জিয়া কবরে ফুল চান নাকি অন্য কিছু?

Zia কারাগার থেকে বের হয়ে বিএনপি নেতারা প্রথমে ছুটে যান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে। ইদানীংকালে টেলিভিশনে বিএনপি নেতাদের জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিতে বেশি বেশি দেখা যাচ্ছে। এর অবশ্য একটা ব্যাখ্যা হলো- আওয়ামী লীগ দ্বারা বিএনপি নেতাদের গ্রেফতারের হার নজিরবিহীনভাবে বেড়ে যাওয়ার সুবাদে জামিনে মুক্তির সংখ্যাও বেড়েছে। আর সেকারণে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। ঘটনার সংখ্যা বাড়লেও টেলিভিশনের ক্যামেরায় দৃশ্যটি কমবেশি একই রকম দেখা যায়। যিনি বা যারা মুক্তি পেয়েছেন তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা দলবেধে মরহুম জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতে যান। ফুল দেন। তারপর ক্যামেরার সামনে কথা বলেন। সমসাময়িক কোন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেন।

প্রশ্ন হলো ৭৫ উত্তরকালে রাজনীতি যখন টালমাটাল, দেশের সেই ক্রান্তিলগ্নে হালধারণকারী একদার রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান কবর থেকে কিভাবে জীবিত নেতাদের সহায়তা করবেন? কারণ জিয়াউর রহমানের আদর্শকে তারা সঠিকভাবে ধারণ করেন কিনা সেটা যথেষ্ট অস্পষ্ট। তাদের চাল চলন, কথা বার্তা, নেতৃত্ব কোন কিছুতেই জিয়াউর রহমানের কাজের ধারাবাহিকতা তেমনভাবে সুস্পষ্ট নয়। দলীয়ভাবে বিএনপি আওয়ামী লীগের বিরোধীতা করা ছাড়া এখন নতুন কিছু উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছে।

জিয়াউর রহমানের যুগান্তকরী অসমাপ্ত পদক্ষেপ খাল কাটা কর্মসূচি কিংবা উন্নয়ন চিন্তার ধারাবাহিকতা জিয়া উত্তর বিএনপিতে তেমনভাবে দেখা যায় না। বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব জিয়ার রাজনৈতিক পদক্ষেপগুলো নিয়ে লেখাপড়াটা পর্যন্ত করেন না বলেই প্রতীয়মান হয়। জিয়াকে নিয়ে বরং লেখাপড়াটা বেশি করে আওয়ামী লীগ। যেকারণে বিএনপিকে কিভাবে মোকাবেলা করা হবে সেটা তারা প্রতিনিয়ত গবেষণা করে ঠিক করে নিতে পারছে। এছাড়াও অন্তত আওয়ামী লীগের একজন জাদরেল নেতা জিয়ার দূরদর্শী খাল কাটা কর্মসূচি নিয়ে পিএইচডি গবেষণা করেছে বলে শোনা যায়। নিন্দুকেরা অবশ্য বলেন যে, সেটা জিয়াউর রহমানকে ভালোবেসে নয় বরং নিজের আখের গোছাতেই সে জিয়াউর রহমানের খাল কাটা কর্মসূচি বেছে নিয়েছিল।

উল্টোদিকে, আজকে নদী তীরবর্তী শহরগুলোতে বসবাসকারী আওয়ামী লীগের নেতারা যেভাবে নদী ভরাট করে দখল করছে সেটা নিয়ে বিএনপির কোন গবেষণাধর্মী রাজনৈতিক পদক্ষেপ দেখা যায় না। দেশের নদীকে সচল করতে এবং মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করতে জিয়াউর রহমান যে খালকাটা কর্মসূচি চালু করেছিলেন তার ধারাবাহিকতায় বিএনপি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং পরবর্তীকালে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ পেয়েছিল। তারা সেই সুযোগ কাজে লাগায়নি।

