this is a good writing though.

Leave a comment