নদী বাংলাদেশের প্রাণ। বিশ্বের কোন দেশে নদীকে মরতে দেয়া হয় না। ইংল্যান্ডে এখনো শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহমান খালগুলোকে সচল করার জন্য কাজ চলে। আর আমাদের ঢাকা মহানগরীর খালগুলোকে দখল আর ভরাট করে আমরা একটি নোংরা আবর্জনাময় শহর তৈরি করছি। যারা জিয়ার কবরে ফুল দিতে যান তারা এর কি জবাব দেবেন? ক্ষমতায় তো তারাও ছিলেন। ভারতের কাছ থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে না পারা এবং বর্ষার পানি ধরে রাখার জন্য তারা নদ-নদী খাল বিলকে কেন উপযুক্ত করে গড়ে তোলেননি সেই জবাব কি দেবেন? ফ্ল্যাশ ফ্ল্যাড মোকাবেলায় খালগুলো হতে পারত একটি বড় সহায়ক শক্তি। দেশের মানুষের চলাচল এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও নদীপথ যে ভূমিকা নিতে পারত সে ব্যাপারে জিয়ার কবরে ফুল দেয়া মানুষগুলো কি কিছু করেছেন, যেটা জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন?

বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান কখনো শেখ মুজিবকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে অস্বীকার করেননি। শেখ মুজিবও জিয়াকে পছন্দ করতেন। সেক্টর কমান্ডার জলিলকে বীর উত্তম খেতাব থেকে বঞ্চিত করলেও জিয়াকে করেননি। আর জিয়া শেখ মুজিবের পক্ষে সবসময়ই লড়াই করেছেন। সেটা ১৯৭১ সালে। এমনকি ১৯৭৬ সালেও। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্বৃত্তি দিয়েই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি শেখ মুজিবুরের ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের ধারাবাহিকতায় দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করেছিলেন। বলা যায় অকাল মৃত্যুর শিকার শেখ মুজিবুরে যোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন জিয়া। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত রাজনীতিকদের সীমাহীন দুর্নীতি ও ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে বাংলাদেশ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় শেখ মুজিব রাজনীতিকদের ব্যাপারে খুবই ক্ষুব্ধ ছিলেন। তিনি তৎকালীন নেতাদের চোর বলতেন। শেখ মুজিব রাজনীতিবিদদের দুর্নীতিতে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়ায় খুবই রুষ্ট ছিলেন, সেটা তার সেসময়কার বক্তৃতাগুলো শুনলেই জানা যায়। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতার দায়িত্ব নেয়ার পর তার সততা ও নেতৃত্ব দিয়ে একটি শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠনে ব্রতী হওয়ার পথে সকলকে তারই মতো সৎ ও নিষ্ঠাবান হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি উদাহরণ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তিনি রাজনীতিতে সেই ধারা প্রবর্তন করতে চেয়েছিলেন যেখানে নেতা শুধুমাত্র অন্যকে সৎ হতে বলবে না বরং নিজেও সকল সময় সততার চর্চা করবে। তিনি আশা করেছিলেন শেখ মুজিব যাদের ‍উপর রুষ্ট ছিলেন সেইসব দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ সোজা পথে আসবে। যেকারণে তিনি শেখ মুজিবের ডাকে সাড়া না দেয়া দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর দি পলিটিশিয়ানস’; স্বাধীনতার পরপরই সীমাহীন দুর্নীতি চর্চাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়া রাজনীতিকদের শুদ্ধ পথে আনার আগেই তাকে চলে যেতে হয়েছে।

ব্যক্তিগত সততা ও নিষ্ঠা এবং দেশের প্রতি চূড়ান্ত আনুগত্য দেখাতে পারলেও দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের দুর্নীতিমুক্ত করতে পারেননি। বরং তিনি তার পূর্বসূরি নেতা শেখ মুজিবের মতোই আততায়ীদের হাতে নিহত হলেন। শেখ মুজিব যে কম্বল চোরদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছিলেন সেই কম্বল চোরদের জন্য রাজনীতিকে ডিফিকাল্ট করার আগেই এবং সর্বোপরি একদল দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ তৈরির মাধ্যমে একটি শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক ধারা তৈরির আগেই তাকে মেরে দেয় সেই সব দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকরা। তার গড়া বিএনপিতে সেই নেতৃত্ব আর পাওয়া যায়নি যিনি ও যারা তাদের সর্বোচ্চ দেশপ্রেম দিয়ে দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের বাধ্য করবেন সৎ ও সুন্দরের পথে আসার জন্য।

সেকারণেই প্রশ্ন হলো- কবরবাসী জিয়া কি ফুল চান নাকি অন্য কিছু? শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কবরে ফুল দেয়াটা একটা গৌণ কাজমাত্র। ফুল পেয়ে মৃত মানুষ খুশি হন কিনা আজতক জানা যায়নি। কখনো জানা যাবেও না। তবে কমনসেন্স থেকে বোঝা যায় যে, কবরে ফুলের চেয়ে মৃত আত্মা বেশি তৃপ্তি পেতে পারেন যদি দেখেন যে, তার আদর্শ ও লক্ষ্য বাস্তবায়িত হচ্ছে।

বিএনপি-র রাজনীতির বিদায় ঘণ্টা কি শুনতে পাচ্ছি?

মহাজোট তৈরির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় প্রদর্শন করার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা তার পছন্দের একটি বিরোধী দল তৈরির মাধ্যমে দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রেখে আগামীতে দেশ পরিচালনা করার যে রণকৌশল নিয়ে আগাচ্ছেন সেটি সফল হলে বাংলাদেশ বিশ্বের রাজনীতির ইতিহাসে নতুন চ্যাপ্টারের সূচনা করবে। যে চ্যাপ্টারের জনক হিসেবে ইতিহাসে শেখ হাসিনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কিন্তু একে কেউ বাকশাল বা একদলীয় শাসন বলতে পারবে না।

এক.

আওয়ামী লীগের ভিতরেই আরেকটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ তৈরি হচ্ছে। এটি বিএনপি-র রাজনীতির বিদায় ধ্বনি কিনা সেই প্রশ্ন মনে আসতেই পারে। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে একাধিক শক্তিশালী দল দরকার। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ভেঙ্গে গিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য প্রতিপক্ষ তৈরি হলে বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা গণতন্ত্র চর্চার জন্য ফুরাতে বাধ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত ম্যাচিওর রাজনীতি করছেন। এই প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালের প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে তার দূরদৃষ্টির ছাপ রাখছেন। ২০২১ সালের যে রূপকল্প তিনি তৈরি করেছেন সেটি নিজ হাতে বাস্তবায়নের পথও তিনি রচনা করছেন। তিনি একটি বিষয় সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি অনেক সুদূর প্রসারী ও কূটনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। বিএনপির মতো পুকুরের পানির সারফেসে তারা বসবাস করে না।

দুই.

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির জন্মই হয়েছিল আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় রাজনীতির বিরোধীতাকারীদের নিয়ে। আমরা লক্ষ্য করি, বিএনপি-তে তারাই যোগ দিয়েছেন যারা পদ ও ক্ষমতা প্রত্যাশী কিন্তু আওয়ামী লীগে জায়গা পাচ্ছিলেন না। এই ধরনের একটি পরিস্থিতি বর্তমানে আওয়ামী লীগে বিরাজমান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখন প্রবীণ ও চেনা মুখগুলোর পরিবর্তে নতুনদের নিয়ে একটি মন্ত্রীসভা গঠন করা হয়। এতে কিছুটা হলেও নিজেদের বঞ্চিত ভেবেছেন প্রবীণ ও চেনা মুখগুলো। কিন্তু শেখ হাসিনা তাদেরকে ম্যানেজ করেছেন অত্যন্ত দক্ষভাবে।

তিন.

বর্তমানে আমরা লক্ষ্য করছি, আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রবীণ ও চেনা মুখগুলো যারা ক্ষমতা ও পদ প্রত্যাশী ছিলেন তারা আওয়ামী লীগের মধ্যে আওয়ামী রাজনীতির বিরোধীতা করছেন। এই গ্রুপে যে আওয়ামী রাজনীতিবিদগণ আছেন তাদের যেমন বিপুল জনসমর্থন ও আন্তর্জাতিক পরিচিতি রয়েছে তেমনি এই গ্রুপে সাবেক মন্ত্রী ও আমলরা রয়েছেন। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো, শেখ হাসিনা তাদেরকে যে একদম বঞ্চিত রেখেছেন তাও নয়। সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে তাদেরকে স্থান দেয়া হয়েছে। সংসদেও তাদেরকে ব্যাপক সম্মান দেখানো হচ্ছে। তারপরও তারা কিন্তু সরকারের কঠোর সমালোচনা করছেন। এবং এটি তারা অনেকটা বিনা বাধায় করতে পারছেন। সেটাই বিশেষভাবে চোখে পড়ছে। তবে কি শেখ হাসিনা আরো বড় কোন চিন্তা নিয়ে আগাচ্ছেন? তিনি কি তার চেনাজানা প্রতিপক্ষ চান?

চার.

আমরা লক্ষ্য করছি, যে সমীকরণের মধ্য দিয়ে একসময় বিএনপি-র রাজনীতিতে এই দেশের রাজনীতিবিদরা যোগ দিয়েছিল সেই সমীকরণ এখন দেশের প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ দল আওয়ামী লীগের মধ্যে তৈরি করা হয়ে হয়েছে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ যদি ভেঙ্গে আরেকটি নতুন দল তৈরি হয় তাহলে বিএনপি-র রাজনীতি বেকায়দায় পড়তে বাধ্য। বিএনপি-কে মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগের নেতাদের তৈরি করা কোন দল বিএনপি-র বদরুদ্দোজা কিংবা অলি আহমেদের দল হবে না। যে দলে সুরঞ্জিত, তোফায়েল, মান্নার মতো রাজনীতিবিদরা থাকবেন সেদলের জনসমর্থন অনেক বেশি হবে। তাছাড়া, আমার ধারণা যদি সত্যি হয়। এই দল যদি জননেত্রী শেখ হাসিনার আর্শিবাদে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কাবু করার রণকৌশল হিসেবে তৈরি হয় সেক্ষেত্রে বিএনপি-র রাজনীতি পথে বসতে বাধ্য। কারণ, সুরঞ্জিত তোফায়েলরা কোন দল গঠন করলে সেই দলে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি থেকেও নেতৃবৃন্দ যোগ দেবে। যেমনটা একসময় বিএনপি-তে আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দলের নেতারা যোগ দিয়েছিল।

পাঁচ.

মহাজোট তৈরির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় প্রদর্শন করার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা তার পছন্দের একটি বিরোধী দল তৈরির মাধ্যমে দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রেখে আগামীতে দেশ পরিচালনা করার যে রণকৌশল নিয়ে আগাচ্ছেন সেটি সফল হলে বাংলাদেশ বিশ্বের রাজনীতির ইতিহাসে নতুন চ্যাপ্টারের সূচনা করবে। যে চ্যাপ্টারের জনক হিসেবে ইতিহাসে শেখ হাসিনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কিন্তু একে কেউ বাকশাল বা একদলীয় শাসন বলতে পারবে না।

(লেখাটি ২০১১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মুসাবিদা করা হয়েছে। প্রায় তিন বছর হতে চলল। পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি। শুধুমাত্র চার নাম্বার প্যারার অধীনে লেখা কিছু বাক্য পরিবর্তন করা দরকার। সেটা আরো দুই মাস পরে করলেও চলবে। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।)

বেগম জিয়ার কাছে জাতির প্রত্যাশা

জনগণ প্রার্থনা করে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য যে বাংলাদেশ বিভক্ত নয়; যে দেশ অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতমুখী; শুধুই অতীতআশ্রয়ী নয়। যে বাংলাদেশ জনগণের; ক্ষমতাসীনদের লুটপাটের দেশ নয়। যে বাংলাদেশ প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় কিন্তু নতজানু ক্রীতদাস হতে চায় না। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জনগণ আপনার কাছ থেকে তেমন রাজনীতিই আশা করছে, যে রাজনীতি বাংলাদেশী নাগরিকদের মাথা উচুঁ করে বাঁচতে সহায়তা করবে।

খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়া

বেগম জিয়া একজন মিতভাষী মানুষ। তার শান্ত ও ধীর স্হির বক্তব্য এদেশের কোটি কোটি মানুষের পছন্দ। এমনকি যে মানুষটি বিএনপির রাজনীতি করে না সেই মানুষটিও প্রতিপক্ষের উত্তেজনাময় বক্তৃতার বিপরীতে তার ধীরস্হির ও শান্ত বক্তব্যকে প্রশংসা করে। ২০০১ সালের নির্বাচনে বেগম জিয়ার শেষ মুহুর্তের বক্তৃতা বিএনপির কয়েক শতাংশ ভোট বাড়িয়ে দিয়েছিল। ভাসমান ভোট ব্যাংকের ভোটগুলো তার দলের ভোট বাক্সে পড়েছিল। ফলে আওয়ামী লীগের চেয়ে অনেক বেশি সিট পেয়ে তিনি সরকার গঠন করেছিলেন।

তিনি রাজনীতির সঙ্গে প্রথম পরিচিত হন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধের মাধ্যমে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ একটি রাজনৈতিক লড়াইও ছিলো। সেই লড়াইয়ে তার স্বামী লে. জেনারেল (তৎকালীন সময়ে মেজর) জিয়াউর রহমান একজন লড়াকু সৈনিক হিসেবে প্রথমে ১ নং সেক্টর এবং পরে জেড ফোর্সের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। অকুতোভয় এই সেনা কর্মকর্তা জীবন বিপন্ন করে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে পাকিস্তানের কারাগারে স্বেচ্ছাবন্দী নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বীরের মতো রনাঙ্গনে লড়েছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু তাকে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বীর উত্তম উপাধি দিয়েছিলেন।

বেগম খালেদা জিয়া এমনই একজন বীর সেনার স্ত্রী, যিনি শুধু দেশ স্বাধীন করার লড়াইয়ে নিজেকে সপে দেননি, ১৯৭৫ সালে জাতি যখন গভীর সঙ্কটে নিমজ্জিত তখন দেশ রক্ষায় সাহসিকতার সঙ্গে সামনে এগিয়ে এসেছিলেন। দল মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন। যে ঝড় ঝাপটা মোকাবেলা জিয়াকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হয়েছিল, জেনারেল জিয়ার স্ত্রী হিসেবে সেই ঝড় ঝাপটা থেকে তিনিও রেহাই পাননি। প্রাণপ্রিয় স্বামীর মৃত্যুতে ভেঙ্গে পড়েননি। বরং দেশের প্রয়োজনে নিজেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করেছেন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে অনেক পরে যোগ দিলেও বেগম জিয়া অনেক ঝানু পলিটিশিয়ানের চেয়েও নিজেকে একজন প্রজ্ঞাশীল রাজনীতিক হিসেবে প্রমাণ করেছেন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে। সেকারণেই ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জনগণ তার প্রতি আস্হা রেখেছিল। দীর্ঘ নয়বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে জনগণকে গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন তিনি। আর জনগণ তাকে উপহার দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীত্ব।

একাধিকবার বাংলাদেশ পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা থেকে বেগম জিয়া নিশ্চয়ই উপলব্ধি করছেন, দেশ পরিচালনা সহজ নয়। বাংলাদেশ একটি ছোট্ট ভূখন্ড। কিন্তু ১৬ কোটি মানুষ। যখন দেশটি স্বাধীন হয়েছিল তখন লোকসংখ্যা ছিল মাত্র সাড়ে সাত কোটি। সেই মানুষদের চাহিদা পূরণ করতে গিয়েও হিমশিম খেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবেলা করে দেশ পরিচালনা করার ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিতে ব্যর্থতা এবং স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে শতাব্দীর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল ১৯৭৪ সালে। লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে মারা গিয়েছিল। শেখ মুজিব নিজ দলের মধ্যে চরম বিশৃঙখলা আর দুর্নীতির ভয়াবহতায় নিজেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, আমার কম্বল কোথায়?

স্বাধীনতার পরপর রাজনীতিতে তোষামোদকারীদের প্রাধান্য ও প্রভাব সৃষ্টি হয়েছিল। সেই ধারা জিয়াউর রহমান সততা আর সাহস দিয়ে ভাঙ্গতে চেষ্টা করেছিলেন। রাষ্ট্র পরিচালকের ব্যবস্হাপনাগত ব্যর্থতা ও তোষামোদে বিগলিত হওয়ার ফলে কি হতে পারে বাংলাদেশের মানুষ সেটি দেখেছিল ১৯৭২ থেকে ৭৫ সময়কালে। শুধু নেতার সততা ও সদুদ্দেশ্য দিয়ে যে কাজ হয় না, সৎ প্রশাসন ও ব্যবস্হাপনার যে দক্ষ টিম দরকার হয়, সেটি এই দেশের মানুষ বুঝতে পেরেছিল জিয়ার শাসনামলে। এই দুই ধারা থেকে আমাদের করণীয় জেনে নেয়া প্রয়োজন। আমাদের দরকার একজন সৎ নেতার নেতৃত্বে একটি সৎ, সুদক্ষ ও আধুনিক ব্যবস্হাপনা টিম।

সরকার পরিচালনায় আওয়ামী লীগের কর্মকান্ডে বেগম জিয়ার অসন্তুষ্টির কথা গত পৌনে পাঁচ বছরে অনেকবার আমরা শুনেছি। এখন সময় হয়েছে নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বকে জনগণের সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের দুর্বলতাগুলো তুলে ধরার। এ ব্যাপারে বিএনপি এবং এর নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের প্রস্তুতি কেমন জানি না। জনগণ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ওয়াদা বরখেলাপের বড় বড় ঘটনা দেখেছে। কিন্তু তা নিয়ে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে চুলচেরা বিশ্লেষণ দেখতে পায়নি। বিরোধী দল হিসেবে শেয়ার বাজার দুনর্ীতি, হলমার্ক দুনর্ীতি কিংবা এমন আরো বড় বড় আর্থিক দুনর্ীতির বিরুদ্ধে কার্যকর চাপ সৃষ্টি করেনি। জনগণ দেখেনি সংসদে তাদেও সরব উপস্হিতি কিংবা সাগর রুনি হত্যাকান্ডসহ অমিমাংসিত হত্যাকান্ডগুলোর ব্যাপারে সোচ্চার হতে। ভারতের সীমান্ত হত্যার প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির সুনির্দিষ্ট ও কঠোর সমালোচনা জনগণের সামনে ফুঁটে উঠেনি। আরো অনেক বিষয় রয়েছে যেখানে শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকা দেখা যায়নি, যা জনগণের একান্ত প্রত্যাশা ছিল।

নির্বাচনের সময় যতো ঘনিয়ে আসছে টেনশন বাড়ছে। সাধারণ জনগণ উদ্বিগ্ন। বিরোধী দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা প্রতিপক্ষ দলের নেতৃত্বাধীন সরকারের কর্মকান্ড মোকাবেলায় প্রয়োজনে জনগণকে ‘দা-কুড়াল’ নিয়ে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। এই তো সেদিন ২০০৬ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতায়, তখন তাদের বিরুদ্ধে লগি-বৈঠা নিয়ে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা। ফলে লাশ পড়েছিল ঢাকার রাস্তায়। সাধারণ মানুষের চোখের সামনে সেদিনের নৃশংস তান্ডব এখনো স্পষ্ট। সেই সূত্রে দেশে দুই বছরের জন্য পরোক্ষ সেনা শাসন এসেছিল। জনগণ তেমন পরিস্হিতির পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না। বিএনপি কি শেখ হাসিনা ও তার দলের দেখিয়ে দেয়া পথে হাটতে চায়?

১৯৮৬ সালে এরশাদ সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তার শাসনামল দীর্ঘায়িত করেছিল। বেগম জিয়া সেপথে হাটেননি। নীতি ও আদর্শ বিচ্যুত হননি, যেকারণে জনগণ তাকে ‘আপোসহীন নেত্রী’ আখ্যা দিয়েছিল। ২০০৭ সালে ক্ষমতায় আসা সেনাসমর্থিত সরকার যখন ‘মাইনাস টু থিওরি’ বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়, তখন তার অনমনীয় মনোভাবের কারণেই তা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ যখন হাল ছেড়ে দিয়েছিল, তখন বেগম জিয়াই হাল ধরেছিলেন এবং দেশকে গণতন্ত্রের ধারায় ফিরিয়ে এনেছিলেন। এভাবে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার স্বাথর্র্ে নীতি ও আদর্শ বিবর্জিত কূটকৌশলের আপসকামী রাজনীতির সাথে তার ও তার দলের পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। জনগণ দেখেছে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কিভাবে জামায়াতের সঙ্গে দোস্তি গড়ে তুলেছিল। কিভাবে ধর্মকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিড়ি হিসেবে বিভিন্ন সময়ে ব্যবহার করেছে। আবার সুবিধামতো ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্হান নিচ্ছে। পক্ষান্তরে, জনগণ বিএনপির মধ্যে বৈপরিত্য কিংবা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য লোক দেখানো কর্মকান্ড নয়, বরং রাজনীতির ধারাবাহিকতা দেখতে পায়। এই প্রেক্ষাপটে বেগম জিয়া যখন কোন কথা বলেন তখন মানুষ সে কথায় আস্হা রাখে; বিশ্বাস করে। দীর্ঘ ৩০ বছরের রাজনীতির মাধ্যমে তিনি মানুষের আস্হা ও বিশ্বাস অর্জন করেছেন। সে কারণেই জনগণ মনে করে, দেশের ক্রান্তিলগ্নে তিনি দেশ রক্ষায় এগিয়ে আসবেন। জনগণ প্রত্যাশা কওে, ২০০৬ সালের মতো কোনো ‘লগি-বৈঠা’ মার্কা রাজনীতিতে তার নেতৃত্বাধীন দল জড়াবে না। বিএনপি কথা বলবে না আওয়ামী লীগের ভাষায়।

জিয়াউর রহমানের মতো একজন তরুণ বীর যোদ্ধা ও সৎ রাষ্ট্রনায়কের হাতে গড়া বিএনপিকে দেশের সাড়ে সাত কোটি কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীর দল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রবীণ ও নবীন নেতৃত্বের একটি নতুন কাঠামো নিয়ে ভাবতে হবে এবং সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। বিএনপি যে স্বাধীনতার মূল শক্তির বাংলাদেশী দল, সেই বার্তা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়ার এটাই শ্রেষ্ঠ সময়। আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠা স্টাইলের রাজনীতির পরিবর্তে জনগণকে নতুন ধারার রাজনীতি উপহার দিতে হবে। এর ইঙ্গিত সাম্প্রতিককালে বেগম জিয়া দিয়েছেন। জনগণ আশা করছে, তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তেমন কর্মসূচিই ঘোষণা করবেন যা জনগণকে সঠিক পথে চালিত করবে। জনগণ প্রার্থনা করে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য যে বাংলাদেশ বিভক্ত নয়; যে দেশ অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতমুখী; শুধুই অতীতআশ্রয়ী নয়। যে বাংলাদেশ জনগণের; ক্ষমতাসীনদের লুটপাটের দেশ নয়। যে বাংলাদেশ প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় কিন্তু নতজানু ক্রীতদাস হতে চায় না। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জনগণ আপনার কাছ থেকে তেমন রাজনীতিই আশা করছে, যে রাজনীতি বাংলাদেশী নাগরিকদের মাথা উচুঁ করে বাঁচতে সহায়তা করবে।

লুটপাট ইউনিভার্সিটি

একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি খোলার কথা ভাবছি। ক’দিন পরেই নির্বাচন। পত্রপত্রিকায় খবর বেরিয়েছে আওয়ামী লীগ এবার অন্তত ১০০ নতুন মুখকে মনোনয়ন দেবে। অন্যান্য দল থেকেও নতুন মুখ মনোনয়ন পাবে মোটামুটিভাবে ধারণা করা যায়। তাদের প্রশিক্ষণ লাগবে। তাছাড়া দীর্ঘমেয়াদে দেশের বিভিন্ন স্তরের ভবিষ্যৎ জনপ্রতিনিধিদের লুটপাটে অগ্রিম জ্ঞান দিতে একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা থাকবেই। সবমিলিয়ে একটি লুটপাট (লার্নিং) ইউনিভার্সিটি খোলার এটি একটি মোক্ষম সময়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় এখন বড় ধরনের বাণিজ্য।

নির্বাচনের এই ডামাডোলের মধ্যেও বর্তমান সরকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি দিয়ে চলেছেন। সরকার গত দুই বছরে ১৮টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি দিয়েছে। নিউ এজ পত্রিকায় ৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় আরো সাতটি নতুন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দিতে পারে। নতুন সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যাদের নাম প্রকাশিত হয়েছে তারা হলেন, প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় শেখ কবির হোসেন, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মির্জা আজম প্রমুখ। এর আগে গতবছর মার্চে অনুমোদন পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যাদের নাম উচ্চারিত হয়েছে তারা হলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা লিয়াকত শিকদার, গোপালগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল আহমেদ খান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য দুর্গাদাস ভট্টাচার্য এবং শিক্ষা সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন প্রমুখ।Continue Reading

দেশের মানুষের বাঁচা মরা শেখ হাসিনার হাতে

পাহাড়ের নিচের বসবাসকারী বুদ্ধিমান ব্যক্তির হাতে ধরা পাখি জীবিত না মৃত সেই প্রশ্নের উত্তরের মতোই শেখ হাসিনার হাতেই রয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে আরো রক্ত ঝরবে নাকি রক্ত ঝরা বন্ধ হবে সেই প্রশ্নের উত্তর।

এক জ্ঞানী ও পাখির গল্পটা কজন জানেন? হাত তুলুন। যারা জানেন তারা গল্পটা বাদ দিয়ে বাকিটুকু পড়ুন। অন্যরা আমার সঙ্গে থাকুন।

গল্প

গল্পটা হলো এমন। এক পাহাড়ের গোড়ায় এক দুষ্ট প্রকৃতির বুদ্ধিমান লোক বাস করতেন। লোকজন তার কাছে বুদ্ধি পরামর্শ নিতে আসত। তাকে শ্রদ্ধা সম্মান করত। টাকা পয়সা, সোনা দানা উপহার দিত। এভাবেই দিন কাটছিল। একসময় তিনি লক্ষ্য করলেন, তার ওখানে লোকজনের আসা কমে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, লোকজন তারই ঘরের পাশ দিয়ে পাহাড়ে উঠে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন, পাহাড়ের উপরে নতুন এক জ্ঞানী ব্যক্তির আগমন ঘটেছে। সবাই সেখানেই যায়। লোকজন বলাবলি করে পাহাড়ের উপরের লোকটির জ্ঞান নাকি তার চেয়ে বেশি। পাহাড়ের গোড়ায় বাস করা লোকটির একথা শুনে হিংসে হলো। মনে মনে ঠিক করল যেভাবেই হোক পাহাড়ের উপরের লোকটাকে শায়েস্তা করতে হবে। এবং প্রমাণ করতে হবে যে, পাহাড়ের উপরের লোকটা জ্ঞানী তো নয়ই বরং একটা আস্ত বোকা। তাকে অপদস্থ করতে হবে। যেভাবেই হোক লোকজনকে আবার তার কাছে ফিরিয়ে আনতে হবে।Continue Reading